সুপ্রিয় টেকটিউনস, বিগত কয়েক দিন যাবত শারীরিক অসুস্থ থাকার জন্য টিউন করা হয়নি। আপনাদের দোয়া, আশীর্বাদে সুস্থ হোয়ে আজ আবার টিউন করলাম, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। টেকটিউনস পরিবারের সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউন।
আপনি বলবেন সুরক্ষা ব্যবস্থা ভালো করলেই সুরক্ষিত থাকব। উত্তর কিন্তু সঠিক। কিন্তু আমরা তা না করে কি করি জানেন? চোরের হাতেই চাবি তুলে দিই। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে আপনার বাসায় থাকা সকল মূল্যবান সামগ্রীই চুরি হবে। জানি আপনারা হয়ত এটা ভাবছেন যে এটা কোনো প্রযুক্তি বিসায়ক টিউন তো নাকি সিকিউরিটী কোম্পানির অ্যাড। না আসল কথায় আসি। আপনার পিসি যদি আপনার বাসা হয় তো তার রক্ষা করা দায়িত্ব আপনার। আর আপনি সেটা ক্রা-ক বা এক্টিভেটর ব্যবহার করে নিজে থেকেই চোরের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
কম্পিউটার সিস্টেমের সুরক্ষার কথা ভাবলেই প্রথম যে কথা মাথায় আসে তা হলো। আন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার।
গল্পের শুরু অনেক কাল আগে - ১৯৭১ সালে বব টমাস ক্রীপার প্রোগ্রাম নামে একটি পরীক্ষা মূলক সেল্ফ রেপিলেকেটিং প্রোগ্রাম বানান, যদিও তার উদেশ্য ছিল খালি একটা ম্যাসেজ শো করানো কিন্তু সেটি ইনফেক্ট করে বসে TENEX অপারেটিং সিস্টেম চালিত ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন এর কম্পিউটার কে। আর এটাই ছিল প্রথম ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার। রে তমলিন্সন, রিপার নামক একটি প্রোগ্রামে দিয়া এই ভাইরাস থেকে মুক্তি দেয়, অনেকে তাই এটাকে ফার্স্ট আন্টি ভাইরাস প্রোগ্রামের মর্যাদা দেয় যদিও সেটি একটি কম্পিউটার ওয়ার্ম ছিল। বেরন্ড ফিক্স ১৯৮৭ সালে ভিন্নেনা ভাইরাস মুক্ত করে প্রথম আন্টি-ভাইরাস আবিস্কারকের মর্যাদা পান। তারপর থেকে যে কত ভাইরাস আর আন্টি ভাইরাস এসেছে তা বলতে গেলে আরো ১০ টা টিউন শেষ হয়ে যাবে।
গুগল বাজারে গিয়ে দেখুন একবার হাজার হাজার আন্টি ভাইরাস পাবেন। কিন্তু বেশির ভাগই পেইড। কেউ কেউ ফ্রিতে ও দেয় কিন্তু ফ্রিতে পাওয়া যে কি হতে পারে তা আগেই জেনে গেছেন টেক সমাধান টিউনার ভাইয়ের সৌজন্যে, না জানলে এখানে ক্লিক করুন আর জেনেনিন।
নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে, নিজেকে সজাগ থাকতে হবে। সাধারণত ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার আপনার পিসিতে প্রবেশ করে আপনার হাত দিয়া। কখনো সেটা আপনার অজ্ঞাতসারে আর কখনো সেটা জ্ঞাতসারে। কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করার আগে জানতে হবে যে সেই সফটওয়্যার কি আদৌ আপনার জন্য খুবই জরুরি কিনা যদি খুব জরুরি না হয় তবে ইনস্টল করবেন না ; এতে আপনার পিসি স্লো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। ক্রা-ক বা কিজেন্ বা এক্টিভেটর যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন।
আর ব্যবহার হয়ে গেলে পাসওয়ার্ড দিয়া জিপ ফাইল বানিয়ে, অনলাইন সার্ভার এ রেখে দিন, নিজের পিসি তে বেশি দিন রেখে দিলে ভাইরাস ইফেক্টড হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সিরিয়াল কি ব্যবহার করুন বা.DLL, .EXE ফাইল রিপ্লেস করে ব্যবহার করুন প্রো ভার্সন সফটওয়্যার ইনস্টল করার সময়। একান্ত খুব দরকার বা অন্য উপায় না থাকলে তখন ক্রা-ক বা কিজেন্ বা এক্টিভেটর। আপনি যদি একজন ইন্টারনেট ইউসার হন তবে খেয়াল রাখবেন যে সাইটে আপনি ভিসিট করছেন সেটা সেফ কিনা? অনলাইন লিংক চেক করতে পারেন এই এখান থেকে
কয়েকটি রিপোর্ট আপনাদের জন্য Norton Antivirus এর নাম তো শুনেছেন নিশ্চই তার একটি ফলস ভাইরাস ওয়ারনিং আমদের প্রাণ প্রিয় টেকটিউনস নাকি আনসেফ।
আর অন্য দিকে Online Link scan রিপোর্ট আমদের প্রাণ প্রিয় টেকটিউনস নাকি সেফ
আমি উইন্ডোজ ডিফেন্ডার। আমাকে তৈরি করা হয়েছিল একটা অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম হিসাবে, আমার আগে মাইক্রোসফট আমার ভাই মাইক্রোসফট সিকিউরিটি এস্সেন্সিয়াল নামক একটি প্রোগ্রাম তৈরি কারে কিন্তু কার্যক্ষমতা দিক দিয়া সেটা ছিল একটা বেসিক অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম। তারপর আমার সৃষ্টি। আমি যথেস্ট শক্তিশালী আগের থেকে। আমাকে আমার কাজ কারার জন্য মাইক্রোসফট কোম্পানি আমাকে উইন্ডোজ ৮ এবং তার পরবর্তী ভার্সন গুলিতে একটি ডিফল্ট প্রোগ্রাম হিসাবে রেখেছে। কিন্তু অনেকে আমাকে তাদের উইন্ডোজ পিসিতে রাখে না কারণ আমি নাকি সেই ভাবে ভাইরাস রিমুভ করতে পারিনা। কিন্তু আমার সাম্প্রতিক রেসাল্ট তো সেটা বলছেনা। আমি ৯৫% ভাইরাস রিমুভ করতে সক্ষম আমি বলছি না এভি-টেস্ট বলছে।
আমার একটা প্রশ্ন ছিল আপনাদের কাছে। বলতে পারেন কি আমার দোষ? কেন আমাকে আনইন্সটল কারা হয়? আমি তো ওই সব ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস এর মতোই বারবার ফুল ভার্সন কারার জন্য বিরক্ত করিনা। কিম্বা প্রতি বছর নতুন ভার্সন ডাউন-লোড কারার অনুরোধ করিনা। আমি কিন্তু আপনাদেরকে সতর্ক করে দি, বলে দি এই অ্যাপ্লিকেশানটি আপনার পিসির ক্ষতি করতে পারে, আর আপনারা আমার সেই সতর্ক উপেক্ষা করে অ্যাপ্লিকেশানটি ইন্সটল করেন আর বিপদের সামনে পড়েন। আর মনে করেন যে আমি কাজ করতে পারি না। আমাকে কাজ করতে দিলে তবে তো আমায় জানবেন যে আমি পারিনা না কি পারি? আমি তো সর্বদা চেষ্টা করি যাতে আপনি বিপদ মুক্ত থাকেন। আর আপনারা খালি ওই সব প্রো. ভার্সন ইন্সটল করেন ক্রা-ক বা কিজেন্ বা এক্টিভেটর ব্যবহার করে। এতে কি সত্যি আপনারা বিপদ মুক্ত হছেন না কি চোরের হাতে বাসার চাবি দিতেছেন সেতো আপনারাই ভাল জানবেন কি তাইতো?
এটা নির্ভর করছে আপনার উপর। আপনি কি রকম কাজের সাথে যুক্ত। যদি আপনি হোম ইউসার হন তো আপনার জন্য বেস্ট মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার, কানা-খোড়া-কালা ওই সব ফ্রি আন্টি ভাইরাস এর চেয়ে অনেক ভালো। ভাবছেন " বিল কাকুর প্রোডাক্ট এর অ্যাড দিতেসে রে এই বার পোলাডা "। কিন্তু সত্যি বলছি সেটা কখনই নয়। আপনি যদি আপনার পিসিতে ইনস্টলড মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার কে মোটামুটি রেগুলার আপডেট করেন, আর প্রতি মাসের প্রথম মঙ্গলবার miscellaneous software removal Tool আপডেট দিয়া থাকেন তা হলে আপনি সত্যি অনেকটা সুরক্ষিত থাকবেন। না হলে আপনি ফ্রী অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করতে পারেন। আর সেই ফ্রী অ্যান্টিভাইরাস গুলির মধ্যে সবচেয়ে ভাল অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস ফ্রী। এভি-টেস্ট এর রিপোর্ট হিসাবে প্রায় ১০০% প্রটেকট করতে পারে।
যদি আপনি অন্য কোনও অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করতে চান সেটা আপনার বাক্তিগত মতামত কিন্তু প্র-অ্যান্টিভাইরাস যদি ব্যবহার করতে চান তাবে ক্র্যা-ক বা এক্টিভেটর ব্যবহার করবেন না। আপনার পিসিতে ভাইরাস প্রবেশ করে আর একভাবে সেটা হল রিমুভেবেল ডিস্ক এর মধ্যে দিয়া তাই যখন কোনো রিমুভেবেল ডিস্ক পিসি তে ইন্সটল করবেন বা লাগাবেন সেটাকে আন্টি ভাইরাস দিয়া স্ক্যান করে নেবেন। তাহলে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। ব্রাউজার এ অ্যাড ব্লকার রাখুন, কারন অ্যাড এর মধ্য দিয়ে অনেক সময় স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার আপনার পিসি তে প্রবেশ করে।
উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অফ লাইন আপডেট লিংক হল এটা ৬৪ বিট উইন্ডোজ ১০, ৮.১, ৮ এর জন্য
উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অফ লাইন আপডেট লিংক হল এটা ৩২ বিট উইন্ডোজ ১০, ৮.১, ৮ এর জন্য
উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অফ লাইন আপডেট লিংক হল এটা ৬৪ বিট উইন্ডোজ উইন্ডোজ ৭ ও ভিস্তা এর জন্য
উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অফ লাইন আপডেট লিংক হল এটা ৩২ বিট উইন্ডোজ উইন্ডোজ ৭ ও ভিস্তা এর জন্য
উইন্ডোজ ডিফেন্ডারকে রাইট ক্লিক অপশন এ আনতে হলে এই রেজ ফাইলটি মার্জ কারান।
পুনরায় রাইট ক্লিক থেকে ডিসেব্যাল করতে হলে এই রেজ ফাইলটি মার্জ কারান।
আর আপনি যদি প্রফেশনাল ইউসার হন তখন আপনি তো এক্সপার্ট আপনাকে আর নতুন করে কি বলবো।
আর একটা মজার তথ্য জানেন কোনো অ্যান্টিভাইরাস আপনাকে ১০০% গার্ড করতে পারেনা। তাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে, নিজেকে সজাগ থাকতে হবে। বিশ্বের ২৪ শতাংশ পিসিতে কোনো অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা হয়না।
অনুসরন করুন কিন্তু অনুকরণ করবেন না। যারা টিউমেন্টে তাদের অসুবিধার কথা বলেন তারা যেন পরে আর একবার টিউমেন্ট করেন, সাহায্য পেলে বা উপকৃত হলে। কারণ তাহলে জানা সম্ভব হয় যে সাহায্য করতে পারলাম কিনা। আমার এই টিউন যদি কারোর খারাপ লেগে থাকে তবে আমি একান্তই দুঃখিত। আমার কাউকে দুঃখিত করার কোনো প্রকার উদ্দেশা নেই। নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন করতে পারেন। আর দয়া করে নির্ভেজাল টিউন করে টেকটিউনস পরিবারকে সমৃদ্ধ করুন।
খুব তাড়াতাড়ি ফিরছি আবার পরের টিউন। ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন, আর প্রবেলম হলে আমিতো টেকটিউনসে আছি।
আমি অভিষেক হাজরা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 31 টি টিউন ও 437 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 15 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
আমি অভিষেক , মাইক্রোসফট টেক প্রসেস এ কর্মরত ; ভালো লাগে টেকটিউন কে ভালোবাসি বললে ভালো হয় , আর তাই বার বার ফিরে আসি। নতুন কে জানার টানে। নতুন কে জানানোর টানে।
পড়ে পড়ব 😉 আগে কমেন্ট করে যাই 😛 চোখ বন্ধ করে বলা যায় ভাল টিউন