দেখে নিন আন্ড্রয়েডের জন্য ৪টি অসাধারণ ফটো গ্যালারি অ্যাপ

স্মার্টফোন ব্যবহার করে না এরকম মানুষ খুঁজে বের করার থেকে মনে হয় এলিয়েন খুঁজে বের করা সহজ। কারণ এখন বলতে গেলে সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। এর প্রধান কারণ স্মার্টফোন গুলোর দাম এখন আমাদের নাগালের ভিতরেই। আর আমাদের দেশে স্মার্টফোন হিসেবে আন্ড্রয়েড ফোনের ব্যবহারকারীই বেশি। স্মার্টফোনগুলো দিন দিন যেমন শক্তিশালী হচ্ছে তার সাথে সাথে এই স্মার্টফোন এর সাথে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ফিচার সমৃদ্ধ হাই কোয়ালিটি ক্যামেরা।

স্মার্টফোনের ক্যামেরাগুলো কোন অংশেই ডিজিটাল এস.এল.আর ক্যামেরার থেকে কম যায় না। আর স্মার্টফোন আমরা সব জায়গায় সাথে নিয়ে যাই বলে বেশিরভাগ সময় আমরা স্মার্টফোন দিয়েই ছবি তুলি। আর এসব ছবি দেখার জন্য স্মার্টফোনকেই যেমন ব্যবহার করি তেমন এই ছবিগুলো সংরক্ষণ করতেও স্মার্টফোন ব্যবহার করি। স্মার্টফোনগুলোর ধারণক্ষমতা যত বাড়ছে আমরা ততই বেশি বেশি ছবি আমাদের স্মার্টফোনে জমা করে রাখছি।

স্মার্টফোনগুলোতে তোলা ছবিগুলো আমরা সাধারণত স্মার্টফোনে যে গ্যালারি অ্যাপ দেয়া থাকে তার মাধ্যমেই দেখি। তবে স্টক আন্ড্রয়েডের গ্যালারি অ্যাপে স্মার্টফোনে সেভ করা ছবি এবং অনলাইনে সেভ করা ছবি মিলিয়ে ফেলে ফলে অনেক সময় বোঝা যায় না যে কোনটা সেভ করা আছে আর কোনটা অনলাইন এ আছে। আবার অনেক কোম্পানি যেমন স্যামসাঙ, HTC, এল.জি নিজেদের গ্যালারি অ্যাপ তৈরি করে।

এসব অ্যাপে অনেক সুবিধা থাকে যেগুলো স্টক আন্ড্রয়েডের গ্যালারি অ্যাপে থাকে না। তবে এর একটি সমস্যা হল আপনার যদি কোন কোম্পানির গ্যালারি অ্যাপ ভাল লাগে কিন্তু আপনি যদি অন্য স্মার্টফোনে শিফট করেন তাহলে আর আগের গ্যালারি অ্যাপটি এই স্মার্টফোন নিয়ে আসতে পারবেন না। কারণ এই অ্যাপগুলো সিস্টেম অ্যাপ হিসেবে থাকে।

তাই আজকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব আন্ড্রয়েডের জন্য বেস্ট ৪টি গ্যালারি অ্যাপের। এই অ্যাপগুলো আমি নিজে ব্যবহার করে দেখেছি। তাই চাইলে আপনারাও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

কুইকপিক(QuickPic)

থার্ড-পার্টি গ্যালারি অ্যাপ হিসেবে কুইকপিক আমার দেখা মতে বেস্ট অ্যাপ। গ্যালারি অ্যাপ এর প্রায় সব সুবিধাগুলো আপনি এই অ্যাপ এ পাবেন। এই অ্যাপটি অনেক বছর ধরেই প্লে-স্টোরে আছে। তাই অনেকেই এই অ্যাপ ব্যবহার করেন প্রতিদিনের  গ্যালারি অ্যাপ হিসাবে। অ্যাপটির সহজ কিন্তু সুন্দর ইন্টারফেস আপনাকে অনেক বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিবে। এই অ্যাপটিতে আপনি ইচ্ছা করলে দিন, তারিখ হিসেবে ছবিগুলো দেখতে পারেন বা ফোল্ডার হিসেবেও দেখতে পারেন। আপনার ছবিগুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখতে এই অ্যাপ অনেক কাজে দিবে।

আপনি এই অ্যাপটি গুগল ড্রাইভ, ড্রপবক্স বা অন্য যেকোনো ক্লাউডের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন। তাই এসব ক্লাউডে আপনার ছবি থাকলে তাও আপনি এই অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনে দেখতে পারবেন। আবার ইচ্ছা করলে এই অ্যাকাউন্টগুলোতে আপনার ছবিগুলোর ব্যাকআপ রাখতে পারেন। এই অ্যাপ এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলও এই অ্যাপকে আপনি নিজের মত সাজিয়ে নিতে পারবেন।

অ্যাপটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

 

মাইরোল গ্যালারি(MyRoll Gallery)

মাইরোল গ্যালারি দেখতে অনেকটা গুগল ফটোস অ্যাপ এর মত। তবে এর ইন্টারফেস নীল রঙের। এই অ্যাপে ঢুকলেই আপনি দুটি ট্যাব দেখতে পাবেন। দুটি ট্যাব প্রায় একি রকম। এছাড়াও অ্যাপ এর নিচে বাম পাশে একটি বাটন আছে যেখানে এ ক্লিক করলে আপনার ক্যামেরা অ্যাপ ওপেন হবে। তাই ছবি যদি ঠিক মনে না হয় তাহলে এক ক্লিকেই আবার ছবি তুলতে পারবেন। এই ফিচারটি খুবই কাজের। আগের অ্যাপটির মত এই অ্যাপেও আপনি নিজের ইচ্ছামতো ছবিগুলোকে সাজিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু মাইরোল গ্যালারি অ্যাপে ছবিগুলোকে ফোল্ডার হিসাবে অ্যাড করা যায় না। যারা গুগল এর Photos  অ্যাপটিকে পছন্দ করেন কিন্তু অনলাইন হতে চান না তারা এই অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন

অ্যাপটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

 

ছাইনোজেন গ্যালারি(Cyanogen Gallery)

আপনারা হয়তো অনেকেই  ছাইনোজেন মোড এর কাস্টম রোম ব্যবহার করেন। এটা তাদের তৈরি একটা অ্যাপ। তবে ছাইনোজেন গ্যালারি অ্যাপটিকে ব্যবহার করতে আপনার ফোন রুট করতে হবে না। আপনি গুগল প্লে-স্টোরে এই অ্যাপটি পাবেন। এই অ্যাপটির ইন্টারফেস দেখতে কিছুটা আন্ড্রয়েড কিটক্যাট এর মত। এই অ্যাপের বাম পাশে একটি সাইড-বার আছে। এছাড়াও উপরে দান পাশে কুইক ক্যামেরা বাটন আছে তাই ইচ্ছা  করলে এই বাটনে ক্লিক করে ছবি তুলতে পারবেন।
অ্যাপটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

এ+ গ্যালারি(A+ Gallery)

এই অ্যাপটি আন্ড্রয়েড ও আই.ও.এস এর ইন্টারফেস মিলিয়ে বানানো। আইফোনের ফটো গ্যালারির মত দেখতে কিছুটা। আপনি যদি আইফোন ব্যবহার নাও করে থাকেন কোন সমস্যা নাই কারণ এই এ+ গ্যালারি অ্যাপটি ব্যবহার করা খুব সহজ।
অ্যাপটিতে ঢুকলেই আপনি তিনটি অপশন পাবেন। একটা হলো আপনার সব ছবি একসাথে দেখার জন্য আর একটি অ্যালবামগুলো দেখার জন্য ও মাঝের অপশনটিতে আপনি ইচ্ছা করলে বিভিন্ন অনলাইন স্টোরেজ ড্রাইভ অ্যাড করতে পারেন। তাহলে অনলাইন এ সেভ করা ছবি আপনি এই অ্যাপের মাধ্যমে দেখতে পাবেন।
অ্যাপটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

এ+ গ্যালারির একটি অত্যন্ত সুন্দর ফিচার হলো এই অ্যাপে আপনি কালার অনুযায়ী ছবিকে আলাদা করতে পারেন। এটা যদিও ১০০% ঠিক না তবে ভাল একটি ফিচার।

 

যারা আন্ড্রয়েডের স্টক গ্যালারি অ্যাপ পছন্দ করেন না তাদের জন্য গুগল প্লে-স্টোরে অনেক ধরনের সুন্দর সুন্দর অ্যাপ আছে। যেগুলো আপনারা ইচ্ছা করলে ব্যবহার করতে পারেন। প্লে-স্টোরে একটু খুঁজলেই এই ধরনের অনেক অ্যাপ পাবেন। কিন্তু আমি আমার দেখা সবচেয়ে ভাল ৪টি অ্যাপ এর লিস্ট এখানে দিলাম। এছাড়াও কিছু অ্যাপ এর সাথে সাথে ফটো এডিটরও থাকে। সেগুলো ব্যবহার করে আপনি চাইলেই ফটো এডিট করতে পারেন।

আশা করি টিউনটি আপনাদের ভাল লেগেছে। যদি এই টিউন সম্পর্কে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচের টিউমেন্ট বক্সে টিউমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

Level 2

আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস