সফটয়্যার নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক আগে থেকেই।আমি গত ৮ বছরে খুব কম করে হলেও ১০০০০ এর উপরে সফটয়্যার ডাউনলোড করে আমার কম্পিউটারে ইনসটল করে ট্রাই করে দেখেছি।এর মধ্যে কতবার যে কত সফটয়্যার ভাইরাস যুক্ত হওয়ার কারণে রান করার সাহস পায়নি তার ইয়ত্তা নেই।অনেকেই এই কারণে ডীপ ফ্রিজ ব্যাবহার করেন।কিন্তু আমার মতে ডীপ ফ্রিজ পুরাপুরি সমাধান দেয়না কারন কোন কারনে যদি আপনি মনের ভুলে desktop বা C ড্রাইভ -এ কোন ফাইল সেভ করে ফেলেন তাহলে পিসি রিস্টার্ট দেওয়ার পরে তো শেষ (যদি আপনি অপশন এ C ড্রাইভ এ চেক করে রাখে,সাধারণত সকল হোম ইউজার C ড্রাইভ -ই চেক করে রাখেন।শুধুমাত্র সাইবার ক্যাফেতে সব ড্রাইভেই চেক করে রাখে।)।
অনেক খোজাখুজির পরে অবশেষে আমি এমন একটি সফটয়্যার পেয়েছি যারা আমার মতো সফটয়্যার নিয়ে গুতাগুতি করেন তাদের জন্য খুব কাজে দিবে।এই টিউনটি লেখার আগে আমি একটি টিউন পড়ছিলাম যেখানে দুইজন টিউনার নিতান্ত ভালো মানুষ বলে আরেকজনকে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন কিন্তু সফটয়্যারটি ভাইরাস কিনা একমত হতে পারছিলেন না।উনাদেরকে বলছি ঐ ফাইলটা ভাইরাস।তারপরেও আমি এই সফটয়্যারটি দিয়ে চেষ্টা করে দেখেছি রান করানোর কিন্তু রান করে নাই। যাই হোক আমি আমার আগের কথাই ফিরে যাই।
আজকে যে সফটয়্যারটির কথা আমি বলবো সেটির নাম sandboxie। এইখানে টিউন করার আগে আমি গুগল একটা মাত্র কি ওয়ার্ড লিখে খুজে দেখলাম এই সফটয়্যারটি নিয়ে টিটিতে কোন টিউন হয়েছে কিনা (অনেকেই হয়তো আমার টেকনিকটা জানেন আর কেউ যদি না জেনে থাকেন সমস্যা নেই আমি পড়ে সময়মতো জানিয়ে দিবো)?কিন্তু কোন টিউন পেলাম না।তাই নির্দ্বিধায় সবার সমস্যা সমাধানের জন্য এই টিউন লেখা শুরু করে দিলাম।
- ১) প্রথমেই সফটয়্যারটি ডাউনলোড করুন এইখান থেকে।
- ২)এইবার আপনার কম্পিউটারে winrar ইনসটল করা থাকলে ডাউনলোডকৃত ফাইল unrar/extract করুন(যদি winrar আপনার কম্পিউটারে ইনসটল করা না থাকে তাহলে ইনসটল করে নিন,আর winrar যদি আপনার হার্ড ড্রাইভেই না থাকলে এইখান থেকে ডাউনলোড করুন)
- ৩) ডাউনলোডকৃত ফাইল unrar/extract করার পরে দেখবেন eatsb350 নামে একটা ফোল্ডার আছে যার অভ্যন্তরে sandboxieInstall32_3.50.exe নামে একটা ফাইল আছে আর crack নামে একটা ফোল্ডার আছে
- ৪) এইবার অন্যান্য সাধারণ সফটয়্যারের মতোই sandboxieInstall32_3.50.exe ফাইলটি ডাবল ক্লিক করে ইনসটল করুন।
- ৫) এখন crack ফোল্ডারটির ভেতরে ঢুকুন।দেখবেন SbieDll.dll,SbieDrv.sys,SbieMsg.dll,SbieStop নামে ৪টি ফাইল আছে।
- ৬) এইবার SbieStop ডাবল ক্লিক করুন।দেখবেন একটি কমান্ড প্রম্পট উইন্ডো ওপেন হয়েছে।Press Any Key to Continiue লেখাটি যতক্ষন না দেখাচ্ছে অপেক্ষা করুন।মুলত SbieStop এ ডাবল ক্লিক করা হয় যাতে ঐ সফটয়্যার এর রানিং প্রসেস SbieSvc.exe অথবা SbieCtrl.exe যদি চালু অবস্থায় থাকে তাহলে বন্ধ হয়।অনেক ক্ষেত্রে যেমন যারা ভিসতা বা উইনডোজ সেভেন ব্যাবহার করেন তাদের জন্যে এই পদ্বতি কাজ নাও করতে পারে।সেক্ষেত্রে এই টিউনটি দেখুন কিভাবে কোনো চালূ প্রসেস ফাইল ডিলেট করবেন।
- ৭) এইবার SbieDll.dll,SbieDrv.sys,SbieMsg.dll এই ফাইল ৩টি কপি করে C:\Program Files\Sandboxie এইখানে পেষ্ট করুন (যদি আপনি ডিফ্লট ইনসটলেশন ফোল্ডারে ইনসটল করে থাকেন,আর যদি অন্য কোন কাষ্টোমাইযড ফোল্ডারে ইনসটল করে থাকেন তাহলে সেখানে ঐ ৩টি ফাইল পেষ্ট করুন)।যেহেতু একি নামের ৩টি ফাইল ঐ ফোল্ডারে আগে থেকেই আছে সেহেতু ওভার রাইট অপশন আসবে,সুতরাং ওভার রাইট করার জন্যে পারমিশন দিন।
- ৮) এইবার আপনার কম্পিউটারটই রিস্টার্ট দিন।
- ৯) চালু হবার পর যে ফাইলটি/প্রোগ্রাম আপনার ভাইরাস বলে সন্ধেহ হচ্ছে তার উপরে মাউসের রাইট ক্লিক করে run sandboxed ক্লিক করুন(যদি আপনি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে দেখবেন যেই ফাইলটি/প্রোগ্রাম রান করেছেন তার নাম এর সামনে আর পিছনে দুইটা হ্যাস চিহ্ন # দেখাবে ,আর একটা ব্যাপার যদি কোন কারনে কখনো recover করতে বলে তাহলে পরিস্থিতি বুঝে recover এর জন্য পারমিশন দিবেন না।যেমন মনে করুন আপনি sandboxed অবস্থাই firefox রান করেছেন আর কোন হ্যাকার সাইট থেকে কিছু ডাউনলোড করেছেন সুতরাং এইটা আপনার কাছে recover এর জন্যে পারমিশন চাইবে,যেহেতু আপনি পারমিশন দিয়ে ঐ ফাইল recover করে পরে ঐটা আবার sandboxed করে ব্যাবহার করতে পারবেন কিন্তু ধরেন যদি এইরকম হয় যে একটা ভাইরাস ইনফেকটেড ফাইল আপনি sandboxed করে রান করেছেন আর এইটার কিছু ফাইল recover এর জন্যে পারমিশন চাইছে তখন খেয়াল করে দেখবেন উইখানে অন্য কোন executable file বা exe ফাইল recover এর জন্যে পারমিশন চাইছে কিনা,চাইলে সরাসরি না দিয়ে দিন,কারন yes দেওয়া মানে sandboxed এনভারনমেন্ট থেকে আপনার সিস্টেমে ঐ ট্রোজান/ভাইরাস প্রবেশ করা।এইকারনে সাধারণত recover এর জন্যে পারমিশন চাইলে না করাটাই উত্তম)।
- ১০)বাস যামেলা শেষ।যত মারাত্নক ভাইরাস-ই হোক না কেন আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা(hackproof বলে পৃথিবীতে আসলেই কিন্তু কিছু নেই তারপরেও মোটামুটি ৯৫% গ্যারান্টি যে আপনাকে কোন ভাইরাস এফেক্ট করবেনা।আর যারা এই ৫% রিস্ক নিতে চান না দয়া করে ডাউনলোড করবেন না)।
এই সফটয়্যারটির আরেকটি মারাত্মক ফিচার হচ্ছে আপনার যেকোন ইন্টারনেট ব্রাউজার ও আপনি sandboxed করে ব্যাবহার করতে পারবেন যাতে ইন্টারনেট থেকে আপনার ব্রাউজারকে কোন স্পাইয়্যার আক্রমন করলেও আপনি থাকবেন সুরক্ষিত,আজকে এই পর্যন্তই।ভালো লাগুক আর নাই লাগুক কমেন্ট করতে ভুলবেন না।কারণ আপনাদের কমেন্ট ই পারে আমাদের উৎসাহ দিতে আরো ভালো কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে।আমি গ্রামীন এর p6 ব্যাবহার করছি বলে কোন স্ক্রিনশট দিতে পারলাম না,আর সে কারণেই এতো বিশদ ভাবে লিখেছি।তারপরেও যদি কারো কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশন এ করুন।আমি যত তাড়াতাড়ি পারি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।সবাই ভালো থাকবেন এই আশা করে আজকের টিউন এখানেই শেষ করছি।
অফট্র্যাকের কিছু কথা আছে বলে সেগুলো টিউনে না লিখে এইখানে কমেন্ট সেকশনে লিখলাম।আশা করি আমার টিউন যখন পড়তে এসেছেন আমার লেখা কিছু অফট্র্যাক পড়তেও আপনাদের আপত্তি থাকবে ।টেকটিউনস এ আসার জন্য যে মানুষটা আমাকে অনুপ্রানিত করেছেন তিঁনি হচ্ছেন কল্পতরু।আর যে মানুষটার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য মুলত এইখানে সাইন আপ করা তিনি হচ্ছেন আপনাদের সবার প্রিয় আতাউর ভাই।আতাউর ভাইয়ের জন্য একটা কথা বলি – ভাই আমি আমার এই ছোট জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি কিন্তু আপনার মতো এরকম অসাধারণ মানুষ দেখেছি কিনা সন্ধেহ?টিউনার আর টিউন যেরকম-ই হোক না কেন আপনি খুব পজিটিভলি উৎসাহ দিয়ে যান…ভাই মানুষের জন্য অনেক করেও সামান্য একটা ধন্যবাদ পাওয়া যেখানে দুষ্কর সেখানে আপনি আপনার ব্যস্ত জীবন থেকে সময় বের করে কম বেশি সব পোষ্টেই পজিটিভ কমেন্ট করেন।উনার চোখ না এড়ালে আমার প্রথম পোষ্টেই যে এর ব্যাতিক্রম হবে না এই আশা করি।সবশেষে একজনকে শুধু ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য আমি টেকটিউনস এ সাইন আপ করব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।তিনি হচ্ছেন হিমায়িত দিহান।তার টরেন্ট নিয়ে লেখা মগাটিউনটি পড়ে আমি অনেক কিছু জেনেছি।সেই জন্যে তাকে আমার এই পোষ্টেই ধন্যবাদ জানিয়ে দিচ্ছি।