থিংক ডিফ্রেন্ট (Think Different) – আপনি কি জানেন স্টিভ জবস কীভাবে কি কি ডিফ্রেন্ট চিন্তা নিয়ে সৃষ্টি জগতের চালিকা শক্তি এই তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন, সেই সাথে থিংক ডিফ্রেন্ট চিন্তা আর কারা করতেন? না জানলে এই টিউন আপনার মতো শুধু মাত্র নতুন সৃষ্টি রহস্য প্রেমীদের জন্য!!

হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? জ্যৈষ্ঠের দাবদাহের মধ্যে প্রকৃতির অসাধারণ সব প্রিয় সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে আপনাকে আমার আজকের টিউনে স্বাগতম।

ভিন্ন চিন্তা নাকি ভিন্নভাবে চিন্তা! এই নিয়ে মাঝে দ্বিধায় পড়ি আমরা। আসলে থিংক ডিফ্রেন্ট তত্ত্বটার পেছনের ইতিহাস কি বা এই তত্ত্বের ভেতর কি এমন নির্জাস আছে যা একজন মানুষকে এভাবে বদলে দিলো? আসলে ভাব্বার বিষয়।  😉

আমি যতোবার আমার লেখায় এই স্লোগান ব্যবহার করেছি অন্য কোন বাংলা লেখায় তা আছে কিনা সন্দেহ। তবে আমি সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ তত্ত্ব হিসাবে মানি এই একটি তত্ত্বকেই তা হলো থিংক ডিফ্রেন্ট। আসুন আজ আমরা এই সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।

থিংক ডিফ্রেন্টঃ

৯০ এর দশকে অ্যাপেল কোম্পানির খুব দুরবস্থা যাচ্ছিলো। যা এখন আমরা যারা অ্যাপেল দেখছি তারা কেউ কল্পনা করতে পারবো না। কোম্পানিটি শেষ হবে হবে অবস্থা। ঠিক সেই সময় তত্ত্বটি চলে আসে স্টিভ জবসের মাথায়।  😯

স্টিভ জবসকে এবকার প্রশ্ন করা হয়েছিলো তত্ত্বটি সম্পর্কে, তিনি বলেছিলেন, “এটি ঠিক ১৫..৩০...খুব বেশি হলে ৬০ সেকেন্ড সময় লেগেছিল অ্যাপেলকে তাঁর ৯০ দশকের দুরবস্থা কাটিয়ে পূর্বের সংস্কৃতিতে ফিরে যেতে” আর সেটা ছিল থিংক ডিফ্রেন্ট।

থিংক ডিফ্রেন্টের ভেতরের ইতিহাসঃ

১৯৭৭ সালে স্টিভ জবস স্টিভ অয়াজনিয়াক, রোনাল্ট ওয়াইন, মাইক মারুকুল্লাকে নিয়ে অ্যাপেল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে নিত্য নতুন আইডিয়া সহ অ্যাপেল ভালো চললেও ১৯৮৫ সালে একটি বড় সংগ্রামে কোম্পানি ব্যর্থ হয়। তখন স্টিভ জবস অ্যাপেল ত্যাগ করেন। তিনি নেক্সট কোম্পানিও তৈরি করেন। এই সময় অ্যাপেল খুব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। তারপর ১৯৯৬ সালের পরে স্টিভ জবস আবার অ্যাপেলে ফিরে আসেন এবং নতুনভাবে অ্যাপেলকে ভাবতে শুরু করলেন।  🙄

অ্যাপেল কমার্শিয়াল অ্যাডে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলো। ঠিক তখনি স্টিভ জবস এই থিংক ডিফ্রেন্ট তত্ত্ব বের করেন। যেটা তিনি বলেন সর্বোচ্চ ৬০ সেকেন্ডের ভেতর তিনি মাথা থেকে বের করেন।

তারপর শুরু হলো নতুন পথ চলা। টিভি অ্যাড বা প্রিন্টিং সব দিকে শুধু সাফল্যের ছড়াছড়ি। ১৯৯৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অন্যান্য অ্যাডের সাথে টিভি অ্যাডটিও উন্মুক্ত করেন। যারা সবার মাঝে অন্য এক মাত্রা তৈরি করে।

অ্যাডটি ছিল ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট, যেখানে এমন কিছু ব্যক্তিকে রাখা হয়েছিলো। যারা সবাই থিংক ডিফ্রেন্ট তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন বা নিজে সেভাবে কাজ করেছেন।  😉

যারা আছেন সেই অ্যাডে আলবার্ট আইনেস্টাইন, বব ডিলান, মার্টিন লুথার কিং, রিচার্ড ব্র্যান্সন, জন লেনন, বাক মিনিস্টার ফুলার, থমাস এডিসন, মোহাম্মদ আলী, টেড টার্নার, মারিয়া কালাস, মহাত্মা গান্ধী, এমেলিয়া ইয়ারহার্ট, আলফ্রেড হিচকক, মারথা গ্রাহাম, জিম হেনসন, ফ্র্যাঙ্ক রিয়োরড রাইট, শাণ শাহোতা এবং পাবলো পিকাসো। ( Albert Einstein, Bob Dylan, Martin Luther King, Jr.,Richard Branson, John Lennon (with Yoko Ono), R. Buckminster Fuller, Thomas Edison, Muhammad Ali, Ted Turner, Maria Callas, Mahatma Gandhi, Amelia Earhart, Alfred Hitchcock, Martha Graham, Jim Henson (with Kermit the Frog), Frank Lloyd Wright and Pablo Picasso)

 আপনারাও দেখে নিন সেই সময়ের প্রথম অ্যাডটি,

ভিডিও টির কথাগুলো স্টিভ জবস নিজে লেখেন। যদিও পরবর্তীতে কিছুটা টাইটেল আকার দেওয়া হয়।

ভিডিওটির টেক্সট টাইটেল (স্টিভ জবস)

Here’s to the crazy ones. The misfits. The rebels. The troublemakers. The round pegs in the square holes. The ones who see things differently. They’re not fond of rules. And they have no respect for the status quo. You can quote them, disagree with them, glorify or vilify them. About the only thing you can’t do is ignore them. Because they change things. They push the human race forward. And while some may see them as the crazy ones, we see genius. Because the people who are crazy enough to think they can change the world, are the ones who do.

ভিডিওটির ৩০ সেকেন্ড ভার্সনও বের করা হয়।

৩০ সেকেন্ড শর্ট ভার্সনঃ

যে মানুষগুলো আছেন এই থিংক ডিফ্রেন্টেঃ

১) আলবার্ট আইনেস্টাইন (Albert Einstein)

জার্মান বিজ্ঞানী। যাকে আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক বলা হয় এবং বিশ্বের সব থেকে বুদ্ধিমান ব্যক্তি।

২) আলফ্রেড হিচকক (Alfred Hitchcock)

ইংলিশ ফিল্ম মেকার এবং সাসপেন্স এবং হরোর মুভির মাস্টার।

৩) এমেলিয়া ইয়ারহার্ট (Amelia Earhart)

প্রথম নারী যিনি ছোট ছোট অ্যাটল্যান্টিকে ফ্লাইট নেন।

৪) আনসেল অ্যাডামস (Ansel Adams)

অ্যামেরিকান ফটোগ্রাফার এবং পরিবেশ বিজ্ঞানী। পচ্চিম অ্যামেরিকার সাদা কাল ফটোগ্রাফির জন্য বিখ্যাত।

৫) বিল ব্রেনব্যাচ (Bill Bernbach)

অ্যামেরিকান অ্যাড অগ্রদূত।

৬) বব ডেইলিন (Bob Dylan)

অ্যামেরিকান গান লেখক এবং সিংগার।

৭) বুজ অল্ড্রিন (Buzz Aldrin)

২০ জুলাই ১৯৬৯ প্রথম যাওয়া চাঁদের মানুষ।

৮) চার্লি চ্যাপলিন (Charlie Chaplin)

প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের আগে সব থেকে জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা।

৯) দলায় লামা (Dalai Lama)

বৌদ্ধদের ধর্মীয় নেতা। নোবেল প্রাইজ জয়ী।

১০) এলিনর রুজভেল্ট (Eleanor Roosevelt)

ফার্স্ট লেডী, ফ্র্যাঙ্কক্লিন রুজভেল্টের স্ত্রী।

১১) ফ্রান্সিস ফোরড কোপোলা (Francis Ford Coppola)

ইটালিয়ান অ্যামেরিকান ফ্লিম পরিচালক। গড ফাদার সিনেমার জন্য বিখ্যাত।

১২) ফিল্ক দ্য অ্যান্ট (Flik the ant)

পিক্সারের দ্য বাগস লাইফ থেকে নেওয়া। অনুপ্রেরণা দায়ক স্টোরি।

১৩) ফ্রাঙ্ক চাপরা (Frank Capra)

অ্যামেরিকান ফিল্ম ডিরেক্টর।

১৪) জ্যাকি রবিনসন (Jackie Robinson)

অ্যামেরিকান জনপ্রিয় বেজবল খেলোয়াড়।

১৫) জেনি গুডল (Jane Goodall)

জাতিসংঘের শান্তি দূত।

১৬) জিম হিন্সন এন্ড কারমিট (Jim Henson & Kermit)

ম্যাপেট শোর জন্য বিখ্যাত।

১৭) জিমি হ্যান্ডরিক্স  (Jimi Hendrix)

অ্যামেরিকার বিখায় গিটারিস্ট, গায়ক এবং লেখক।

১৮) জন বাইজ (Joan Baez)

অ্যামেরিকান ফক সিংগার।

১৯) জন হাস্টন (John Huston)

অ্যামেরিকান ফিল্ম ডিরেক্টর এবং অভিনেতা।

২০) জন লেনন এন্ড ইয়কো অনো (John Lennon & Yoko Ono)

নিরব শান্তির দূত।

২১) মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Ghandi)

ইন্ডিয়ান স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রদূত।

২২) মারিয়া কালাস (Maria Callas)

অ্যামেরিকান অপেরা সিংগার।

২৩) মার্থা গ্রাহাম (Martha Graham)

আধুনিক ড্যান্সের অগ্রদূত।

২৪) মাইলস ডেভিস (Miles Davis)

অ্যামেরিকান মিউজিসিয়ান।

২৫) মোহাম্মদ আলী (Muhamed Ali)

অ্যামেরিকান বক্সার।

২৬) নেলসন মেন্ডেলা (Nelson Mandela)

বর্ণ বাদ বিরোধী নেতা।

২৭) পাবলো পিকাসো (Pablo Picasso)

স্প্যানিশ পেইন্টার।

২৮) পল র‍্যান্ড (Paul Rand)

অ্যামেরিকান লোগো ডিজাইনার.

২৯) টেড টার্নার (Ted Turner)

CNN নিউজের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম ক্যাবল নিজের প্রতিষ্ঠাতা।

৩০) থমাস এডিসন (Thomas Edison)

অ্যামেরিকান বিজ্ঞানী এবং গবেষক।

থিংক ডিফ্রেন্টই সেই তত্ত্ব যা যুগে যুগে মহৎ ব্যক্তি তৈরি করেছে। সকল সৃষ্টি এই তত্ত্বের ভেতর দিয়েই আসতে হয়েছে।

যারা ভিন্ন চিন্তা করে তারাই এই জগতে মানুষের নতুন পথের সৃষ্টিকারি।

ধন্যবাদ সবাইকে।  🙄

 

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

আপনার এই অসাধারন তথ্যপূর্ণ পোষ্টটিতেও “Think Different” এর প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি।ধন্যবাদ

অসাধারণ টিউন 🙂
এগিয়ে যান

Think Different এর সহজ অর্থ কি?
অসাধারণ টিউন।ধন্যবাদ।

    @ফ্রি বিডি: একই জিনিস সবাই যা ভাবে তা না ভেবে ভিন্নভাবে চিন্তা করা!
    যা নতুন কিছু সৃষ্টি করার প্রত্যয় রাখে!! 😯

    ধন্যবাদ ভাই!! 😉

Think Different স্লোগানটা হৃদয় দিয়ে একবার যে উপলব্ধি করতে পেরেছে সেই জানে এটার তাৎপর্য কত গভীর…এ কারণে বললাম যে, ভিন্নভাবে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে চিন্তা করা আসলেই খুব সহজ কাজ না- এবং সেটা সময় ফুরিয়ে যাবার আগেই করতে হয় কিনা!! ভিডিওটার জন্য ধইন্যা…..দেখে ভালোই লাগল 🙂

    @নিওফাইট নিটোল: আমি মনে জগতের কোন সৃষ্টি এই Think Different তত্ত্ব ছাড়া কখনও সম্ভব হয় নি, হবেও না!!

    ** ধন্যবাদ মূল্যবান টিউমেন্টের জন্য!! 😯

Level 0

In a word “Awesome.”

[#2] Sir. Alfred Hitchcock : he was one of the greatest movie director..
Psycho [1960]
Vertigo [1958]
Rear Window [1954]
North by Northwest [1959]
Rebecca [1940]

[#11.] Francis Ford Coppola : he was also one of the greatest movie director..
The Godfather [1972]
The Godfather II [1974]
The Godfather III [1990]
Apocalypse Now [1979]
The Conversation [1974]

[#13.] Frank Russell Capra : he was one of the greatest movie director too..
It’s a Wonderful Life [1946]

[#17.] Jimi Hendrix :
James Marshall “Jimi” Hendrix was an American legendary guitarist.. & also singer, songwriter

[#20.] John Lennon :
John Winston Ono Lennon MBE was an English singer and songwriter who rose to worldwide fame as a co-founder of the greatest rock band “The Beatles” [1960-1969]
thanks 😉

    @tanxim masood: সবাই ভিন্নভাবে চিন্তায় দক্ষ। আর মানুষের জীবনকে উঠাতে ভিন্নভাবে চিন্তাটা বেশি করা লাগে। আমাদের দেশের মতো ডিরেক্টর ভাবলে আমাদের ভুল হবে। একটা একটা সিনেমা একটা একটা জীবন, একটা বই বা ধর্ম।
    ধন্যবাদ!! 😉

with respect, please let u to tell me, what did u mean by
“আমাদের দেশের মতো ডিরেক্টর ভাবলে আমাদের ভুল হবে”??
i ain’t compare ’em with anyone, right?? i’m just tryin’ to write some details ’bout ’em
that’s it brother.. why u take that otherwise??

    @tanxim masood: আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম ডিরেক্টর শর্টকার্ট চিন্তা করে, তারা চাই না একটি সর্বজন খ্যাত মুভি সবাইকে উপহার দিতে, যা তাঁকে অমর করে রাখবে। যদিও দেশের সিনেমা বাজেটও এর জন্য দায়ি, তবে ভালো মানের এবং গঠনমূলক মুভি তৈরি হলে যে টাকা কোন সমস্যা না তা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী প্রমাণ করছেন বা করতে যাচ্ছেন পুনরায়। 😯

    সেহেতু আমি বলতে চাচ্ছি এমন কিছু ডিফ্রেন্ট তৈরি করা যা আমাদেরও কয়েক সিকুয়াল গেলেও মন ভরবে না যেন!!

    ধন্যবাদ টিউমেন্টের জন্য। 😉

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি বিষয় সবার সাথে শেয়ার করার জন্য।

পিক্সারের দ্য বাগস লাইফ vul name disen kano.oita a bugs life hobe the bugs life na ok,,,,,info dile ai choto bisoy gulo teo nojor deya uchit

অসাধারণ টিউনের জন্য কোটি কোটি ধইন্যা