ইদানিং টুইটার এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে, টুইটার নিয়ে সবার কৌতুহল দিনে দিনে আরও বাড়ছে। সবাই যেন এখন টুইটার নিয়ে মেতে উঠেছে। টুইটারের বয়স মাত্র দুই বছর। সাইবার জগতে জন্ম বলে বয়স এখানে বিবেচ্য নয়। বড় পরিচয় তার বিস্তারে, বিস্তারের পরিধিতে। দুনিয়ার আনাচে-কানাচে এমনই সমাদর যে, মার্কিন সরকারও সাহায্য চাইছে ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক সংস্থা টুইটারের কাছে। আসুন টুইটার নিয়ে অল্প-সল্প জানার চেষ্টা করি।
টুইটার একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিস। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা নিজের বন্ধু এবং আগন্তুকদের নিয়ে একটি কমিউনিটি বা বলা যেতে পারে একটি মিলনমেলা যেখানে সবাই দৈনন্দিন জীবন নিয়ে বা নিজের অবস্থান সম্বন্ধে ছোট ছোট এক বা দুই লাইনের আপডেট দেয়। আপডেটগুলো ১৪০ শব্দ বা তার কম হয়, তাই এটাকে মাইক্রোব্লগিং সাইটও বলা হয়।
আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনের কখন কি করেন বা করবেন সেটা এখানে লিখবেন। অত্যন্ত সহজ করে ১৪০ শব্দের মাঝে। এটাই হলো নিজের স্ট্যাটাস আপডেট করা। আপনাকে যারা অনুসরণ করবে তারা তাদের পেইজে আপনার আপডেট দেখতে পাবে।
একই ভাবে আপনিও চাইলে কাউকে অনুসরণ করে তার আপডেট আপনার পেইজে দেখতে পারেন।
একটা উদাহরণ দেই, ধরুন কাল বিকেলে আপনি টেকটিউনসে একটি নতুন টিউন লিখবেন, আপনার স্ট্যাটাসে আপনি এটা লিখে আপডেট করলেন। তদ্রুপ আপনার এক বন্ধু লিখেছে যে কাল বিকেলে সে শপিংয়ে যাবে। অপর এক বন্ধু লিখেছে কাল বিকেলে সে খেলতে যাবে। এভাবেই তৈরি হয় যোগাযোগটা। আপনি আপনার পেইজে নিজের অবস্থান জানালেন এবং একইসাথে তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন। তারাও তাদের পেইজে আপনার অবস্থান জানতে পারলো।
প্রথমে টুইটার সাইটে গিয়ে সাইনআপ করতে হয় এবং সেটা অবশ্যই ফ্রি। নিজের জিমেইল, ইয়াহু বা এমএসএন এ্যাকাউন্টে লগইন করে আপনার টুইটারে নিবন্ধিত বন্ধু খুঁজে নিতে পারেন। আবার নাম বা কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করে দেখতে পারেন। এখানে বারাক ওবামা থেকে শুরু করে ব্রেকিং নিউজ, লিনাক্স, ফায়ারফক্স সব কিছুই খুঁজে পাবেন। এরপর আপনি যাদের আপডেট জানতে আগ্রহী তাদের অনুসরণ করতে পারেন। পরে চাইলে যে কোন সময় অনুসরণ করা বন্ধ করে দিতে পারেন।
বড় বড় ঘটনার সময় প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমগুলোকে সীমাবদ্ধতার নানা জালে আটকা পড়তে দেখা যায়। ঘরে ঘরে ইন্টারনেটের প্রবেশ যোগাযোগের প্রায় সব অর্গল ভেঙ্গে দেওয়ায় এসব সময় অনেককেই মুখাপেক্ষী করে তোলে কম্পিউটার ভিত্তিক এ মাধ্যমটি। আর টুইটার এই সুযোগে অজানা অনেক খবর তুলে এনে মিটাচ্ছে মানুষের তথ্য ক্ষুধা। ছোট ছোট ব্লগে মানুষ টুইটারে অকপটে বলছে নিজের কথা, আশ-পাশের কথা।
ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার সময় এরকম তথ্য দিয়ে সাড়া ফেলেছিল তারা। এবার ইরানের নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে সৃষ্ট আন্দোলন-সংগ্রাম আর নিপীড়ন-নির্যাতনের তথ্য দিয়ে এমনই জোয়ার তুলেছে টুইটার, মার্কিন সরকার তাদের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছে।
মাসে মাসে টুইটারের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কমস্কোর নামে এক প্রতিষ্ঠানের জরিপ বলছে, গত এপ্রিলেই এর ইউনিক ইউজার বা অনন্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল তিন কোটি ২১ লাখ। তবে মোবাইলসহ ইন্টারনেট সংযুক্ত বিভিন্ন যন্ত্রে এর ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারীর প্রকৃত হিসেব বের করা অত্যন্ত জটিল।
গুঞ্জন চলছে গুগল মাইক্রোব্লগিং প্লাটর্ফম টুইটারকে কিনে নিতে চায়। টুইটার এ তথ্য অস্বীকার করলেও গুগল কোনো মন্তব্য করেনি। এর আগে ফেসবুক গতবছর টুইটারকে ২৫০ মিলিয়ন ডলারে কিনতে ব্যর্থ হয়। এবার বিষয়ে গুগলকে বেশ আগ্রহী মনে হচ্ছে। তারা টুইটারের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এটাকে তাদের বিজ্ঞাপনের সফল প্লাটর্ফম হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।
এতসব অর্জনের পরও টুইটারের আর্থিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠান না হওয়ার কারণ হিসেবে এর অস্পষ্ট বিপণন পরিকল্পনাকেই দায়ী করছে বিশেষজ্ঞরা। এখনই না হলেও নিকট ভবিষ্যতে এর উজ্জ্বল ব্যবসায়িক উন্নতি দেখছেন অনেকেই।
deutsche welle
আমি m.h.mithu। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 54 টি টিউন ও 45 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টুইটারের কথা শুনেছিলাম কিন্তু এত বিস্তারিত জানতাম না।এখন তো আমার এখানে সাইন আপ করতে ইচ্ছে করছে।করে দেখি কেমন লাগে।ও ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি টিউন করার জন্য।