ইন্টারনেট ব্যবহার করার মানে এই নয় যে, আপনি এখানে অফুরন্ত সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। বরং এর বিপরীতে, ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আমরা আমাদের অনেক তথ্যই বিভিন্ন লোকের কাছে প্রকাশ করছি এবং এই বিষয়ে আমরা হয়তো জানিও না, আর তারা আমাদের অনেক ক্ষতি করতে পারে।
ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় আমাদের সামনে অনেক ওয়েবসাইট চলে আসে এবং যেখানে আমাদের সাইন আপ করতে বলা হতে পারে। যেসব ওয়েবসাইট গুলোতে সাইনআপ করার মাধ্যমে মূলত আমরা তাদের সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবো, সেখানে এমনটি বলার থাকে। যাইহোক, আপনি কিন্তু এখানে অনেক Fake ওয়েবসাইটের সম্মুখীন হতে পারেন, যেগুলো আপনাকে আপনার তথ্য দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করতে পারে।
এছাড়াও, আপনি ইন্টারনেটের এমন কোন লিংকে ক্লিক করতে পারেন, যেটিতে ক্লিক করার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্টগুলো হ্যাক হয়ে যেতে পারে, আর এতে করে আপনার বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হবে।
যাইহোক, এমন কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করা মাধ্যমে আপনি অনলাইনে হ্যাকিং প্রতিরোধ এবং আপনার অনলাইন নিরাপত্তাকে আরো শক্তিশালী করতে পারেন। চলুন এবার সেসব সমাধান গুলো দেখে নেয়া যাক, যেসব বিষয়গুলো আপনার অনলাইন সিকিউরিটিকে আরো বেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।
একটি ভিপিএন হলো একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক, যেটি আপনাকে ইন্টারনেটে পরিচয় গোপন রাখতে সাহায্য করে। এটির মাধ্যমে ইন্টারনেটে আপনার কম্পিউটার থেকে প্রেরণ করা ডেটা গুলো Encrypt অবস্থায় আদান প্রদান হয় এবং যেটি আপনাকে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করে। একটি ভিপিএন মূলত আপনার ডিভাইসের আইপি এড্রেস হাইড করে এবং এটির পরিবর্তে একটি নতুন IP Address দেয়। একটি VPN সার্ভার এর সাথে কানেক্ট হওয়ার পর, সেই Vpn সার্ভারটি মূলত আপনার ট্রাফিকের উৎস হয়ে যায়। এর ফলে, ইন্টারনেটে আপনার প্রকৃত অবস্থানের বিপরীতে অন্য একটি অবস্থান প্রদর্শিত হয়।
ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ভিপিএন ব্যবহারের ফলে, আপনার দেশের সরকার, আইএসপি এবং থার্ড পার্টির কারো পক্ষে আপনার কম্পিউটার কোথায় অবস্থিত, সেটি ট্র্যাক করা অসম্ভব করে তোলে।
যদিও একটি Vpn আপনাকে শুধুমাত্র হ্যাকিং প্রতিরোধ করার মত সুবিধা দিয়ে থাকে না। এটি ইন্টারনেটে আপনাকে সম্পূর্ণ Anonymous করে থাকে এবং আপনাকে সীমাহীন অ্যাক্সেস দেয়। স্বাভাবিকভাবে আপনি আপনার রিয়েল আইপি ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করলে, অনেক ওয়েবসাইটেই প্রবেশ করতে পারবেন না। কেননা, কোন দেশের সরকার নির্দিষ্ট কিছু দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস প্রদানে বাধা দিতে পারে। এছাড়াও, কোন একটি ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষও লোকেশনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যবহারকারীদের তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে নাও দিতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি ভিপিএন ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার আইপি অ্যাড্রেস পাল্টে যাবে এবং এতে করে আপনি লোকেশনের ভিত্তিতে কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। যাইহোক, একটি VPN ব্যবহারের ফলে আপনি অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থেকে বাঁচতে পারে।
আমরা কোন একটি ফাইল, অডিও, ফটো কিংবা ভিডিও নিরাপদে সংরক্ষণ করার জন্য ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করি। যদিও ক্লাউড স্টোরেজ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলোকে সংরক্ষণ এবং সেটি যেকোনো জায়গা থেকে ডাউনলোড করার মত সুবিধা দেয়। কিন্তু, এটির সুবিধা থাকার পাশাপাশি এটি সমানভাবে বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা দেখেছি যে, ক্লাউড সার্ভিসগুলো কিছু হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন ব্যক্তি, কর্পোরেশন এবং সেলিব্রিটিদের একাউন্টকে টার্গেট করে তাদের সাইবার আক্রমণ চালাচ্ছে। এছাড়াও এসব ব্যক্তি ব্যতীত আপনিও তাদের আক্রমণের টার্গেট হতে পারেন।
আপনি যদি এরকম ভুক্তভোগীদের তালিকার মধ্যে হয়ে যান, তাহলে ব্যাপারটি কেমন হবে? আপনি যেসব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কিংবা ভিডিও নিরাপদে সংরক্ষণ করার জন্য ক্লাউড স্টোরেজে রেখে দিয়েছিলেন, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ অন্যের হাতে চলে যাবে এবং এমনকি তিনি সেগুলো ডিলিট করে ও দিতে পারেন। যাইহোক, আপনি কি আপনার ক্লাউড সার্ভিস হ্যাকিং প্রতিরোধ করার উপায় জানতে চান?
ক্লাউড সার্ভিস হ্যাকিং এর উপায় হিসেবে আপনি অন্যান্য সার্ভিস গুলো অবলম্বন করতে পারেন, তবে আপনি সচেতনতার অংশ হিসেবে হার্ড ড্রাইভে সেসব ফাইলগুলোর একটি ব্যাকআপ রেখে দিন। আপনি ক্লাউড স্টোরেজে সেই ফাইলগুলো রাখার পাশাপাশি কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে ও সেগুলো রাখার মাধ্যমে আপনার ডেটার ব্যাকআপ নিশ্চিত করুন।
আপনি যদি অন্য কোনভাবে আপনার ক্লাউড সার্ভিস একাউন্টটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, তাহলে এসব ব্যাকআপ ফাইলগুলো আপনাকে সহায়তা করবে। আর আপনি যদি আপনার Cloud storage service একাউন্টটি হ্যাকিং থেকে বাঁচাতে চান, তাহলে আপনাকে সাইবার সিকিউরিটির অংশ হিসেবে আজকের টিপসগুলোর অন্যান্য পয়েন্ট অনুসরণ করতে হবে।
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সাইন আপ করার সময়, সাইন আপ কিংবা লগইন করার ঝামেলা এড়ানোর জন্য সেটির সাথে অ্যাকাউন্টগুলোকে লিংক করে থাকি। এক্ষেত্রে আমরা হয়তোবা Facebook, Twitter অথবা Google Account ব্যবহার করি। যদিও বিভিন্ন একাউন্টের সাথে কোন একটি অ্যাকাউন্ট লিংক করার মাধ্যমে আমাদের অনেক সময় সাশ্রয় হয় এবং আমরা খুব দ্রুত সেই সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু, এ বিষয়টি সাইবার অপরাধীদেরকে তাদের কাজ করার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে দেয়।
উদাহরণস্বরূপ মনে করুন যে, আপনি আপনার কোম্পানির প্রোফাইলের সাথে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি কে লিংক করেছেন। এবার আপনার কোম্পানিটি যদি কোনভাবে হ্যাকিং এর সম্মুখীন হয়, তাহলে একই সাথে আপনার তথ্যও হ্যাক হতে পারে। যদিও অ্যাকাউন্টগুলোর এভাবে লিংক করা আপনার জীবনকে সহজ করে তুলতে পারে, কিন্তু এটি হ্যাকারদের জীবনকে ও সহজ করে তোলে। তাই, আপনি কোন একটি কোম্পানির ওয়েবসাইটে আপনার প্রোফাইলের সাথে কোন আলাদা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের লিংক করতে যান, তাহলে আরও একবার ভেবে দেখবেন।
অনলাইনে এরকম প্রচুর ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলো অরিজিনাল ওয়েবসাইট এর মত করেই ডিজাইন করা হয়। মূলত এসব ওয়েবসাইটগুলো জাল এবং এগুলো প্রতারণার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। তাই আপনি যদি কোন একটি ওয়েবসাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সাবমিট করতে চান, তাহলে সেই ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণ নিরাপদ কিনা তা একবার নিশ্চিত করুন। এজন্য আপনাকে অবশ্যই সেই ওয়েবসাইটের ইউআরএল এর শুরুতে http:// এর পরিবর্তে https:// লেখা নিশ্চিত করতে হবে।
কোন ওয়েবসাইটের ইউআরএল এর শুরুতে HTTPS এর সাথে যে 'S" রয়েছে, এটি দ্বারা Secure বোঝানো হয়। আর "https" এর অর্থ হচ্ছে সাইটটির সম্পূর্ণ এনক্রিপ্ট সংযোগ প্রদান করে এবং এটি সিকিউর।
তাই কোন একটি ওয়েবসাইটে আপনার সেনসিটিভ তথ্য দেওয়ার আগে, সেই ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি পরীক্ষা করে নিন। তবে, কোন একটি ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেখে, সেই ওয়েবসাইট কিনা তা যাচাই করা যায় না। আর আপনি এমন সব ওয়েবসাইটগুলোতেই আপনার ক্রেডিট কার্ডের তথ্য শেয়ার করুন, যে ওয়েবসাইটটির প্রতি আপনার সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস রয়েছে। এতে করে আপনি পরবর্তীতে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন।
হ্যাকারদের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের একাউন্ট হ্যাকিং এর প্রবণতার কারণে, আপনার অনলাইন নিরাপত্তা বাড়ানোর অংশ হিসেবে Two Factor Authentication একটি অপরিহার্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোন একটি একাউন্টে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করার মাধ্যমে সেই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে ঠেকিয়ে দেওয়া যায়।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করার জন্য আপনি আপনার একাউন্ট থেকে Two Factor Authentication সিলেক্ট করুন এবং তারপর আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে আপডেট করুন। এরপর আপনি যখন পরবর্তীতে সেই একাউন্টটিতে লগইন করার চেষ্টা করবেন, তখন ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পাশাপাশি, আপনাকে অথেনটিকেশন কোড ও প্রবেশ করাতে হবে। সেই একাউন্টে লগইন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কোডটি টাইপ করে সাবমিট করতে হবে।
অনেকেই এমনটি বলে থাকেন যে, আমার ইমেইল একাউন্ট হ্যাক হয়েছে। Email account hacking এর মত ঘটনা প্রতিরোধের জন্য Two Factor Authentication চালু করা যেতে পারে। এটি আপনাকে ইমেইল হ্যাকিং প্রতিরোধ করতে এবং আপনার ইমেইলকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে। এটি চালু করে রাখলে, কোন হ্যাকার আপনার ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড জেনে গেলেও আপনার একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেনা। এজন্য অবশ্যই তাকে আপনার ডিভাইসটির নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে এবং আপনার ডিভাইস থেকে সেই অথেনটিকেশন কোড সংগ্রহ করতে হবে, যেটি কখনো সম্ভব নয়।
আমরা স্বাভাবিকভাবে এমন সব সুবিধাজনক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি, যেগুলো সাধারণ কিছুর সাথে সম্পর্কিত এবং যেগুলো খুব সহজেই অনুমান করা যায়। আশ্চর্যজনকভাবে, ফেসবুকের নির্বাহীর মার্ক জুকারবার্গ তার ইন্টারনেট একাউন্টে "dadada" পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন। এই পাসওয়ার্ডটি বেশি নিরাপদ, তাই না?
আমরাও কিন্তু এভাবে আমাদের একাউন্টের পাসওয়ার্ড খুব সহজে মনে রাখার জন্য সহজ শব্দ ব্যবহার করি। এক্ষেত্রে আমরা ক্রমিক সংখ্যা অথবা আমাদের মোবাইল নাম্বার বেশি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তারা একই পাসওয়ার্ডটি সকল জায়গায় ব্যবহার করে। পাসওয়ার্ড মনে রাখার সুবিধার্থে অনেকেই এরকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকে, যেটি কখনোই করা উচিত নয়। কেননা, এতে করে একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের সম্মুখীন হলে, অন্যান্য অ্যাকাউন্টগুলোও ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
একজন হ্যাকার আপনার কোন একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার পর অবশ্যই অন্যান্য অ্যাকাউন্টগুলোতেও আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে, তারা সেই একই পাসওয়ার্ড অথবা সেটির সাথে মিল রেখে অন্য কোন পাসওয়ার্ড দিয়ে ট্রাই করতে পারে।
হ্যাকিং প্রতিরোধে, আপনি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই আলফানিউমেরিক, ছোট হাতের অক্ষর, বড় হাতের অক্ষর, বিভিন্ন সংখ্যা, সিম্বল এবং বাক্যের সমন্বয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। সাইবার হ্যাকিং প্রতিরোধ করার সর্বোত্তম উপায় হল অত্যন্ত জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, যেটি কারো পক্ষে অনুমান করা অসম্ভব।
আর শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার জন্য আপনি Password generator ওয়েবসাইট গুলোর সহযোগিতা নিতে পারেন। তবে, আপনার পছন্দের বাক্যের মাঝে কিছু সংখ্যা এবং সিম্বল যুক্ত করে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারবেন। আর এটি আপনার মনে রাখা ও সহজ হবে।
কীভাবে হ্যাকিং প্রতিরোধ করা যায় এবং কীভাবে হ্যাকারদের এড়ানো যায়, তা জানার আরেকটি উপায় হল Ad-blocker ব্যবহার করা। এই ধরনের টুলগুলো বিভিন্ন কর্পোরেশনের বিজ্ঞাপণ দেওয়ার কৌশল গুলোকে ব্লক করে দেয় এবং যার ফলে আপনাকে তারা অনলাইনে ট্র্যাক করতে পারে না। অ্যাড ব্লকার এক্সটেনশন বা সফটওয়্যার সমূহ শুধুমাত্র আপনার স্ক্রিনের বিজ্ঞাপণ গুলোই ব্লক করে না, এটি স্ক্রিনের পপ আপ হওয়া বিজ্ঞাপণ গুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে এবং যার ফলে ভুলবশত কোন বিজ্ঞাপণে ক্লিক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়।
অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি, যেগুলোতে অনেক বিপদজনক ম্যালওয়্যার যুক্ত বিজ্ঞাপণ দেখাতে পারে। সেই ওয়েব সাইটে দেখানো বিজ্ঞাপণ গুলো কোন ক্ষতিকারক সফটওয়্যার ও হতে পারে। আর একটি Ad-blocker এটিকে পূর্বেই ব্লক করে দেয়।
এছাড়াও, Facebook তাদের মার্কেটিং এর উদ্দেশ্যে আপনার তথ্য ব্যবহার করে। তবে আপনি ফেসবুকের এড সেটিংসে গিয়ে, আপনার পছন্দের বিজ্ঞাপণ গুলো যুক্ত করতে পারেন এবং কিছু বিজ্ঞাপণ না দেখার জন্য সেগুলোকে রিমুভ করতে পারেন।
Cookies হল আপনার ওয়েবসাইট থেকে পাঠানো ডেটার টুকরো, যা আপনি ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করার সময় আপনার কম্পিউটারে সংরক্ষিত হয়। কুকি একটি ওয়েবসাইটকে মনে রাখতে সাহায্য করে যে, আপনি কে এবং আপনি ইতিমধ্যে এই ওয়েবসাইটে এসে কিরকম অ্যাক্টিভিটি দেখিয়েছেন। তাদের মার্কেটিং কে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এগুলো ব্যবহার করে তারা আপনার সম্পর্কে একটি Clear picture তৈরি করে। যাইহোক, এটি কিন্তু সর্বদা মার্কেটিং এর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় না।
কোন একজন হ্যাকার আপনার সিস্টেমে Malicious cookies রাখতে পারে, যেটির দ্বারা আপনার ডেটার সাথে Compromise করা হবে। Browsing cookie ক্লিয়ার করার জন্য আপনি সেটিংস এ গিয়ে, "Clear browser data" অপশন থেকে Cookies মুছে দিন।
কোন একটি ফাইল ডাউনলোড করার সময় সেটি অবশ্যই লোভনীয় হতে পারে। তবে, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে, আপনি যে ফাইলটি ডাউনলোড করছেন, সেটি একটি ট্রাস্টেড সাইট। আপনি এমন কোন ওয়েবসাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড করবেন না, যেটি পরবর্তীতে আপনার কম্পিউটারের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু ফাইলে Malicious software থাকতে পারে, যা আপনার অজান্তেই স্পাইওয়্যার হিসেবে কাজ করে।
আর, বাংলাদেশের ব্যবহারকারীগণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রিমিয়াম সফটওয়্যার গুলো গুগলের সার্চ করে বের করতে চান। এসব ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ঝুঁকি রয়েছে, তা হলো দূষিত প্রোগ্রাম যুক্ত সফটওয়্যার ডাউনলোড করা। আর ইদানীং অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তারা এ ধরনের সফটওয়্যার পিসিতে ইন্সটল করে Ransomware আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছে। তাই, আপনি অবশ্যই যেকোন ওয়েবসাইট থেকে কোন প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ইন্সটল করতে যাবেন না।
যদিও এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলো থেকে অনেক প্রিমিয়াম সফটওয়্যার বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। এসব ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেশনগুলো মূলত ক্র্যাক ভার্সন। আর প্রত্যেকটি অ্যাপ্লিকেশনের ক্র্যাক ভার্সন পিসিতে ইন্সটল করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে। আমি আপনাকে ট্রাস্টেড ক্র্যাক অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার ওয়েবসাইটের নাম বলবো না। কেননা, এখান থেকেও Malicious program ডাউনলোড হতে পারে এবং Crack Software সবসময়ই বিপজ্জনক, যেটির জন্য আমি দায়ী হতে পারব না।
যাইহোক, আপনি যদি এরকম সফটওয়্যার ডাউনলোড করার উপায় খুঁজে থাকেন, তাহলে আপনার পরিচিত জন অথবা অন্য কোন মাধ্যম থেকে সাহায্য নিতে পারেন।
আমরা অনেকেই সমসাময়িক বিষয়গুলো কিংবা অনেক বিষয়ে আমাদের মতামত দিতে এবং অনলাইন বিতর্কে জড়াতে পছন্দ করি। যদিও এটি ইতিবাচক পদ্ধতিতে করা একটি ভালো অ্যাকটিভির মধ্যে পড়ে। তবে আপনার মূল্যবান তথ্য দেওয়ার জন্য, একজন সম্ভাব্য হ্যাকারকে প্ররোচিত করতে পারে; যেখানে তারা আপনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর জন্য আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে।
তাই, অনলাইনের কোন জায়গায় সবার সাথে কখনো বিতর্কে যাবেন না, এতে করে তাদের ভেতরের কেউ একজন আপনাকে টার্গেট করে সাইবার হামলা চালাতে পারে। এসব ক্ষেত্রে তারা মূলত প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে কিংবা আপনাকে ছোট করার জন্য সাইবার হামলা চালাতে পারে।
আমি আশা করছি যে, কীভাবে হ্যাকিং প্রতিরোধ করা যায়, তা জানতে উপরের তথ্যগুলো আপনার জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করেছে। তাই আপনি নিশ্চিত করুন যে, আপনি আপনার অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং হ্যাকারদের বিরুদ্ধে আপনার ডেটা গুলো রক্ষা করার জন্য উপরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করবেন। সব ধরনের সাইবার হামলা বা হ্যাকিং এর হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনার সচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাই, সেই সচেতনতার বিষয়ে কখনো কম্প্রোমাইজ করবেন না।
মনে রাখবেন, আপনার একাউন্টের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনারই। আপনি আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্ট এর নিরাপত্তার ব্যবস্থা না নিলে, সেটি অবশ্যই হ্যাকিং এর ঝুঁকিতে পড়তে পারে। টিউনটি তবে এ পর্যন্তই। ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)