বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
স্বাধীন অভিধানের নতুন ভার্সনে বের করা হয়েছে। নতুন ভার্সনের জন্য এখানে দেখুন।
সবাই কে সালাম জানিয়ে আজকের পোষ্ট শুরু করছি। আজ আমার নতুন প্রোজেক্ট সম্পর্কে লিখব। এটি আমার চতুর্থ প্রোজেক্ট এবং অন্য গুলোর চেয়ে সবচেয়ে বড় এবং চ্যালেন্জ পূর্ন। চ্যালেন্জ পূর্ন কেন তা নিচে পড়লেই জানবেন। টাইটেল থেকে এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেলেছ এবারের প্রোজেক্ট হচ্ছে বাংলা অভিধান।
এত কিছু থাকতে বাংলা অভিধান কেন?
বাংলা ডিকশনারী তৈরি করার পেছেনে অনেক কারন আছে। যেমনঃ বর্তমানে যত গুলো অফলাইন ডিকশনারী আছে সেগুলোতে শব্দের অভাব, একেকটাতে এককেক সুবিধা- কোনটাতে সার্চ থাকলে উচ্চারন নেই, উচ্চারন থাকলে শব্দ নেই, শব্দ থাকলে সার্চ সিস্টেম ঠিক নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর আমার জানা মতে ২০০৫ সালের পর আর কোন ডিকশনারী তৈরি করা হয়নি এবং জানামতে এখন পর্যন্ত ইউনিকোড সাপোর্ট যুক্ত ফ্রি কোন ডিকশনারী বের হয়নি। আমি এখানে ডিকশনারি সফটওয়্যার অর্থাৎ অফলাইন ডিকশনারির কথা বলছি। কারন অনলাইনে ইউনিকোড যুক্ত অনেক গুলো ডিকশনারি আছে।
এবার দেখা যাক ২০১১ পর্যন্ত প্রচলিত সব ডিকশনারি সম্পর্কে কিছু তথ্য। এখানে অফলাইন ও অনলাইন উভয় ডিকশনারি দেয়া আছে।
অফলাইন বাংলা অভিধান সমূহঃ [ওয়ার্ড সংখ্যা (প্রায়), ডাউনলোড লিঙ্ক, কম্প্রেস্ড করা সাইজ(প্রায়)]
আর যদি টাকা থাকে তাহলে এটা ট্রাই করে দেখতে পারেন- http://www.lingvosoft.com/Bengali-items/
অনলাইন বাংলা ডিকশনারী সমূহঃ
আরো কিছু অনলাইন বাংলা ডিকশনারী থাকতে পারে। আমি খোজাখুজি করে এগুলোই পেয়েছি।
এখনে আপনাদের ডাউনলোড লিঙ্ক দেয়ার পিছনে কারন হল আপনারা এগুলো ব্যবহার করে দেখুন এগুলোতে কি নেই যা আপনার প্রয়োজন এবং আমাকে তা জানান। আপনাদের ফিডব্যাকই আমার নতুন প্রোজেক্টকে হয়তো অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এবার প্রজেক্টের ভিতরের কিছু কথা বলিঃ
আমরা ডিকশনারির জন্য এখন পর্যন্ত ‘বাংলা একাডেমির ইংলিশ-বাংলা ডিকশরারি (সেকেন্ড এডিশন)’ সিলেক্টে রেখেছি। আমি অনেকের মতামত নিয়ে এটার প্রতিই বেশী ভোট পেয়েছি।
এতে কি কি শুবিধা থাকতে পারে?
আপনারা আশা করতে পারেন যে এতে উপরের ডিকশরারি গুলোর সব সুবিধা গুলো থাকবে। কিন্তু আরো কি কি থাকতে পারে তা এখন সম্পূর্ন আপনাদের উপর নির্ভর করছে।
ও ভুলেই গেছি, আমার ডিকশনারির নামই তো এখনো বলিনি। নতুন এ ডিকশনারির নাম হচ্ছে স্বাধীন বাংলা অভিধান।
আজ আমি আপনাদের মাঝে এর আলফা ভার্সন ছেড়ে দেব। তবে এতে যে ডাটাবেজ থাকছে তা সিসটেক ডিকশনারি থেকে ধার করা। উপরের অফলাইনের ৫ নাম্বার ডিকশানারিটা। এখন আপনাদের সারা দেয়ার উপর নির্ভর করছে এর ডাটাবেজের কাজ শুরু করা হবে কি হবে না। কারন, আমি প্রথমেই কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রচলিত সব ডিকশনারির লিঙ্ক সহ দিয়েছি। যাতে আপনারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর সেগুলো ব্যবহার করে যদি আপনারা সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে তো নতুন বানানোর প্রশ্নই আসে না। আমার জানা মতে সর্ব শেষ অফলাইন ডিকশনারি ২০০৫ এ তৈরি। তারপর আর কোন ডিকশরারি তৈরি হয়নি। এখন আমার মনে হয়েছে ২০১২ তে এসে আসলেই নতুন একটি ডিকশনারি প্রয়োজন। তাই আমি ডিকশনারির কাজ হাতে নিয়েছি। আমি চাচ্ছি এমন একটি ডিকশনারি বানাতে যা বর্তমানের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। আর তার জন্য প্রয়োজন আপনাদের সাজেশন + ফিডব্যাক।
কি কি থাকছে আলফা ভার্সনে?
আলফা ভার্সনে ইংলিশ এবং বাংলা সার্চের সুবিধা থাকছে। সার্চ করার সাথে সাথে চাইলে যে কোন শব্দের উচ্চারনও শুনতে পারবেন। সাথে থাকছে সার্চ এবং উচ্চারন শুনার সুবিধা সহ ১০০০+ কমন এবং কম্পিউটার বেজড অ্যাব্রিভিয়েশন। সাইন্সের ছাত্রদের জন্য উচ্চারন সহ গ্রিক লেটার টেবল যুক্ত আছে এতে। বাংলা সার্চ করার জন্য অভ্র বা বিজয় কোনটাই লাগবে না। ইউনিবিজয় ইন্ট্রিগ্রেটেড মানে ইউনিবিজয় কিবোর্ড যুক্ত করা আছে। তবে যারা অভ্র বা বিজয় দিয়ে লেখেন তারাও এতে বাংলা লিখতে পারবেন কোন সমস্যা ছাড়াই (অবশ্যই ইউনিকোড বাংলা)। [বিঃদ্রঃ উইন্ডোজ এক্সপিতে টেকনিক্যাল সমস্যা থাকায় অভ্র দিয়ে বাংলা লিখতে সমস্যা হতে পারে। এ সমস্যা দুর করার জন্য অভিধান চালু করে সেটিং এ ক্লিক করে অভ্র সম্পূর্ন বন্ধ করে ‘অভ্র সাপোর্ট চালু করুন’ বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে অভ্র দিয়ে নিশ্চিন্তে বাংলা লিখতে পারবেন]
এর ইন্টারফেস সম্পূর্ন বাংলায়। এর মেইন উইন্ডো স্ক্রিনশন নিচে দেয়া হলঃ
এতে আপনি উচ্চারন শুনার স্পিডও ঠিক করতে পারবেন সেটিং উইন্ডো থেকে।
এতে এখন পর্যন্ত যে ইউনিক সুবিধাটি যুক্ত করা হয়েছে তা হল কুইক সার্চ বা লাইট মোড বা বলতে পারেন অভিধানের ক্ষুদ্র রূপ।
এটি হচ্ছে একটি ছোট উইন্ডো; যেখান থেকে দ্রুত যে কোন শব্দ সার্চ করা যাবে। এতে হট-কী যুক্ত করা হয়েছে; ফলে আপনি হট-কী চাপ দিয়ে একে যখন ইচ্ছা আনতে এবং হাইড করতে পারবেন। হট-কীটি হলঃ Ctrl+F12. অভ্রের সাথে মিলিয়েই এটি রাখা হয়েছে। এর স্ক্রিন সট না হয় নাই দিলাম ডাউনলোড করুন, তাহলেই দেখতে পাবেন। (একটু লোভ দেখেচ্ছি আর কি ;))
এটি সিস্টেম ট্রেতে মিনিমাইজ করে রাখারও সুবিধা দেয়া হয়েছে। উপরের হট-কী সুবিধাটি সব সময় পেতে ডিকশনারিটি চালু করে তাকে মিনিমাইজ করে রাখতে পারেন। তাহলে যখনই প্রয়োজন হবে শুধু হট-কী চাপ দিবেন তাহলেই লাইট মোড চালু হবে।
লাইট মোডের আরেকটি ভয়ংকর সুবিধা হল এটি সয়ংক্রিয় ক্লিপবোর্ড থেকে শব্দ নিয়ে তার অর্থ বের করে দেবে। বুঝলেন না! ধরুন আপনি ওয়েব সাইট ব্রাউজ করছেন। হঠাৎ কোন একটি নতুন ইংরেজী শব্দ পেলেন, তখন Ctrl+F12 চাপ দিন তাহলে লাইট মোড চালু হবে। এবার অজানা শব্দটি সিলেক্ট করে কপি ( Ctrl + C) করুন। এবার ছোট উইন্ডোটিতে ক্লিক করুন। দেখুন সেখানে সয়ংক্রিয় আপনার কপি করা শব্দটি সার্চ বক্সে দেখা যাচ্ছে এবং তার অর্থ বা তার কাছাকাছি শব্দটির এবং তার অর্থ দেখাচ্ছে! এ মুহুর্তে উচ্চারন লাগবে! Space কী চাপ দিন; তাহলেই শুনতে পাবেন উচ্চারন।
এর সাথে স্বাধীন প্যাড নামে একটি অপশন যোগ করা হয়েছে; যাতে আপনি অভ্র বা বিজয় ছাড়াও বাংলা লিখতে পারবেন।
ট্রে আইকনে রাইট ক্লিক করেও সব সুবিধা চালু করতে পারবেন।
এতে Always on top অথ্যাৎ অভিধানের উইন্ডোকে সব উইন্ডোর উপরে রাখার সুবিধা দেয়া আছে।
আর আশা করি এখন এর ইউজার গাইড লাগবে না। কোন কিছু না বুঝলে সেটার উপর মাউস রাখলেই তার বর্ননা নিচে দেখতে পাবেন।
স্বাধীন বাংলা অভিধান চালাতে উইন্ডোজ এক্সপির জন্য ডটনেট ফ্রেমওয়ার্ক ২ (Dot Net Framework 2) লাগবে। তবে উইন্ডোজ সেভেনে তা লাগবে না। কারন উইন্ডোজ সেভেন-এ ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ৩.৫ পর্যন্ত দেয়াই থাকে। ডটনেট ফ্রেমওয়ার্ক ২ এর ডাউনলোড লিঙ্কঃ ডাউনলোড
স্বাধীন বাংলা অভিধান মোটামুটি এ সুবিধা গুলোই এখন পর্যন্ত যুক্ত হয়েছে। আর কি কি আছে তা নিজেই ডাউনলোড করে ট্রাই করে দেখুন।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ
মিডিয়া ফায়ার লিঙ্কঃ ডাউনলোড
সাইজঃ ৮ মেগাবাইট
এখন আপনাদের সহযোগীতা পেলে আশা করছি ২১শে ফেব্রুয়ারীতে এর বেটা ভার্সন ছাড়ব। তার মাঝখানে মাঝখানে টেস্টের জন্য আলফা-১, আলফা-২ ইত্যাদিও বের হতে পারে। এসবের খবর পেতে আইডব্লিউ অফিশিয়াল সাইট iwproducts.wordpress.com এ গিয়ে ডান পাশে ‘ই-মেইরের মাধ্যমে আপডেট ও খবর’ অংশে আপনার ই-মেইল দিয়ে ‘Sign Me’ বাটনে ক্লিক করুন। এছাড়া আইডব্লিউ- এর ফেসবুক ফ্যান পেজ লাইক এবং টুইটার ফ্যানপেজ ফলো করতে পারেন।
আইডব্লিউ এর- ফেসবুক ফ্যানপেজঃ http://www.facebook.com/Imaginative.World.BD
আইডব্লিউ এর- টুইটার ফ্যানপেজঃ twitter.com/IW_Shohag
আর স্বাধীন বাংলা অভিধান সম্পর্কে মন্তব্য এখানেও দিতে পারেন; আবার চাইলে আলফা ভার্সনের অফিশিয়াল পোষ্ট ( এখানে ) এও আপনার মন্তব্য দিতে পারেন। তবে অফিশিয়াল পেজে দিলে ভাল হয়।
আপনারা আমাকে যে যে ভাবে সাহায্য করতে পারেনঃ
এছাড়া আর অন্য কোন ভাবে আপনি আমাদের সাহায্য করতে পারলে সবসময় স্বাগতম।
শেষ কথা
ডিকশনারি নিয়ে ঘাটা ঘাটি করে যা দেখলাম প্রথম অফলাইন ডিকশনারি বোধয় টেকনোসিস ডিকশনারি। যা ১৯৯৯ এর দিকে বের হয়েছে। তারপর আরো ৫-৬ টি ডিকশনারি বের হয়েছে। অন্য দেশের কথা বলতে পারব না তবে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে যে দেশের প্রতি টান ভালবাসা যাই বলা হোক আছে তা ডিকশনারি নিয়ে ঘাটা ঘাটি করেই বুঝতে পেরেছি। মানুষের মধ্যে যদি দেশের প্রতি টান নাই থাকত তাহলে কেন ১৯৯৯ থেকে আমাদের দেশে কম্পিউটার ভিত্তিক ডিকশনারি তৈরি শুরু হয়; আর তারা তা নিয়ে ব্যবসাও করেনি সরাসরি ফ্রি হিসেবেই ছেড়ে দিয়েছে! বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের জীবন দেয়া আসলেই বৃথা যায়নি...
আজ এ পর্যন্ত রাখি। উপরের লেখাটি আমার নিজের জ্ঞান থেকে লেখা; সেখানে কোন তথ্য ভুল থাকলে তার জন্য আমি দুখিত; কোন ভুল পেলে কমেন্টে বলতে পারেন। ডিকশনারি বানাতে গেলে প্রোগ্রামিংয়ের চেয়ে কঠিন হচ্ছে ডাটাএন্ট্রি। এটির জন্যই এটাকে চ্যালেজ্ঞিং বলছি শুরুতে। এখন আপনাদের ফিডব্যাক এবং সাপোর্টই পারে আমি এবং আমার গ্রুপকে সাহস দিতে; এবং এ প্রোজেক্টে সব বাধা ভেঙ্গে এগিয়ে নিতে। আশা করি আপনাদের সম্পূর্ন সাপোর্ট পাব। আর ২১শে ফ্রেব্রুয়ারীতে বেটা ভার্সন বের করতে পারব; ইনশাল্লাহ...
-==========-
Md. Mahmudul Hasan (Shohag)
CEO of Imaginative World
Email: [email protected]
বিঃদ্রঃ আপনার যদি প্রোজেক্টটি ভাল লাগে তাহলে নিজ দায়িত্ব যে কোন ব্লগ বা ফোরামে লেখাটি পোষ্ট করতে পারবেন।
স্বাধীন অভিধানের নতুন ভার্সনে বের করা হয়েছে। নতুন ভার্সনের জন্য এখানে দেখুন।
আমি মোঃ মাহমুদুল হাসান সোহাগ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 530 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকি, এমনকি মৃত্যুর জন্যও...
ভাই ভাল লাগলো আপনার project. চালিয়ে যান।