বাজেট বান্ধব মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে সবার আগে যে নামটা মাথায় আসে সেটা হলো Walton. আমি আমার প্রতিটা রিভিউ-তে এই কথাটা প্রথমেই উল্লেখ করি। আর আপনারা মোবাইল মার্কেটে গেলেই এই কথার সত্যতা পাবেন। যাইহোক, এইবার কাজের কথায় আসি। স্মার্টফোন কিনতে চাচ্ছেন কিন্তু বাজেটে হচ্ছে না। কিন্তু কম বাজেটেও ঠিক মনের মতো মোবাইলটি চাই। আর আপনাদের মনের কথাটি বুঝতে পেরেই Walton নিয়ে এলো মাত্র ৪,১৯০ টাকায় কোয়াডকোর সমৃদ্ধ এন্ড্রয়েড মোবাইল Walton Primo D6. চলুন এক নজরে দেখে নেই কি কি আছে এই মোবাইলে:

কি দারুন না? মাত্র ৪,১৯০ টাকায় আপনারা পাচ্ছেন দারুন এই মোবাইলটি।

 চলুন দেখে নেই আপনারা এই মোবাইলের সাথে যা যা পাচ্ছেন তা হলো:

** ইউ.এস.বি চার্যার।

** ইউজার ম্যানুয়াল

** স্ক্রিন প্রোটেকটর।

** ৩.৫ মিলিমিটার অডিয় জ্যাক পোর্ট।

** ওয়্যারেন্টি কার্ড

সম্পূর্ণ কালো রঙের কার্ভ এই মোবাইলটি দেখতে যথেষ্ট ষ্টাইলিশ। মোবাইলটি দেখলে এবং হাতে নিয়ে এক্সপেরিয়েন্স করলে মোবাইল সম্পর্কে আপনার একটা মোক্ষম ধারনা পেয়ে যাবেন। চলুন, এইবারে মোবাইলের আউটল সম্পর্কে নজর দেয়া যাক। মোবাইলের ডিসপ্লেতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪” WVGA Display. মোবাইলের উপরের দিকে রয়েছে VGA ফ্রন্ট ক্যামেরা।

আর ক্যামেরার ঠিক পাশেই রয়েছে স্পিকার। আর ডিসপ্লের একদম নিচের দিকে পাবেন ৩টি ক্যাপাসিটিভ টাচ বাটন।

মোবাইলের ডান দিকে রয়েছে পাওয়ার বাটন আর ঠিক তার উপরেই রয়েছে ভলিউম রকার বাটন।

এছাড়া মোবাইলের একদম উপরের দিকে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটার Audio jack Port.

আর মোবাইলের একদম নিচের দিকেই রয়েছে ইউ.এস.বি চার্যার।

মোবাইলের পেছনে রয়েছে ২.০০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ক্যামেরার সাথে রয়েছে উজ্বল ফ্ল্যাশ লাইট।

মোবাইলের নিচের অংশে রয়েছে লাউড স্পিকার।

এছাড়া মোবাইলের ব্যাক পার্ট খুললেই পাবেন 1550 mAh battery. ব্যাটারির ঠিক উপরেই রয়েছে ২টা সিম কার্ড স্লট। এর মধ্যে প্রথম সিম কার্ড স্লট-টা 3G সিম এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে।

মোবাইটির বডি ডাইমেনশন: উচ্চতা ১২৩ মিলিমিটার, প্রস্থ্য ৬৩ মিলিমিটার, এবং প্রসস্থ্য ৯.৯ মিলিমিটার। ব্যাটারি সহ মোবাইলটির ওজন কিন্তু একেবারে কম। মাত্র ১১০ গ্রাম।

মোবাইলের OS হিসেবে আপনারা পাচ্ছেন Android 4.4.2 Kitkat.

কালো রঙের প্লাষ্টিকে তৈরী মোবাইলটির ব্যাক প্যানেল। ডিসপ্লে-তে ব্যবহার করা হয়েছে ৪” HVGA স্ক্রিন যার স্ক্রিন রেজুল্যুশন হলো 800×480 Pixel. মোবাইলের টাচ মান সম্মত। কোন প্রকার ল্যাগিং পাবেননা। Waltion primo D6 এ ২ আঙ্গুল পর্যন্ত টাচ সাপোর্ট করে।

এই ফোনটির ইউজার ইন্টারফেস Walton এর প্রচলিত কিটক্যাটের মতই। তবে বিশেষ সুবিধা এটাই যে এই ফোনে AOSP বেজড রম ইউজ করায় ইউজার ইন্টারফেস অনেক কাস্টোমাইজেবল। বিশেষ করে রুট করে যেসব এক্সপোজড মডিউল ইউজ করতে হয় তার সব গুলোই কাজ করবে। এছাড়া আপনি বিভিন্ন রকম থিম ইউজ করে আপনার মোবাইলের ষ্টক লুক-কে করতে পারবেন নিজের মত।

Walton Primo D6 এ র‌্যাম ব্যবহার করা হয়েছে ৫১২ মেগাবাইট। যার মধ্যে ইউজার এভেইলেবল র‌্যাম পাচ্ছেন ৪৭০ মেগাবাইট।

Walton Primo D6 মোবাইলে রম পাচ্ছেন আপনারা ৪ গিগাবাইট। এর মধ্যে প্রায় ২.৩৪ জিবি ইউনিফাইড ষ্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন আর বাকি যায়গা মোবাইলের O.S এবং বিল্ট ইন এপস ইনষ্টলের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া 32 GB External SD Card ব্যবহার করতে পারবেন।

মোবাইলটিতে সি.পি.ইউ ব্যবহার করা হয়েছে ১.২ গিগাহাটর্য কোয়াকোর। আর জি.পি.ইউ ব্যবহার করা হয়েছে মালি ৪০০. গেমস খেলার জন্য প্রসেসর এবং জি.পি.উ একদম পারফেক্ট। আর এই মোবাইলে Full HD 1080x1920p Video Support করে। কাজেই গেমিং এবং Video Play back হবে একদম ঝামেলাহীন।

মোবাইলের রয়েছে ২ মেগাপিক্সেল রিয়্যার ক্যামেরা। এছাড়া অন্ধকারে ছবি তোলার জন্য রয়েছে উজ্জল ফ্ল্যাশ লাইট। সেলফি তোলার জন্য পাবেন VGA Camera. তবে এটা বলতে পারি Video Calling এর ক্ষেত্রে এই ক্যামেরা দিয়ে মানসম্মত কোয়ালিটির রেজুল্যুশন পাবেন। চলুন এইবার এই ক্যামেরা দিয়ে তোলা কিছু ছবি শেয়ার করি।

মোবাইলের রিভিউ গুলোতে ইদানিং বেঞ্চমার্ক অপশন না দিলে রিভিউ গুলো অসুম্পূর্ণ থাকে। তাই বরাবরের মতই আমরা এই মোবাইলে Benchmark টেষ্ট করেছি। Antutu Benchmark দিয়ে এই মোবাইলের বেঞ্চমার্ক টেষ্টে বেঞ্চমার্ক স্কোর এসেছে ১৯,৪১৬, ৪ হাজার টাকার মোবাইলে এই রকম বেঞ্চমার্ক পাবো এটা আমি ভাবিনি। এছাড়া নেনামার্ক স্কোর এসেছে ৬০.১!!!!!!!!!! এক কথায় সুপার্ব।

OTA সম্পর্কে এখন প্রায় আপনারা সকলেই জানেন। মোবাইলের যে কোন আপডেট আপনারা অনলাইন থেকেই ডাউনলোড করতে পারবেন।

এই মোবাইলে আপনারা Asphalt Nitro, Riptide GP, D-Day, Temple run all version থেকে শুরু করে সব ধরনের গেমস খেলতে পারবেন। তবে হাই রেঞ্জ গেমস খেলার সময় একটু ল্যাগিংস হতে পারে।

Walton Primo D6 এ ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে 1550 mAh. মোবাইলের রেজুল্যুশন কম, তাই ব্যাটারি ড্রেইন হবার সম্ভাবনা একদম-ই নেই।

মোবাইলে কানেক্টিভিটির মধ্যে রয়েছে Bluetooth, wifi, OTA, Micro USB. এছাড়া সেন্সর গুলোর মধ্যে রয়েছে GPS, Motion Sensor, & Prosimity Sensor.

এই মোবাইলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৪,১৯০ টাক।

যদি আমরা মোবাইলের দামের কথা চিন্তা করি তো মোবাইলের খারাপ দিক না খোজাই ভালো। তারপরো অনেকের কাছেই মোবাইলের র‌্যাম ৫১২, যেটা অনেক কম লাগতে পারে। তাছাড়া আমার কাছে খারাপ কোন কিছু চোখে পরেনি।

কি ভাবছেন, এই দামে এই মোবাইল কিনবেন কি না? একটু চিন্তা করে দেখুন। বাজারে এর চেয়ে কম দামে কি স্মার্টফোন পাবেন? একটু ভাবুন। দামের দিকটা খেয়াল করুন। আশা করি এই মোবাইল কিনতে আপনারা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেনা।