নতুন macOS 11.0 Big Sur এ নতুন যে ফিচার গুলো থাকছে

টিউন বিভাগ অ্যাপল
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

হ্যালো টেকটিউনস জনগণ, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন। এখন থেকে নিয়মিত আবার নতুন টিউন নিয়ে আমরা হাজির হলাম আপনাদের কাছে। আর টেকটিউনসের নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিস নিয়ে ভালো না থেকে আর উপায় আছে? আর এই নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিসের ধারা বজায় রাখার নিমিত্তে, আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আর আপনারা এই টিউনের মাধ্যমে জানতে পারবেন অনেক নতুন নতুন সব তথ্য।

বাতাসে পরিবর্তনের সুর বইছে। আর এর ধারাবাহিকতায় macOS 11.0 Big Sur এ নিয়ে এসেছে অনেক অনেক পরিবর্তন, অ্যাপল ম্যাকের আপকামিং CPU আর্কিটেকচারে macOS এর ইউজার ইন্টারফেসের সম্পূর্ণ রিডিজাইন করেছে এবং বরাবরের মতোই একটি রিফাইন ইন্টারফেস এর নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তো এই টিউনে দেখবেন সদ্য রিলিজ (১২ নভেম্বর, ২০২০) হওয়া Big Sur নতুন কি কি থাকছে।

macOS 11 প্রবেশ করুন: macOS 10.x কে বিদায় জানান

২০০১ সালে Mac OS X 10.0 কে রিলিজ দেওয়ার পর থেকে, Apple 10x এর উপর ভিত্তি করে 10.0 এবং 10.15 এর প্রায় ১৬ টি মেজর ভার্সন আপডেট করেছিল। এমনকি Apple যখন ২০১৬ সালে “Mac OS X” থেকে শুধু “macOS” নাম রাখার সিদ্ধান্ত নিল তখনও এই (10.x) ধরনের ভার্সন নাম্বারিং সিস্টেমই তারা ফলো করেছিল। আর Big Sur এর মাধ্যমে, macOS 10.x থেকে সরাসরি 11.0 ভার্সনে জাম্প করলো, দেখাযাক এই নতুন ভার্সনে তারা নতুন কি কি পরিবর্তন বা ইম্প্রুভমেন্ট আনলো।

macOS: একটি রিফ্রেসড ইন্টারফেস এবং কন্ট্রোল সেন্টার

Big Sur এ, অ্যাপল Finder সহ তাদের সমস্ত অ্যাপ্লিকেশানে macOS এর ফিল যুক্ত করেছে, এছাড়াও তারা তাদের বিভিন্ন ফিচারকে আরও সিমপ্লিফাইড করছে, যেমনঃ toolbars, buttons, এবং menus ইত্যাদি। আর তারা একটি নতুন ফিচার যার নাম translucent menu bar নিয়ে এসেছে, যা আপনারা refreshed dock থেকে দেখে নিতে পারবেন এবং অ্যাপ আইকনগুলোও রিডিজাইন করেছে।

আর macOS এর সমস্ত অ্যাপ্লিকেশানের আইকনগুলো এখন iOS এর মত একই সেপ ও সাইজে রিডিজাইন করা হয়েছে। Apple তাদের সমস্ত প্ল্যাটফর্মে একই রকম রাখার উদ্দ্যেশে iOS এবং iPadOS থেকে বাটন এবং টুলবারে ব্যবহৃত “cut” কমান্ডের জন্য একটি কেচি/কাঁচি এর আইকন যুক্ত করেছে।

Big Sur এ, ভিজ্যুয়াল ইন্টারফেসেও অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে, আর সাউন্ড সিস্টেম এই ইম্প্রুভমেন্টের বাইরে নয়। Apple বলেছে তারা macOS 11.0 এ new এবং “remastered” উভয় শব্দ যুক্ত করবে যাতে রিলিজের পরও একটা অন্যরকম অনুভুতি বিদ্যমান থাকে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, Notification Center সেন্টারেও বিরাট পরিবর্তন আনা হয়েছে, যখন আপনি স্ক্রিনের উপরের ডানদিকের কর্ণারে মেন্যু বারে ক্লিক করবেন তখন, নোটিফিকেশন গুলো এখন widget এর পাশাপাশি একটি ইউনিফাইড স্ক্রিনে দেখতে পাবেন।

এছাড়াও, Mac অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে Control Center এর মত প্রয়োজনীয় টুলস। আর তাই আপনি iOS এবং iPadOS এর মত প্রায়শই ব্যবহৃত কাজগুলোকে শর্টকাট এর মাধ্যমে অনেক দ্রুত পরিবর্তন করতে পারবেন যেমনঃ ভলিউম বাড়ানো বা কমানো, ব্লুটুথ এনাবেল বা AirPlay চালু করা ইত্যাদি। তাছাড়াও আপনি কন্ট্রোল সেন্টারকে ড্রাগ করে মেন্যু বারেও নিয়ে আসতে পারবেন।

Safari: এখন আরও ফাস্টার আরও প্রাইভেট

macOS 11.0 এর মেজর আপডেটে Safari এর স্পীড, প্রাইভেসি ফিচার এবং এক্সটেনশন-এ মেজর আপগ্রেড পাচ্ছে।  WWDC 2020 এর মূল বক্তব্য চলাকালীন Apple দাবি করেছিল যে, আপনারা ঘন ঘন যে ওয়েব সাইটে ভিজিট করেন সেই সব ওয়েব সাইট Google Chrome এর থেকে Safari প্রায় ৫০% দ্রুত লোড হবে। আর লেটেস্ট Safari তে কাস্টমাইজ করা যায় এমন একটি স্টার্ট পেইজ থাকবে আর ইউজাররা ওয়ালপেপার ড্রাগ করে স্টার্ট পেইজে ছেড়ে দিলেই ওয়ালপেপার সেট হয়ে যাবে এবং আর এটিতে এক্সটেনশনের ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড WebExtensions API সাপোর্ট করবে। এছাড়াও কোন ওয়েব সাইটে কোন এক্সটেনশনটি চলবে অথবা চলবে না তাও সেট করতে পারবেন।

এছাড়াও Safari ব্রাউজারে overhauled ট্যাব সিস্টেম ফিচার ব্রাউজারের ট্যাবে যুক্ত করেছে, নতুন ট্যাব ম্যানেজ করার অপশন এবং যেকোন ট্যাবের উপরে মাউসের কার্সর হোভার করলেই ঐ ট্যাবে থাকা ওয়েব পেইজের একটি প্রিভিউ দেখার মত দরকারি ফিচারও রয়েছে নতুন Safari ব্রাউজারে।

আর প্রাইভেসির ক্ষেত্রে, Safari ব্রাউজারের টুলবারে একটি নতুন প্রাইভেসি রিপোর্ট বাটন যুক্ত করেছে, যার মাধ্যমে আপনি যেকোন ওয়েব সাইটের প্রাইভেসি পলিসির উপরে একটি স্ক্রোরকার্ড দেখতে পারবেন।

Big Sur ভার্সনে Safari ব্রাউজারে বিল্ট-ইন ট্রান্সলেশন ফিচার যুক্ত করেছে যার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ভাষায় ওয়েব সাইটিকে ট্রান্সলেশন করতে পারবেন, ফলে আপনাকে ইন্টারন্যাশনাল ওয়েব সাইটে ভিজিট করার সময় গুগল ক্রোম ব্রাউজারের সহায়তা নিতে হবে না।

Messages: মেমোজি, ইফেক্টস

Big Sur এ, Messages অ্যাপে যুক্ত করেছে নতুন সার্চ ফিচার, রিডিজাইন ফটো পিকার এবং আপনি এখন থেকে Mac এ Memoji তৈরি ও ব্যবহার করতে পারবেন। আর iOS এবং iPadOS ও থাকা Messages এর মতোই Mac ভার্সনেও ইফেক্টস সাপোর্ট করে (যেমনঃ animated confetti, balloons)। এছাড়াও আপনি কনভার্সেশন পিন করতে এবং গ্রুপ ম্যাসেজগুলোকে আরও ভাল ভাবে ম্যানেজ করতে পারবেন - আর iOS এবং iPadOS এর আপকামিং আপডেটে Messages এর এই ফিচারগুলো অ্যাড করা হবে।

Maps

Messages অ্যাপের মতোই, Maps অ্যাপও macOS 11.0 তে মেজর আপডেট পাচ্ছে, যার ফলে এটি iOS 14 তে থাকা সকল ফিচার এই Maps অ্যাপ্লিকেশানে থাকবে, ফলে তাদের প্রত্যেকটি ডিভাইসেই ইউনিটি থাকবে। আর এই Maps অ্যাপসের বাপ পাশে আপনি আপনার পছন্দসি লোকেশনগুলো অ্যাড করতে পারবেন, এছাড়াও যেকোন লোকেশনে কিভাবে যাবেন তা আগে থেকেই "My Guides" অপশনে অ্যাড করতে পারবেন এবং রয়েছে ইনডোর ম্যাপস এর মত সুবিধা, উদাহরণস্বরূপঃ আপনি এয়ারপোর্টের মধ্যে থাকলে তার ভিতরকার ম্যাপ দেখে নেভিগেট করতে পারবেন সহজেই।

Apple এর Maps অ্যাপ Mac একটি ফিচার রয়েছে যার নাম Look Around, যা গুগলের Street View অ্যাপ এর মতই - যেকেউ তাদের তোলা ফটো ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। এছাড়াও, আপনার কোন বন্ধু যদি তাদের ETA আপনার সাথে শেয়ার করে, তাহলে তারা কোথায় রয়েছে তা আপনি ঘরে বসেই লাইভ লোকেশনের মাধ্যমে দেখতে পারবেন।

Mac Catalyst

Catalyst হচ্ছে একটি ডেভেলপার ফ্রেমওয়ার্ক যার সাহায্যে iPad এর অ্যাপস গুলো Mac অ্যাপসে কনভার্ট করতে পারবেন। আর এই Big Sur আপডেটে Catalyst অ্যাপেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইম্প্রুভমেন্ট আনা হয়েছে, ফলে Mac এর নেটিভ স্ক্রিনের রেজোলিউশন, নতুন মেনু এবং কীবোর্ড API, এবং চেকবক্স এবং ডেট পিকার এর মত কিছু ফিচারও অ্যাড করা হয়েছে যার ফলে আপনি এই অ্যাপ্লিকেশানের ইন্টারফেসের উপর পুরোপুরি কন্ট্রোল করতে পারবেন।

Apple ঘোষণা করেছে যে Maps এবং Messages এখন Catalyst ব্যবহার করবে (অন্যান্য ম্যাক অ্যাপ্লিকেশনগুলির পাশাপাশি Catalyst বর্তমানে ব্যবহার করে আরও কিছু অ্যাপ রয়েছে, যেমনঃ Stocks, Voice Memos, এবং Podcasts)। আর এইভাবে, Catalyst এর মাধ্যমে Mac এবং iPad এর অ্যাপ ভার্সনের মধ্যেও সমতা নির্ণয় করবে।

কম্প্যাটিবিলিটি এন্ড অ্যাভেইলেভেলিটি

নতুন macOS 11 তাদের Mac ভিত্তিক Apple এর নতুন চিপ এবং Intel ভিত্তিক Mac এর প্রসেস উভয় চিপেই চলবে, আর Mac ভিত্তিক Apple এর নতুন চিপটি এখন বাজারে আস্তে আস্তে অ্যাভেইলেভেল হবে। Apple জানিয়েছে যে, Intel CPU থেকে “Apple Silicon” এ রূপান্তর করতে প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে তারা আশা করছে, তাই তাই ভবিষ্যতে বছরের পর বছর না হলেও কমপক্ষে দীর্ঘকাল ইন্টেল প্রসেসরে macOS 11 এর আপডেটের প্রত্যাশা করাই যায়।

টিউন জোসস করুন, আমার টিউন শেয়ার করুন, টেকটিউনসে আমাকে ফলো করুন, আপনাদের মতামত জানান

আমি এরকম নিত্যনতুন কাজের সফটওয়্যার নিয়ে টেকটিউনসে হাজির হবো নিয়মিত। তবে সে জন্য আপনার যা করতে হবে তা হলো আমার টেকটিউনস প্রোফাইলে আমাকে ফলো করার জন্য 'Follow' বাটনে ক্লিক করুন। আর তা না হলে আমার নতুন নতুন টিউন গুলো আপনার টিউন স্ক্রিনে পৌঁছাবে না।

আমার টিউন গুলো জোসস করুন, তাহলে আমি  টিউন করার আরও অনুপ্রেরণা পাবো এবং ফলে ভবিষ্যতে আরও মান সম্মত টিউন উপহার দিতে পারবো।

আমার টিউন গুলো শেয়ার বাটনে ক্লিক করে সকল সৌশল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। নিজে প্রযুক্তি শিখুন ও অন্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানান টেকটিউনসের মাধ্যমে।

Level 8

আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 183 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

দারুন পোস্ট রায়হান ভাই, ভালো লাগলো।