কেমন আছেন বন্ধুরা? এটা আমার ২য় টিউন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন।
উনার নাম হয়ত অনেকের কাছেই অজানা। কিন্তু উনার কোম্পানি এর কথা আশা করি সবাই শুনে থাকবেন।জি হা, আমি বস এর কথা বলতেছি। এদের তৈরি স্পিকার, হেডফোন, কার অডিও এর কথা কে না জানেন। জুলাই এর ১২ তারিখ উনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যান পরপারে। উনি ছিলেন একাধারে বস এর ফাওন্ডার, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, চেয়ারম্যান এবং শিক্ষক।
১৯২৯ সালে অ্যামেরিকার ফিলাডেলফিয়া তে উনার জন্ম। মা ছিলেন একজন অ্যামেরিকান। কিন্তু বাবা ছিলেন বাঙালি , যার জন্ম ভারতের কলকাতা শহরে। উনি ছিলেন তৎকালীন ইন্ডীয়া ও বাংলার মুক্তিকামী, এর জন্যে উনাকে জেল ও খাটতে হয়েছিল। বস কলেজ শেষ করার পর অ্যামেরিকার সবচেয়ে নামি দামি ভার্সিটি এম।আই।টী। তে ভর্তি হন। গ্রাজুয়েশন করেন ইলেক্ট্রিক্যাল ইনজিনিয়ারিং এর উপর। এরপর তিনি গবেশনার খাতিরে ইন্ডিয়া, নেদারলেন্ড সহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করেন এবং পরে একই বিষয় এর উপর পি।এইচ।ডি করেন।
তিনি এম।আই।টি তেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং পরে প্রফেসর হন। ১৯৫৬ সালের এক গ্রীষ্মে তিনি একটি উচ্চ মানের স্টেরিও সিস্টেম কিনেন এবং খুবি হতাশ হন। তিনি বলেন, এটার টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী এটা তেমন একটা পারফর্মেন্স দিতে পারছে না। সংগীত উপভোগ করা যায় তখনই যখন মনে হয় শিল্পী আমার সামনে লাইভ পারফরমেন্স করছেন। এরপর তিনি গবেষণা শুরু করেন। দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণার পর তিনি ১৯৬৬ সালে বস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তিনি আজীবন অক্লান্ত পরিস্রম করেন সাউন্ড এর পিছনে। তিনি সাইকো অ্যাকাস্টিক নিয়ে বছরের পর বছর গবেষণা করেন।তার বহু পেটেন্ট আছে। এর অনেক পেটেন্টই আজ সনি, কেনউড, পক অডিও এর মত কোম্পানি ব্যবহার করছে। আর বস এর স্পিকার এর কথা না হয় নাই বা বললাম। সারা দুনিয়া তে বস এর অডিও সিস্টেম এর খ্যতি এর কথা সবাই জানে। আপনারা কি জানেন? বস কিন্তু প্রাইভেট কোম্পানি। বস বলেন, শুধুমাত্র এই কারনেই তিনি সুদূরপ্রসারী গবেষণা করতে পেরেছেন অডিও এর উপর। তিনি বলেছেন, " আমি যেভাবে কাজ করে তাতে আমি কোন কোম্পানিই আমাকে চাকরিতে রাখত না। আমি টাকা কামানোর জন্যে কোম্পানি খুলিনি, আমি এমন কিছু করতে চেয়েছি যা এর আগে কেউ কখনো করেনি।"
১৯৫৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ ৪৫ বছর তিনি এম।আই।টি তে শিখকতা করেন। ২০১১ সালে তিনি তার কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ার এম।আই।টি তে দান করেন। অডিও প্রযুক্তির পাইওনিয়ার এই বিজ্ঞানী ২০১৩ সালের ১২ই জুলাই মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। পৃথিবীর অনেক নামি দামী জায়গায় বস এর সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহৃত হয়, তার মধহে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হছহে, মুসলমানদের অত্তন্ত পবিত্র আর প্রিয় মক্কা কাবা শরিফ(মসজিদ আল হারেম)।
আমি বাজি ধরে বলতে পারি অনেকেই এই বিখ্যাত ব্যক্তিটির কথা জানতেন না। আপনাদের কথা আর কি বলব, আমি নিজেই ত জানতাম না। নিজে কিছু জানলাম, ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করলে ভাল লাগবে। টিউনটি কষ্ট করে পরার জন্যে অসখ্য ধন্যবাদ।
আমি Unicorn। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 42 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার বড় ভাই বোস এর একটি সাউন্ড সিষ্টেম কিনেছিলন $ 5000 বহু বছর আগে … তখন সেই সাউন্ড সিষ্টেমের সাথে একটি রেডিও ফ্রি দেয়া হয়েছিল… রেডিওর কথা শুনে আনেক হেসেছিলম…. ভাইয়া তখন বলেছিলন যে, সেই রেডিও নাকি বিশেষ এক উপায়ে তৈরি.. এর ভেতরে ১মিটার লম্বা একটি পাইপ আছে… জার দরুন… সেই রেডিওর সাউন্ড নাকি অসাধারন ক্লিয়ার…. এই রকম একটি রেডিওর দাম নাকি ২০০ ডলারের মত ছিল… সেই ভাইয়ার কাছ থেকেই বোস সম্পর্কে কিছুটা জেনেছিলাম….
আমি শুধু জানতাম যে বোস একজন ভারতীয়…. এবং উনি এমআইটির প্রফেসর… আজ অনেক কিছু জানলাম… ধন্যবাদ টিউনটির জন্য।