আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে পিসির পারফরম্যান্স বাড়ানোর সেরা ৫ টি সফটওয়্যার নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের বেশিরভাগ কাজগুলোই আমরা হাতে থাকা স্মার্টফোন বা সখের পিসি দিয়ে করে থাকি। অনেকেই সখের পিসি দিয়ে ঘরে বসে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনা করে মাসে ভালো অর্থ উপার্জন করছি।
প্রতিদিন হেভি টাস্ক যেমন গেইমিং বা এডিটিং এর মত কঠিন কঠিন কাজগুলো আমরা পিসি দিয়ে সম্পাদনা করার পর একটা সময় দেখা যায় আমাদের কম্পিউটারটি আর আগের মত স্মুথ পারফর্মেন্স দিতে পারছে না। নতুন অবস্থায় যেমন পারফর্মেন্স দিতো তার অনেকাংশই কমে গেছে কিছুদিন ব্যবহারের পর। গেইমিং করতে কিংবা এডিটিং এর জন্য ভারী সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারে তখন হ্যাং ল্যাগ এর বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়ে যায়। এমনটা কেনো হয়? একটা নির্দিষ্ট সময় ব্যবহারের পরে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ পারফর্মেন্স ড্রপ করা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।
তবে আপনি জানেন কি, এমন কিছু কিছু সফটওয়্যার বা টুলস আছে যেগুলি ব্যবহার করে আমরা আমাদের পিসিটিকে আবারও আগের মতই ফাস্ট করে তুলতে পারি। হ্যাঁ আজ এমনই ৫ টি সেরা সফটওয়্যার নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো ব্যবহার করে আপনার সখের পিসিটির পারফর্মেন্স ঠিক নতুন এর মতই ধরে রাখতে পারবেন। এগুলো মূলত বিভিন্ন ধরনের অপ্টিমাইজেশন সফটওয়্যার, যা আমাদের পিসিতে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে জমে থাকা জাঙ্ক ফাইল, টেম্পোরারি ফাইল, র্যাম ক্যাশ, হিস্ট্রি, রেজিস্ট্রি সহ বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো রিমুভ করে আমাদের পিসির পারফর্মেন্স ঠিক আগের মতই ফাস্ট করে তুলে।
চলুন একটি উদাহরণ এর মাধ্যমে বিষয়টা শুরু করা যাক। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করে থাকি। কেউ ঘরে কেউ বাহিরে, কেউ রাস্তাঘাটে লোকালয়ে আবার কেউ অফিস আদালতে ফ্যানের নিচে এসির নিচে বসে কাজকর্ম করে থাকি। এসব কাজকর্ম সেরে যখন আমরা বাসায় ফিরি তখন আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়, গায়ে অনেক ধুলাবালি ময়লা জমে থাকে। তখন গোসল এর দরকার পরে আমাদের। গোসল করলে আমরা নিজেকে সতেজ অনুভব করি, কাজ করার জন্য আবার শক্তি অনুভব করি। তো এখানে গোসল করাটাকে একপ্রকার আমাদের অপ্টিমাইজেশন প্রক্রিয়াও বলা চলে।
পিসির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। প্রতিদিন কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম পরিচালনা করছি আমরা। এসব কাজকর্ম করার সময় ব্যবহার করা ভারী ভারী সফটওয়্যার গুলো থেকে বিভিন্ন জাঙ্ক ফাইল, টেম্পোরারি ফাইল বা বিভিন্ন ধরনের হিস্টোরি ফাইল তৈরি হয় যেগুলো ব্যবহার শেষে আর তেমন একটা কাজে লাগে না। কিন্তু তবুও এইসব ফাইলগুলো আমাদের কম্পিউটারের মেমোরি অর্থাৎ র্যাম বা স্টোরেজ এ জমা হয়ে থাকে। এভাবে জমতে জমতে এক সময় বিশাল আকার ধারণ করে এবং আমাদের কাজে হ্যাং ল্যাগ এর মত বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে থাকে। তাই এসব সমস্যা দূর করতে পিসিকে অপ্টিমাইজ রাখা প্রয়োজন হয়। পিসিকে অপ্টিমাইজ করলে পিসি থেকে প্রতিদিনের জমা হওয়া জাঙ্ক ফাইল, টেম্পোরারি ফাইলগুলো রিমুভ করে পিসির পারফর্মেন্স ঠিক নতুন এর মতই করে তোলে। আর এই অপ্টিমাইজেশন এর জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের অপটিমাইজার টুলস বা সফটওয়্যার এর সাহায্য নিতে হয়।
পিসির পারফর্মেন্স বুস্ট করতে বা পিসিকে অপ্টিমাইজ কন্ডিশনে ধরে রাখতে অপটিমাইজার টুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অপটিমাইজার টুলগুলো যেভাবে কাজ করে তা সম্পর্কে একটা ধারণা থাকা প্রয়োজন। অপটিমাইজার সফটওয়্যার বা টুলস এর মধ্যে কিছু কিছু আছে যেগুলো র্যামকে ক্লিন করে পারফর্মেন্স বৃদ্ধতে সহায়তা করে। এরা র্যামের মধ্যে থাকা বিভিন্ন জাঙ্ক ফাইল টেম্পোরারি ফাইলগুলো ক্লিন করে। ফলে র্যামের মধ্যে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হয়ে যায় এবং আমাদের কম্পিউটার তার পূর্বের গতি ফিরে পায়। আবার কিছু অপটিমাইজার সফটওয়্যার আছে যেগুলো র্যামের পাশাপাশি স্টোরেজ এ থাকা বিভিন্ন জাঙ্ক ফাইল ক্লিন করে। পাশাপাশি অন্যান্য সফটওয়্যার এর হিস্টোরি ডাটা, ক্যাশ ফাইল, রেজিস্ট্রি ফাইল, লিফট ওভার ফাইলগুলো ক্লিন করে পিসির পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করে থাকে।
মূলত এভাবেই অপটিমাইজার টুলগুলো কাজ করে থাকে। অনলাইনে আপনি অনেক ধরনের পিসি অপটিমাইজার সফটওয়্যার পাবেন। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই পেইড সফটওয়্যার। অর্থাৎ টাকা দিয়ে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের লাইসেন্স কিনলে সফটওয়্যার গুলো সঠিকভাবে কাজ করে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ টাকা দিয়ে কিনে এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আবার এমন কিছু কিছু ফ্রি অপটিমাইজার সফটওয়্যার পাওয়া যায় যেগুলো ফ্রিতেই পাওয়া যায়। তবে এগুলোতে অন্যান্য সফটওয়্যার কোম্পানির স্পন্সরশিপ থাকে। অর্থাৎ আপনি যখন এসব সফটওয়্যার ইন্সটল করবেন তখন ঐ সফটওয়্যার এর পাশাপাশি আরো কয়েকটি স্পন্সর করা সফটওয়্যার অটো ইন্সটল করে দেয়।
ফলে এসব অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার পিসিতে একটা ভালো পরিমাণ জায়গা দখল করে এবং পিসির পারফর্মেন্স বুস্ট করার বদলে উলটো পারফর্মেন্স ডাউন করে। তাই একটি ভালো অপটিমাইজার সফটওয়্যার নির্বাচন করা পিসির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজ আমি এমনই কিছু বেস্ট সফটওয়্যার সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দিব যেগুলো আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন এবং এগুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতে পাবেন। টাকা দিয়ে লাইসেন্স কিনার কোনো ঝামেলা নেই। কোনো আজে বাজে সস্পন্সর করা সফটওয়্যার ও অটোমেটিক ইন্সটল হবে না। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে দেখে নিই আজকের সব থেকে বেস্ট ৫টি পারফর্মেন্স বুস্টার সফটওয়্যার।
আমাদের লিস্টে থাকা প্রথম সফটওয়্যারটির নাম RamMap। এটি মাইক্রোসফট কম্পানির একটি নিজস্ব সফটওয়্যার। তাই এটি ব্যবহার করলে আপনার পিসির সিকিউরিটি নিয়ে কোনো টেনশন করতে হচ্ছে না। এছাড়া এটির সব থেকে অবাক করা ব্যাপার হলো এটি খুবই ছোট সাইজের সফটওয়্যার। যার সাইজ মাত্র ৬০০ কেবি এর আশেপাশে। এত ছোট সাইজের হওয়ার ফলে পিসিতে ব্যবহারের সময় এর চাপও কম পরে। তাই একদম লো কনফিগারেশনের পিসিতেও এটি খুবই দারুণভাবে কাজ করে থাকে। এটির আরেকটি বড় সুবিধা হলো এটি একটি ফ্রি সফটওয়্যার। এটি ইন্সটলের সময় অন্য কোনো সফটওয়্যার অটো ইন্সটল হবে না।
এছাড়া কিছুদিন পর পর টাকা দিয়ে লাইসেন্স কিনার মত কোনো ঝামেলা থাকছে না সফটওয়্যারটিতে। এছাড়াও এই সফটওয়্যারটি খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি। এক ক্লিকের মাধ্যমে আপনি আপনার পিসির পারফর্মেন্স বুস্ট করে নিতে পারবেন। কিন্তু RamMap সফটওয়্যারটির কিছু কমতি দিক ও রয়েছে। যার মধ্যে প্রধান হলো এটি শুধু র্যাম ক্লিন বা অপ্টিমাইজেশনের মাধ্যমে পিসিকে একটি অপ্টিমাল কন্ডিশনে নিয়ে আসে। এটি বিশেষ করে যাঁদের পিসিতে র্যামের স্বল্পতা রয়েছে তাদের খুব উপকারে আসবে। গেইমিং করার পূর্বে বা কোনো হেভি কাজ করার আগে একবার এই RamMap থেকে র্যাম বুস্ট করে নিলে খুবই স্মুথ রেজাল্ট পাবেন।
এটি ব্যবহারের জন্য প্রথমে এর ডাউনলোড লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিন। তারপর জিপ ফাইলটি আনজিপ করুন। তারপর আনজিপ হওয়া লিস্টের ২ নম্বর ফাইলটি অর্থাৎ RamMap.exe ফাইলটি এডমিনিস্ট্রেট পারমিশন দিয়ে উপেন করুন। ব্যস আপনার সফটওয়্যার রান করা শুরু করবে। তারপর এর গ্রাফ চার্ট থেকে আপনার র্যামের সকল ইনফরমেশন সম্পর্কে একটি বিশদ তথ্য পাবেন। র্যাম বুস্ট করার জন্য মেনু থেকে ২ নাম্বার অপশন Empty তে ক্লিক করুন। তারপর প্রথম অপশনে ক্লিক করুন। এক ক্লিকেই আপনার র্যামের অনেকাংশ জায়গা ফাঁকা করে আপনাকে একটি স্মুথ পারফর্মেন্স দিবে।
Official Download @ RamMap
এই সফটওয়্যারটিকে উইন্ডোজের ডিফল্ট সফটওয়্যার ও বলা যায়। কারণ microsoft windows একদম ফ্রিতে নিজে থেকে এ সফটওয়্যারটি প্রোভাইড করে। উইন্ডোজ পিসি ম্যানেজারের সব থেকে আকর্ষণীয় ফিচারটি হলো এটির মাধ্যমে আপনারা রেম ক্লিন থেকে শুরু করে আপনার স্টোরেজ ও স্ক্যান করতে পারবেন এবং স্টোরেজে থাকা সকল জাঙ্ক বা টেম্পোরারি ফাইল গুলো ডিলিট করতে পারবেন শুধুমাত্র এক ক্লিকে। যেহেতু এটির মাইক্রোসফটের একটি সফটওয়্যার তাই এটিতে সিকিউরিটি নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকছে না। এটি আপনার পিসির পারফরম্যান্স বুস্ট করার পাশাপাশি আপনার সিস্টেমের একটি ভালো প্রোটেকশন দেবে। এছাড়াও এর আরো উল্লেখযোগ্য ফিচারগুলোর মধ্যে পড়ে আপনার পিসিতে থাকা বড় বড় ফাইলগুলো ম্যানেজ করা, এন্টিভাইরাস প্রোটেকশন দেওয়া ও আপনার সিস্টেমের কোন আপডেট আসলে তা সম্পাদনা করা।
তবে প্রত্যেক জিনিসের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা থাকে। এর সব থেকে বড় অসুবিধা হলো এটি শুধুমাত্র windows 10 এবং windows 11 এর সাথে সাপোর্টেট। আপনার পিসিতে যদি windows xp কিংবা windows 7 থাকে অথবা অন্য কোনো সিস্টেম থাকে তবে আপনি সফটওয়্যারটি রান করতে পারবেন না। তাই এটি লো এন্ড পিসির সাথে পুরোপুরিভাবে কম্পোটিবল বলা যায় না। এটি ইন্সটলের জন্য লিংকে করতে পারেন অথবা মাইক্রোসফট স্টোর এর সার্চ বার থেকে খুঁজে এটি ইনস্টল করতে পারেন। শুধুমাত্র এক ক্লিকে ডাউনলোড থেকে ইন্সটল হবে। তারপরে স্টার্ট মেনু থেকে এটি রান করুন। এটি রান হওয়ার পর বুস্ট বাটনে ক্লিক করলে এক ক্লিকেই আপনার পিসির সকল জাঙ্ক ফাইল এবং র্যাম বুস্ট করে অপ্টিমাল কন্ডিশনে নিয়ে আসবে।
আমাদের লিস্টে তিন নাম্বার এবং সব থেকে পুরাতন সফটওয়্যার এর নাম হল সি ক্লিনার। প্রায় ২০ বছর সাফল্যের সাথে সি ক্লিনার সফটওয়্যার টি ভালো একটি অপটিমাইজার হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। আপনি জেনে অবাক হবেন এই সফটওয়্যারটি ইউজার সংখ্যা প্রায় ২.৫ বিলিয়ন এবং এটির ভিতরে ষাটটিরও অধিক ভাষার সাপোর্ট রয়েছে। এটি মূলত কম্পিউটারের চারটি দিকে ফোকাস করে। জাঙ্ক বা টেম্পোরারি ফাইলগুলোর রিমুভ করা, পিসির পারফরমেন্স বৃদ্ধি করা, পিসির স্টোরেজ স্ক্যান করে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলোকে ডিলিট করে জায়গা বৃদ্ধি করা এছাড়া পিসির ছোটখাটো সমস্যাগুলোকে সলভ করা।
একই সাথে এই চারটি জিনিস প্রোভাইড করার জন্য এটি ইউজারদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটির আরেকটি ভালো দিক হল কম্পিউটারের সাথে সাথে এটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও ভালো সাপোর্ট দেয়। আমরা যেমনটা জানি, প্রত্যেকটি জিনিসের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা থাকে। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এটি সব থেকে বড় অসুবিধা হলো এটি একটি পেইড সফটওয়্যার। তবে আপনি ফ্রিতেও এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আপনি সফটওয়্যার এর সকল ফিচারগুলো উপভোগ করতে পারবেন না। সকল ফিচারগুলো পেতে চাইলে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের লাইসেন্স ক্রয় করতে হবে আপনাকে।
তাছাড়া এটি তুলনামূলক কিছুটা বড় সফটওয়্যার হয় একদম লো অ্যান্ড পিসির জন্য এটি পারফেক্ট না। ডাউনলোডের জন্য সিমপ্লি লিংকে ক্লিক করে চলে যান ডাউনলোড পেইজে। সেখান থেকে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন সফটওয়্যারটি। তারপর ইন্সটল করে নিন অন্যান্য সাধারণ সফটওয়্যারগুলোর মতই। ইনস্টল হওয়ার পরে এটি রান করুন ভেতরে ঢুকলে দেখতে পারবেন স্ক্যান অপশন। স্ক্যান করা হয়ে গেলে মেক ইট বেটার অপশনে ক্লিক করে আপনার পিসিকে অপটিমাইজ করতে পারবেন।
Official Website @ CCleaner
লিস্টে থাকা ৪র্থ নাম্বার সফটওয়্যারটির নাম ওয়াইজ মেমোরি অপটিমাইজার যা একটি র্যাম ক্লিনার। শুধুমাত্র র্যাম অপটিমাইজ করার মাধ্যমে এটি আপনার পিসিকে ভালো পারফরম্যান্স এনে দিতে সক্ষম। সাধারণত যেসব পিসিগুলোতে র্যাম এর স্বল্পতা থাকে সেসব পিসিতে এটি দারুণ ভাবে কার্যকরী। এটিতে র্যাম ক্লিন করার পাশাপাশি র্যাম ফ্র্যাগমেন্ট অপশন পেয়ে যাবেন। এটিও খুবই ছোট সাইজের একটি সফটওয়্যার। সাইজ প্রায় ৫ এম্বির আশেপাশে। এটির ভেতরের ইন্টারফেস খুবই সিম্পল হওয়ায় শুধুমাত্র এক ক্লিকে র্যাম ক্লিনআপ ও র্যাম ফ্র্যাগমেন্ট করতে পারবেন। পিসির ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার অটোমেটিক্যালি রান হতে থাকে।
যার কারণে র্যাম এর উপরে চাপ পড়ে। এসব অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার গুলোকে ওয়াইজ মেমোরি অপটিমাইজার বন্ধ করে দেয়। যার ফলে পিসির উপরে থাকা চাপ কমে যায়, র্যাম এর কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে পিসির পারফর্মেন্স এ এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। কিন্তু এটি দিয়ে আপনি শুধুমাত্র র্যাম ক্লিন করতে পারবেন। র্যাম এর পাশাপাশি বিভিন্ন হিস্টোরি ফাইল, টেম্পোরারি ফাইল, জাঙ্ক ফাইল এসব ক্লিন করতে পারবেন না। তাই এই সফটওয়্যারটি আপনার স্টোরেজ পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করতে সক্ষম নয়। এটি ডাউনলোডের জন্য সিম্পলি ডাউনলোড লিংকে ক্লিক করুন।
তারপর পেজ থেকে Free Download অপশন এ ক্লিক করুন। এটি ডাউনলোড হওয়া শুরু করবে। তারপর ডাউনলোড হওয়া.exe ফাইলটি ওপেন করুন এবং অন্যান্য সফটওয়্যার এর মতোই ইন্সটল করে নিন। ইনস্টল শেষ হলে সফটওয়্যার টি রান করুন। এর ভেতরে ইন্টারফেস টি খুবই সিম্পল। সবুজ কালার অপটিমাইজ বাটনে ক্লিক করুন ব্যাস এক ক্লিকে আপনার পিসির র্যাম ক্লিন করে এবং রেম ডিফ্র্যাগমেন্ট করে আপনার পিসিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে এটি।
Official Download @ Wise Memory Optimizer
সব থেকে সেরা অপটিমাইজার সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে সর্বশেষ সফটওয়্যারটির নাম হল Mem Reduct. এই সফটওয়্যারটি আমাদের লিস্টে থাকা সব থেকে ছোট সফটওয়্যার। আপনি জেনে অবাক হবেন এই সফটওয়্যার এর সাইজ মাত্র ৩০০ কেবির আশেপাশে। এ সফটওয়্যারটিও আপনার পিসির র্যামকে বুস্ট করতে সক্ষম। র্যাম ক্লিন আপ এর পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডে রান করতে থাকা অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার বন্ধ করে দেয়। ফলে পিসি শুধুমাত্র আপনার কাজ করা সফটওয়্যার এর দিকেই ফোকাস করতে পারে। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং ওপেনসোর্স একটি সফটওয়্যার। তাই এটির সিকিউরিটি নিয়ে আমাদের কোনো টেনশন করতে হচ্ছে না। আগের সফটওয়্যার এর মতো এইটির ও ইউজার ইন্টারফেস খুবই সিম্পল। জাস্ট এক ক্লিকের মাধ্যমে আপনার পিসিতে রান হতে থাকা অদরকারী সফটওয়্যারগুলো বন্ধু করে র্যামকে ক্লিন করবে এটি।
এটিও আগের সফটওয়্যার এর মতই শুধুমাত্র র্যাম ক্লিন করে আপনার পিসির পারফর্মেন্স বুস্ট করে। এইখানে আপনার পিসির স্টোরেজ এ জমে থাকা জাঙ্ক ফাইল সহ অদরকারী ফাইলগুলো রিমুভ করতে পারবেন না। তবে এটি সাইজে ছোট হওয়ায় লো কনফিগারেশনের পিসিতে খুবই স্মুথ পারফর্মেন্স দিতে সক্ষম। এটিও ডাউনলোড এর জন্যে উপরে দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন। তারপর ডাউনলোড কমপ্লিট করে memreduc.exe ফাইলটি ওপেন করে ইন্সটল করে নিন। তারপর সফটওয়্যারটি রান করে Clean Memory বাটনে ক্লিক করুন। প্রথম ক্লিকে এডমিনিস্ট্রেট পারমিশন চাইতে পারে। তারপর আবার ক্লিক করুন Clean Memory বাটনে। এক ক্লিকেই আপনার পিসির ব্যাকগ্রাউন্ড সফটওয়্যার গুলো বন্ধ করে দিবে এবং র্যামে জমে থাকা সব টেম্পোরারি ফাইলগুলো ক্লিন করে দিবে।
Official Website @ Mem Reduct
উপরের আলোচনা করা পাঁচটি অপটিমাইজার সফটওয়্যার এখন পর্যন্ত অনলাইনে থাকা থেকে বেস্ট অপটিমাইজার। আপনি যদি আপনার পিসির জন্য ভালো একটি অপটিমাইজার সফটওয়্যার নির্বাচন করতে না পারেন তবে সেটি ব্যবহারে আপনার কোন সুবিধা করতে পারবেন না। পিসির পারফরম্যান্স বুস্ট না করে উলটো পারফর্মেন্স ডাউন করে দিবে। তাই ভালো একটি অপটিমাইজার সফটওয়্যার নির্বাচন করা আমাদের দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপরের পাঁচটি সফটওয়্যার থেকে প্রত্যেকটা আপনার পিসিতে ইন্সটল করে দেখতে পারেন। প্রত্যেকটা সফটওয়্যার খুবই ভালো রেজাল্ট দিবে। এগুলো সম্পূর্ণ ফ্রি এবং সাইজেও ছোট ছোট সফটওয়্যার।
আর এগুলো বড় বড় সব প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত বিধায় পিসির সিকিউরিটি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করা যায় না। তাই দেরি না করে ডাউনলোড করে ফেলুন আপনার উপরে পছন্দের অপটিমাইজার সফটওয়্যার এবং আপনার পরিচালনার এক নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ নিন। এতক্ষণ ধৈর্য নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তা টিউমেন্ট করে জানাবেন। আপনার করা মন্তব্যটি গঠনমূলক হলে তা অবশ্যই আমি আমার টিউনে যুক্ত করে নেব। এছাড়াও কম্পিউটারের পারফরম্যান্স বাড়ানোর নির্দিষ্ট কোন সফটওয়্যার রিভিউ চাইলে সেটা টিউমেন্ট করে জানাবেন। যদি সম্ভব হয় তাহলে সে বিষয়েও আমি রিভিউ আনবো ইনশাআল্লাহ।
তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, পিসির পারফরম্যান্স বাড়ানোর সেরা ৫ টি সফটওয়্যার! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।