ওয়েবপোর্টালে হ্যাকিং , ক্রাকিং সবই বন্ধ করা সম্ভব নিজের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে । কিন্তু একটি জিনিস যা কখনোই আটকানো সম্ভব নয় তা হচ্ছে DDoS আক্রমন (Attack) । DDoS আক্রমন সব ওয়েবমাষ্টারদের জন্যই এক আতংকের নাম । ওয়ার্ডপ্রেস , টুইটার, ফেসবুকের মত বাঘা সাইট কতৃর্পক্ষ নাকাল হয়ে যায় DDoS আক্রমনের হাতে পড়ে ।
DDoS Attack এর পূর্ণ রূপ Distributed Denial of Service attack যা DoS Attack (Denial of Service attack) নামেও পরিচিত । DDoS আক্রমন বলতে গেলে খুবই সহজ কিন্তু অতি কার্যকরী । DDoS আক্রমনে একটি টার্গেট সাইটকে লক্ষ্য করে পৃথিবীর নানান স্থান থেকে হাজার হাজার পিসি ব্যবহার করে একযোগে হিট করতে থাকা হয় । একটি দুটি নয় কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষ অতিরিক্ত হিট প্রতি মূহূর্তে পড়তে থাকে সাইটে । বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে সেই আক্রমনের পরিমান কয়েক গিগাবাইট পার সেকেন্ডও হতে পারে । আসল ব্যবহারকারীদের হিট এবং এইসব আক্রমনকারী হিট মিলিয়ে মোট হিটের সংখ্যা অকল্পনীয় অবস্থায় পৌছে যায় ।
কোন ওয়েব সার্ভারই এত বিপুল পরিমান কানেকশন ম্যানেজ করতে পারে না । ফলাফল স্বরূপ অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাউন হয়ে যায় সাইটটি । যেহেতু পৃথিবীর অধিকাংশ সাইট শেয়ার্ড হোস্টিয়ে আছে তাই সেইসব সার্ভারে থাকা অন্যান্য সাইটগুলোও ডাউন হয়ে যায় । বেশীরভাগ সময় হোস্টিং প্রোভাইডার সেই সাইটকে আর তাদের হোস্টিংয়ে জায়গা দেয় না ।
অবাক করা মত বিষয় হলো একদম সাধারণ পিসি ব্যবহারকারীদদের পিসি ও ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করেই চলে এই তান্ডব । তাও আবার তাদের একদম অজান্তেই ! ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় নানান কৌশলে হ্যাক করা হয় সাধারণ ব্যবহারকাররীদের পিসি । যেসব পিসিতে ক্রেডিট কার্ড নম্বর বা গুরূত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার আশা না থাকে সেইসব পিসি ব্যবহার হয় এই কাজে ।
মাত্র ১০-২০ ডলার মূল্য বিক্রি হয় হাজারখানেক এই ধরণের ইনফেকটেড পিসি । সাথে থাকে অতি সহজে চালানো যায় এমন একটি সার্ভার OS । এই OS ব্যবহার করে বন্ধ করা যায় পিসিগুলো, বদলে ফেলা যায় ব্যাকগ্রাউন্ড, জানা যায় অবস্থান, ঘেটে দেখা যায় সেইসব হার্ডডিস্ক , চালানো যায় DDoS আক্রমন । এইসবই করা যায় মাত্র দু-তিন ক্লিকে ।
বড় বড় জায়ান্ট কোম্পানি, ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড প্রতিষ্ঠানসহ যে কোন সাইটই এর লক্ষ্য হতে পারে । অনেক সময় সাইটের মালিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মত করে টাকা চাওয়া হয়, না দিলে হুমকি থাকে DDoS আক্রমনের ।
DDoS এর সবচেয়ে বড় শক্তি যেকোন সাইটটের জন্য এটি কার্যকর । তাছাড়া পৃথিবীর বিভিন্নস্থান থেকে আক্রমন হয় বলে এর সঙ্গে জড়িতদের খুজে বের করা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে । DDoS এর বড় দূর্বলতা এটি বেশক্ষণ স্থায়ী করা যায় না । তবে আক্রমন ২৪ঘন্টার মতোও স্থায়ী হতে পারে । আর এটি এখনো সব জায়গায় সহজলভ্য নয় । খুবই গোপনীয়ভাবে বেচা-কেনা হয় এর প্যাক ।
ওয়য়েবমাষ্টাররা না পারলেও সাধারণ ব্যবহারকারীরা একটু সচেতন হলেই কমিয়ে দেয়া যাবে DDoS আক্রমন । এন্টি ভাইরাস সাথে ফায়ারওয়াল ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন ।
বছরখানেক আগে দেখা BBC Click এর এক ডকুমমেন্টারীর স্মৃতি থেকে এগুলো লেখা হলো । কিছু ভূল তথ্য থাকা অসম্ভব কিছু নয় ।
আমি ব্লগদেশ টিম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 31 টি টিউন ও 40 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নতুন জিনিস জানলাম।ধন্যবাদ।