আসসালামুআলাইকুম। সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভাল। বেশ কয়েকদিনের পর আজকে আবার একটি টিউন নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের সবার এই টিউনটি ভাল লাগবে এবং আপনাদের কাজে আসবে। আজকে মূলত সিস্টেম ব্যাকআপ নিয়ে আলোচনা হবে এবং এর জন্য সাহায্যকারী কিছু টুলস নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
আমরা প্রতিদিন আমাদের অসংখ্যা প্রয়োজনীয় ফাইল, যেমনঃ ডকুমেন্ট, ছবি, গান, ভিডিও আমাদের স্টোরেজে জমা করি। বেশি গুরুত্বপূণ গুলো ক্লাউড স্টোরেজে রাখি এবং বাকি অনেক ফাইলেই আমাদের লোকাল স্টোরেজে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত কারণে হয়তো বা আমাদের লোকাল স্টোরেজগুলো অনেক সময় ক্রেশ ও করে। এতে স্টোরেজে থাকা ফাইল গুলো সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। যেগুলো পরবর্তী তে আর রিকোভারী করা সম্ভব হয় না, যার কারণে পুরাতন কাজগুলোই আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। তাই আমি আপনাদের সাথে আজকে এমন কিছু পোর্টেবল মিনি সফটওয়্যার শেয়ার করবো যার দ্বারা আপনি আপনার স্টোরেজ সিস্টেম ইমেইজ ব্যাকআপ খুব সহজেই নিয়ে রাখতে পারেন।
আপনি আপনার কম্পিউটারের Windows ইমেজিং Tool, Acronis TrueImage, EaseUS Todo Backup, Macrium Reflect ইত্যাদির সাহায্যে ব্যাকআপ নিতে পারেন কিন্তু এগুলো উচ্চতর ব্যবহারকারীদের জন্য। কিন্তু আপনার লোকাল ডিস্ক যদি কোন কারণে ক্রেশ করে বা কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায় তখন এই সফর্টওয়্যার গুলির থেকে ব্যাকআপ রিস্টোর করা প্রায় সম্ভব হয় না। যখন আপনার পিসির ফাইল ক্রেশ করে ডিভাইস বুট করে না তখন আপনার ডিভাইসটি ইমেজিং সফটওয়্যারের রেসকিউ মিডিয়ার সাথেই বুট করাতে হয়। যা আপনাকে একটি সিস্টেম ইমেজ সিলেক্ট করে এবং আপনার ইমেইজ তৈরি করার মাধ্যমে এটি আপনার সিস্টেমকে ফিরিয়ে আনে আগের অবস্থায়।
আরেকটু সহজ ভাবে বুঝাতে গেলে সিস্টেম ইমেজিং ব্যাকআপ হচ্ছে আপনার অন্যান্য ফোল্ডারিং ব্যাকআপ। যেমনঃ শুধু ভিডিও ব্যাকআপ বা ছবি, গান বা ডকুমেন্ট এর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ এর দ্বারা আপনার পুরো হার্ডড্রাইভ বা পার্টিশনই ব্যাকআপ হয় যা হচ্ছে এর গঠন এবং শুধু ডিভাইস এর ফাইল বা ফোল্ডার না বরং এর দ্বারা সম্পূর্ণ অবস্থারেই ব্যাকআপ নেওয়া হয়। শুধু তাই না অনেক সময় সিস্টেম সফ্টওয়্যার গুলো আপনার USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ, ডিজিটাল ক্যামেরা বা এমপি থ্রি প্লেয়ার গুলোর ব্যাকআপ নিতে দেয় না আর আপনিও এই ছোট ড্রাইভগুলোর ব্যাকআপ রাখেন না কারণ এই এগুলোর সাইজেই অনেক কম, ব্যাকআপ রাখার চেয়ে আপনি কপি করেই আপনার লোকাল ড্রাইভে রাখতে পারেন। আর এই ছোট কাজের জন্য বড় সাইজের সিস্টেম ব্যাকআপ থার্ড পার্টি সফর্টওয়্যার ব্যবহারও বিরক্তি কর এবং এতে আপনার পিসির র্যামের উপরও অনেক প্রেসার পরে। কিন্তু আমি আজকে আপনাদের নিচে যে সফটওয়্যার গুলো দিচ্ছি তা পোর্টেবল যাতে সাইজ একদম কম এবং এর সাহায্য আপনি হার্ডড্রাইভ লোকাল ডিক্স থেকে শুরু করে যে কোন ফ্ল্যাশ ড্রাইভ এর সিস্টেম ইমেইজ ব্যাকআপ ও খুব সহজেই নিতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
PassMark সফ্টওয়্যার খুব ভাল ভাবে ড্রাইভের পার্রফমেন্স এবং বার্ণইন টেষ্ট করে। এই ছোট সফটওয়্যারটির কয়েকটি খুব অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি যেকোন USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে সিস্টেম ইমেইজ রিড করা এবং সিস্টেম ব্যাক আপ তৈরি করতে পারে, এবং একটি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে অথবা একাধিক ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকেও একটি সিস্টেম ইমেইজ ব্যাকআপ রিস্টোর করে ফিরে যেতে পারে।
এই পোর্টেবল সফটওয়্যারটি দিয়ে আপনার ইমেইজ ব্যাকআপের জন্য ছোট কয়েকটি স্টেপ অতিক্রম করতে হবে। এই টুলসটি ইউজার ফ্রেন্ডলি তাই বুঝতে কোন সমস্যা হবে না আশা করি। এবং কোন স্টেপ কোনটার পরে হবে সবেই এখানে উল্লেখ আছে। প্রথমে আপনি আপনার ফ্লেশ ড্রাইভ সার্চ করুন এবং ড্রাইভ সিলেক্ট করুন। তারপর আপনি UFD ক্রিয়েট এটি সিলেক্ট করুন এবং তারপরে কোথায় ব্যাকআপের .BIN ফাইলটি সেইভ হবে সেটা ব্রাউজ করে সিলেক্ট করুন। তারপর শেষ স্টেপ ক্রিয়েট ইমেজ এ ক্লিক করুন এবং তারপর দেখবেন অভারঅল প্রসেস এ আপনার কাজ হচ্ছে এবং প্রসেস শেষ হলে আপনাকে ফাইল দেখিয়ে দিবে।
এখন ফাইলটি ডাউনলোড করুন এখান থেকে।
এটি আরেকটি ইমেইজ ব্যাকআপ মিনি পোর্টেবল সফটওয়্যার। এটি চরম ইউজার ফ্রেন্ডলি আপনি এক ক্লিকেই আপনার কাজ শেষ করতে পারবেন। এটির একটি সুবিধা যে এটি শুধু আপনার ইউএসবি স্টোরেজের ডিভাইস এই নয় বরং আপনার অন্যান্য ড্রাইভ গুলোর ব্যাকআপ গুলোও খুব সহজে নেয়। এই জন্য আপনাকে প্রথমে টুলসটি অপেন করে দুইটি ট্যাব পাবেন একটি রাইট ইমেইজ এবং অন্যটি স্টোর ইমেইজ, আপনার যেটার দরকার আপনি যেটা সিলেক্ট করবেন। তারপর আপনি রিড ইমেইজ এ ড্রাইভ সিলেক্ট করেন এবং তারপর টার্গেট ফাইলে কোথায় ফাইলটি .IMG ফরমেটে সিলেক্ট হবে সেটা সিলেক্ট করেন। এবং তারপর ক্লিক স্টার্ট এ ক্লিক করেন ব্যাস আপনার কাজ শেষ এবং দেখবেন কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনার সাকসেসফুল উইন্ডো চলে আসবে। সর্বপরি এটি অতন্ত ইউজফুল, মিনি, ফ্রেন্ডলি এবং কার্যকরী একটা টুলস ব্যবহার করে দেখতে পারে।
USB Image Tool হচ্ছে আরেকটি জনপ্রিয় এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি টুলস যার দ্বারা আপনি আপনার ইউএসবি মেমোরি স্টিক, এমপি থ্রি প্লেয়ার এবং যেকোনো স্টোরেজ ডিভাইসের ফুল ইমেজ তৈরি করতে পারে যা USB ড্রাইভ হিসাবেই মাউন্ট করা হবে। এই টুলসটিতে একটি ড্রপ ডাউন এর বিকল্প আছে যা আপনাকে পুরো ইউএসবি ড্রাইভের একটি ইমেইজ বা ডিভাইসের প্রথম ভলিউম এড এর মধ্যে বেছে নিতে সাহায্য করবে। এই টুলসটিতে আপনি লোকাল ড্রাইভ সিলেক্ট করতে পারবেন না আপনাকে কেবল USB ড্রাইভ নির্বাচন করতে হবে।
টুলসটি ইউস করতে আপনি প্রথমে টুলসটি অপেন করুন এখন আপনার ইউএসবি ডিভাইসটি সিলেক্ট করুন এবং তারপরে ব্যাকআপ এ ক্লিক করুন এবং আপনার ফাইলের নাম এবং যেকোন ফোল্ডার সিলেক্ট করুন।
এই ইমেজ টুলটি ডিফল্টভাবে ফাইলগুলো এনালাইস করে .IMG ফাইলের ড্রাইভ গুলি ব্যাকআপ করে। আপনি যদি ইচ্ছা হয় তবে এই টুলসটি আপনাকে সরাসরি জিপ করার ও সুবিধা দেয়, যেমন এতে আপনি (.IMZ) ও GZip কম্প্রেসড করে ফাইল ডিফল্ট ভাবেই সেইভ করতে পারেন। তাছাড়া আপনি এটাতে MD5 ফাইলেও সেইভ করতে পারেন। এখন ব্যাকআপ হতে সময় একটু বেশি নিতে পারে তবে আপনি ফাইল কমিয়ে সাইজ কমাতে পারেন এতে সময় অবশ্যই কম লাগবে।
টুলসটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন
এই টুলসটি আমার দেখা সেরা টুলস। এটি মাধ্যমে একটি দিয়ে অনেক কাজেই করা অথাৎ বিল্ট এন ভাবে এখানে ডিভাইস ব্যাকআপ এর পাশাপাশি অন্যান্য আরো ফাংশন এড করা যেমন বুটলোডার, ভেরিয়াস অপারেটিং সিস্টেম ইনটু ইউবি, টেস্ট ডিভাইস রাইট স্পিড, ড্রাইভ রান চেক এবং ইউএসবি ডিভাইস কাজ করছে কিনা তাও আপনি এই টুলস এর মাধ্যমে চেক করতে পারেন।
এই টুলসটির বহুবিদ ব্যবহার থাকলেও এর দ্বারা আপনি ইমেজ ব্যকআপ নেওয়া খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। আপনি যখন এই টুলসটি ইনস্টল করে অপেন করবেন তখন দেখবেন আপনার সামনে উপরের ছবির মত একটু ইউন্ডো আসবে। আপনি রিফ্রেশ বাটন এ ক্লিক করলে আপনার ড্রাইভ আসবে এবং তারপর ব্যাকআপ নেওয়ার জন্য ড্রাইভ সিলেক্ট করুন এখন Image Tools এর মধ্যে File->Drive এবং Drive->File দুইটি অপশন পাবেন। ব্যাকআপের জন্য Drive->File সিলেক্ট করুন ও রিস্টোর এর জন্য File->Drive এ দিতে হবে। তাছাড়া এই টুলসটিতে ডানদিকে দেখুন অন্যান্য অনেক অপশন আছে যা আপনি প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে পারবেন। এখন ব্যাকআপ ফাইল আপনি .IMG এবং .BIN ফরমেটে সেইভ করতে পারবেন এবং ইচ্ছা করলে জিপ করেও রেখে দিতে পারেন।
ডাউনলোড করুন এখান থেকে
আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কস্পিউটার এবং স্মার্টফোন একটি অপরিহার্য বস্তু এগুলো ছাড়া এখন আমাদের এক মূহুর্ত ও আর চলে না এবং তথ্য প্রযুক্তির এই দিতে জীবন সহজ থেকে সহজতর করছে এই স্মার্ট ডিভাইসগুলো। আপনার সারা জীবনের স্মৃতি ধরে রাখতে পারবেন এই ডিভাইসগুলোতে, যাতে আপনাকে সাহায্য করবে স্টোরেজ গুলো। কিন্তু কোন কারণে যদি সেগুলো নষ্ট হয়ে যায় বা হারিয়ে যায় এবং তা যদি ফিরিয়ে আনা না যায় তবে সত্যিই সেগুলোর যায়গা আর পূরন হয় না। সেই জন্য আশা করি আজকের টিউনটি এবং এখানের টুলস গুলো আপনাদের কাজে লাগবে। যদি কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয় এবং ভাল ভাবে কাজ করতে না পারেন তবে অবশ্যই টিউমেন্ট করবেন এবং সবার সাথে টিউন আশা করি শেয়ার করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।
আমি Readul Haque। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 41 টি টিউন ও 268 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।