আমার মতো যারা Discovery Channel এর পোকা, তাদের কাছে Man Vs. Wild এর Bear Grylls এর নামটা অচেনা নয়। আসলে আমরা যারা Adventure প্রিয়, তাদের কাছে এই নামটা যেন এক দেবতার নাম। Bear Grylls এমনই একজন লোক, যাকে একই সাথে শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি, আবার ঈর্ষাও করি। বাঁধনহারা এই মানুষটার উত্তেজনাপূর্ণ জীবন কাকে না টেনে ধরে। Bear Grylls এর আসল নামটা কিন্তু Edward Michael Grylls. Bear হল তার ডাকনাম। একটা পর্বে তিনি বলেছিলেন, এই নিকনেমটা নাকি তার বোনের দেওয়া।
আসলে এত বড় একটা চ্যানেলের এত বড় একজন হোস্ট হতে গেলে তেমনই বড় একটা Career প্রোফাইল লাগে। আর Bear Grylls-এর প্রোফাইলে চোখ রাখলে অবাক যে হতেই হবে, সে আর নতুন কি। ব্রিটিশদের ভেতর তিনিই সবচেয়ে তরুণ ব্যক্তি যে কিনা Mount Everest এ চড়েছেন। বয়সটা কত জানেন? মাত্র ২৩ বছর (আমাদের দেশে এই বয়সে আমরা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কিংবা ভর্তি হবার জন্য ছোটাছুটি করে বেড়াই!)। তারুণ্যের জয়গানে তাঁর ঝুলিতে আরও একটা রেকর্ড আছে। তিনি সবচেয়ে কম বয়সে স্কাউটের চিফ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
যাই হোক এত ফিট একটা মানুষ যে ছোট বেলা থেকেই তার অ্যাভেঞ্চারমূলক কাজ করে আসছে, তা-তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাবার কাছ থেকে খুব কম বয়সেই তিনি সেইলিং আর ক্লাইম্বিং পাঠের পালা শেষ করেন। টিনএজার থাকা কালীনই তিনি স্কাইডাইভ শিখে ফেলেন। Shotokan ক্যারাটেতে Dan ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেন।
মজার ব্যাপার হল, তাঁর পেশাগত জীবনে তিনি প্রথম ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেন। পরে তিনি ব্রিটিশ আর্মির স্পেশাল ফোর্সের টেস্টে ১৮০ টা গ্রুপের মধ্য থেকে পাশ করা চারজনের একজন হন। ফোর্সের থাকাকালীন জাম্বিয়ায় এক দুর্ঘটনায় তার মেরুদণ্ডের তিনটি হাড় ভেঙে যায়। অনেকের ধারণা ছিল তিনি হয়তো সারা জীবনের মত প্যারালাইজড হয়ে যাবেন। কিন্তু দীর্ঘ ১৮ মাস (!) হাসপাতালে কাটানোর পরেও তিনি যে দ্বিগুণ উৎসাহে আরও দুঃসাহসিক কাজ করে বেড়াবেন, তা আর কজনই আন্দাজ করতে পেরেছিল? আরও আশ্চর্যজনক বিষয় হল, এই ঘটনার পর-পরই তিনি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন!!
তাঁর এই এভারেস্ট অভিযান আর প্রাপ্তি নিয়ে লেখা Facing Up বইটি ছিল UK top 10 best-seller বইগুলোর একটা। আমেরিকাতে এটা অবশ্য The Kid Who Climbed Everest নামে রিলিজ পায়। বাচ্চাদের জন্যেও তাঁর কয়েকটা survival বই আছে। আমরা আজ যে Man Vs. Wild দেখি, তার প্রথম সিরিজটা প্রচারিত হয়েছিল Born Survivor: Bear Grylls নামে Channel 4 এ। Worst Case Scenario নামে এখন যে সিরিজটি চলছে, আসলে সেটা এই নামেরই একটা বই এর উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকেই ভাবেন এই সারভাইভাল লেসনস দেখে তাদের কি লাভ। আসলে এটা একটা ভুল ধারণা। সারা বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ এই সকল লেসনস এর কারণে অনেক বিপদ থেকে বেঁচে ফিরেছেন। আমাদের নিউরন এর লিমিটেশন byte দিয়ে মাপা যাবে না। কোন একটা ঘটনা দেখলে আমাদের অবচেতন মনে সেটা ধারণ হয়ে যায়। বিপদের সময় Google সার্চিং এর মত হয়তো নিউরন সেই সঠিক সিদ্ধান্তটা এই সকল সারভাইভাল লেসন থেকে খুঁজে বের করে। তাই অবজ্ঞা করে ছুড়ে ফলবেন না। মনোযোগ দিয়ে লেসনগুলো দেখুন। জীবনের আনন্দ নিন।
*এইখানে একটা কথা বলে রাখি, আমি কিন্তু এখনও সরাসরি এখনকার ট্রিক খুব কম ব্যবহার করেছি। শুধুমাত্র একটা বিষয় বাদে। Man Vs. Wild দেখার পর থেকে আমি আমার খাদ্য তালিকাকে Update করেছি। আগে যাদেরকে খাদ্য বলেই মনে করতাম না, তারা এখন আমার প্রিয় খাদ্য। হিঃ হিঃ
*পূর্বে আমার ব্লগে প্রকাশিত।
আমি শঙ্খ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 20 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
উত্তাল সমুদ্রের অতলে হারিয়ে মুক্তা কুড়াতে চাই উত্তর মেরুর কোণে বরফ ঘরে বসে রবি ঠাকুর পড়তে চাই...
প্রথমে স্বাগতম জানাচ্ছি টিটি তে ভাল হয়েছে চালিয়ে যান…………
ধন্যবাদ