অনলাইনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সেরা ১০ টি কার্যকরী টিপস!

Level 6
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে অনলাইনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সেরা ১০ টি কার্যকরী টিপস নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। আজকে আমি আপনাদের দারুণ তথ্যবহুল একটি অনুচ্ছেদ উপহার দিব। আজকে আমি আপনাদেরকে অনলাইন জগতে নিজেকে এবং নিজের তথ্যকে সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি টিপস জানাবো। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বাস্তব জগতের থেকে অনলাইন জগতে আমাদের তথ্য বেশি ঝুঁকি সম্পন্ন। কি ধরনের কাজ করলে অনলাইনে কি ধরনের বিপদে আপনি পড়তে পারেন তা না জানলে বিপদ নিজে থেকেই আপনার দ্বারে এসে টোকা দিবে। তাই এ বিষয়ে আপনাকে পূর্বে থেকেই সচেতন থাকতে হবে। তাই আপনার নিজের তথ্যকে অন্যদের হাত থেকে রক্ষা করতে আপনাকে আজ থেকে সচেতন হতে হবে।

আপনাদের মনে এখন এমন প্রশ্ন আসতে পারে যে আপনার তথ্য অন্য কেউ নিয়ে তাদের কি লাভ হতে পারে। এই মুহূর্তে আপনার কাছে আপনার যে তথ্যগুলো মূল্যহীন মনে হচ্ছে, সেগুলো যখন খারাপ কোন ব্যক্তির হাতে পড়ে যাবে তখন আপনি সেটার মূল্য বুঝতে পারবেন। তাই ছোট থেকে বড় কোন তথ্যকেই অনলাইন জগতে মূল্যহীন মনে করবেন না। এখন আমরা জেনে নেব যে কীভাবে আমরা আমাদের তথ্যের যে কোন ভালো এবং খারাপ ব্যক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন। অনলাইন জগতে নিরাপদ থাকার অনেকগুলো ধাপ আছে। এর মধ্যে থেকে আজকে আমরা মাত্র নয়টি জানবো। এই নয়টি জানলে সাধারণভাবে যারা অনলাইন ব্যবহার করেন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারা সুরক্ষিত বা নিরাপদ থাকতে পারবেন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক অনলাইন জগতে নিরাপদ থাকার কয়েকটি উপায়।

১. এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত আপডেট রাখুন

বর্তমান বাজারে অনেক উন্নত মানের এন্টিভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে। পিসির বিভিন্ন ধরনের তথ্য যেকোনো ধরনের ম্যালওয়্যার এবং ভাইরাস থেকে বাঁচাতে অ্যান্টিভাইরাসের বিকল্প নেই। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আছে সেসব আপনার পিসিতে এমনভাবে বাসা বাঁধবে যে আপনি বুঝতে পারবেন না। এর মধ্যে কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো সফটওয়্যার রূপে আপনার পিসিতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে আপনার পিসির তথ্যগুলো চুরি করবে। পরে সময় মতো এগুলোর বিনিময়ে আপনার কাছ থেকে টাকা দাবি করা হতে পারে, এছাড়া ও চড়া দামে বিদেশি হ্যাকারদের কাছে এসব তথ্য বিক্রয় করে দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে চলমান বিভিন্ন ধরনের এন্টিভাইরাস গুলো হলো:

  1. উইন্ডোজ ডিফেন্ডার
  2. ক্যাসপার স্কাই
  3. টোটাল এভি

তবে সতর্কতার সহিত এন্টিভাইরাস গুলো ব্যবহার করার পাশাপাশি প্রতিবছর এগুলো আপডেট করতে হবে। প্রতিবছর সময়মতো এগুলোর রিনিউ না করলে অ্যান্টিভাইরাস গুলোই হতে পারে আপনার বিপদের মূল কারণ। তাই নিজের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবশ্যই আপনাকে আপনার ব্যবহিত এন্টিভাইরাস গুলো নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে৷

২. ডিভাইসে ইন্সটল অবস্থায় থাকা সকল অ্যাপ্লিকেশন পর্যবেক্ষণ করুন

খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের ফোনে থাকা অথবা পিসি অথবা ল্যাপটপে থাকা বেশিরভাগ অ্যাপ্লিকেশনগুলো যখন আপনি প্রথমবার ব্যবহার করা শুরু করেন তখন আপনার থেকে আপনার ডিভাইসের কিছু পারমিশন তারা নিয়ে নেই। যেমন ফাইল পারমিশন। এই ধরনের পারমিশন গুলো থেকে তারা আপনাদের পিসি অথবা মোবাইল অথবা ডিভাইসে থাকা তথ্য চুরি করতে পারে। আর এই ধরনের ঘটনা গুলো বেশিরভাগ ঘটে আপনার ফোনে টাকা ইনস্টল অ্যাপ্লিকেশন গুলো থেকে। বিশেষ করে কিছু সেফটি অ্যাপ্লিকেশন আমরা ভুলে আমাদের ডিভাইসে ইন্সটল করে রাখি। আমরা মনে করি যে এসব অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে আমাদের ডিভাইস সুরক্ষিত থাকছে।

তবে এই অ্যাপ্লিকেশন গুলো প্রথম ব্যবহার করার সময় আপনার থেকে যে পারমিশন গুলো নিয়ে নেয়, পরে এই পারমিশন গুলোর অপব্যবহার করে তারা আপনাদেরকে যে কোনো ধরনের বিপদে ফেলতে পারে। তাই ডিভাইসে ইন্সটল থাকা সকল অ্যাপ্লিকেশন এবং বিশেষ করে যেসব অ্যাপ্লিকেশন নিয়মিত ব্যবহার করেন না এবং যেসব অ্যাপ্লিকেশন গুলো আপনি ফোনের সেফটির জন্য ব্যবহার করেন, এসব অ্যাপ্লিকেশন গুলো নিয়মিত চেক করবেন। আর যদি কোন অ্যাপ একেবারেই ব্যবহার না করেন তাহলে সেটি আনইন্সটল করা সবচেয়ে ভালো উপায়। এভাবে সতর্কতার সাথে অ্যাপ ইন্সটল করে ব্যবহার করলে আপনার ডিভাইস থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না। যার ফলে আপনি অনেকটাই অনলাইনে সুরক্ষিত থাকবেন।

৩. সবসময় ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

 

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে অনলাইন জগতে আমাদের তথ্য দিয়ে সিকিউর বা নিরাপদ রাখার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে পাসওয়ার্ড লক। তবে বিভিন্ন জায়গায় আমরা এই পাসওয়ার্ড ব্যবহারে ভুল করে থাকি। যেমন আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই চেষ্টা করে থাকে সব জায়গায় একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার। এতে করে আপনার পাসওয়ার্ডটি মনে রাখতে সুবিধা হবে। তবে, এই কাজটি করতে গিয়ে আপনারা বিপদে পড়তে পারেন। অর্থাৎ যেকোনো হ্যাকার যদি আপনার যেকোনো একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে সক্ষম হয়, তাহলে সে আপনার সকল অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস নিতে পারবে। কারণ, আপনি সকল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড একই রেখেছেন।

তাই সব সময় চেষ্টা করবেন পাসওয়ার্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য প্রতিটি আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ডগুলো মনে রাখার জন্য এগুলো কোন পার্সোনাল ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। এছাড়াও পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করার সুবিধা বেশিরভাগ ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট দিয়ে থাকে। তাই আপনি যদি আপনার পাসওয়ার্ড ভুলেও যান তবুও আপনি আপনার পাসওয়ার্ড খুব সুন্দরভাবেই পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। তবুও আপনাকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে৷ যাতে আপনার একই পাসওয়ার্ড একাধিক অ্যাকাউন্টে ব্যবহার না করা হয়। এতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টসহ অ্যাকাউন্টে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ ডাটা চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই সব সময় কঠিন আর ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।

৪. সকল অ্যাকাউন্ট এর ক্ষেত্রে ২ ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন ব্যবহার করা

আপনাদের যে কোনো অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড গুলো যদি হ্যাকারের কাছে চলেও যায়, এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষার একটি উপায় হচ্ছে ২ ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন। অনেকেই টু ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন ব্যবহার করাকে অনেক বিরক্তিকর একটি বিষয় মনে করেন। অবশ্যই এটি বিরক্ত কর কিন্তু এটি আপনার পার্সোনাল তথ্য অথবা যে কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট হ্যাকারের কাছ থেকে রক্ষা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ২ ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন হচ্ছে আপনার যেকোনো ধরনের অ্যাকাউন্টের জন্য একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা। যেটির মাধ্যমে পাসওয়ার্ড প্রদান করা সত্ত্বেও দ্বিতীয়বার চেক করতে হয় যে এটি আসলেই আপনি কিনা।

অর্থাৎ পাসওয়ার্ড জানা কোন ব্যক্তি যদি ২ ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন ব্যবহার করা কোন অ্যাকাউন্টে পাসওয়ার্ড দিয়েও থাকে আর যদি সেই ব্যক্তি আপনি না হয়ে অন্য কেউ হয়ে থাকে তাহলে পাসওয়ার্ড জানা সত্ত্বেও সে আপনার অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস নিতে পারবে না। তাই অনলাইন জগতে সুরক্ষিত থাকতে টু ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন এর বিকল্প নেই। বর্তমানে অ্যাকাউন্ট করা যায় এমন প্রায় সকল প্লাটফর্ম ২ স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু করে রেখেছে। তাই আপনি যেখানেই অ্যাকাউন্ট করুন না কেনো অবশ্যই চেষ্টা করবেন আপনার সেই অ্যাকাউন্টে ২ স্টেপ ভেরিফাই অপশন চালু রাখার। এতে আপনার অ্যাকাউন্ট সর্বোচ্চ সুরক্ষিত থাকবে।

৫. অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন জিমেইল ব্যবহার করুন

যারা অনলাইন জগতে নিয়মিত অ্যাকটিভ থাকেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন যে কোন প্রকার অ্যাকাউন্ট অনলাইনে খুলতে হলে আপনাকে জিমেইল অ্যাকাউন্ট অথবা মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে মোবাইল নাম্বার এর থেকে জিমেইল অ্যাকাউন্ট বেশি নিরাপদ। অর্থাৎ কোন হ্যাকার যদি আপনার সেই অ্যাকাউন্টে হ্যাক করতে চায় আর যদি সে অ্যাকাউন্টে মোবাইল নাম্বার এর মাধ্যমে খোলা থাকে তাহলে হ্যাকার সহজে হ্যাক করতে পারবে তবে জিমেইল দ্বারা খোলা হলে অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করতে হ্যাকারের অনেক পরিশ্রম করতে হবে।

এক্ষেত্রে, আপনার কাছে যদি পরিমিত পরিমাণে জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তাহলে প্রতিটি নতুন অ্যাকাউন্ট করার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে আপনি অনলাইন জগতে নিজেকে এবং নিজের তথ্যকে নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে যাবেন। ভিন্ন জিমেইল ব্যবহার করার কারণে হ্যাকার সহজে আপনার একাধিক অ্যাকাউন্টে আক্রমণ করতে পারবে না। যার ফলে আপনার একটি ডাটা অন্যের এক্সেস এ গেলেও অন্যগুলো সুরক্ষিত থাকবে। তাই চেষ্টা করবেন আর সম্ভব হলে অবশ্যই একাধিক অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা জিমেইল ব্যবহার করবেন।

৬. সব সময় সকল অ্যাপ্লিকেশনের Cache data ক্লিয়ার রাখুন

আপনাদের সকলেরই জানা উচিত যে, আপনাদের ডিভাইসে যে সকল অ্যাপ্লিকেশন গুলো আপনারা ব্যবহার করছেন এগুলোর বেশিরভাগ অ্যাপ্লিকেশনগুলোই আপনার ফোনের কিছু ডেটা তাদের কাছে স্টোর করে। এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে তারা আপনাদেরকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই সব সময় চেষ্টা করবেন এসব অ্যাপ্লিকেশনের ডাটা এবং Cache ক্লিয়ার করার। এছাড়াও আপনি যেই ব্রাউজার ইউজ করেন, অবশ্যই সেই ব্রাউজারে এর হিস্ট্রি নিয়মিত ক্লিয়ার করবেন। এর ফলে আপনার ব্রাউজিং জিনিসটি নিরাপদ থাকবে এবং কারো কাছে বা কারো হাতে পড়ে বিপদের কোন আশঙ্কা থাকবে না। এছাড়াও দৈনন্দিন ব্যবহৃত সকল অ্যাপ এর Cache ক্লিয়ার করবেন নিয়মিত।

আরো একটি তথ্য জানলে আপনি অবাক হবেন, যদি আপনি ওয়াইফাই ইউজার হয়ে থাকেন, আপনি যে প্রোভাইডার এর কাছ থেকে ওয়াইফাই সুবিধাটি উপভোগ করছেন, সেই প্রোভাইডার এর কোন লোক চাইলে আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রি চেক করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার উচিত সবসময় যে কোন ওয়েবসাইট ভ্রমণ করার পরেই ওই ব্রাউজারের হিস্ট্রি ক্লিয়ার করা। আপনি হয়ত এর আগেও শুনে থাকবেন ব্রাউজার কুকি ব্যবহার করে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টের এক্সেস নেওয়া সম্ভব৷ হ্যাঁ, আসলেই ব্রাউজার কুকি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট এক্সেস নেওয়া সম্ভব। তাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে অবশ্যই প্রতিবার ব্রাউজ করার পর ব্রাউজাত ক্যাশ ক্লিয়ার করা উচিত। এতে সহজে কেউ আপনার ব্রাউজার কুকিজ এক্সেস করতে পারবে না।

৭. Save Password সুবিধাটি সব সময় অফ রাখুন

আপনারা খেয়াল করলে দেখতে পারবেন, যেকোনো ব্রাউজারে গিয়ে যেকোনো অ্যাকাউন্ট লগইন করার সাথে সাথেই ওপরে একটি অপশন চলে আসে, সেভ পাসওয়ার্ড। এই অপশনটির মাধ্যমে পরে যেকোনো সময় লগইন করার সময় আপনি খুব সহজেই নিজের পাসওয়ার্ডটি মনে না রেখে এক ক্লিকের মাধ্যমে লগইন করতে পারবেন। তবে এই পাসওয়ার্ডগুলো যে ব্রাউজার স্টোর করছে, সে ব্রাউজার যদি আপনারা এই একান্ত পার্সোনাল তথ্যটি কারো কাছে বিনিময় করে তাহলে বুঝতে পারছেন আপনি কত বড় বিপদে পড়তে পারেন। তাই অনলাইন জগতের এই ছোটখাটো সুবিধা গুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবেন।

এসব ছোটখাটো অনেক সুবিধার কারণে আপনার অনলাইন জগৎ ব্যবহার অনেক সহজ হলেও এগুলোর কারণে আপনাকে এক সময় বিপদে পড়তে হবে। এই ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো আমরা কেউ লক্ষ্য করি না। এজন্য এই ধরনের ছোট বিষয়গুলো ব্যবহার করে অন্য আমাদেরকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে। তাই এসব থেকে সব সময় বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে আপনি যদি অন্য কোন ডিভাইস থেকে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় কাজে লগ-ইন করেন, তাহলে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সেভ রাখবেন না। এতে আপনার পরেও সেই ব্যক্তি আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবে। যার ফলে আপনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডাটা চুরি হয়ে যেতে পারে। বেশি ভালো হয় অন্য কারো ডিভাইস থেকে নিজের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে লগ-ইন না করা।

৮. ফিশিং ওয়েবসাইট থেকে দূরে থাকুন

অনলাইন জগতে চলাচল করতে সবচেয়ে বড় বিপদগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ফিlশিং ওয়েবসাইট। সাধারণত এগুলোর মাধ্যমে আপনাকে আপনার যেকোনো একটি অ্যাকাউন্ট লগইন করতে বলা হবে এবং আপনি যদি ওই অ্যাকাউন্ট লগইন করেন অর্থাৎ সঠিক পাসওয়ার্ড এবং সঠিক অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট লগইন করার সাথে সাথে ওই অ্যাকাউন্টের সকল তথ্য অর্থাৎ পাসওয়ার্ড এবং অ্যাকাউন্ট নম্বর তাদের কাছে পৌঁছে যাবে। ফলে তারা ওই অ্যাকাউন্টের সম্পূর্ণ এক্সেস নিয়ে নিতে পারবে। তাই এই ধরনের ওয়েবসাইট থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু এই ওয়েবসাইটগুলো সাধারণ সকল ওয়েবসাইটগুলোর মতই হয়ে থাকে ফলে চেনা যায় না। এগুলো চেনার কিছু উপায় আছে যেমন :

  1. সাধারণত এই ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করতে হয় আকর্ষণীয় কোন অ্যাডের মাধ্যমে।
  2. এছাড়াও কিছু লোভনীয় মেসেজের মাধ্যমে এসব ওয়েবসাইটের লিংক পাঠানো হয়।
  3. অনলাইনে স্ক্রল করার সময় বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার থেকে এসব ওয়েবসাইটের খোঁজ পাওয়া যায়।

আপনারা অনেক সময় খেয়াল করে দেখবেন, আপনার জিমেইলে অথবা নাম্বারে এমন কোন মেসেজ আসতে পারে যাতে লেখা থাকে, ‘অভিনন্দন, আপনি ১০ হাজার টাকা জিতেছেন। এই ১০ হাজার টাকা পেতে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন করুন’ এই ধরনের লিংক থেকে সব সময় বিরত থাকবেন। সাধারণত এই ধরনের মেসেজ এর মাধ্যমে আপনার কাছে ফিশিং ওয়েবসাইটের লিংক পাঠানো হয়। আর এসব ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের সকল পারসোনাল তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা মাত্রই আপনার পার্সোনাল তথ্য গুলো পৌঁছে যাবে অসৎ কোন ব্যক্তির হাতে। তাই এ ধরনের লিংক সব সময় এড়িয়ে চলবেন।

৯. সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

সর্বশেষে যে কথা না বললেই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া অনলাইন জগতের এমন একটি জিনিস যা আমরা সব সময় ব্যবহার করে থাকি। এই সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া আমাদের জীবন প্রায় অচল। তাই বুঝতে পারছেন এটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য কতটা বেশি প্রয়োজনীয়। আমার জানামতে একজন মানুষের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত তথ্য থাকে তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে। একজন মানুষ আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট দেখলেই বুঝতে পারবে যে আপনি কি ধরনের মানুষ। এ থেকে বুঝতে পারছেন যে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নিরাপদ টাকা কতটা বেশি জরুরি। এক্ষেত্রে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে কিছু ধাপ অবলম্বন করতে পারেন। যেমন:

  1. প্রতিটি অ্যাকাউন্টে কঠিন এবং আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।
  2. সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে 2 Factor Authentication ব্যবহার করা।
  3. অ্যাকাউন্ট খোলার সময় প্রতিটি আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা জিমেইল অথবা আলাদা আলাদা নাম্বার ব্যবহার করা।
  4. বিশেষ করে ফেসবুকে নিজের ফ্রেন্ডলিস্ট গোপন রাখা, জন্ম তারিখ গোপন রাখা, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, সকল পোস্টগুলো Friends of Friends করে রাখা ইত্যাদি

সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টে নিরাপদ রাখার উপায় সম্পর্কে বলতে গেলে আরো একটি সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদ লেখা যাবে। আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে বলেছি। আপনারা এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত ছেলে আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট কে আরো বেশি নিরাপদ করতে চাইলে এ বিষয়ে গুগল থেকে কিছু আর্টিকেল পড়ে নিতে পারেন। তবে আপনি যদি আমার বলা এই নিয়মগুলো মানতে পারেন আমি মনে করি এতেই আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে। অন্য আর আর্টিকেল পড়ার কোনো দরকার হবে না। তবে আপনি আপনার অনলাইনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জ্ঞান আরো বাড়াতে চাইলে ইন্টারনেট থেকে আরো কিছু আর্টিকেল পড়ে নিতে পারেন।

শেষ কথা

অনুচ্ছেদের শুরুতেই বলেছি, বাস্তব জীবনে নিজের তথ্য নিরাপদ রাখার থেকে অনলাইন জগতে নিজের তথ্য এবং নিজেকে নিরাপদ রাখা অনেক বেশি কঠিন। তাই এ বিষয়ে আমাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে উপরে বলা সকল নিয়ম গুলো যদি মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার অনলাইন জীবন নিরাপদ হতে পারে। বর্তমান সময়ে অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখাটা বেশ একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তাই আমার আজকের টিউনে আলোচনা করা প্রতিটি বিষয় খুব গুরুত্বের সাথে দেখবেন। এতে অনালাইলে আপনার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ডাটাগুলো সুরক্ষিত থাকবে। আমরা যারা সব সময় অনলাইনে কাজ করে থাকি তাদের গোপনীয় প্রায় সকল ডাটা ইলেকট্রনিক ডিভাইসে থাকে।

আর সেই ইলেকট্রনিক ডিভাইস হয়ত কম্পিউটার নয়তো মোবাইল ফোন। আর আমরা সকলেই জানি এসবে আমাদের কতটা গুরুত্বপূর্ণ ডেটা স্টোর করা থাকে। এসব ডাটা চুরি হওয়া আমাদের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা আমাদের নিজ নিজ থেকে বেশি আর কেউ জানে না। তাই আমাদের সকলের উচিত নিজেদের ডেটাগুলো সুরক্ষিত রাখতে অবশ্যই আজকের সেরা টিপসগুলো মেনে চলা। এতে আপনি আপনার অনলাইন জীবনকে অনেক বেশি সুরক্ষিত করতে পারবেন। এছাড়াও আজকের টিউন নিয়ে আপনার কোন মন্তব্য থাকলে তা টিউমেন্ট করে জানাবেন। আপনার করা মন্তব্যটি গঠনমূলক হলে তা অবশ্যই আমি আমার টিউনে যুক্ত করে নিবো।

তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, অনলাইনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সেরা ১০ টি কার্যকরী টিপস! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।

Level 6

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 104 টি টিউন ও 28 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস