আস্-সালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভালো। এই কামনা করে আমার আজকের পোষ্টটি শুরু করতেছি।
যারা পূর্বের টিউনগুলো মিস করেছেন তারা নিচের লিংক থেকে সেগুলো দেখে নিন-
৩। হোস্টিং কি?
#হোস্টিঃ- আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ফাইলগুলো যেখানে রাখা হবে প্রকৃতপক্ষে সে জায়গাটুকুই হল আপনার ওয়েব-সাইটের হোস্টিং। আপনি যদি সেগুলো আপনার কম্পিউটারে রাখেন তাহলে আপনার কম্পিউটার-ই হবে আপনার ওয়েব-সাইটের হোস্টিং, যেটিকে কিনা আমরা লোকাল সার্ভার নামে বলে থাকি।
হোস্টিং-কে ও আমরা ডোমেইনের মত দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি। এদের একটি হল টাকার বিনিময়ে হোস্টিং আর, অন্যটি হল ফ্রী হোস্টিং।
এখন প্রশ্ন হতে পারে আমরা যদি আমাদের ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো নিজস্ব কম্পিউটারে হোস্টিং করতে পারি তাহলে টাকার বিনিময়ে হোস্টিং কিনবো কেন? প্রকৃতপক্ষে, আপনি যদি আপনার ওয়েব সাইটকে ইন্টারনেটে আপ রাখতে চান অথ্যাৎ ভিজিটররা যেকোন সময় যাতে আপনার সাইট টি ব্রাউজ করতে পারে সেটি করতে চাইলে আপনার কম্পিউটার টি সবসময় ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে। যদি এক মিনিটের জন্য ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ঐ এক মিনিট আপনার ওয়েব সাইট টি ইন্টারনেটে ব্রাউজ করা যাবেনা অথ্যাৎ ইন্টারনেটে শো করবে না। এছাড়াও আরো অনেক অসুবিধা রয়েছে যেগুলো পরবর্তীতে আমরা বুঝতে পারবো।
এখন, আপনি টাকার বিনিময়ে যদি হোস্টিং ক্রয় করতে চান সেখানেও অনেক বিবেচ্য বিষয় রয়েছে.. যেগুলো কিনা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ভালো ভাবে বিবেচনা করতে হবে।
বিশেষ করে সব হোস্টিং কোম্পনির হোস্টিং সুবিধাদি একই রকম নয়। আর আপনি চাইলেও সব হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং ক্রয় করে সব রকম ওয়েব-সাইট চালাতে পারবেন না। আপনি যদি CMS সফটওয়্যার(ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, দ্রুপাল ইত্যাদি) এর দ্বারা আপনার সাইট টি তৈরি করতে চান তাহলে আপনার হোস্টিং কোম্পানির বিশেষ কিছু সুবিধা থাকতে হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পি.এইচ.পি এবং মাইসিকোয়েল সুবিধা।
প্রত্যেক হোস্টিং কোম্পানি কিছু প্যাকেজের মাধ্যমে তাদের হোস্টিং বিক্রয় করে থাকে। তার মূলত কিছু বিষয়ের উপর বিবেচনা করে প্যাকেজগুলো তৈরি করে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল- হোস্টিং স্পেস/ডিস্ক স্পেস, ব্যান্ডউইথ/ট্রাফিক, মাইসিকোয়েল ডাটাবেজ, ইমেইল, সার্ভার আপটাইম, এফ.টি.পি, এড-অন ডোমেইন, সাবডোমেইন ইত্যাদি।
হোস্টিং স্পেস মূলত আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ফাইলগুলো রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বরাদ্ধকৃত জায়গা কে নির্দেশ করে। এটি মূলত ৫০০ এমবি, ১ জিবি, ১০ জিবি, ২০ জিবি, ১০০ জিবি, ৫০০ জিবি, ১ টিবি অথবা আনলিমিটেড পরিমাণ হতে পারে।
মাইসিকোয়েল ডাটাবেজ আপনার ওয়েব সাইটের বিভিন্ন তথ্যসমূহ কে বহন করে থাকে। এটি মূলত ১ টি, ৫ টি, ১০ টি, ৫০ টি অথবা আনলিমিটেড হিসেবে গণনা করা হয়।
ইমেইল সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশী জানি। আমাদের প্রত্যকের ফ্রী ইমেইল একাউন্ট রয়েছে। সেগুলো আমরা gmail এবং yahoo থেকে তৈরি করে থাকি যার কারণে আমাদের ইমেইল এড্রেসের nickname এর সাথে তাদের ডোমেইন নেম দেয়া থাকে। এখানে আমাদের কে যে ইমেইল একাউন্ট সরবরাহ করা হবে সেগুলোর মাধ্যমে আমরা উক্ত ডোমেইনের স্থানে আমাদের নিজেদের ওয়েবসাইটের ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবো। উদাহরণস্বরুপ, আপনার ওয়েবসাইটের নাম যদি bdwebworld.com হয় তাহলে আপনি আপনার ইমেইলটি [email protected] অথ্যাৎ nickname এর স্থানে আপনি যেকোন নাম ব্যবহার করে তৈরি করতে পারবেন। সাধারণত nickname এর স্থানে info, help, admin ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম ওয়েবসাইট পরিচালনা করা হয়। আপনি কতটা ইমেইল একাউন্ট খুলতে পারবেন এটি মূলত হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে ১ টি, ৫ টি, ১০ টি, ৫০ টি, আনলিমিটেড হিসেবে নির্ধারণ করে দিবে। সেই সাথে এর স্পেসও নির্ধারণ করা থাকবে।
সার্ভার আপটাইম হচ্ছে আপনার সাইট টি সার্ভারে বা ইন্টারনেটে কতক্ষন আপ করা থাকবে। অধিকাংশ হোস্টিং কোম্পানি এটিকে ৯৯% সরবরাহ করে থাকে। ওয়েব সাইটের জন্য এটি অবশ্যই একটি গুরত্বপূর্ণ দিক, কেননা সার্ভার আপটাইম ফুল না হলে এতে করে ভিজিটর-রা আপনার সাইটে সবসময় ভিজিট করতে পারবে না।
সর্বোপরি টাকার মাধ্যমে আপনি হোস্টিং ক্রয় করে থাকলে তারা আপনাকে বিভিন্ন রকম সুবিধা প্রদান করে থাকবে।
অন্যদিকে, ফ্রী হোস্টিং হচ্ছে এসকল সুবিধাদি বিনামূল্যে দেয়া অবশ্য এখনে প্রচুর পরিমাণে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয় যা কিন আমরা পরবর্তীতে জানতে পারব। ফ্রী হোস্টিং সাইট দিয়ে মূলত প্রাকটিস হিসেবে যেকোন সাইটের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। এর একটা বড় সমস্যা হল যেকোন সময় আপনার সাইট কে তারা বন্ধ করে দিতে পারে, যা কিনা ক্রয় করা হোস্টিং এর ক্ষেত্রে কল্পনা-ই করা যায়না।
এফ.টি.পি একাউন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটের ফাইলগুলো আপলোড করতে পারবেন। এছাড়া এড-অন ডোমেনের সাহয্যে আপনি অতিরিক্ত ডোমেন এড করতে পারবেন এবং সাবডোমেইনের মাধ্যমে ডোমেইনের আন্ডারে আপনি আলাদা ডোমেন ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন- এখানে blog হচ্ছে সাবডোমেন, সুতরাং এর দ্বারা আপনি যে ডোমেনটি পেয়ে যাচ্ছেন সেটি হল- blog.bdwebworld.com .
এছাড়াও অনেক বিষয় রয়েছে, যা এখন বললে হয়তো মাথায় ঢুকবে না। আমরা সেগুলো পর্যায়ক্রমে শিখব।
৪। ব্যান্ডউইথ কি?
#ব্যান্ডউইথঃ- এটির হিসাব আমাদের ইন্টারনেটের ডাটা কাউন্টিং এর মত, অথ্যাৎ আমরা যখন ১জিবি ডাটা ক্রয় করি ইন্টারনেট ব্রাউজিং করার জন্য তখন ঐ ১জিবি দিয়ে যতটুকু ব্রাউজিং, ডাউনলোড ইত্যাদি করা যায় ঠিক তেমনি একটি ওয়েব সাইটের ও ঐরকম ডাটা ক্রয় করা লাগে, যা ভিজিটরদের ঐ সাইটের ডাউনলোডিং, ব্রাউজিং ইত্যাদি হিসেবে কাউন্ট করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আমি techplatformbd.com এই সাইটে ২ঘন্টা ধরে ব্রাউজিং করছি, সাথে কিছু ডাউনলোড ও ফটো ব্রাউজিং করি এতে করে ২ঘন্টায় আমার ১৫০এমবি ডাটা খরচ হয়। এই ১৫০এমবি হচ্ছে ঐ ওয়েব সাইটের ব্যান্ডউইথ যা ঐ সাইট থেকে খরচ করা হয়েছে এবং ঐ সাইট থেকে ঐ পরিমাণ ব্যান্ডউইথ কমে যাবে। ব্যান্ডউইথ কে ট্রাফিক ও বলা হয়।
যাইহোক ব্যান্ডউইথ এর হিসাব যেহেতু ডাটা কাউন্টিং এর মত, সেহেতু আপনার সাইটের ভিজিটরের উপর নির্ভর করে আপনাকে ব্যান্ডউইথ ক্রয় করতে হবে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আপনার ব্যান্ডউইথ শেষ হয়ে যায় তাহলে ভিজিটর-রা আপনার সাইট আর ভিজিট করতে পারবে না।
সাধারণত বিভিন্ন প্যাকেজে বিভিন্ন রকমের ব্যান্ডউইথ দেয়া হয়। যেমন- ১০জিবি, ২০জিবি, ৫০জিবি, ১০০জিবি, ২০০জিবি, ৫০০জিবি, ১টিবি, আনলিমিটেড ইত্যাদি।
এই পুরো সিরিজে আপনারা চাইলে আমাকে যেকোন প্রশ্ন করতে পারেন। আমার ফেসবুক পেজে যোগ দিয়ে এই বিষয় সংক্রান্ত আরো অনেক গুরত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন এবং এই পেজটি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-
ITsolution page
পরবর্তী টিউনের প্রত্যাশা রেখে আজকের টিউন এখানেই শেষ করলাম। আল্লাহ্ হাফেজ।
আমি Shariful Islam। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 50 টি টিউন ও 157 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আজকের টিউন টা ভাই বেশ ভালো লাগলো। অপেক্ষা করতেছে পরের টিউনের জন্য।