ইউনিকোডে তৈরি বাংলা সাইট দেখাতে প্রস্তুত নয় সাইবার ক্যাফের কম্পিউটারগুলো

সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় সবকিছু। বিশেষ করে একটি রাষ্ট্রের জন্য সময় অনেক কিছুই পাল্টে দেয়। তেমনিভাবে বাংলাদেশও কালের পরিক্রমায় আজ অনেক বদলেছে। বাংলাদেশেও প্রবেশ করতে শুরু করেছে তথ্য-প্রযুক্তির উন্নত সব প্রযুক্তি। বাংলাদেশেও এখন আছে লক্ষ লক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। আছেন ব্লগার, ওয়েব ডেভেলপার ও প্রোগ্রাম। বিশ্ববিখ্যাত ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের প্রতিষ্ঠাতা তিন তরুণের মধ্যেই তো একজন আছে বাংলাদেশী। যা বাংলাদেশের জন্য সত্যিই গর্বের বিষয়।

বাংলাদেশ থেকে গত কয়েক বছরে প্রকাশিত হয়েছে হাজার হাজার ওয়েবসাইট। এর একেকটি একেক উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি। একেকটি একেক ডিজাইনের। এর মধ্যে গত পাঁচ ছয় বছরের মধ্যেই ইউনিকোডের মাধ্যমে মাতৃভাষা ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলায় ওয়েবসাইট তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম যখন একটি বাংলা ওয়েবসাইট প্রকাশিত হয়, তখন তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয় বাঙ্গালীদের মাঝে। প্রিয়তম ভাষা বাংলাকে কম্পিউটারের পর্দায় না শুধু, বরং তথ্যসমুদ্র ইন্টারনেটেও দেখতে পেয়ে বাঙ্গালীর সে কি আনন্দ। আসলে আনন্দ পাবার মতই বিষয়। তথ্য-প্রযুক্তির এই উন্নত যুগে বাংলা ভাষায় ওয়েবসাইট না থাকাটাই বরং আশ্চর্যজনক হতো। বিশ্বের ইতিহাসা বাংলা একটি গৌরবগাঁথা ভাষা। বাংলার আছে রক্তভেজা ইতিহাস, আছে কোটি কোটি মানুষের প্রাণ। এই ভাষার সমৃদ্ধিতে আমরা কাজ করবো না তো কারা করবে।

বাংলা ইউনিকোডে তৈরি করা সম্ভব এবং সহজ এটি বুঝার পরই বাংলাদেশে একের পর এক তৈরি হতে থাকে ইউনিকোডভিত্তিক সম্পূর্ণ বাংলা ভাষার ওয়েবসাইট। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয় সামহোয়্যার ইন ব্লগ, বিজ্ঞানী ডট কম, টেকটিউনসের মত প্রযুক্তিবিষয়ক ও সামাজিক বিষয়ক ওয়েবসাইট। প্রত্যেকটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বের হয় বিবর্তনের মত সাহিত্য পত্রিকাও। আজও এসব সাইট চলমান। শুধু চলমান বললে ভুল হবে, বরং জনপ্রিয়। ইন্টারনেটে মাতৃভাষায় পড়তে ও লিখতে কে না পছন্দ করে।

মূল বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সাইবার ক্যাফে থেকে। বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি বা বিশেষ করে ইন্টারনেটের প্রসারে সাইবার ক্যাফে একটি অতি-গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সাইবার ক্যাফে না থাকলে বহু মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগই পেতেন না। কারণ একটি কম্পিউটার ক্রয় করা ও মাসে মাসে ইন্টারনেট খরচ দেয়ার সাধ্য ক'জনেরই বা আছে। তাই সাইবার ক্যাফে বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রযুক্তি উন্নয়নের একটি অন্যতম সহায়ক। তবে বর্তমানে সামহোয়্যার ইন, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণসহ ইত্যাদি অসংখ্য ওয়েবসাইট ইউনিকোডে তৈরি হয়েছে এবং ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে বাংলা ফন্ট না থাকলে এই সমস্ত সাইট দেখা যাচ্ছে না। যদিও কিছু কিছু ওয়েবসাইট ইওটি ফন্ট ডাউনলোড করার মাধ্যমে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে দেখার সুবিধা দিচ্ছে, তবুও উন্মুক্ত জ্ঞানকোষ বাংলা উইকিপিডিয়ার মত অসংখ্য ওয়েবসাইটই দেখা যাচ্ছে না। এসমস্ত সাইট হারাচ্ছে প্রচুর সংখ্যক ভিজিটর শুধু এই কারণে যে, তারা যেই কম্পিউটার ব্যবহার করছেন, সেই কম্পিউটার ইউনিকোড সাপোর্ট করে না। বাংলার ব্যবস্থা না থাকায় আরো নানামুখী সমস্যা হচ্ছে। বাংলা প্রিন্টের সুবিধার্থে অনেকেই কম্পিউটারে বিজয় বাংলা সফটওয়্যার ইন্সটল করে রাখেন (তাও অনেক অল্পসংখ্যক। পুরো মিরপুর এক নম্বর ঘুরে মাত্র দু'টো ক্যাফেতে বাংলা প্রিন্টিংয়ের সুবিধা আছে) কিন্তু বিজয় ফন্ট দিয়ে তো আর ইউনিকোডের কাজ হয় না। তাই ব্যবহারকারীরা পারেন না প্রিয় মাতৃভাষায় তৈরিকৃত অসংখ্য ওয়েবসাইট ভিজিট করে পড়তে বা লিখতে।

সাইবার ক্যাফে মালিকদের একটি নিয়ন্ত্রণকারী কমিটি বা বোর্ড আছে যাকে আমরা Cyber Cafe Owners' Association Bangladesh (CCOAB) নামে চিনি। আমি মনে করি ঐ বোর্ড যদি দেশের সব সাইবার ক্যাফে মালিকদেরকে নিজেদের সবক'টি কম্পিউটারে ইউনিকোড সেটিংস ইন্সটল করানোর পদক্ষেপ নেন, তাহলে দেশের কোন ক্যাফেতেই আর এ সমস্যা থাকবে না। তাই আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি কোয়াবের যথাযথ কমিটির, অনুগ্রহ করে এ ব্যাপারে অচিরেই কোন একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলাদেশকে অনেক ভালবাসি। আমাদের দেশের কম্পিউটারেই আমাদের ভাষা প্রদর্শন হবে না এর চাইতে লজ্জার ব্যাপার আর কী হতে পারে। আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে। কিন্তু আমাদেরকে সেই দেশপ্রেমের নজির দেখাতে হবে। নইলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুরন্ত আশা কবিতার মতই আমরা বাঙ্গালী চিরকালই পিছে পড়ে থাকব। বিশ্বের বুকে একটি সম্মানজনক স্থান আমরা নিজেরা বানিয়ে নিতে পারব না। যেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে সেই রাষ্ট্রের প্রতি ভালবাসা নেই, সেই রাষ্ট্র কীভাবে উন্নত হবে? আমরা সবাই জানি বাংলা ভাষাকে পাবার জন্য সালাম, রফিক, শফিকের মত লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণের ত্যাগের কথা, আমরা জানি আমাদের পিছনের ইতিহাস। আমাদেরকে সেভাবেই চলতে হবে। যেন বিশ্বের যেকোন হাইওয়েতে যে কেউ আমাদের দেখলেই বাঙ্গালী বলে সম্মান করে।

Level 0

আমি মো. আমিনুল ইসলাম সজীব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 83 টি টিউন ও 201 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 7 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আমিনুল ভাই, আপনি কিছুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন যে টেকটিউনস সাইবার ক্যাফের পিসি থেকে ঠিক মত পড়া যায় না। আই কমপ্লেক্স বাংলা ইন্সটল করা যায় না বলে। সে ক্ষেত্রে সমাধান হচ্ছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার 6 বা তার উপরের ভার্সন ব্যবহার করা। আমি কমপক্ষে 25 টি পিসিতে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করে টেকটিউনস পড়েছি। চমৎকার ভাবে বাংলা পড়া ও টিউন লেখা যায়।

আপনার কথা ঠিকই। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার না থাকলে তো দেশের বাংলা সাইটগুলোর বারোটা বাজতো। কিন্তু, অনেক কম্পিউটারে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে বাংলা আসলেও, ভাঙ্গা ভাঙ্গা আসে। পড়া যায় ঠিকই, কিন্তু আমার ধারণা, এতে চোখের খুব ক্ষতি হয়।

আমিনুল ইসলাম ভাইয়ের প্রস্তাবটা কিন্তু খুবই যুক্তি সংগত। আচ্ছা আমরা টেকটিউনাররা কিছু করতে পারি না?

এটা কিন্তু একদম পানির মত সহজ একটা কাজ। টেকটিউনস উন্ডোস এক্সপির জন্য আইকমপ্লেক্স বাংলা’ ডেভেলপ কেরেছে যা মূল আই কমপ্লেক্স (প্রায় ৩.৫ মেগা) থেকে অনেক ছোট মাত্র ৩৩৮ কেবি। আর এটি ইন্সটল করলে ভিন্দার ছোট ফন্ট সমস্যাও থাকে না। এটি খুব তাড়াতাড়ি ডাউনলোড করে ইন্সটল করা যায়। কোয়াব যদি সাইবার ক্যাফে গুলোতে যদি এটি ইন্সটলের পরামর্শ দেয় তবে খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।

তা ঠিকই। দেখা যাচ্ছে সব কিছুই নির্ভর করছে কোয়াবের উপর। তাই তো আমি কোয়াবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পোস্টটা করেছি। কারণ আইকমপ্লেক্স বলেন আর যাই বলেন, এগুলো ইন্সটল করতে Administrative Right প্রয়োজন হয় যা কোন সাইবার ক্যাফের পিসিতেই থাকে না।

অ্যাপল সাফারি দিয়ে সবচেয়ে ভালো বাংলা পড়া যায়। চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তবে আই এস পি গুলো সাধারণত পুরানো কম্পিউটার ব্যবহার করে। বাংলা লেখা সমর্থন করবে কিনা ওদের ওএস তা দেখবার বিষয়

sajiduc.blogspot.com

যাই হোক না কেন, যথারীতি কোয়াব এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করাটাকেই শ্রেয় মনে করবে!

ওদের লজ্জা হওয়া উচিৎ এজন্য যে, লক্ষ লক্ষ মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ভাষা বাংলা প্রদর্শনের উপযোগী নয় তাদের অধীনে থাকা শত শত কম্পিউটার।

কোয়াব তো এসব কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। তাদের আরো বড় প্রজেক্ট আছে যেমন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গাড়ী কিনা, বাড়ি বানানো। এই সব ছোট খাটো বিষয় দেখার সময় কোথায়।

জনাব মাহমুদ অপু ভাই কি সিরিয়াসলি কথাটা বলেছেন?

আমিনুল ইসলাম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন৤ ভাষা হল আমাদের জীবন-জীবিকার মূল হাতিয়ার, সেই হাতিয়ারকে যদি আমরা সঠিক যত্নে লালন না করি তবে তা আমাদের জীবনে কোনও সঠিক পথ ও জীবিকার সুযোগ করে দিতে পারবে না৤ তাই সর্বত্র বাংলা যাতে সুষ্ঠু উপায়ে ব্যবহার করা যায় সাবইকেই সে উদ্যোগ নিতে হবে৤ ব্যক্তি বিশেষের দায় যতটা প্রতিষ্ঠানগুলির দায় তার চেয়ে অনেক বেশি৤ তাই আমিনুল ইসলামের প্রস্তাব যত দ্রুত রূপায়িত হয় ততোই মঙ্গল৤ বাংলা ইউনিকোড তৈরি হওয়াতে আমরা সব জায়গা থেকে ওয়েবে বাংলা পড়তে পারছি৤ অতি আধুনিক যন্ত্র কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়েও পিছুটান থাকলে অগ্রগতি হবে কেমন করে?
ধন্যবাদ সহ,
বিনীত, –মনোজকুমার দ. গিরিশ ০৫/০৮/২০০৮ কোলকাতা

এসব কোয়াব মোয়াব দিয়া কিছু হবে না। টেকটিউনস তো বাংলার জন্য নিবেদিত বোঝা যায়। টেকটিউনস কী কোন উদ্যগ নিতে পারে না?

এ ব্যাপারে টেকটিউনস কী করতে পারে ঠিক বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশে ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ ছাড়া কোন কাজই হয়না। একথা আপনি আমি সবাই জানি। তাই আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি টেকটিউনসকে আপনি পরামর্শ দিতে পারেন এ ব্যাপারে টেকটিউনস কী উদ্যোগ নিতে পারে।

আশা করছি এগিয়ে আসবেন আপনার মূল্যবান মতামত নিয়ে।

@ প্রযুক্তিবিদ, আমিনুল ইসলাম

আপনাদের মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। টেকটিউনস চায় প্রযুক্তিকে বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে আরও সাবলীল ও সহজ করে তুলতে। আমরা কোয়াবের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করব বলে চিন্তা করছি। তবে ভাল সাড়া পাব কিনা জানি না। আর আমরা ইউনিকোড বাংলাকে ক্যাফে গুলোতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশ কিছু কাজ কবর বলে ভাবছি।

টেকটিউনসের দৃষ্টি এইদিকে পড়েছে বলে প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই। আমার ধারণা কোয়াবের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাবেন তবে সুফল কিছুই পাবেন না। তাই আমি মনে করি, টেকটিউনস যদি নিজস্ব কোন উদ্যোগে এগিয়ে যায়, তাহলেই ভাল হবে। তবে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য সাইবার ক্যাফের হদিস টেকটিউনস পাবে কি করে? যদিও কোয়াবের ব্যাপারে আমি ততটা আশাবাদী নই, তবুও আমার মনে হয় কোয়াবকে ছাড়া এ কাজ সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই।

আচ্ছা, আইকমপ্লেক্সটাকে পোর্টেবল করা যায় না? যদিও এই সম্পর্কে আমার তেমন ধারনা নেই। তবে আইকমপ্লেক্সটা পোর্টেবল করা গেলে সমস্যাটার সাময়িক একটা সমাধান হতো।

তেমন কিছু আমি বলবনা, বা বলতে চাইনা। আমি অত্যন্ত গরীব একটি মানুষ। মেথরের কাজ করি। প্রবাসে আছি। টাকা পয়সা তেমন একটা রোজগার করতে পারিনি। কিন্তু আমার প্রবল ইচ্ছা দেশে একটি সাইবার ক্যাফে করার। পনরটি কম্পিউটার নিয়ে বসতে গেলে তো অনেক টাকার দরকার। কিন্তু, আসলে অত টাকা আমার কাছে নেই। এরপরও একটা সমস্যা, তা হলো, শুধু কম্পিউটার হলেই তো হচ্ছেনা, হাইস্পীড ইন্টারনেট লাইন লাগবে। এখন ওটা পেতে আমাকে কি করতে হবে তাও জানিনা। আমি ক্যাফেতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখবো। ইউনিকোড বাংলাই নয়, যত রকম আধুনিক সুযোগ সুবিধা আছে, আমি সব দিতে সচেষ্ট থাকব। শুধু চিন্তা, ডিজিটাল বাংলায় এই সুবিধা গুলো আমি পাবো তো?!?

    আপনাকে যেকোন ভাবে help করতে পারলে খুশি হব…………………

Level 0

ধন্যবাদ ভাই । আমার খুব ভালো লাগে, যে আমি বাঙালি ……………………