র‍্যাম কি? কেনো প্রয়োজন? কতটুকু দরকার? সুবিধা-অসুবিধা সহ বিস্তর আলোচনা – আশ্চর্য

ডেস্কটপ বলেন আর ল্যাপটপ বলেন দুটোর মধ্যেই রয়েছে একটি বিশেষ চিপ , যাকে আমরা র‍্যাম (Random Access Memory) বলে জানি ও চিনি। র‍্যাম একধরনের হার্ডওয়্যার। এটি সাধারনত দ্রুত কোনো সফটওয়্যার বা আপনার  কাজের গতিপথ তৈরী করে দেয়। আপনি বর্তমানে যে ব্রাউজারটি চালাচ্ছেন তা দ্রুত কাজ অন্যতম কারন হচ্ছে র‍্যাম। র‍্যাম হল একধরনের স্মৃতি শক্তির মত । যতক্ষন র‍্যামের মধ্যে বিদ্যুত চলাচল করবে ততক্ষন স্মৃতি থাকবে। অস্থায়ীভাবে রিড/রাইট স্পীড বাড়িয়ে কম্পিউটার সচল রাখাই র‍্যামের প্রধান কাজ।

কম্পিউটার চালাতে গেলে র‍্যামের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যিক । কেননা র‍্যাম না থাকলে আপনি ডেস্কটপ চালুই করতে পারবেন না। অনেক সময় দেখবেন কম্পিউটার এর অন বাটনে চাপ দিলে  চালু হচ্ছে না কিন্তু বিপ শব্দ হচ্ছে। এর কারন হল র‍্যাম কোনো এক কারনে কাজ করছে না। কম্পিউটারের যাবতীয় প্রসেসিং দ্রুত করতে হয় র‍্যামের মাধ্যমে। র‍্যামের কাজ অস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে কাজ করা ;রমের মত কাজ নয়। আপনি যেকোনো গেম বা অন্যকোনো সফটওয়্যার এ কাজ করবেন তখন আপনার অজান্তে র‍্যাম কাজ করে যাবে। আপনি যদি র‍্যাম ও প্রসেসরের গতিবিধি লক্ষ্য করতে চান তাহলে আপনি এই  8gadget pack  নামক সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে পারেন যদি আপনি উইন্ডোজ ১০  ব্যবহার করে থাকেন। তবে  উইন্ডোজ ৭ এ বিল্টইন ভাবে দেয়া থাকে।

আপনি সাধারন একটি বিষয় ভেবে দেখেন বর্তমান বাজারে ১ টেরাবাইট হার্ডডিস্ক এর দাম ৩৮০০ টাকা। অন্যদিকে মাত্র ৪ গিগাবাইট DDR4 এর র‍্যামের দাম ২০০০ হাজার টাকা। কোথায় ১০২৪ গিগাবাইট আর কোথায় ৪ গিগাবাইট কিন্তু দামের দিক দিয়ে হার্ড ডিস্কের এর অর্ধেক। কখনো ভেবে দেখেছেন কেনো এমন হলো?প্রসেসর আর হার্ডডিস্ক যতো দ্রুতই কাজ করুক না কেনো। র‍্যামের সাথে কখনোই পারবে না। স্মুথলি কাজ করতে গেলে র‍্যাম আবশ্যাক। এর র‍্যামের ফলেই আপনি সহজেই যেকোনো কাজ অনায়াসে করতে পারবেন। হোক সেটা ব্রাউজিং বা গেমিং। এখন আসি সুবিধা অসুবিধা নিয়ে –

র‍্যামে সাধারনত ডাটা সেভ হয়না কিন্তু হার্ডডিস্কে সেভ করা যায়। কখনো হুট করে বিদ্যুত চলে গেলে বা আপনি কম্পিউটার বন্ধ করে দিলে আবার যদি চালু তবে আগে ব্যাকগ্রাউন্ডে যে প্রোগাম চলছিল তার কোনো হদিস এখন খুঁজে পাবেন না। হার্ডডিস্কে এ যেমন ডাটা রাখলে আপনি সেটা না ডিলেট করা  পর্যন্ত থেকে যায়, র‍্যাম এর ক্ষেত্রে সব ডিলেট হয়ে যায় আপনা-আপনি। এই কারনেই র‍্যাম এর ট্রান্সফার স্পিড অনেক বেশি। কিন্তু র‍্যাম এর মেমরির সাইজ এর ওপর সব ডিপেন্ড করে না। র‍্যামের ভোল্টেজ এবং বাস স্পিড এখানে অনেক বড় একটা বিষয়। একই বাস স্পিড এর DDR3 র‍্যাম এর থেকে DDR4র‍্যাম অবশ্যই ভালো পারফর্মেন্স দেবে। আবার একি ভোল্টেজ এর কম বাস স্পিড ওয়ালা র‍্যাম থেকে ভালো পারফর্মেন্স দেবে  বেশি বাস স্পিড ওয়ালা র‍্যাম। এখানেঅপটিমাইজেশন এর একটা ব্যাপার আছে।

অনেক সময় দেখা যায় র‍্যাম পুড়ে যায়। কেননা এর ভিতর দিয়ে সবসময় দ্রুতগতিতে বিদ্যুত চলাচল করে। মাঝে মাঝে কিছু কমদামি র‍্যামে স্পেশাল হিটসিঙ্ক দেয়া থাকে না। হিটসিঙ্ক তাপ দূর করে। কিছু সময় খারাপ হিটসিঙ্ক লাগিয়ে র‍্যাম বিক্রি করা হয় যা বেশিদিন টেকসই হয় না। কিন্ত ভালো কোম্পানির র‍্যাম হলে হিটসিঙ্কের দরকার পড়ে না।

আপনার যদি একটি ৮ জিবি র‍্যাম থাকে এবং আপনি যদি আরো একটি র‍্যাম কেনার প্রয়োজন মনে করেন তবে দেখে নিন আপনি কোন ব্র্যান্ডের, কোন বাসের র‍্যাম ব্যবহার করছেন। কেননা সকল প্রোভাইডারদের র‍্যাম একই ভাবে অপটিমাইজেশন করে না। তাই একই বাসের একই কোম্পানির ও একই সাইজের র‍্যাম কিনলে পারফেক্ট অপ্টিমাইজেশনের নিশ্চয়তা পাবেন।

মাঝে মাঝে অনেকেই ভ্যাবাচ্যাকায় পড়ে যায় যে তার কতটুকু র‍্যাম দরকার। আপনিও পড়তে পারেন এমন অবস্থাতে। আমাদের দেশে স্বভাবতই সবাই প্রথমে ৪ গিগাবাইটের র‍্যাম ব্যবহার করে। কেউ ৪ গিগাবাইটের ডুয়েল চ্যানেল করে। কিন্তু এতে সব ই সুবিধা। অসুবিধাটা হল কখনো র‍্যাম বাড়াতে হলে স্লট খুঁজে পাবেন না সার্ভার মাদারবোর্ড ছাড়া। আসলে এটি পুরোপুরি আপনার ওপর ডিপেন্ড করে যে আপনি কি করবেন? কারন আপনি যদি গেম খেলার জন্য পিসি কিনেন তবে র‍্যাম ৮+৮=১৬ জিবি লাগবে ফর এক্সট্রিম পারফরমেন্স। GTA 5 এর ই নূন্যতম রেকমেন্ডশেন ৮ জিবি। তাহলে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে ১৬ জিবি লাগবেই। আবার SSD (State Storage Device) লাগালে আরো ভালো পারফরমেন্স পাবেন। তবে গ্রাফিক্স কার্ডের কথা ভুলে যাবেন না। আবার আপনি যদি সাউন্ড ইডিটিং বা গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করেন তবে তার জন্যও বেশী র‍্যামের প্রয়োজন পড়ে। সেখানেও হাই এন্ড গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে।

কিন্ত ভালো ব্যাপার হল আপনি যদি হালকা কাজের জন্য যেমন ব্রাউজিং, মুভি দেখা, গান শোনা, লিখা-লিখি কাজের জন্য পিসি নেন তবে ৪ জিবি যথেষ্ট। তবে দেখবেন তাও যদি টাস্কবার বা 8gadgest pack দিয়ে চেক করবেন যদি ৯০% এর বেশি লোড থাকে তবে আরো ৪ জিবি লাগিয়ে নিবেন। দারুন পারফরমেন্স পাবেন।
আশা করি অনেকটুকুই বুঝাতে এবং সহজ করে দিতে সক্ষম হয়েছি। আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে আমার ওয়েবসাইটের সাথে জুড়ে থাকুন।

Level 1

আমি সামিউল শুভ। President, https://www.ascorjo.com বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 15 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।

সাফল্য শান্তিতে হয় না,কষ্টে হয় । আমি সেই কষ্টের পিছনেই ছুটি । মাঝে মাঝে ভালোবাসা গুলো টেক এন্ড গ্যাজেটস এর ওপরও হয়ে থাকে ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস