যে কাজগুলো সফল মানুষরা প্রতিদিন করে। সফল মানুষদের সাফল্যের রহস্য।

আমরা এই ব্যস্ত পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত ব্যস্তই থাকি। কিন্তু সফল মানুষদের মতো কিছু করার সুযোগ কেন পাই না। পার্থক্যটা কোথায়? তারা কি করে যা আমরা করি না।

ইউএসএ তে এক গবেষণায় আসছে আমরা প্রতি সপ্তাহে ৪৫ ঘণ্টা কাজ করি, কিন্তু এর ভেতর ১৭ ঘণ্টা সম্পূর্ণ আন-প্রডাক্টিভ কাজ করি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এইটা আরও বেশি। এই আন-প্রডাক্টিভ সময়ে আমরা এমন কিছু কাজ করি যা আমাদের ভালো কিছু দেয় না। কিন্তু এই সময়কে ভালো ভাবে কাজে লাগাতে পারলে আমরা আরও একটু স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারতাম। সে যাইহোক আমরা আজ জানবো কীভাবে আমরা এই আন-প্রডাক্টিভ কাজ কমিয়ে আরও ভালোভাবে নিজেদের প্রডাক্টিভ কাজে সংযুক্ত করবো।

সেজন্য আমরা সফল মানুষদের জীবনী জানবো, যেখানে আমরা দেখবো কি এক্স-শেপশোনাল কাজ তারা করে যা তাদেরকে মহৎ করে তুলেছে। আরও বেশি প্রডাক্টিভ কাজে যেটা আমাদের অনেক বেশি সহায়তা করবে। চমৎকার ৭ কাজ যা সফল মানুষরা প্রতিনিয়ত প্রতিদিন করে যাচ্ছে, যা তাদের উন্নতির মূল কাহিনী।

সফল মানুষের ব্যতিক্রম ৭ কাজঃ

১) আগের দিন পরিকল্পনাঃ

যারা সফল মানুষ তারা তাদের কাজের প্রিয়োরিটি অনুসারে কোন কাজ কখন করবেন তার পরিকল্পনা করে রাখেন To Do লিস্ট আকারে। তারা তাদের সঠিক ম্যানেজমেন্ট করে ফেলেন। তারা সফল হয়েছে বলেই যে এটা করছে তা নয়। তারা এমন পরিকল্পনা করে কাজ করেন বলেই তারা আজ সফল। তারা যেদিন থেকে পরিকল্পনা করেছেন ভালো কিছু করবেন সেদিন থেকেই এই নিয়ম মেনে চলছেন। তারা নিজের কাজের ভেতর অন্য কিছু ভেবে রাখেন না। তারা কাজের গুরুত্ব অনুসারে না বলতে শিখেছেন। তাদের নিয়মের বাইরের কাজে তারা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে গেছেন পরিকল্পনা করে। ভালো কাজের সাথে সময় দিছেন তাও সময় অনুসারে।

২) প্রিয়োরিটি অনুসারে কাজ করেনঃ

সফল মানুষ আমাদের মতোই সব কাজ, ইভেন্টে থাকেন। তবে প্রিয়োরিটি অনুসারে তাদের কাজের একটি গোছানো লিস্ট আছে। তারা ভাবেন তার কোন কাজ না করলেই নয়, আর কোন কাজ অবসর সময়ে করলেও সমস্যা নয়। যেকারনে তারা আমাদের মতো সব জায়গাতেই আছেন, কিন্তু তাদের প্রয়োজনীয় কাজে তারা কখনও পিছুপা থাকেন না। কিন্তু আমরা সেটা না করে অগোছালোভাবে যেটা সামনে আসে সেটাই করতেই থাকি। সেহেতু অবশ্যই প্রিয়োরিটি অনুসারে কাজ করুন।

৩) সময় ঘাতক ঠিক করে ফেলেনঃ

আমাদের এই যুগে সব জায়গায় সমান পদচারনা চাই। যেমন সোশ্যাল সাইট আমাদের যেমন থাকতে হবে তেমনি বিভিন্ন ব্লগ বা ফোরামে। সেই সাথে নিজের দৈনন্দিন কাজও করতে হবে ব্যবসায়িক বা চাকরির সাথে সাথে। এই সফল মানুষগুলোকে আপনি সব জায়গায়ই সমানভাবে দেখতে পাবেন। তাহলে এতোটা কীভাবে করে উঠেন তারা। কারণ তারা সময় খাদককে চিনতে ভুল করেন না। এই সোশ্যাল মিডিয়া বা মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট আমাদের বড় সময় খাদক। আমরা এখানে সারাদিন পার করতে পারি, যা কখনও প্রয়োজন না। সেহেতু এই সফল মানুষ জাস্ট তাদের প্রয়োজনের জন্য সবার কাছে যেতে ১/১.৩ ঘণ্টা সময় এই সব কাজে ব্যয় করেন। প্রয়োজনে একটু বেশি। কিন্তু তারা কখনও এই সময় খাদককে তাদের মূল্যবান সময় নষ্টের জন্য রাখেন না। তারা পারফেক্টলি সব কিছু নির্দিষ্ট সময় করে করে ফেলেন।

৪) সম্পূর্ণ নির্ভুল কাজে তারা বিশ্বাসী নয়ঃ

অনেকের নিজের পছন্দমতো কাজের মূল্য বেশি দেন। যেকারনে সব সময় নিজেই সব কাজ করতে চান। কারণ নির্ভুলতার ভয়ে। কিন্তু যারা সফল মানুষ তারা জানেন সব কাজ আমি করে উঠতে পারবো না। আমাকে কিছু কাজ ছাড়তেই হবে। না হলে আমি পিছিয়ে যাবো। যেকারনে তারা টিম করে কিছু কাজ করে নেন। তাতে একটু ভুল থাকলেও। যেটা তাদের উন্নতির প্রধান সিঁড়ি হয়ে দাঁড়ায়।

৫) মুড এবং আবেগের প্রতি নিয়ন্ত্রণঃ

কোন মানুষ আবেগের বাইরে নয়, কিন্তু সুসফল ব্যক্তিগুলার এই মুড এবং আবেগের প্রতি অগাধ নিয়ন্ত্রণ থাকে। তারা যানে যেটা ঘটার সেটা ঘটবেই। এজন্য আপসোস করে কোন লাভ নাই। নতুন করে পূর্ণ উদ্যমে শুরু করায় তার এখন দায়িত্ব। তারা নিজেদেরকে অনেক বেশি নিজের করে রাখতে পারেন। সাময়িক ক্ষতি যে সারা জীবনের জন্য নয় এটা তারা খুব সহজে বুঝতে পারেন এবং তা তা মেনে নিতে পারেন।

৬) সঠিক কাজ এবং জীবনের ব্যালেন্সঃ

কাজ এবং জীবন একে অন্যের সাথে চলে, সেহেতু কোনটাই বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। যারা সফল মানুষ তারা যেমন নিজের কাজকে সঠিক সময় দিচ্ছেন, তেমনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনকেও অবহেলা করছেন না। অত্যধিক কাজ যেমন আমাদের পিছিয়ে দিতে পারে, তেমনি কম কাজ আপনাকে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ করতে পারে।

সেহেতু আপনাকে সব দিকে সমান পারদর্শী হতে হবে। কোনটা ছেড়ে কোনটা নয়। এই উপলব্ধি সফল মানুষের আছে।

৭) পর্যাপ্ত ঘুমানঃ

ঘুম মানুষের সুস্থ থাকার জন্য খুব প্রয়োজনীয়। পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া কেউ ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। যেকারনে এই সফল মানুষ ৭-৯ ঘণ্টার যে ভালো ঘুমের প্রয়োজন তা ঠিক ভালোভাবে করে ফেলেন। পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া যেমন নতুন কাজে সফল হওয়া যায় না, তেমনি সুন্দর স্বাস্থ্য হওয়াও সম্ভব না।

যেকারনে এই সফল মানুষ এই দিকেও সমান নজর রাখেন।


সফল মানুষ নিয়মের বাইরে নয়, আবার জীবনটাকে রোবটও করে ফেলেন না। তারা সঠিক সময় সঠিক কাজ, সঠিক ডিসিশন এবং সঠিক নিয়ম মেনে সব কিছু করেন।

আপনাকে দেখতে এই স্পেশাল গুনের কতোগুলো আপনি আপনার জীবনে প্রয়োগ করতে পারছেন। তাহলে আপনি এগিয়ে যাবেন এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

আসুন আমরা আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর করি, নিজেদের উন্নতি করি, মানুষকে সেবা করি, নিজের দেশের সেবা করি।

ধন্যবাদ সবাইকে। 🙂

আরও কিছু ফিচারড টিউনঃ

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

হুম অসাধারন একটি টিউন … ভাই আপনে নিজে অনুসরন করেন তো । তা যদি না হয়ে থাকে তাহলে আপনার টিউন টি ব্যার্থ

    @Raihan: নিজের চলার কিছু অভিজ্ঞতা আমি তুলে ধরতে চেষ্টা করি। নিজে চেষ্টা করি অবিরত তবে কতো টুকু পারি নিজে তার সমাধানও খুঁজি মাঝে মাঝে। তবে করে যাচ্ছি, আরও ভালো করবো বলে। ধন্যবাদ। 🙂

    @Raihan:

    হা হা হা…………… 😀 😀 B-) 😛 😛

যদি সত্যিই নিয়মগুলান ফলো করতে পারতাম….আপসোস ৭-৯ ঘন্টা ঘুম এই কপালে আর জুটল না । অসাধারণ একটা টিউন হয়েছে চালিয়ে যান

প্রত্যেকটা নিয়ম আমিও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি কিন্তু আসলে দু’একটার ব্যত্যয় ঘটেই…..ঘুম আর কাজের প্রায়োরিটির ব্যালেন্স করাাই মুশকিল হয়ে পড়ে 👿

তবে সফল মানুষরা হয়তো রোবটিক না, কিন্তু জীবনের শুরুর পর্যায়গুলোতে কিন্তু এরা সবাই রোবটিকই ছিলেন- অন্তত যতজনের জীবনকাল জেনেছি……ছাদ ঢালাইয়ের চেয়ে পিলার গাঁথুনিতেই কিন্তু সর্বাধিক পরিশ্রম 😎
ধন্যবাদ বিশ্লেষণের জন্য 😛