স্মার্টফোন বাজারে উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেমের বর্তমান অবস্থান তৃতীয়। মাইক্রোসফট, নকিয়া কিনে নেওয়ার পর থেকে ইউজারদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে এবং আশা করা যাচ্ছে উইন্ডোজ ১০ নতুন কোন বিপ্লবের অপেক্ষায় রয়েছে। যা ২০১৫ সালের শেষের দিকে মোবাইল প্লাটফর্মে উন্মুক্ত করা হবে।
নির্দিদায় এন্ড্রয়েড এবং আই.ও.এস অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজের তুলনায় অনেক বেশী জনপ্রিয় এবং তাদের এপ সংখ্য উইন্ডোজ ফোনের তুলনায় দ্বিগুণ কিংবা তারো অধিক। আর ঠিক এই কারণেই আপনি উইন্ডোজ ফোন ডেভলাপমেন্টে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি বিষয়ের উপর এন্ড্রয়েড এবং আই.ওস অপারেটিং সিস্টেমে একের অধিক এপস রয়েছে। অর্থাৎ আপনার সদ্য ডেভলাপ করা এপটিকে মার্কেটে ঠিকে থাকতে হলে অনেকগুলো এপের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। কিন্তু অপর দিকে এখনো উইন্ডোজ ফোন স্টোরে নিত্য প্রয়োজনীয় এপের অভাব রয়েছে অর্থাৎ আপনার এপটিকে জায়গা দখল করে নিতে খুব বেশী কাটতে হবে না।
নিঃসন্দেহে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম সকল কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের জন্যে ঈর্ষাজনক। যদি আপনার তৈরী মোবাইল এপটি সামান্য কাস্টমাইজেশনের পর ডেক্সটপ উইজারদের ব্যবহার উপযোগী করা যায় তাহলে কেমন হয়? হ্যা! মাইক্রোসফট আপনাকে দিচ্ছে ইউনিভার্সেল এপের সুবিধা। যার মাধম্যে একই এপ কম্পিউটার এবং মোবাইল উভয় ডিভাইসেই চলবে। অর্থাৎ এক ঢিলে দুই পাখি।
আপনি চাইলেই বিশাল মার্কেট ধরার আশায় এন্ড্রয়েডে এপ তৈরী করতে পারেন। কিন্তু স্টোরে পাবলিশ করতে গিয়ে ঝামেলায় পরবেন। কেননা, আপনাকে ক্রেডিট কার্ড ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে একাউন্ট করতে হবে। সেই সাথে আপনার ক্রেডিট কার্ড থেকে কেটে নিবে ২৫ ডলার। অপরদিকে মাইক্রোসফট শিক্ষার্থীদের জন্যে বিনামূল্যে একাউন্ট খুলার সুবিধা দিচ্ছে। আপনি চাইলেই পেইড এপ পাবলিশ করতে পারবেন কিন্তু বাংলাদেশী হাওয়ার কারণে এন্ড্রোয়েড এবং আইফোনে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এন্ড্রোয়েড এবং উইন্ডোজ উভয় প্লাটফর্মেই এপ তৈরী করেছি। এমনকি প্রথমত এন্ড্রয়েড দিয়েই চালু করেছিলাম। কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ জটিলতার কারণে উইন্ডোজে কাজ শুরু করি এবং এখন ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রি ডিফাইন্ড লাইব্রেরী পাচ্ছি, যা এন্ড্রোয়েডে আমাকে তৈরী করতে হত। পাশাপাশি মাক্রোসফট ভার্চুয়াল একাডেমি দিচ্ছে বিনামূল্যে সি সার্প, উইন্ডোজ এবং উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেমের উপর ভিডিও টিউটোরিয়াল। যা ব্যাবহার করে শুধুমাত্র সময়ের বিনিময়ে আপনি হতে পারবেন উইন্ডোজ/উইন্ডোজ ফোন ডেভলাপার।
কিভাবে শুরু করবেন? অবশ্যই কোন যন্ত্রের সাথে কথা বলতে হলে তার ভাষা শিখতে হবে এবং উইন্ডোজ ও উইন্ডোজ ফোনের ভাষা সী সার্প। প্রথমে সী সার্প ভাল ভাবে বুঝে উঠুন। এর জন্যে মাইক্রোসফট ভার্চুয়াল একাডেমীর Bob Tabor এর ভিডিও সিরিজটা দেখতে পারেন। অবশ্যই আপনাকে সী সার্পের বেসিক টার্মগুলো সম্পর্ক পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তিতে অনেক সমস্যা হবে। সী সার্প কোর্সটা সম্পন্য করার পর, শুরু করুন Bob Tabor এর উইন্ডোজ ফোন এপস ডেভলাপমেন্ট সংক্রান্ত ভিডিও সিরিজ। বেসিক এপস ডেভলাপমেন্ট শিখার পাশাপাশি এখানে আপনি পাবেন বেসিক ডিজাইন থেকে শুরু করে এডভান্স লেভেলের কিছু প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টগুলো আপনার প্রফেশনাল লাইফে অনেক কাজে দিবে।
এপ ডেভলাপমেন্ট শিখার সাথে সাথেই আপনার তৈরী এপস প্রত্যেকের মুঠোফোনে থাকবে তা ভাবতে পারেন না। এর জন্যে আপনাকে UX ডিজাইনকে আয়ত্বায় নিয়ে আসতে হবে। আপনার এপস এর ইউজার এক্সপিরেন্স কেমন হবে তা আপনাকেই ভাবতে হবে। যখন যথেষ্ট পরিমাণ ভাল ইউজার এক্সপিরেন্স সরবরাহ করতে পারবেন, তখনই আশা করতে পারেন, আপনার তৈরী এপস সবার মুঠোফোনে থাকবে। উইন্ডোজ প্লাটফর্মে UX জন্যে আপনাকে খুব বেশী কাটতে হবে না। কেননা মাইক্রোসফট আপনার জন্যে ভিজুয়াল স্টুডিও ব্লেন্ড তৈরী করে রেখেছে। যার মধ্যমে অতি সহজেই এপের উইজার এক্সপিরেন্স অনেকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারবেন। এন্ড্রয়েড প্লাটফর্মে একটি এনিমেশন তৈরী করতে হলে সর্বনিম্ন ১০০ লাইনের কোড লিখতে হবে। কিন্তু ব্লেন্ডে কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমেই সেই কাজটা করে ফেলতে পারেন। [UX নিয়ে পরবর্তিতে একটি টিউন করার ইচ্ছে রয়েছে।]
পাশাপাশি আপনার তৈরী এপের মার্কেটিং এর জন্যে মাইক্রোসফট বংলাদেশকে কাজে লাগাতে পারেন। আপনার এপটির যথেষ্ট পরিমাণ যোগ্যতা থাকলে তা মাইক্রোসফট বাংলাদশের ফেইসবুক ফ্যান পেইজের মাধ্যমে প্রচার করার সুযোগ পাবেন।
সেই সাথে যেকোন রকম সমস্যার সমাধানের জন্যে এক্সপার্টরা আপনার জন্যে মাইক্রোসফট ডেভলাপার গ্রুপে অপেক্ষা করছে।
তাহলে আজই উইন্ডোজ ফোন এপ ডেভলাপমেন্টে নিজেকে মনোনিবেশ করুন।
বানানসংক্রান্ত ভুলের জন্যে দুঃখিত। সবাইকে ধন্যবাদ।
আমি ফাগুন রেইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 401 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তির সাথে আপডেটেড থাকতে চাই। কখনও সফল আর কখনো...। বেসিকালী ওয়েব ডেভলাপমেন্ট এবং উইন্ডোজ ফোন এপস নিয়ে কাজ করা হয়।
হুম উইন্ডোজ অ্যাপ এর অনেক প্রয়োজনীয়তা আসে টিউটরিয়াল দেখতাসি ধন্যবাদ টিউনের জন্য