সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি কম্পিউটার ব্রাউজারে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এর ভার্সন ১.০ চালনা সম্পর্কিত আমার আজকের টিউন।
আমরা এখন বর্তমানে আধুনিক যুগে বাস করছি। নিজের যুগের সাথে যুগের তুলনা করলে আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক বলতেও বাধা নেই। আধুনিক যুগের অন্যতম চালিকা শক্তি, প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান আকর্ষন হলো কম্পিউটার। কম্পিউটার এমন একটা যন্ত্র যার উপর প্রযুক্তির সব কিছুই নির্ভর করে। কম্পিউটার মূলত একটা যন্ত্র হলেও এটি চালনার জন্য প্রয়োজন হয় অপারেটিং সিস্টেম এর।
হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সমন্বয়ে আমাদের কাছে পরিপূর্ণ কম্পিউটার বাহ্যিক জটিল কাজের সহায়ক হিসাবে ধরা দেয়। কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম এর অন্যতম পথিকৃত মাইক্রোসফট গত কয়েক যুগ ধরে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে অপারেটিং সিস্টেম যোগান দিয়ে আশাকরি। যদি কেউ আগে কখনো মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ চালিয়ে থাকেন (সম্ভাবনা খুবই কম) তাহলে অবশ্যই টিউনের বাকি অংশ দেখে নস্ট্যালজিক হয়ে যাবেন।
১৯৮৫ সালে ২০ নভেন্বর মাইক্রোসফট তাদের নতুন অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১.০ বাজারে উন্মুক্ত করে। IBM PC XT (Model 5160) মডেলের কম্পিউটারে প্রথম উইন্ডোজ ১.০ চালানো হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমটি চালনা করার জন্য প্রয়োজন হতো মাত্র ২৫৬ কিলোবাইট র্যাম, আর মাত্র কয়েক মেগাবাইট হার্ডডিস্ক।
যদিও সেই সময়ে IBM PC XT (Model 5160) কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ছিলো ১০ মেগাবাইট। যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট বেশি ছিলো। এই কম্পিউটারের ক্লক স্পিড ছিলো ৪.৭৭ মেগাহার্টজ। তৎকালীন সময়ে মাইক্রোসফট এর এই অসাধারন অপারেটিং সিস্টেমটিই আজ আমরা আমাদের কম্পিউটারে চালিয়ে দেখাবো।
আমরা জানি উইন্ডোজ কম্পিউটারে ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করে অ্যান্ড্রোয়েড, লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম, ম্যাকিন্টোস থেকে শুরু করে সবই চালানো যায়। কিন্তু আজ আমরা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ ব্যবহার করার জন্য কোন প্রকার ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করবো না।
আমাদের কম্পিউটারের যেকোন লেটেস্ট ব্রাউজার দিয়েই আমরা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ চালাবো। এর জন্য প্রয়োজন হবে একটি লেটেস্ট ব্রাউজার, ইন্টারনেট কানেকশন এবং সর্বোচ্চ ৫ মেগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা। কারন অপারেটিং সিস্টেমের সাইজ এর চেয়েও অনেক কম। তো চলুন তাহলে ব্যবহার শুরু করি।
আমরা যেহেতু কম্পিউটারে আমার টিউনটি পড়ছেন তাই ধরে নিচ্ছি আপনাদের কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া আছে এবং সেখানে ৫ মেগাবাইটের চাইতেও বেশি ডাটা আছে। এবার উইন্ডোজ ১.০ ব্যবহারের জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
আপনার কম্পিউটারের ইন্টারনেট স্পিডের উপর ভিত্তি করে উইন্ডোজ ১.০ লোড হতে সময় নিবে। যদি মোটামুটি ইন্টারনেট স্পিড থাকে তাহলে কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে নিচের চিত্রের মতো ব্রাউজারে উইন্ডোজ ১.০ এর স্টার্ট স্ক্রিন দেখতে পাবেন।
উইন্ডোজ ১.০ তো আমরা একবার দেখলাম। এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক এতে ব্যবহার উপযোগি কোন কোন প্রোগ্রামগুলো রয়েছে। যদিও এটা আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু এতে উইন্ডোজ এর সচরাচর অনেক প্রোগ্রাম বর্তমানের মতোই রয়েছে। যেমন ক্যালকুলেটর, ক্যালেন্ডার, পেইন্ট, নোটপ্যাড ইত্যাদি।
এই প্রোগ্রামগুলোর তেমন কোন পরিবর্তনই হয়নি গত ৩০ বছরে। আমরা এখন একে একে সেই প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করে দেখবো। তো দৃশ্যমান সবগুলো প্রোগ্রাম আমরা তো ব্যবহার করতে পারবো না। অন্তত আমি সবগুলোই পারি না। তাই নিচের চিত্রের মতো করে ভিউ অপশন থেকে শুধু প্রোগ্রাম নির্বাচন করে দিন।
এবার আপনি নিচের চিত্রের মতো করে আমাদের পরিচিত প্রোগ্রামগুলোকেই দেখতে পাবেন। তবে এমনটা যে করতেই হবে তা না। আমি শুধু প্রোগ্রামগুলোকে সহজে খুঁজে পেতেই এটা করেছি। এবার যে প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করতে চান সেটার উপর ডাবল ক্লিক করলেই ওপেন হয়ে যাবে। লিস্টে যে প্রোগ্রামগুলো দেখছেন সেগুলো কিন্তু বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমগুলোতেও আছে। শুধু রান কমান্ডে গিয়ে এই প্রোগ্রামের নাম লিখে এন্টার চেপেই দেখুন।
যদিও বর্তমান সময়ের সাপেক্ষে এই অপারেটিং সিস্টেম নিতান্তই শিশু কিন্তু সেই সময়ের প্রেক্ষিতে উইন্ডোজ ১.০ কিন্তু সেই রকম একখান অপারেটিং সিস্টেম। এই অপারেটিং সিস্টেম হয়তো আপনাদের অতৃপ্ত মনকে তৃপ্ত করতে পারবে না। কিন্তু যখন ভাববেন যে এটি দিয়েই পরবর্তি অপারেটিং সিস্টেমকে ডেভেলপ করা হয়েছে কিংবা এটা সেই সময়ে প্রযুক্তির সব চাহিদা মিটিয়েছে তখন কিন্তু আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। যাহোক, এটা দিয়ে আবার ইন্টারনেট ব্রাউজ করার কথা ভাববেন না যেন। কারনটা কি হতে পারে সেটা আপনাদের কাছে প্রশ্ন। উত্তর জানা থাকলে ঝটপট লিখে ফেলুন টিউমেন্ট সেকশনে।
টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর টিউনটিকে মৌলিক মনে হলে এবং নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলে যাবে না যেন।
সর্বশেষ যে কথাটি বলবো, আশাকরি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।
আপনাদের জন্য » সানিম মাহবীর ফাহাদ
আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।
বরাবরের মত সুন্দর টিউন 🙂