সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ভালোই তবে আমি ভালো নেই। কিছুটা দুশ্চিন্তার মাঝে আছি কারন সামনে যে SSC Exam! :(কি আর করা, এখন পিসিতে বসার সুযোগ পাইনা বেশি পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত। তারপরেও ব্লগিং আমার নেশা, সেটা কিভাবে ছাড়তে পারি? তাই ফিরে এলাম আবার এবং বারবার আসবো!
আমার আজকের আর্টিকেল সেই উড়োজাহাজকে যেটি শুধু মানুষকে আকাশে ভাসায়নি, একইসাথে খুলে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। সফল করেছে মানব্জাতির অক্লান্ত পরিশ্রম এবং পূরণ করেছে কিছু সপ্ন...
রাইট ভাতৃদ্বয় পৃথিবীবাসীর স্বপ্নকে যে ডানায় ভাসিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন ডানাকে যুগে যুগে রঙিন করে গেছে হাজারো প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীরা। কখনও রণক্ষেত্রে কখনও বা জীবন রক্ষায় আবর কখনও কখনও বিলাসীতায়।
এর আরো অনেক বছর পরের কথা, পৃথিবী যখন ন্যাচারাল অ্যানার্জী হারাতে বসেছে। বিজ্ঞানীদের ধ্যানে শুধু বিকল্প অ্যানার্জির বন্দোবস্ত করা। প্রকৌশলীরাও সেই আইডিয়াকে বাস্তবায়ন করতে দৃড় প্রতিজ্ঞ। অপেক্ষা স্বপ্নের পাখায় আরেকটি পালক লাগানোর।
হ্যাঁ, এই স্বপ্ন সেই রাইট ভাতৃদ্বয়ের দেখানো পথকে আরেকটু উচু স্থানে নিয়ে যাওয়া। এই স্বপ্ন সারা দুনিয়ার পরিবেশবাদীদের। এই স্বপ্ন সেই সমস্ত মানুষগুলোর যারা ক্রমবর্ধমান বিমানের ফ্লাইটের কারণে আতঙ্কগ্রস্থ! কারণ, এক একটা ফ্লাইটে কি পরিমান ফুয়েল লাগে তা আর এখন অজানা নয়।
সবার এই স্বপ্নের কথা শুনে কে এগিয়ে আসল জানেন? সেই ভদ্রলোকটি, যিনি প্রথম বেলুনে উড়ে পৃথিবী প্রদক্ষিন করেছিলেন। হ্যাঁ, তিনি হচ্ছেন বার্ণার্ড পিকার্ড! শত মানুষের এই স্বপ্নকে নিজের করে নিলেন ২০০৩ সালে।
উড়ো জাহাজ আকাশে ডানা মেলে বেড়াবে, তাও আবার অল্টারনেট সোর্সের এর মাধ্যমে। সোলার অ্যানার্জির মাধ্যমে!! এবং তিনি এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেন গত ৮ই জুলাই ২০১০। টানা ২৬ ঘন্টা সোলার ব্যাকআপে উড়ে বেরিয়েছেন নিজের একটি প্লেন “সোলার ইম্পাল্স”, HB-SIA prototype কে নিয়ে!
এতবড় একটা কাজ যে প্লেনটি করবে সেটি আসলেই ছিল সবার আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু। তবে পিকার্ড সাহেব রিলিজ করার আগে কেউই তাকে দেখেনি। নব বধুর মত পর্দার আড়াল থেকে তাকে বের করে আনা হয় ২০০৯ সালের জুনে।
এর প্রথম টেস্ট ফ্লাইটটি করা হয় গত এপ্রিলে। এটি ছিল প্রথম চান্সেই সফল একটা টেস্ট ফ্লাইট। ৮৭ মিনিট ধরে চলা এই টেস্ট ফ্লাইটে তার বিমান ৩৯৩৭ ফুট উচ্চতায় উঠতে সমর্থ হয়।
বড় বড় আবিস্কারের পেছনেও বড় বড় হোচটের ঘটনা রয়েছে। এটাও ব্যাতিক্রম ছিলনা। সফল টেস্ট ফ্লাইটের পর গত ১ জুলাই ঘোষনা করা হয় প্রথম অফিসিয়াল ফ্লাইটের। তবে যান্ত্রিক গোলগের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। সুইজারল্যান্ডে সেদিন তাকে হ্যাঙ্গার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
প্রথম হোচটের এক সপ্তাহের মধ্যেই পিকার্ড সব সমস্যার সামধান করেই সাত সকালে প্রস্তত হন প্রথম ২৪ ঘন্টা ফ্লাইটের জন্যে। ছবিতে প্রোজেক্টের কো ফাউন্ডার এবং টেস্ট পাইলট আন্দ্রে বসবার্গ খুটিনাটি আলাপ করে নিচ্ছেন পিকার্ডের সাথে।
অবশেষে সেই সোনালি মুহুর্ত। সকাল ৬টা বেজে ৫১ মিনিট। সাকসেসফুল টেকঅফ!
এখানে কিছু ফ্যাক্ট বলে রাখা দরকার। দিনের বেলা যতক্ষন যানটি উড়ে বেড়িয়েছে, এর গায়ে বসানো ১২০০০ সোলার হাই পারপরমেন্স ব্যাটারির অ্যারে কে ক্রমাগত চার্জ করে চলেছে। তবে সন্ধ্যা নামার টরেই সবার মনে অন্ধকার ছেয়ে যায়। না জানি কি হয়!
অবশেষে রচিত হল একটি ইতিহাস। একটি স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং একটি সম্ভাবনময় আগামীর উদ্ভাবন। ল্যান্ডিং এর সাথে সাথে পিকার্ড সাথে সাথে জানিয়ে দিয়েছেন তার আগামী মিশন “ট্রান্স –আটলান্টিক ফ্লাইট”!!
ট্যাগঃ প্লেন উড়োজাহাজ সপ্নের ডানা
যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে নিজের জীবনের কয়েক সেকেন্ড অপচয় করে ছড়িয়ে দিন লিখাটি সকলের মাঝে যেন সেও পায় ভালো লাগার অদ্ভুত এই অনুভূতি! 🙂
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সকল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রেমীদের স্বাগতম জানাচ্ছি নতুন বাংলা বিজ্ঞান ব্লগ জুবিটেক বাংলা ব্লগ -এ। এখানে নির্দ্বিধায় জ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চা করতে পারেন, লিখতে পারেন আপনিও! ধন্যবাদ।
আমি প্রীতম চক্রবর্তী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 82 টি টিউন ও 155 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য ফ্রি লার্নিং প্ল্যাটফর্মঃ https://www.eduquarks.com