প্রথমেই বলে নিই আমি নিজে ভুত বিশ্বাস করি না। তাছাড়া পৃথিবীতে আদৌ ভূত বলে কিছু আছে কি না সে বিষয়েও আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। মাঝে মাঝে ভুত দেখার জন্য রাতেরবেলা কবরস্থান কিংবা শ্মশান ঘাটে চলে যাই। কিন্তু আজো ভুতের দেখা পাইনি।
আপনি কি ভূত বিশ্বাস করেন? অনেকেই বলে ভূত-পেত বলে কিছু নেই। আমিও তাদের সাথে একমত পোষণ করতাম কিন্তু এই ঘটনা গুলো শোনার পর আমারও এখন কেমন জেনি লাগছে। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি কিছু ভুতুড়ে গল্প যা নাকি একেবারে সত্যি আর এইসব ঘটনার রহস্য এখনো বিজ্ঞান দিতে পারিনি।
চাঙ্গি বীচ, সিঙ্গাপুর-
চাঙ্গি বীচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি জায়গা। ‘সোক চিং’ যুদ্ধ সংঘটিত হবার সময় জাপানিরা নিজেদের বিরোধী ভেবে অনেক অনেক নিরীহ চীনা নাগরিককে হত্যা করে তারপর তাদেরকে এখানে কবর দেয় আর সেই থেকে এই জায়গাটি হয়ে ওঠে ভুতুড়ে। এখানে রাত হলে শুরু হয় ভুতুড়ে সব কাজ কারবার। মনে হয় দূর থেকে কিছু মানুষ কান্না করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। অনেক পর্যটক কিছু না জেনে এখানে রাত্রে বেলা ঘুরতে আসে আর ফেরার সময় নিয়ে যায় অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা। এখন পর্যন্ত প্রায় হাজার খানেক মানুষ এমন কান্নাকাটি শোনার কথা শিকার করেছে। আর স্থানীয়ও কেউ এখানে রাতের বেলা ভুল করেও আসে না।
ওহিও ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ-
ইউনিভার্সিটিটি ইউএসএর সবচেয়ে ভুতুড়েদের মধ্যে অন্যতম। এখানে বহু পুরনো পাঁচটি সমাধি আছে যা কিনা একটি পঞ্চভুজ তৈরি করে। আর এখানে অনেক পুরনো একটি মানসিক রোগীদের চিকিৎসা দেবার জন্য ল্যাব যেখানে তাদের ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হতো পরবর্তীতে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। লোকমুখে শোনা যায় যে সন্ধ্যা হবার পর এখানে নাকি অদ্ভুত চেঁচামেচির আওয়াজ শোনা যায়। আর ভয়ে সেখানে যেতে কেউই সাহস করেনা।
স্ক্রিমিং টানেল, নায়াগ্রা ফলস-
কুখ্যাত জায়গার মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা এটি। এখানকার মানুষেরা বলে আপনি যদি এই টানেলের ভেতরে একটি ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন জ্বালান তবে সেটি আগুনের গোলা টানেলের বাইরে চলে যাবে আর আপনি একটি ছোট্ট মেয়ের চীৎকার দেবার আওয়াজ শুনতে পাবেন যা খুবই ভয়ানক। এখানকার বাসিন্দারা সব সময় সেখানে যেতে মানা করে।
ভাঙ্গার দুর্গ, ইন্ডিয়া-
এটি ইন্ডিয়ার রাজস্থানের পাশে অবস্থিত। এখানকার মানুষের মুখে শোনা যায় এই জায়গাটির ওপর নাকি অনেক অভিশাপ আছে। কোন এক পুরনো ঋষি এই জায়গারটির ওপর অভিশাপ দিয়েছিল যে যারা এখানে মারা যাবে তাদের আত্মা সারা জীবন এইখানে বন্দি থাকবে। সব চেয়ে আশ্চর্যও জনক ব্যাপার হচ্ছে এখানকার কোন বাড়ির ছাদ নেই আর সব গুলা বাড়ির ছাদ তৈরি করার সময় নাকি সেগুলা ভেঙ্গে পড়ে। সন্ধ্যার পড়ে এখানে যে পর্যটকরা গেছে তারা আজ পর্যন্ত ফিরে আসেনি আর এখনকার সরকার সন্ধ্যার পর সেখানে যেতে পুরোপুরি মানা করে দিয়েছে।
হাইগেট সমাধিক্ষেত্র, ইউকে
এটি ইংল্যান্ডের অন্যতম ভুতুড়ে সমাধিস্থল এখানে রাত হলেই শুরু হয় আজব আজব সব কাজ কারবার। মস্তকবিহিন একটি লাশ একবার কবরের ভেতরে ধুকে আবার বাইরে আসে। তার সর্বাঙ্গে লতাপাতা জরানো থাকে আর গঠন এক্কেবারে অন্যরকম। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে এখানকার তাপমাত্রা বাইরের থেকে অস্বাভাবিক ভাবে কম।
প্রাচীন রাম হোটেল, ইংল্যান্ড-
আপনি যদি ভুতের ঘটনার অপর একেবারেই বিশ্বাস না করে থাকেন তবে দেখতে পারেন এই হোটেলটি। এখানে সবসময় কেমন যেন স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ আর কেমন যেন কদাকার একটি গন্ধে ভরে থাকে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে এই হোটেলটি একটি কবরের ওপর তৈরি করা হয়েছে। আর এখানকার সবারই ধারনা যে এইজন্য এখানকার পরিবেশ এমন ভুতুড়ে।
মন্টে ক্রিস্টো, অস্ট্রেলিয়া
এই বাড়ির মালিক মিসেস ক্রাওলি তার স্বামীর মৃত্যুর পরবর্তী ২৩ বছরে মাত্র ২ বার বাড়ির বাইরে বের হয়েছিল। এবং তার মৃত্যুর পর আজও নাকি তাকে এই বাড়িতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এই বাড়ির ভেতর থেকে যারা ঘুরে এসেছে তাদের মুখ থেকে এর সত্যতা মেলে। তারা বলে বাড়ির ভেতরে গেলে মনে হয় কে যেন আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে আবার হুট করে মিলিয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন যখন তারা ক্রাওলির ঘরে প্রবেশ করে তখন প্রত্যেকে রূদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির ভেতরে ছিলেন এবং তাদের মনে হচ্ছিলো যেন তাদের সারা গায়ে কেমন রক্তবর্ণে দেখা দিচ্ছে পরবর্তীতে যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে তখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এডিনবার্গ দুর্গ, স্কটল্যান্ড-
স্থানীয়দের মতে এই অসাধারণ দুর্গে ভূত দেখা গিয়েছে অনেকবার এবং এখানে যেসব পর্যটক ঘুরতে এসেছে তারাও এই বিষয়টি স্বীকার করেছে। জানা যায় ফরাসি যুদ্ধ চলার সময় এখানে বহু বন্দীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এই জায়গাটি হয়ে ওঠে অভিশপ্ত।
ডোমিনিকান হিল, ফিলিপাইনস-
সবাই বলে এখানে নাকি যুদ্ধের সময় যারা আহত হতো তাদের চিকিৎসা দেয়া হতো আর চিকিৎসারত অবস্থায় যারা মারা যেত তাদের এখানেই কবর দেয়া হতো। পরবর্তীতে জায়গাটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এখানকার মানুষেরা বলে রাত হলে নাকি এখান থেকে সব অদ্ভুত রকমের শব্দ পাওয়া যায়। কখনো গুলির শব্দ, কখনো মানুষের বাঁচার জন্য আর্তনাদ ইত্যাদি। ভয়ে এখানে কেউ আসে না। আর যারা টুরিস্ট আসে তারা দূর থকে দেখেই চলে যায়।
বেরি পোমেরয় দুর্গ, টোটনেস-
এই জায়গাটি যতটা সুন্দর ততটাই ভয়ংকর, এমনটা শোনাযাই প্রায় চৌদ্দ শতক আগে এখানে একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। কিংবদন্তী অনুসারে, হোয়াইট লেডি হলেন মার্গারেট পোমেরয়ের আত্মা যিনি বন্দি অবস্থায় অনাহারে মৃত্যুবরণ করেন আর তাকে বন্দি করেছিল তারই হিংসুটে বোন। এই দুর্গের অনেক জায়গায় তাকে ঘুরতে দেখা যাই। এবং অনেকেই এই অভিযোকটি করেছেন।
বর্তমানে আমরা আর কেউ আর এইসব ভূত পেত বলে কিছু বিশ্বাস করিনা। আসলেই কি এইসব কিছু আছে? নাকি শুধু আমাদের কল্পনা চোখের ভুল। জানিনা সত্যিটা আসলে কি। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনাগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারিনি।
এরকম আরো কাহিনি জানতে চাইলে ভিজিট করুন এইখানে টিউনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো এইখানে কষ্ট করে পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
পুরাটাই পড়লাম অসাধারণ টিউন 😛