লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের মূল বিশেষত্ব হচ্ছে - লিনাক্স কোন অপারেটিং সিস্টেম নয়। ঘাবড়ে যাবেন না। লিনাক্স আসলে একটি কার্নেল। প্রতিটি অপারেটিং সিস্টেমেরই কার্নেল থাকে। উইন্ডোজের কার্নেল হচ্ছে "এন্টি", ম্যাকওএস এর কার্নেল হচ্ছে "ডারউইন"। একই ভাবে মুঠোফোনে ব্যবহৃত জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের কার্নেল হচ্ছে লিনাক্স। শুধু অ্যান্ড্রয়েড নয়, বরং উবুন্টু, রেডহ্যাট, ফেডরা প্রভৃতি অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেল হচ্ছে লিনাক্স। লিনাক্স দিয়ে হাজার হাজার অপারেটিং সিস্টেম তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে। এই সব অপারেটিং সিস্টেমকে বলা হয় "লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম"। তাই অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে লিনাক্সের বিশেষত্ব না বলে বরং "লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম" গুলোর বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করা যাক।
লিনাক্স কিন্তু ইউনিক্স নয় বরং ইউনিক্স এর "মতো করে" তৈরি করা ইউনিক্স এর বিকল্প। অন্যদিকে অ্যাপলের ম্যাকওএস ইউনিক্স থেকে তৈরি করা। সে জন্য দেখা যায়, লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম আর ম্যাকওএস এর মধ্যে প্রচুর মিল রয়েছে। এরা সবাই পসিক্স (POSIX) স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে। অন্যদিকে অন্যদিকে উইন্ডোজ সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। এর সাথে ইউনিক্সের কোনই সম্পর্ক নাই। যার ফলে ম্যাকওএস ও লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম থেকে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিচে এই তিন ধরনের ওএস এর শুধু মাত্র ফাইল বিন্যাস দেখুন, তাহলেই বুঝবেন উইন্ডোজ অন্য দুটো থেকে কত আলাদা।
অন্য দুটো ওএস ক্লোস্ড সোর্স হলেও লিনাক্স নিজে কিংবা লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম ওপেন সোর্সড কিংবা মুক্ত সোর্স। অর্থাৎ যে কেউ লিনাক্স কিংবা লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম এর কোড নিয়ে কাজ করতে, পরিবর্তন কিংবা পরিবর্ধন করতে পারবে। অন্যদিকে উইন্ডোজ বা ম্যাকওএস এর কোড শুধু মাত্র তাদের নিজস্ব কোম্পানি ছাড়া অন্য কেউ পরিবর্তন কিংবা পরিবর্ধন করতে পারবে না। এর ফলে লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম নিরাপত্তার দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকে। কারণ কোন ত্রুটি বের হলে কোড পড়তে পারে এমন যে কেউই সেটা চিহ্নিত করতে পারে, সেই ত্রুটি সংশ্লিস্ট ডেভেলপারদের দ্রুত জানাতে পারে, প্রয়োজনে নিজেও সেই ত্রুটি ঠিক করে ফেলতে পারে। তাই অন্য দুটো অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম বেশি আপডেটেড থাকে।
লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে ব্যবহারকারির স্বাধীনতা অ-নে-ক। আপনি আপনার অপারেটিং সিস্টেমকে যে কোন ভাবে নিজের সুবিধামত পরিবর্তিত করে নিতে পারবেন। যে কোন সাধারণ ব্যবহাকারীই এটা করতে পারে, এর জন্য কোডের কানাকড়িও জানার দরকার নেই। সে জন্যই একই লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারকারীর কাছে ভিন্ন ভিন্ন চেহারায় দেখা যায়। যেখানে সব ব্যহারকারীর উইন্ডোজ কিংবা ম্যাকওএস এর চেহারা হুবহু একই।
ম্যাকওএস কিংবা লিনাক্স ভিত্তিক যে কোন অপারেটিং সিস্টেম শুরু থেকেই পসিক্স অনুসরণ করে বলে তারা গঠনগত দিক থেকেই উইন্ডোজের চেয়ে অধিক নিরাপত্তা প্রদান করে। যে কারণে উইন্ডোজে প্রচুর নিরাপত্তাজনিত ঘাটতি দেখা গেলেও ম্যাকওএস কিংবা লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে অনেক কম দেখা যায়।
শুধু কম্পিউটারই নয় বরং মুঠোফোন থেকে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফ্রিজ থেকে টিভি, গাড়ি থেকে সুপার কম্পিউটারসহ বিশ্বের সিংহভাগ ওয়েব সার্ভার লিনাক্সে চলে।
এবার উপসংহার টানি। অপারেটিং সিস্টেমগুলো যদি ব্যবহারকারীর সাথে কথা বলতে পারত তাহলে তাদের কথাবার্তা হত অনেকটা নিচের মত।
এই সম্পর্কিত টিউন গুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে এখানে ক্লিক করুন
আমি আরিফুল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভালো লাগলো। ধন্যবাদ। আমি লিনাক্স মিন্ট সিনামন ইউজ করি।