হার্ডডিস্ক ড্রাইভ, হার্ডডিস্ক, হার্ড ড্রাইভ অথবা ফিক্সড ডিস্ক যাই বলুন এরা আসলে একই ডিভাইস এবং এরা ডাটা স্টোর করার কাজে ব্যবহার করা হয়। সুতরাং হার্ডডিস্ক হলো একটি কম্পিউটার স্টোরেজ ডিভাইস এবং একটি সিংগেল ৩.৫ ইঞ্চি ডিস্ক ড্রাইভ ১০ টেরাবাইট ডাটা স্টোর করতে পারে। সত্যিকার অর্থে হার্ড ড্রাইভের হিস্টোরি শুরু হয় প্রায় ৬০ বছর আগে এবং প্রথম হার্ড ডিস্ক তৈরী করে IBM কোম্পানি। তারা সর্ব প্রথম হার্ড ডিস্ক তৈরী করে ১৯৫০ সালে এবং তখন থেকেই হার্ড ড্রাইভ সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ১৯৬০ সাল থেকে নন-ভোলাটাইল স্টোরেজ ডিভাইস এর জন্য প্রতিটি কম্পিউটারে কমপক্ষে একটি করে হার্ড ড্রাইভ থাকতে শুরু করে। প্রথম হার্ড ডিস্ক এর নাম হলো “IBM 350” যেটা মাত্র ৫ মিলিয়ন ৬বিট ক্যারেক্টার স্টোর করতে পারত। অর্থাৎ এর স্টোরেজ ক্যাপাসিটি হলো ৩.৭৫ মেগাবাইট প্রায় এবং এর ডিস্ক প্লেটার ছিলো ৫০টি। তারমানে শুধুমাত্র একটি ফটো সেভ করার মতো জায়গা ছিলো পুরো হার্ডডিস্ক জুরে। এই হার্ড ডিস্কটি মিউজিয়ামে রাখা আছে। আপনি দেখলে হয়তো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারবেন না কারন এই হার্ড ডিস্কটি ছিল সাইজে প্রায় ২টি রেফ্রিজারেটরের সমান। কিন্তু বর্তমান হার্ড ডিস্ক এর সাইজ ৩.৫ ইঞ্চিতে নেমে এসেছে। এমনকি ল্যাপটপ এর জন্য যে হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হয় সেগুলোর সাইজ ২.৫ ইঞ্চি। মার্কেটে সাধারনত ২ ধরনের ল্যাপটপ পাওয়া যায়,
১। ইন্টারনাল হার্ডডিস্ক HDD
ইন্টারনাল হার্ড ডিস্ক ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ এ ইন্সটল করা থাকে কিন্তু এক্সটারনাল হার্ড ডিস্ককে স্টোরেজ ডিভাইস হিসাবে ব্যবহার করতে হলে ইউএসবির মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়। ইন্টারনাল স্টোরেজ ডিভাইস ডাটা স্টোর ও প্রোসেস করতে পারে কিন্তু এক্সটারনাল স্টোরেজ ডিভাইসে শুধুমাত্র ডাটা স্টোর করা যায়। সাধারনত ফাইল গুলোর ব্যাক আপের জন্য এক্সটারনাল হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। এক্সটারনাল ড্রাইভকে রিমুভাল হার্ড ড্রাইভ অ বলা হয়ে থাকে।
২। এক্সটারনাল হার্ডডিস্ক HDD
ইন্টারনাল হার্ড ড্রাইভ সাধারনত ২টি পোর্ট ইউজ করে থাকে, ডাটা পোর্ট এবং পাওয়ার পোর্ট। ডাটা পোর্ট ব্যবহার করা হয় এডভান্স টেকনোলজি যোগ করার জন্য যেটা ডিস্ক ড্রাইভ এর সাথে ইন্টারেক্ট করতে এবং ডাটা প্রসেস করতে সহায়তা করে। পাওয়ার পোর্ট ব্যবহার করা হয় ইলিক্ট্রিসিটি পাওয়ার কানেক্ট করার জন্য যে পাওয়ার দিয়ে সমস্ত কাজ চালানো হয়।
হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ(HDD)এর বিভিন্ন পার্টসঃ
প্লেটারস যা কিছু ডাটা আপনি আপনার হার্ড ডিস্ক এ সেভ করে থাকেন তার সবই এই প্ল্যাটার এ লেখা হয়ে থাকে। প্লেটটি এলুমিনিয়াম বা গ্লাস এর স্তর দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে এবং ফেরিক অক্সাইড অথবা কোবাল্ট এর একটি পাতলা আবরন দিয়ে ঢাকা থাকে। প্লেটারের সব জায়গা জুরে ম্যাগ্নেটিক পোল ডিরেকশন নামে ছোট ছোট কলাম থাকে, এগুলোতেই ডাটা স্টোর হয়ে থাকে।
স্পিন্ডল মোটরঃ স্পিন্ডল মোটর এক ধরনের মোটর যেটা হার্ড ডিস্ক এ প্লেটারের সাথে যুক্ত থেকে প্লেটার ডিস্কটিকে ঘুরতে সাহায্য করে। এটি প্লেটারটিকে এমনভাবে ঘুরায় যেনো প্লেটারের সকল লেখা ভালোভাবে রিড করা যায়। একটি স্পিন্ডল মোটর যেনো নিয়মিতভাবে স্থিতিশীল পাওয়ার দিতে পারে সে ভাবেই তৈরী করা হয়ে থাকে।
রিড/রাইট হেডসঃ এটি আসলে হার্ড ডিস্ক এর সম্পূর্ণ রিডিং এবং রাইটিং প্রসেসটি সম্পন্ন করে থাকে। এটি ডাটা ম্যাগ্নেটিক স্টোরেজ টেকনোলজি ব্যবহার করে থাকে যার মাধ্যমে প্লেটারে অবস্থিত ছোট ম্যাগ্নেটিক কলামগুলোতে ডাটা স্টোর করা হয়।
একচুয়েটর আর্মঃ এটাকে রিড অ রাইট হেড এর ম্যাকানিকেল আর্ম ও বলা হয় যা হেডকে প্লেটারের উপর খুব সহজে রক্টি নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে মুভ করতে সহায়তা করে।
একচুয়েটরঃ এটা একটা ইলিক্ট্রিক্যাল ডিভাইস যেটা ম্যাগ্নেটিক সিষ্টেম দ্বারা কনট্রোল করা হয়। এটা একচুয়েটর আর্মটিকে ধরে রাখে।
হার্ড ডিস্ক লজিক বোর্ডঃ এটা একটা ইন্টিলিজেন্স প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড যেটা হার্ড ডিস্ক এর ব্যাক এন্ডে থাকে এবং সব ধরনের রিড এবং রাইট প্রসেস এই PCB এর দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় এবং এটি সিংগেল ইন্টারফেস ক্যাবল এর মাধ্যমে হার্ড ডিস্ক কে মাদারবোর্ড এর সাথে যুক্ত করে।
বিভিন্ন সাইজ এর হার্ড ডিস্ক :
মার্কেটে বিভিন্ন সাইজের হার্ড ডিস্ক পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে একটি হলো ৩.৫ ইঞ্চির নরমাল হার্ড ডিস্ক যেটা সাধারনত ডেস্কটপ কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। এর পরেই রয়েছে ২.৫ ইঞ্চির হার্ড ডিস্ক যেটা ব্যবহার করা হয় ল্যাপটপ কম্পিউটারে। সবচেয়ে ছোটো যে সাইজের হার্ড ডিস্ক রয়েছে সেটাও ল্যাপটপে ব্যবহার করা হয় এবং সেটার সাইজ হলো ৯mm এবং ৭mm।
হার্ড ডিস্ক কেনার সময় যে বিষযগুলা দেখে নিবেন:
হার্ড ডিস্ক এর পারফরম্যান্স বলে দেয় এটা কতো বাল বা খারাপ, অথবা কেমন কাজ করবে। এজন্য কেনার সময় স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ছাড়াও বেশ কিছু জিনিস দেখে নেওয়া প্রয়জেন। এখন সেগুলা সর্ম্পকে আমি আপনাদের ধারনা দেযার চেস্টা করব।
RPM: যেহেতু হার্ড ডিস্ক একটি মোটর ডিস্ক এবং রি-রাইটেবল প্লেটার ডিস্ক নিয়ে তৈরী সুতরাং এর পারফম্যান্স ডিপেন্ড করে মোটরের ঘূর্ণন এর উপর। মোটর যত দ্রুত রান করবে তত দ্রুত ডাটা রিড করা সম্ভব হবে এবং সেই সাথে হার্ড ডিস্ক এর পারফরম্যান্স ও বাড়বে। মার্কেটে হার্ড ডিস্কের জন্য বিভিন্ন স্পিডের মোটর পাওয়া যায় যাদের RPM স্পিড বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাজারে ৫৭০০ থেকে ১২০০০ rpm এর হার্ড ডিস্ক পাওয়া যায়। যত বেশী RPM হবে ততো দ্রুত কাজ করবে।
ক্যাশঃ এটাকে HDD ক্যাশ বা ডিস্ক বাফার অ বলা হয়ে থাকে। ডিস্ক বাফার শুধুমাত্র প্রসেসিং ডাটা গুলো স্টোর করতে ব্যবহার করা হয়। যে হার্ড ডিস্ক এর ক্যাশ যত বেশি তার পারফরম্যান্স তত ভালো।
SATA ইন্টারফেসঃ বর্তমানে মার্কেটে ২ ধরনের ডাটা ইন্টারফেস রয়েছে, একটা হলো SATA 2.0 যার ডাটা ট্রান্সফারের স্পিড হলো ৩গিগাবাইট/সেকেন্ড। দ্বিতীয়টি হলো SATA 3.0 যার ডাটা ট্রান্সফারের রেট হলো ৬গিগাবাইট/সেকেন্ড।
বাংলাদেশী সোশ্যাল নেটওয়ার্ক : https://allylook.com/register?ref=roton
আমি রতন কুমার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
allylook profile link : https://allylook.com/roton