বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো। আমিও ভাল আছি।
আজ ১৬ই সেপ্টেম্বর। বিশ্ব ওজোন দিবস। এই ওজন কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর ওজন নয়। ওজোন হলো পৃথিবীর চারপাশে বেস্টিত এক ধরনের গ্যাসীয় বলয় যা পৃথিবীতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি বা পদার্থ প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে পৃথিবীকে নিরাপদ রাখে। সেই ১৯৯৫ সাল থেকে সারা বিশ্বে ওজোন লেয়ার সংরক্ষণের জন্য প্রতি বছর ১৬ই সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস হিসেবে পালিত হয়। আর এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো,
“নিরাপদ সূর্যালোকে যতনে থাকিবে প্রাণ”।
বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওজোন লেয়ার এখন হুমকির মুখে। তাই আসুন কার্বন ব্যবহারের হার কমাই। আপনার আমার পরিবেশটাকে সুস্থ রাখি।
মূল টিউনে চলে যাচ্ছি। আজ কথা বলবো অ্যান্ড্রয়েড-এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে যেগুলো সাধারণত যেগুলো সাধারণত একদম ছোট অফিস থেকে বড় বড় অফিস পর্যায়ে পর্যন্ত কাজে লাগে। হ্যাঁ বন্ধুরা, আজ কথা বলবো ফ্যাক্স নিয়ে। তার আগে বলে নেয়া যাক ফ্যাক্স জিনিসটা আসলে কী?
এটা আমরা সবাই জানি যে ফ্যাক্স হলো এক ধরনের চিত্র গ্রহণ ও প্রেরণ যন্ত্র। আর এটি অনেক প্রাচীন একটি পদ্ধতি। এর উদ্ভাবক আলেকজান্ডার বেইন (১৮১৮-১৯০৩)। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো এটি চলে টেলিফোন লাইনের সাহায্যে। প্রশ্ন হতে পারে তাহলে এর মাধ্যমে কীভাবে ছবি পাঠানো যায়? হ্যাঁ, সেটি নিয়েও কথা বলবো। আবার আরেকটি প্রশ্নও হতে পারে। এই ইমেইল এর যুগে ফ্যাক্স এর কী দরকার? সেটাও বলবো। আর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখুন প্রতিটি ফ্যাক্স মেশিনের একটি নম্বর থাকে। সেই নম্বরটিতেই ফ্যাক্স করতে হয়।
টেলিফোন লাইনের সাথে একটা ফ্যাক্স মেশিন যুক্ত থাকে। প্রথমে পেপারটি ফ্যাক্স যন্ত্রের মাধ্যমে স্ক্যান হয়ে একটি সিঙ্গেল গ্রাফিক ইমেজে রুপান্তরিত হয়। এরপর রঙের প্রগারতার উপর ভিত্তি করে সেটা এক ধরনের অডিও তরঙ্গে কনভার্ট হয়ে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে অন্যপ্রান্তে অপর একটি ফ্যাক্স মেশিনে গিয়ে আবার অডিও তরঙ্গ থেকে কনভার্ট হয়ে গ্রাফিক ইমেজে রুপান্তরিত হয়ে প্রিন্ট হয়ে বেরিয়ে আসে।
প্রথমদিকের যন্ত্রগুলোতে এটা করতে বেশ সময় লাগতো। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে আসার পর আমরা বর্তমান যুগের ফ্যাক্স মেশিনগুলো উপভোগ করছি। প্রযুক্তির উন্নতিতে এখন শুধুমাত্র ফ্যাক্স মেশিন দিয়েই ফ্যাক্স করা যায় না। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকেও বানিয়ে ফেলতে পারেন ফ্যাক্স মেশিন যেকোন মুহূর্তে। আর সেই কাজটা কীভাবে করবেন সেটা নিয়েই মূলত আমার আজকের এই টিউন। তো চলুন দেখে নেয়া যাক এমন কী ধরনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি ফ্যাক্স করতে পারবেন।
একটা বিষয় মাথায় রাখুন অ্যান্ড্রয়েড-য়ে যেকোন ধরনের স্ক্যানিং অপারেশনের জন্য ভালো ক্যামেরা আবশ্যক। তাই আপনার ফোনের ক্যামেরা ভাল হলে আপনার কাজটি আরো বেশি সুন্দর হবে। প্রথমেই আপনার যে কাজটি করতে হবে তা হলো ফোনের ক্যামেরা দিয়ে প্রথমেই আপনাকে এটি স্ক্যান করে ডকুমেন্টটি ফোনেই সংরক্ষণ করতে হবে। সাধারণত ডকুমেন্টটি পি ডি এফ-য়ে কনভার্ট করা হয়। কিন্তু আপনি চাইলে আপনার ফোনের গ্যালারি থেকেও এই কাজটি করতে পারেন।
দুর্গাভ্যবশত, এভাবে আপনি ফ্রিতে ফ্যাক্স করতে পারবেন না। আপনার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকতে হবে অথবা আপনাকে প্রিমিয়াম অ্যাপ কিনে ব্যবহার করতে হবে।
এরপর আরো একটি অ্যাপ রয়েছে যার নাম হলো ফ্যাক্সফাইল (Fax File)। এই অ্যাপটি চলে ক্রেডিট সিস্টেমে। আপনাকে ডলার দিয়ে ক্রেডিট ক্রয় করতে হবে। আর সেই ক্রেডিটগুলো ব্যবহার করে আপনাকে ফ্যাক্স করতে হবে। নিচের ধাপগুলো দেখলে পরিষ্কার হবেন বিষয়গুলোতে।
এছাড়াও আরো একটি ফ্যাক্স টুল পাবেন। সেটি হলো জিনিয়াস ফ্যাক্স (Genius Fax)। এটিতেও আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে। আসলে ফ্যাক্স মেশিনগুলো বাণিজ্যিক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার হয়। তাই আপনাকে টাকা অবশ্যই খরচ করতে হবে। আর এটাতে ফ্যাক্স রিসিভ করার জন্য অন্য একটি ফ্যাক্স মেশিন ভাড়া নিতে হয় নির্দিষ্ট মাসের জন্য। পরে আবার চাইলে আরো বাড়াতে পারবেন। নিচের চিত্র দেখলে পরিষ্কার হবেন বিষয়গুলোতে।
এছাড়াও আপনি ফ্যাক্স এর জন্য MobiFax, Tiny Fax ইত্যাদি অ্যাপও ব্যবহার করতে পারেন।
আর আপনার যদি ফ্যাক্সের জন্য সেরকম কোনো অ্যাপ পছন্দ না হয় তাহলে আপনি একটি ওয়েব টুল ব্যবহার করতে পারেন। আর সেটি হলো হ্যালোফ্যাক্স (HelloFax)। আপনার ওয়েব ব্রাউজারে গিয়ে কাজটি করতে হবে।
এর মাধ্যমে ৫ টি ফ্যাক্স আপনি করতে পারবেন ফ্রি তে। এরপর আপনাকে তাদের যেকোন একটি প্ল্যান বেছে নিতে হবে।
আগেই বলেছি। প্রশ্ন হতে পারে ই-মেইল এর যুগে ফ্যাক্স-এর কী দরকার?
বেশিরভাগ বিদেশীরা তাদের নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট জিনিসই ব্যবহার করে থাকে। বলা যায় এতে করে তারা তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখে। ফোনে অ্যালার্ম দেবার পদ্ধতি থাকলেও তারা অ্যালার্মের জন্য অ্যালার্ম ঘড়ি এখনও ব্যবহার করে। হ্যাঁ। সেই অ্যালার্ম ঘড়ি আগের ডিজাইনের নেই। ডিজিটাল হয়েছে। কিন্তু তারা ব্যবহার ধরে রেখেছে। তাই ফ্যাক্স করা তাদের কাছে একটা মার্জিত তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ ব্যবস্থা। তারা প্রযুক্তিকে কখনই ফেলে দেয় না।
পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র নির্বোধ জাতি যারা গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাই। এজন্যই আমরা পিছিয়ে। নতুন কিছু ব্যবহার করে নিজেদের হয়তো স্মার্ট ভাবি। কিন্তু ঐতিহ্যগুলো ধরে রাখতে পারি না। আর নিজেরাও তেমন কিছু করার চেষ্টা করি না।
পরিশেষে, টেকটিউনস হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার এক সুবিশাল প্ল্যাটফর্ম। শুধু জেনেই বসে থাকবেন না। এই জ্ঞানগুলো ছড়িয়ে দিন তাদের নিকট যাদের কাছে এই টিউনগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয় না। প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন। টেকটিউনসের সাথে থাকুন।
আজকের মতো এ পর্যন্তই। সামনে আবারও হাজির হবো নতুন কোনো তথ্য নিয়ে। আর টিউনটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। টিউন বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে টিউমেন্ট বক্সে প্রশ্নটি করুন। এছাড়াও ফেইসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফেইসবুকে আমি: Mamun Mehedee
আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।