বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। আজকে আমরা আলোচনা করব ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি নিয়ে। তবে চলুন শুরু করা যাক।
ওয়াইম্যাক্স এর পূর্ণ অর্থ হলো, Worldwide Interoperability for Microwave Access। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি হল বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সর্বাধুনিক উচ্চ গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রটোকল সার্ভিস। যেটি তারবিহীন ব্যবস্থায় 10 থেকে 60 কিলোমিটার পর্যন্ত ইন্টারনেটের সুবিধা প্রদান করে। তবে এটি ওয়াইফাই এর চাইতে সম্পূর্ণ আলাদা। উভয় প্রযুক্তি তারবিহীন উপায় ইন্টারনেটের সুবিধা প্রদান করলেও ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। এটি প্রচলিত ডিএসএল বা Digital Subscriber Line এর পরিবর্তে তারবিহীন উপায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করে।
বাড়িতে ওয়াইফাই বা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন নিতে হলে ডিএসএল লাইন বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসতে হয়। তবে ওয়াই-ম্যাক্স প্রযুক্তিতে এটি করতে হয়না। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিতে একটি টাওয়ার থেকেই বিস্তীর্ণ এলাকায় তারবিহীন উপায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট দেওয়া যায়। খুব অল্পসংখ্যক টাওয়ার স্থাপন করে বহুদূর পর্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার সময় হয়।
ওয়াইম্যাক্সের দুই ধরনের হতে পারে। যেগুলো হলোঃ ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স এবং মোবাইল ওয়াই ম্যাক্স। যেখানে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র কয়েক মিটার বা কিছু জায়গা জুড়ে ইন্টারনেট সেবা পায়, সেখানে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক ব্যবহারকারী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে উচ্চ গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যেখানে সাধারন ব্রডব্যান্ডের সেবার কথা কল্পনাও করা যায় না সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ওয়াইম্যাক্স ও প্রযুক্তির মাধ্যমে দেওয়া হয়। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চল বা দুর্গম অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেবার জন্য ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
উঁচু-নিচু পাহাড়ি অঞ্চল কিংবা কেবল স্থাপনের জন্য দুর্গম এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওয়াইম্যাক্স হলো সবচাইতে বড় সমাধান। ওয়াইম্যাক্স এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বেজ স্টেশন স্থাপন করা হয়। যেখান থেকে আশেপাশের 10 থেকে 60 কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেটওয়ার্ক কাভারেজ দেওয়া যায়। ওই নির্দিষ্ট এলাকায় থাকা ওয়াইম্যাক্স ব্যবহারকারীরা ওয়াইম্যাক্সের রিসিভার এর মাধ্যমে তাদের বাড়িতে ইন্টারনেট সেবা পায়। ওয়াইম্যাক্সের রিসিভারের সঙ্গে একটি এন্টিনা থাকে এবং এটিকে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হয়।
১. এর কার্যক্ষমতা 10 থেকে 60 কিলোমিটার পর্যন্ত হয়।
২. ওয়াইম্যাক্সের প্রযুক্তির 2 থেকে 66 GHz ফ্রিকুয়েন্সিতে কাজ করে।
৩. শক্তিশালী এনক্রিপশন ব্যবস্থা থাকায় এ প্রযুক্তিতে ডেটা নিরাপত্তা অনেকে বেশি।
৪. ডেটা স্থানান্তরের হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। ওয়াইম্যাক্স এর নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইথ 30 Mbps থেকে 75 Mbps পর্যন্ত হয়।
১. একটিমাত্র বেজ স্টেশন এর মাধ্যমে হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা যায়। ফলে গ্রাহককে সেবা দিতে খরচ কম হয়।
২. একটি মাত্র বেজ স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে অনেক এলাকাজুড়ে গ্রাহক সেবা দেওয়া যাবার কারণে এই নেটওয়ার্ক বাস্তবায়ন অনেক দ্রুততম সময়ে করা সম্ভব হয়।
৩. তারবিহীন উপায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দেওয়া যায়।
৪. এ প্রযুক্তিতে প্রত্যন্ত এবং দুর্গম অঞ্চলে ও ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যায়।
৫. অন্যান্য নেটওয়ার্ক এর তুলনায় খরচ অনেক কম।
১. অধিক দূরত্বে সংযোগের জন্য লাইন-অফ-সাইট এর প্রয়োজন হয়।
২. একই টাওয়ার ও একই সময়ে অনেক ব্যবহারকারী ইন্টারনেট এক্সেস এর চেষ্টা করলে মারাত্মক ট্রাফিক সমস্যার সৃষ্টি হয়, যার ফলে ব্যান্ডউইথ কমে যায়।
৩. আবহাওয়া খারাপ হলে যেমনঃ ঝড়-বৃষ্টির কারণে এর সিগন্যালে বিঘ্ন ঘটে।
৪. এ প্রযুক্তিতে অনেক বেশি বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হয়।
৫. ডেটা অন্তত ধীর গতির।
বন্ধুরা এই ছিল ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি নিয়ে আজকের টিউন। দেখা হচ্ছে তবে পরবর্তী টিউনে নতুন কিছু নিয়ে ইনশাআল্লাহ। ততক্ষণ পর্যন্ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্ববৃহৎ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক টেকটিউনস এর সঙ্গে থাকুন।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)