সাইমুম সিরিজের সাথে আমার পরিচয় কৈশোরে। তখনও ক্লাসের বাইরে আউটবুক পড়ার সুযোগ আমার হয়নি। পাশের বাড়ির জাকির ভাইয়েরা কয়েক ক্লাস উপরে পড়তো। তাদের পড়ার টেবিলে পেলাম মিন্দানাওয়ের বন্দি। গুগল ফেসবুক বিহীন সেই সময়ে সাইমুম সিরিজের বইগুলো আমাকে অচেনা অদেখা পৃথিবীকে সামনে তুলে আনতো। আমি গোগ্রাসে গিলে যেতাম একটার পর একটা।
| সাইমুম-১ অপারেশন তেলআবিব ১ডাইরীর সাদা বুক। খস্ খস্ শব্দ তুলে এগিয়ে চলেছে একটি কলমঃ ‘… সিং কিয়াং-এর ধুসর মরুভূমি। দূরে উত্তর দিগন্তের তিয়েনশান পর্বতমালা কালো রেখার মত দাঁড়িয়ে আছে। অর্থহীনভাবে শুধু চেয়ে থাকি চারিদিকে। কোন কাজ নেই। জীবনের গতি যেন আমাদের স্তব্ধ হয়ে গেছে। |
| সাইমুম-২ অপারেশন তেলআবিব ২কায়রো। হোটেল নাইল। হোটেলের কফিখানা। কফিখানায় প্রবেশ করল আবদুল্লাহ জাবের। সাইমুমের কায়রো অপারেশন স্কোয়াডের প্রধান ইনি। তখন সন্ধ্যা সাতটা। কফিখানা ভর্তি। সামনের একটি টেবিলে একটি সিট খালি দেখতে পেল জাবের। টেবিলের ওপাশে আর একজন লোক বসা। পরণে নীল স্যুট। শ্যাওলা রং-এর টাই। আরবীয় ধরনের লম্বাটে রোদপোড়া মুখ। |
| সাইমুম-৩ মিন্দানাওয়ের বন্দীঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে চোখ খুলল আহমদ মুসা। হাত-পা নাড়তে গিয়ে একটুও পারল না। কঠিন ভাবে বাঁধা। মনে পড়ল তার, দু’জন লোক এসে প্রথমে আবদুল্লাহ হাত্তাকে একটি ইনজেকশন দিল, তারপর তাকেও একটি। তারপর কি ঘটেছে কিছুই জানে না সে। পাশ ফিরে শুতে চেষ্টা করল আহমদ মুসা। |
| সাইমুম-৪ পামিরের আর্তনাদজমাট অন্ধকার। এই জমাট অন্ধকারে সোলো সাগরের কাল বুক চিরে তীব্র বেগে এগিয়ে চলেছে একটি বোট। উপরে তারার দিকে চেয়ে দিক নির্ণয় করছে ড্রাইভার। শেডে ঢাকা একটি ম্লান আলোর সামনে রাখা মানচিত্র দেখে ড্রাইভারকে মাঝে মাঝে পথের নির্দেশ দিচ্ছেন আহমদ মুসা। আহমদ মুসার চোখে ইনফ্রারেড গগলস। এক সময় আহমদ মুসা মানচিত্র থেকে মুখ তুলল। |
| সাইমুম-৫ রক্তাক্ত পামিরপামির সড়ক ধরে হিসার দূর্গের দিকে তীর বেগে ছুটে আসছিল ‘ফ্র’ এর একটি জীপ। ইয়াকুবের কাছ থেকে ওয়্যারলেসে খবর পেয়ে ‘ফ্র’ আহমদ মুসাকে ধরার জন্য আরেকজন কর্ণেলের নেতৃত্বে একটি টীম পাঠিয়েছিল হিসার দূর্গে। ‘ফ্র’ জানত, হিসার দূর্গ থেকে প্রকাশ্য প্রতিরোধের কোন সম্ভাবনা নেই এবং ও টিমটাই যথেষ্ট। তবু ‘ফ্র’ কর্মকর্তারা আশ্বস্ত হতে পারেনি, |
| সাইমুম-৬ রক্ত সাগর পেরিয়েসেদিন প্রতিদিনের মতই পিয়ালং উপত্যকার জীবন শুরু হলো। উপত্যকার ও পাহাড়ের গা বেয়ে কয়েক’শ তাঁবু। উপত্যকার বড় তাঁবু থেকে আজানের ধ্বনি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার সংগে সংগে তাঁবুগুলো জেগে উঠল। পুরুষরা ওজু করে মসজিদে গেল। মেয়েরা আবার তাবুর ভেতরেই ফিরে গেল। বাচ্চারা তখনও ঘুমে। মেয়েরা নামাজ সেরে কেউ গড়িয়ে নিচ্ছিল, কেউ বা তাবুর বাইরে এসে |
| সাইমুম-৭ তিয়েন শানের ওপারেআব্দুল গফুরের বাড়ি থেকে তারা মাত্র কয়েক’শ গজ এগিয়েছে। হেলিকপ্টারের কাছে পৌঁছতে এখনও অনেকটা পথ বাকী। হাসান তারিক আগে আগে চলছিল, পেছনে আব্দুল্লায়েভ। রাস্তার দু’ধারে আব্দুল্লায়েভদের গমের ক্ষেত। বলিষ্ঠ সবুজ গমের গাছগুলো দু’ফুটের মত লম্বা হয়ে উঠেছে। সামনে রাস্তার ডানপাশে একটা ঝোপ। উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টিটা সামনে ছড়িয়ে পথ চলছিল হাসান তারিক। |
| সাইমুম-৮ সিংকিয়াং থেকে ককেশাসউরুমচির ইবনে সাদ রোড ধরে পুর্বদিকে তীব্র গতিতে এগিয়ে চলছে শক্ত সমর্থ একটা হাই ল্যান্ডার জীপ। সন্ধ্যার অন্ধকার তখন রাস্তায় নেমে এসেছে। রাস্তার বিজলিবাতিগুলো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। সৃষ্টি হয়েছে শহর-জীবনের এক সনাতন আলো আঁধারী। অভিজাত আবাসিক এলাকা এটা। রাস্তায় লোকজন নেই বললেই চলে। ফুল স্পীডে এগিয়ে চলেছে আহমদ মুসার জীপ। জীপে মোট পাঁচটি সিট... |
| সাইমুম-৯ ককেশাশের পাহাড়েআরাকস হাইওয়ে ধরে ছুটে চলছিল আহমদ মুসার জীপ। বাকু থেকে পনের মাইল পশ্চিমে এসে নগরন-কারাবাখ সড়ক উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে গেছে। এখান থেকে আরেকটা হাইওয়ে বেরিয়ে গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমে একেবারে আরাকস নদীর তীর ঘেঁষে। এটাই আরাকস হাইওয়ে। আরাকস নদীর তীর ঘেঁষে এই হাইওয়ে এগিয়ে গেছে ইয়েরেভেনের পাশ দিয়ে আরও উত্তরে। ইয়েরেভেন পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচশ’ মাইলের এই সফর।... |
| সাইমুম-১০ বলকানের কান্নাআহমদ মুসা, আলি আজিমভ ও ওসমান এফেন্দী মেরীদের ঘরের সামনে আসতেই মেরী, মেরীর মা এবং সভেৎলানা দরজা খুলে বেরিয়ে এল। ওদের চোখে-মুখে আনন্দ। আহমদ মুসা মেরীদের দিকে তাকিয়ে বলল, হোয়াইট ওলফের কেউ আর এ ঘাটিতে বেঁচে নেই। এখন নিরাপদ তোমরা। তোমরা আর একটু অপেক্ষা কর এখানে। আলি আজিমভ ও ওসমান এফেন্দী ঘাটিটা একবার সার্চ... |
| সাইমুম-১১ দানিয়ুবের দেশেসিটনিক নদীর পশ্চিম তীরের হাইওয়ে ধরে ছুটে চলছিল মাজুভের জীপ। মনাস্তিরের কাছাকাছি আসার পর হাইওয়েটি বেঁকে পশ্চিম দিকে চলে গেছে। এখানে মাজুভদের সিটনিক পার হয়ে সিটনিকের পূর্ব তীরের হাইওয়ে ধরে মনাস্তির পৌঁছতে হবে। হাইওয়ের সেই বাঁকে এসে মাজুভের জীপ থামল। নদী পার হবার জন্যে রয়েছে ব্রীজ। ব্রীজটির বয়স বেশি নয়, |
| সাইমুম-১২ কর্ডোভোর অশ্রুমাদ্রিদ বিমান বন্দরের মাটিতে পা রাখতেই গোটা শরীরে একটা শিহরণ খেলে গেল আহমদ মুসার। সে শিহরণের মধ্যে একটা গৌরবও আছে, কিন্তু বেদনার ভাবটাই মুখ্য। সাতশ’ এগারো খৃষ্টাব্দে তারিক বিন যিয়াদ এমনি করেই স্পেনের এক প্রান্ত জাবলুত তারিকে পা রেখেছিলেন। তার সেদিনের অনুভূতি ছিল বিজেতার, এই আইবেরীয়া উপদ্বীপের মানুষকে মুক্ত করার |
| সাইমুম-১৩ আন্দালুসিয়ার প্রান্তরেগ্রানাডা থেকে দু’মাইল দূরে ‘মুরের শেষ দীর্ঘশ্বাস’ পাহাড়, স্প্যানিশ ভাষায় ‘Eultimo suspiro del Moro’। স্প্যানিশরা একে এই নামেই ডেকে থাকে স্পেনের শেষ মুসলিম সুলতান আবু আব্দুল্লাহর শেষ বিলাপকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য। পরাজিত ও আত্ম – সমর্পিত সুলতান আবু আব্দুল্লাহ গ্রানাডা নগরীর চাবি বিজয়ী ফার্ডিন্যান্ডের হাতে তুলে দেয়ার পর নিঃস্ব হয়ে নগরী ত্যাগ করে... |
| সাইমুম-১৪ গোয়াদেলকুইভো্রে নতুন স্রোতরাত তিনটা পঁয়তাল্লিশ। ঘুমিয়ে আছে মাদ্রিদের ফার্ডিন্যান্ড এভেনিউ। পুলিশের অথবা নাইট ক্লাব ফেরত দু’একটা গাড়ী মাঝে মাঝে এই ঘুমে কিছুটা বিরক্তি উৎপাদন করছে মাত্র। ফার্ডিন্যান্ড এভেনিউ-এর ওপর দাঁড়ানো কু-ক্ল্যাস্ক-ক্ল্যানের বিশাল পাঁচ তলা অফিসটিও জেগে জেগে অবশেষে যেন ঘুমিয়ে পড়েছে। দু’একটি ঘরের জানালা দিয়ে আলো দেখা যাচ্ছে বটে, কিন্তু বড় ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে ওগুলোকে। |
| সাইমুম-১৫ আবার সিংকিয়াংসুমাইয়ার আব্বা সোফায় বসতে বসতে বলল, ‘দেখ তুমি আমার ছেলের বয়সের। আমি তোমাকে তুমি বলব, কিছু মনে করো না।’ সুমাইয়ার আব্বা ষাটোর্দ্ধ বয়সের। কিন্তু দেহের গাঁথুনি ভাল আছে বলে বয়স দশ বছর কম মনে হয়। নিরেট ফরাসী চেহারা। চোখে মুখে আভিজাত্যের ছাপ। ‘জি না। আমি বরং খুশী হবো।’ আহমদ মুসা বসতে বসতে বলল। |
| সাইমুম-১৬ মধ্য এশিয়ায় কালো মেঘসামনের গাড়িটি একই গতিতে এগিয়ে চলেছে। আহমদ মুসা গাড়ির গতি বাড়িয়েও দেখল সামনের গাড়ির গতির কোন পরিবর্তন হলো না। তাকে অনুসরণ করা হচ্ছে টের পায়নি নাকি! রাস্তায় তেমন গাড়ি ঘোড়া নেই, শুন্যই বলা যায়। টের না পাওয়ার তো কথা নয়। লোকটি অমনোযোগী নাকি! নাকি খুব বেশি আত্নবিশবাসী যে তাদের গতিবিধি কারও নজরে পড়তে পারে | |
| সাইমুম-১৭ ব্ল্যাক ক্রসের কবলেসুমাইয়ার আব্বা সোফায় বসতে বসতে বলল, ‘দেখ তুমি আমার ছেলের বয়সের। আমি তোমাকে তুমি বলব, কিছু মনে করো না।’ সুমাইয়ার আব্বা ষাটোর্দ্ধ বয়সের। কিন্তু দেহের গাঁথুনি ভাল আছে বলে বয়স দশ বছর কম মনে হয়। নিরেট ফরাসী চেহারা। চোখে মুখে আভিজাত্যের ছাপ। ‘জি না। আমি বরং খুশী হবো।’ আহমদ মুসা বসতে বসতে বলল। |
| সাইমুম-১৮ ব্ল্যাক ক্রসের মুখোমুখিসামনের গাড়িটি একই গতিতে এগিয়ে চলেছে। আহমদ মুসা গাড়ির গতি বাড়িয়েও দেখল সামনের গাড়ির গতির কোন পরিবর্তন হলো না। তাকে অনুসরণ করা হচ্ছে টের পায়নি নাকি! রাস্তায় তেমন গাড়ি ঘোড়া নেই, শুন্যই বলা যায়। টের না পাওয়ার তো কথা নয়। লোকটি অমনোযোগী নাকি! নাকি খুব বেশি আত্নবিশবাসী যে তাদের গতিবিধি কারও নজরে পড়তে পারে |
বই নামাতে যাওয়ার অনেক হ্যাপা! অধিকাংশ বাংলা বই ডাউনলোড সাইটে ইনডাইরেক্ট লিংক। কারো স্কিপ এড তো কারো ভূয়া লিংক। পেরেশান হয়ে শুধুমাত্র বই ডাউনলোডের জন্য একটি সাইট বানালাম। আগ্রহীগণের কাজে দেবে বলে আশা করছি। http://bookdownloader.blogspot.com
আগামীতে সাইমুম সিরিজের সবগুলো বই নিয়ে একটি টিউন করবো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন সবাই।
Nice