আপনি জানেন না আপনি ইতিমধ্যে কি উপকার করে ফেলছেন। সত্যি জানেন না ব্লগ গুলো বাংলাদেশের কি উপকার করছে। কিছুই না করুক, অনেক গুলো ছেলে মেয়েকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছে। অনেক গুলো ছেলে মেয়ে নিজেদের ক্যারিয়ার নিজেরাই গঠন করে নিতে পারছে এ বাংলা ব্লগ গুলোর কারনেই। আজ ফ্রীল্যান্সিং করে অনেক লক্ষ লক্ষটাকা রুজি করে, এমন কয়েকটি ছেলে মেয়েকে যদি জিজ্ঞেস করেন আপনি প্রথম কিভাবে ফ্রীল্যান্সিং এ ধারনা পেয়েছে? ৮০% এর বেশি বলবে আমি ব্লগ থেকে ফ্রীল্যান্সিং সম্পর্কে জেনেছি।
শুধু ফ্রীল্যান্সিং না, অনেক অফিশের বড় বড় কর্মচারীরাও এ ব্লগ গুলো ফলো করে। নিজেরা কিছু শেখে। কারন তারা নিজেদের হাতে সময় নেই ঘেটে ঘেটে কোন কিছু বের করা। আর এ ব্লগ গুলো লেখে ছোট বড় সকলেই। তবে এ খানে ছোট ছোট কম বয়সী তরুনরাই বেশি।
টেক বা তথ্য পূর্ন ব্লগ গুলো বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিতে এখন অনেক সাহায্য করছে। অনেক বললে ভুল হবে, এখন তা পত্রিকা বা নিউজ মিডিয়া থেকে বেশি। পত্রিকা খুলে অনেকেই পড়তে সময় পায় না, টিভি দেখার মত সময় বা ধৈর্য্য অনেকেরই নেই। তাদের এক মাত্র ভরসা সোসিয়াল মিডিয়া এবং ব্লগ গুলো। সময় পেলেই চোখ ভুলিয়ে নিতে পারেন পুরো দিনের ঘটে যাওয়া বিষয় গুলোর উপরে। আর অনেকেই ইংরেজী খবর গুলো পড়তে পারে না। পারলে অলস সময় নিজের ভাষা ছাড়া আর কিছুই ভালোলাগে না। তাই বাংলার উপরেই ভরসা।
কেন জানি অন্যান্য ভাষার তুলনায় বাংলা ভাষায় ব্লগ সংখ্যা বেশি। ইন্ডিয়া, পাকিস্তান এবং আমাদের আশে পাশে যত গুলো দেশ আছে সব গুলো দেশের থেকে আমাদের দেশে ইন্টারনেটে আমাদের নিজস্ব কন্টেন্ট বেশি। কমিউনিটি ব্লগ ও অনেক। আপনি শুনে অবাক হবেন যে বাংলাদেশের মধ্যে তাই প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞানী লোক ও বেশি। ইন্ডিয়া এত বড়ো দেশ, কিন্তু প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে আমরা তাদের সাথে পাল্লা দেওয়া ক্ষমতা রাখি ছোট দেশের অল্প কিছু মানুষ দিয়ে। বাঙ্গালিদের মধ্যে আন্তরিকতার কারনে কমিউনিটি ব্লগিং দিন দিন আরো বেড়েই চলছে। এটা দেশের তথ্য এবং প্রযুক্তির দিক দিয়ে অসাধারন অবদান রাখছে। আর যত বেশি কমিউনিটি বাড়ছে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। ব্রেইন স্ট্রিমিং অনেক বিশাল একটা বিষয়। “আমি কি জানি আমার বন্ধু কি জানে”, “আমি কত টুকু পিছিয়ে রয়েছি”, “ নাহ! আমার বন্ধুটি অনেক বেশি জানে আমাকেও জানতে হবে” এমনি চিন্তা ধারা গুলো বের হয়ে আসে কমিউনিটি গুলো থেকে। আরেকটা বড় বিষয় বের হয় তা হচ্ছে প্রতিযোগিতা। আপনার বন্ধুটি যদি আপনার থেকে ভালো জানে, আপনার ও ইচ্ছে হবে তার থেকে ভালো জানা, তাই না? আপনি না চাইলেও হবে, কারন মানুষের মন/ব্রেইন এমন ভাবেই তৈরি। জেনেটিক্যাল সমস্যা। নিজেকে সবার থেকে সেরা হিসেবে দেখা। আপনি যদি একোটা কমিউনিটিতে যোগ দেন তাহলে নিজের ভুল গুলো দেখে, নিজের অজানা গুলো দেখে সহজেই নিজেকে আপডেট রাখতে পারেন। কমিউনিটি গুলোতে নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের আলোচনা হচ্ছে। “এটা এভাবে না ঐ ভাবে", “আরে আপনার তথ্য তো ভুল রয়েছে”, “এটা আসলে এভাবে হবে”, এভাবেই কমিউনিটি গুলোতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ হয়ে নিজের ভুল গুলো ঠিক করে নিচ্ছে। এতে করে তথ্য গুলোও অনেক সঠিক হচ্ছে, আমরা সঠিক তথ্য জানতে পারছি।
এতে বাংলাদেশের লাভ কি জানেন? আপনা মত একজন দক্ষ, জ্ঞানী নাগরিক পাচ্ছে। আর একজন সু নাগরিক দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর একজন ব্লগার এখন একজন সু নাগরিক, একজন সচেতন নাগরিক। দেশের ডাকে সবার আগে সাড়াদেয়।
আপনি একটি বিষয় খুব ভালো পারেন, তা যদি আপনি সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে সবার মাঝে শেয়ার করতে পারেন, তাহলে অন্যরাও সেটা জানতে পারে। জ্ঞান এমন একটা জিনিস যা শেয়র করলে কমে না, বাড়ে। আরেকটা জিনিস হচ্ছে আপনি যদি অনেক কিছু জানেন, আর তাতে নিজে নিজেই তৃপ্ত থাকেন তাহলে আপনার ঐ জ্ঞানের দাম নেই। যে জ্ঞান অন্যকে জানানো যায় না তার ও কোন দাম নেই। আর আপনি একটি বিষয় যে ভাবে লিখতে পারবেন বা বুঝাতে পারবেন তা অন্য আরেক জনে পারবে না। তাই পারলে আজ থেকেই লেখুন, আপনি যা জানেন তাই লিখুন। আর আপনি দেখন যখন লিখতে জান তখন ঐ বিষয় সম্পর্কে আরেকটু ভালো জানতে হয়, তখন নিজে নিজেই তা শিখে নিতে পারবেন। মনে পড়ে আপনারা পড়ালেখা করার জন্য, পরীক্ষায় ভালো করার জন্য নোট লিখতেন? ভালো ছাত্রের নোট গুলো যেমন সবাই কপি করত, সবাই নিয়ে পড়তো তেমনি আপনার ভালো লেখা ও সবাই পড়বে, সবাই জানবে। হ্যা, ব্লগ গুলোই আপনার নোট। এটা কি কম পাওয়া? এটাকে আমি অনেক বড় একটা পাওয়া হিসেবে দেখছি।
আপনি হয়তো বলবেন লেখা লিখি করে লাভ কি? আমার ইচ্ছে হলে তো আমি নিজে ইংরেজী থেকেই পড়ে নিতে পাচ্ছি। আপনি কি আপনার থেকে যারা পিছিয়ে রয়েছে তাদের কথা চিন্তা করবেন না? আমরা তো বাঙালি, একই দেশের নাগরিক। আপনি হয়তো ইংরেজী জানেন, তাই ইংরেজী গুলো পড়তে পারেন, বুঝতে পারেন। কেউ কেউ ইংরেজী পারে না। আর কেউ কেউ ভয়েও শিখে না ইংরেজী। তাদের কথা কি আপনি চিন্তা করবেন না? আপনার কাছে হয়তো একটি বিষয় অনেক সহজ। আপনার পাশের বন্ধুর কাছে অনেক কঠিন তার কথা চিন্তা করেই আপনি লিখুন। আজ একটু লিখুন কাল আরেকটু। এভাবেই দেখুন আপনি বাংলাদেশের জন্য কত বিশাল অবদান করে যাচ্ছে। দশটা লেখা লেখার পর আপনি আপনার পেছনের লেখা গুলো পড়ে দেখুন। আপনার নিজের কাছেই তখন তৃপ্তি লাগবে। মনে হবে আরে, আমি এত ভালো লিখতে পারি? তখন আরো লিখতে ইচ্ছে করবে। এখন শুধু শুরু করার সময়। কে কি বলছে তার দিকে তাকানোর সময় কিন্তু আপনার হাতে নেই। আজ নিজে নিজে লিখতে না পারেন, আপনি অনুবাদ করতে পারেন তাই করুন। আমাদের ইচ্ছে বাংলাকে সমৃদ্ধ করা, বাংলাদেশ কে সমৃদ্ধ করা। পত্রিকায় আপনার লেখা না ছাপাক, আপনি নিজের একটা ব্লগ খুলে নিন অনলাইনে। নিজের ব্লগে নিজে লেখুন। কাছে বন্ধুদের কাছে শেয়ার করুন।
আর তা না করে আরো ভালো একটা উদ্দ্যেগ নিতে পারেন, যে বুদ্ধি খাটিয়ে আজ খান একাডেমি এত বড় এবং বিশ্ব ব্যাপি একটা অনলাইন প্রতিষ্টান হয়েছে। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেখা দেখি অনেক গুলো না অনেক হাজার অনলাইন একাডেমি সৃষ্টি হয়েছে। আরেকটি বড় ব্যাপার হচ্ছে খান একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশী।
বিষয়টি হচ্ছে বন্ধুদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। আমি জানি আপনি আপনার ক্লাসের ভালো ছেলে। পরীক্ষায় না পারলে ও আপনার একটা বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারনা আছে। আর আপনার বন্ধুরা আপনাকে সে বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে দোস্ত এটা কিভাবে করব? আপনি সব সময় তাদের সমস্যা সমাধান করে দিয়ে থাকনে। আজ এক বন্ধু আসল, কাল আরেকটা, পরশু আরেকটা, একই বিষয় নিয়ে। আপনার তখন আরে চতুর্থ দিন সাহায্য করতে ইচ্ছে করবে না। কারন আপনি বোরিং হয়ে যাবেন। আর এ থেকে মুক্তির উপা হচ্ছে, আপনার প্রথম বন্ধুর কাছে থেকে সমস্যাটা শুনুন। তার পর তার বিস্তারিত সমাধান আপনি লিখে পেলুন। তা আপনার ব্যাক্তিগত ব্লগে প্রকাশ করে দিন। তার পর আপনার বন্ধুদেরকে লিঙ্কটা পাঠিয়ে দিন। এতে আর আপনার লেখাটা কিন্তু শুধু আপনার ক্লাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। তা আস্তে আস্তে আপনাদের স্কুল/কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে পুরো বাংলাদেশের ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাভাষা ও সমৃদ্ধ হবে, হবে সমৃদ্ধ পুরো বাংলার ইন্টারনেট, ওয়েব।
কিন্তু সমস্যা অন্য যাগায়। সবার ইন্টারনেট নেই, কম্পিউটার ও নেই। তাহলে যে বন্ধুর ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার নেই, তার কি হবে? তাকে কি আপনি সাহায্য করবেন না? তাকেও আপনি এবার সাহায্য করতে পারবেন। আপনার লেখাটির একটি কপি প্রিন্ট করে দিন [ ফুটারে কিন্তু আপনার নাম/ ক্রেডিট নিতে ভুলবেন না] দেখবেন আপনার ঐ কপিটি অনেকেই নিজেরা ফটোকপি করে রাখছে। নিজের কাছেই তখন ভালো লাগবে। দেখুননা, আপন সবার সাহায্যে আসতে পারছেন আর নিজেও সবার কাছে পরিচিত হতে পারছেন। আরেকটা কথা কি জানেন? সাহায্য সবাই করতে পারে না। সবার সাহায্য কিন্তু কাজেও আসে না। কাউকে সাহায্য করে একটা তৃপ্তি পাওয়া যায়, ঐ তৃপ্তি অনেক মজার।
আমার এত কথা বলার কারন কি জানেন? একজন নতুন ব্লগার সৃষ্টি করা। একজন লেখক যেন এটা দেখে আবারও লেখার ইচ্ছে জাগে। বাংলাদেশ তথ্যের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হোক। এটাই প্রত্যাশা।
আপনি যদি ইতি মধ্যে কয়েকটা ব্লগ নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন একটা জিনিস আপনি দেখে থাকবেন । দেখবেন যারা ব্লগ লিখে তারা সবাই একটা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তারা কিন্তু প্রথমে আমার আর আপনার মতই ছিল। তাদের ভালো অবস্থানে যাওয়ার পেছনে কিন্ত লেখা লেখি অনেক ভালো কাজে দিয়েছে। আমার মতে লেখা লেখিই তাদেরকে এ ভালো অবস্থানে নিতে সাহায্য করেছে। কিভাবে জানেন? তারা যখন একটা বিষয় লিখে ,অনেক ভালো জেনে লিখতে হয়। তখন একটা বিষয় নিজের ইচ্ছে মত জ্ঞান অর্জন করে দক্ষ হতে পারে। আর একটা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন কিন্তু অনেক সহজ বিষয় নয়। আরেকটা কারন হচ্ছে তাদের সাথে অনেক মানুষের পরিচিতি ঘটে। তারা যদি কোন বিষয় না জানে, তার নতুন ঐ বন্ধুটি যদি তা জানে, তাহলে লেখক বন্ধুটিকে তারা শিখিয়ে দেয়। তারা জানতে পারে কি ভাবে কি করতে হবে। আর এভাবেই কিন্তু তারা এগিয়ে থাকে সবার থেকে।
আমি জানি আপনি লেখা লেখি না করলেও অনেক ভদ্র। তবে আমার সাথে যত জন লেখকের সাথে পরিচয় রয়েছে তারাও খুব মার্জিত। ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন এবং ভদ্র। এবং কাউকে খারাপ ব্যবহার করতে দেখি নি। আমি জানি না এটা কাকতালিয় নাকি লেখক হওয়াতে সবার সাথে মেশার কারনে তার এসব গুন গুলো বেড়েছে। তাই বলে আপনাকে আমি জোর করে লেখক হতে বলছি না, বা লেখক হলেই যে ভদ্র তাও না। এটা কমিনিটির গুন। একটা কমিনিটিতে থাকলে আপনি নিজেও অনেক কিছু শিখকতে পারবেন। কি ভালো কি খারাপ সব জানতে পারবেন।
আপনি চিন্তা করুন বাংলাদেশে একদিন সব দিক দিয়ে সেরা হবে। তখন কেমন হবে? এখন অনেক দিক দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে আছে, আরো সামনে যাবে। বিশ্বের শীর্ষ ১২ উদ্যোক্তার মধ্যে রয়েছেন ড. মুহম্মদ ইউনুস। এটা কি কম? ইয়াহু ক্রিকেটের ‘দ্য ড্রিম এশিয়ান এলিভেন’ এর এগারো জনের মধ্যে ৫ জনই বাংলাদেশী, এসব খবর শুনলে নিজের মধ্যে কেমন একটা শক্তি পাই। মনে হয় আমি ও পারবো। আমার পারা উচিত। কারন ওরাও তো মানুষ। আমাদের খুব কাছের মানুষ, আমাদের মতই খায়, চলে, ঘুমায়। ওরা বাঙালি হয়ে যা পারছে আমি ও তা পারবো। আমি ওদের থেকে আরো ভালো করব। এরকমি ভাবতে ইচ্ছে করে... আর আজকের ভাবনাটাই আগামীকালের বাস্তবতা হয়ে সামনে আসুক আমাদের সকলের... সকলের জন্য শুভ কামনা। সকলেই স্বপ্ন দেখুক, সকলের স্বপ্ন গুলো পূরন হোক। সেই সাথে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াক।
জাকির হোসাইন
আমি জাকির হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 224 টি টিউন ও 1487 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
পৃথিবীতে অল্পকয়েক দিনের জন্য অনেকেই আসে, হেঁটে খেলে চলে যায়। এর মধ্যে অল্প কয়েক জনই পায়ের চাপ রেখে যায়।ওদের একজন হতে ইচ্ছে করে। প্রযুক্তির আরেকটি সেরা ব্লগ টেকটুইটস। আপনাদের স্বাগতম, যেখানে প্রতিটি বন্ধুর অংশ গ্রহনে গড়ে উঠেছে একটি পরিবার। আপনাদের পছন্দ হবে আশা করি। ফেসবুকে আমি - ?জাকির!
thats true…..