ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কেন ব্যবহার করবেন?

টিউন বিভাগ ওয়ার্ডপ্রেস
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম যা আপনার ব্যবসার জন্য অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা ছাড়াও ব্যক্তিগত ব্লগ এবং আপনার অফিসিয়াল ভার্চুয়াল উপস্থিতি ও অবস্থান বুঝানোর সবচেয়ে সহজ একটি মাধ্যম। আপনার কি একটি ব্যবসা আছে যা অনলাইনে প্রচার করতে চান? তবে আপনার জন্য একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট হতে পারে একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আপনি নতুন হয়ে থাকলে ওয়ার্ডপ্রেস আপনাকে কি কি সুবিধা দেবে তা জানলে সত্যিই অবাক হবেন।

ওয়ার্ডপ্রেস ছাড়াও আরও বিভিন্ন বিভিন্ন প্লাটফর্মে আপনি আপনার ব্যবসার প্রচারণা চালাতে পারেন তবে ওয়ার্ডপ্রেসের কোন বিকল্প নেই। এটি মূলত একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)। অর্থাৎ আমরা অনলাইনে যা দেখে থাকি লেখা, ছবি ভিডিও এগুলো সবই কোন না কোন সিএমএসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সবচেয়ে সহজ ও ইউজার ফ্রোন্ডলি সিএমএস হলো ওয়ার্ডপ্রেস।

ওয়ার্ডপ্রেস কি?

ওয়ার্ডপ্রেস একটি ওপেন সোর্স ওয়েব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)। এটি ওয়েব পাবলিশিং অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে কাজ করে যা পিএইচপি এবং মাই এসকিউএল এর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেসের সাহায্যে কোন ধরনের ওয়েব ল্যাঙ্গুয়েজ জ্ঞান ছাড়াই যে কেউ  ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে।

২০০৩ সালে আমেরিকান ওয়েব ডেভেলপার ম্যাট মুলেনওয়েগ প্রাথমিকভাবে এ প্লাটফর্মটির উন্মোচন করেন। প্রথমে এটি ফ্রি ব্লগিং প্লাটফর্ম হিসেবে বেশি পরিচিত থাকলেও পরে তা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এক জরীপে দেখা গেছে ২০১২ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ডপ্রেসের ৩.৪ সংস্করণটি ৩ কোটিরও বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে।

ওয়ার্ডপ্রেস GPLv2 এর অধীনে নিবন্ধন তালিকাভূক্ত। সে কারণে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে বসে আপনি ইচ্ছেমতো ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার ও কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন। বিশ্বের মোট ওয়েবসাইটের প্রায় ৪০ শতাংশই ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট।

ওয়েব ডিজাইন কিভাবে শিখবেন?

আপনি কি ভাবছেন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? ওয়েব ডিজাইন করে অনলাইন থেকে আয় করতে চান? তাহলে নিশ্চয়ই ভাবছেন ওয়েব ডিজাইন কিভাবে শিখবেন? নাকি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট? সচরাচর আমরা ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টকে একই দৃষ্টিতে বিচেনা করলে ও বস্তুত দুটি সম্পূর্ন ভিন্ন বিষয়।

ব্যক্তিগত ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট প্রকাশ করলে ওয়েব ডিজাইন যথেষ্ট তবে এর এডভান্স লেভেলে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে অবশ্যই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জানতে হবে। তবে ডেভেলপমেন্টই হোক কিংবা ডিজাইন দুই ক্ষেত্রেই কিছু আবশ্যিকতা আছে যা অবশ্যই আমাদের মেনে চলতে হবে।

উভয় ক্ষেত্রে যে বিষয় জানতে হবে তা হলো:

  • প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • কালার সেন্স
  • এইচটিএমল
  • সিএসএস
  • সার্ভার কনফিগারেশন

ডেভেলপমন্টের কথা বাদ দিলে যদি ওয়েব ডিজাইন করতে চান তবে তবে ওয়ার্ডপ্রেস হবে আপনার জন্য সেরা প্লাটফর্ম। প্রাথমিকভাবে আপনার যদি কোডিং সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকে তবে অন্য সব সিএমএস এর চেয়ে কম সময়ে ওয়েব ডিজাইন শিখতে হলে ওয়ার্ডপ্রেসই হবে আপনার জন্য সেরা পছন্দ।

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কেন সেরা?

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডিজাইন ও পাবলিশ করা সবচেয়ে সহজ তাই ওয়ার্ডপ্রেসই সবচেয়ে সেরা সিএমএস। বিশেষ করে নতুন ডিজাইনার বা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ওয়ার্ডপ্রেসের চেয়ে সহজ কোন সিএমএস নেই। চলুন জেনে নিই কি কি কারণে ওয়ার্ডপ্রেস সেরা।

ফ্রি ডাউনলোড এবং কাস্টমাইজেশন

ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রিতেই ডাউনলোড করা যায়। আপনার যদি একটি কম্পিউটার থাকে এবং তাতে যদি ইন্টারনেট সংযোগ থাকে তবেই আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড করতে পারবেন। বর্তমানে অন্যান্য সিএমএস যেমন উইক্স কিংবা সপিফাই ব্যবহার করতে হলে আপনাকে প্রতি মাসে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ করার ব্যাপারে দুটি বিষয় জানতে হবে। আপনি কি অনলাইন বা লাইভ সার্ভারে ইনস্টল করবেন নাকি অফলাইন।

অফলাইন বলতে যা বুঝায় তা হলো অফলাইনে ইনস্ট করলে এটি সাধারণ একটি সফটওয়্যারের মতো আপনার কম্পিউটারেই সেটআপ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কাস্টমাইজেশনের জন্য ইন্টারনেট লাগবে না। এর ফাইলগুলোও আপনার কম্পিউটারেই জমা হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশনের জন্য আপনাকে কোন প্রকার কোড জানতে হবে না। তবে বেসিক এইচটিএমএল এবং সিএসস জানা থাকলে ভালো। অন্যান্য সিএমএসে যেমন আপনাকে সোর্সকোড এডিট করে কাস্টমাইজেশন করতে হয় ওয়ার্ডপ্রেসে সেরকমটি নয়।

ওয়ার্ডপ্রেসে কোন সাইট পাবলিশ করার জন্য ব্যবহার করতে হয় থিম। এখানে আপনি ড্রপ এন্ড ড্রাগ সিস্টেমেই ডিজাইন তৈরি করতে পারবেন। থিমের অপশন থেকে ইচ্ছেমতো কালার, সাইজ এবং অন্যান্য সবকিছু পরিরর্তন করতে পারবেন।

অগণিত থিম

ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে অগণিত থিম। আপনি আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী পছন্দসই থিম বেছে নিতে পারবেন। শুধু তাই নয় যে থিমই আপনি আপনি পছন্দ করুন না কেন তা আপনার চাহিদা মতো কাস্টমাইজও করতে পারবেন।

অন্যান্য সিএমএস এর ক্ষেত্রে এত থিম আপনি কখনোই পাবেন না। সে কারণে আপনাকে ম্যানুয়ালি ডিজাইন ড্রয়ং করতে হবে অথবা ডেভেলপারের উপর নির্ভর করতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেসের ক্ষেত্রে আপনি গুগল থেকেই ফ্রি এবং প্রিমিয়াম দুই ধরনের থিমই বেছে নিতে পারবেন।

এছাড়াও থিম ফরেস্ট, ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমের জায়ান্ট সাইট থেকেও আপনি ফ্রি এবং প্রিমিয়াম থিম বেছে নিতে পারবেন। থিমের ক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো ফ্রি থিম দিয়ে আপনি প্র্যাকটিস করতে পারবেন। প্রফেশনাল সাইট ডিজাইনের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম থিমই সবচেয়ে ভালো।

সাইবার সিকিউরিটি

ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। যে কোন ওয়েবসাইটই যে কোন সময় হ্যাক হতে পারে। আপনিও কি হ্যাক আতঙ্কে ভুগছেন? কোন ব্যাপার না। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী হলে আপনার সাইট অন্যদের চেয়ে বেশি নিরাপদ ভাবতে পারেন।

আপনার ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস নিয়মিত তাদের ভার্সন আপডেট করছে। এছাড়াও যদি বেশি অনিরাপ মনে করেন তবে অবশ্যই বিভিন্ন সিকিউরিটি প্লাগইন রয়েছে যা আপনি সহজেই আপনার সাইটে ব্যবহার করতে পারেন। ওয়ার্ডফেন্স এমন একটি প্লাগনই যা সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

ওয়ার্ডফেন্স ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন সিউকেরি, আপড্রাফট প্লাস, গুগল অথেনটিকেটর, ওয়ার্ডপ্রেস ফাইল মনিটর প্লাস, বিবিকিউ কিংবা ডিফেন্ডারের মতো শক্তিশালী সিকিউরিটি প্লাগইন।

ইউজার ফ্রেন্ডলি

আপনার কোন ওয়েবসাইট আছে কি? কখনো আপনি কোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করেছেন? যদি করে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি জানেন, জুমলা, বুটস্ট্র্যাপ বা অন্যান্য সিএমএস এ একটি ওয়েবসাইট সেটআপ করা কত জটিল।

সে তুলনায় ওয়ার্ডপ্রেসে একটি নতুন ওয়েবসাইট চালু করা কত সহজ ভাবতেই পারবেন না। আপনি অন্যান্য সিএমএসে একটি কাজ করার জন্য যতগুলো কমান্ড ব্যবহার করবেন বা যতটা কোড এডিট করবেন তার চেয়ে কয়েকগুণ কম কমান্ড ব্যবহার করে ওয়ার্ডপ্রেসে সে কাজটি করতে পারবেন। একটি ওয়েবসাইটে যত ধরনের এডিটিং দরকার সবই ওয়ার্ডপ্রেসে রয়েছে হাতের নাগালে।

সবচেয়ে বড় ‍সুবিধা হলো ওয়ার্ডপ্রেসে আপনি যখন খুশি ডিজাইন পরিবর্তন করতে পারবেন। ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই ওয়ার্ডপ্রেস তৈরি করা হয়েছে।

অগণতি প্লাগ-ইন, উইজেট

ওয়েবসাইট ডিজাইন করা এবং এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি ওয়েবসাইটের কোন কোন বিষয় থাকে একবার সেটআপ করার পর আর কোন পরিবর্তন করার দরকার হয় না। কোন কোন বিষয় থাকে যা প্রায়শই পরিবর্তন, আপডেট, কিংবা অন্য কোন কারণে বারংবার ব্যবহার করতে হয়। সেক্ষেত্রে সাধারণ সিএমএসের ক্ষেত্রে বারবার সোর্স কোড এডি করতে হয়। ওয়ার্ডপ্রেস এমনই এক সিএমএস যার রয়েছে সুদীর্ঘ প্লাগ-ইন এবং উইজেট লাইব্রেরি। আপনি আপনার প্রয়োজনী সব কাজ প্লাগ-ইন এবং উইজেটের মাধ্যমে করতে পারবেন দেখতেও অনেক দৃষ্টিনন্দন।

ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে ওয়েব ডিজাইন শিখতে সাহায্য করবে?

ওয়ার্ডপ্রেস একটি ওপেন সোর্স প্লাটফর্ম। এটি ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। তাই পরীক্ষামূলকভাবে কোন সাইট ডিজাইন করতে অনায়াশে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি অন্য কাস্টমাইজেশনে এক্সপার্ট হতে চান তবে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করে নিয়মিত চর্চা করতে পারেন। এই প্লাটফর্মে কোন ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর জন্য আপনাকে প্রচুর কোডিং জানতে হবে না। তাই সহজেই আপনি প্র্যাকটিস করে ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট হতে পারেন।

প্রয়োজনে বিভিন্ন প্লাগইন ও উইজেট ইনস্টল ও আনইনস্টল করতে পারেন। সেগুলোও ফ্রিতে পাওয়া যায়। সবদিক বিবেচনা করলে আপনি অবশ্যই দেখতে পাবেন খুব কম খরচেই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আপনি যে কোন সমস্যার মুখোমুখি ইউটিউবে প্রচুর টিউটোরিয়াল এবং বিভিন্ন ব্লগও পেয়ে যাবেন। অন্যান্য সিএমএসে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়লো এতো টিউটোরিয়াল কোথাও পাবেন না।

ওয়ার্ডপ্রেসের সহায়তা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাষায় আপনি ব্লগ ও ভিডিও পাবেন যা আপনাকে দারুণভাবে গাইড করবে। তাই আপনি যদি একদম নতুন ওয়েব ডিজাইনার হয়ে থাকুন তবে ওয়ার্ডপ্রেসই হবে আপনার জন্য সেরা বিকল্প। আপনি যদি নতুন ব্যবসায়ী হয়ে থাকুন তবে কোন ডেভেলপার ছাড়াই তৈরি করতে পারবেন আপনার ব্যবসায়িক ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট। ফলে আপনি যখন খুশি যে কোন আপডেটও সম্পন্ন করতে পারবেন। তাই সহজে ওয়েব ডিজাইনার হয়ে উঠতে ওয়ার্ডপ্রেসের কোন বিকল্পই নেই।

Level 1

আমি সারোয়ার আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

শুন্য থেকে যাত্রা শুরু, শুন্যেই হবে শেষ...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস