একসময় মরক্কোতে ভেড়া চড়ানো মেয়েটিই কয়েক বছর পর ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হন।
জীবনযুদ্ধে লড়াই সংগ্ৰাম করে হেরে না যাওয়া এই মেয়েটির কঠিন পথের সাফল্যের গল্প চলুন জেনে নেই।
তার জন্ম ১৯৭৭ সালে ফ্রান্সের মরক্কো শহরের এক অতি দরিদ্র পরিবারে।
ছোটবেলায় তার দিন কাটতো মায়ের সংগে ভেড়া চড়িয়ে।
সারাদিন ভেড়ার চড়িয়ে সন্ধ্যায় দুধ বিক্রি করে মায়ের সাথে বাড়িতে ফিরতো মেয়েটি।
তারপর ই বই নিয়ে বসতেন। নিস্তব্ধ রজনীতে শহরের সবাই আরামের ঘুমে আচ্ছন্ন থাকলেও ঘুম নেই মেয়েটির চোখে।
বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু অভাব যার নিত্যসংঙ্গী তার কী পড়াশোনা হয়?বাবা সামান্য একজন নির্মাণ শ্রমিক।
অভাবের সংসারে মেয়েকে পড়াশোনা সেখানো তো তাদের কাছে বিলাসিতার বিষয়।
কিন্তু মেয়েটি পড়াশোনা থামায় না। সে এগিয়ে যায় বহু কষ্টে। কখনো এটা নেই তো কখনো ওটা নেই কিন্তু সে দমে যায়নি।
কয়েকবছর পর তার বাবা একটু ভালো রোজকারের আশায় ফ্রান্সে আসেন। সেখানে এসেও পড়াশোনা চালিয়ে যায় মেয়েটি। অতি কষ্টে ও পড়াশোনা ছাড়ে না সে।
এভাবেই ২০০২ সালে পলিটিক্স থেকে স্নাওকোওর সম্পন্ন করে মেয়েটি।
সে এবার ভাবলো মানুষের জন্য কিছু করবে। যেই ভাবা সেই কাজ। যোগ দেয় রাজনীতিতে।
তার মতো মানুষের জন্য লড়াই করেছেন।
তাদের অধিকারের জন্য।
বর্নভেদ নিয়েও লড়াই করেছেন।
আস্তে আস্তে রাজনৈতিক সফলতায় সবাই তাকে চিনতে শুরু করেন।
অন্যতম একজন ভালো মানুষ হিসেবে। রাজনীতিতে পরিচিত হয়ে উঠে সে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২সালে ফরাসী প্রেসিডেন্ট এর মুখপাত্র নিযুক্ত করা হয় তাকে। পাশাপাশি নারী অধিকার মন্ত্রীর দায়িত্ব ও পান।
সফলতা, সততায় সেখানে ও সে অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছে।
তার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৫সালে ফরাসী সরকার তাকে ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। মেয়েটির নাম নজত বেল্কাসেম।
পরিশ্রম না করলে কখনোই সাফল্য আসে না এটা আমরা সকলেই জানি কিন্তু পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে সবাই পারে না।
এর জন্য তীব্র মনোবল প্রয়োজন । যা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখাও বেশ কঠিন।
কিন্তু হতাশ না হয়ে টিকে থাকলে পারলে সাফল্য একদিন না একদিন ঠিক ই আসবে।
এজন্য ই হয়তো কেউ একজন বলেছিলেন-সাফল্যের পিছনে ছুটো না। কাজ করো, সাফল্য তোমার পিছনে ছুটবে।
নজত বেল্কাসেম বলেন-জীবনে অনেক প্রতিকূলতা এসেছে কিন্তু আমি দমে যাই নি।
আমার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে আমার মতো গরীব, অবহেলিত বঞ্চিত মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানো। তাদের জন্য কিছু করা।
যদি প্রতিকূলতার জটিলতায় পড়ে আমার স্বপ্নের পথ থেকে সরে দাঁড়াতাম, তাহলে আজকে আজকে আমি আমার দেখা স্বপ্ন কে কখনোই সত্যি করতে পারতাম না।
আমরা জীবনে হতাশা হয়ে পড়ি, ভেঙ্গে পড়ি, হাল ছেড়ে দেই।
দিনশেষে পরাজিত সৈনিকের মতো আরো হতাশা আমাদের কে গ্ৰাস করে ফলে।
জীবনে যাই হয়ে যাক, জীবন আমাদের যেখানেই নিয়ে যাক না কেন কখনোই স্বপ্ন দেখা থামাতে নেই।
তাহলে হিসেবের খাতায় শূন্য আমরাই পাব।
একজন ভেড়া পালক থেকে একটি রাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী। ২০ বছর আগে যে মেয়েটি মরক্কোতে ভেড়া চড়িয়েছে ২০বছর পর সে ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছে।
জীবনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে হতাশ না হয়ে শেষ পর্যন্ত কীভাবে টিকে থাকতে হয় তা আমাদের নজত বেল্কাসেম এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
আমি সাইফ উদ্দীন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।