আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রোগ্রামিং এর পরিচয় হয় জীবনের বড় একটা অংশ কেটে যাওয়ার পর। রীতিমত কূলহারা দরিয়াতেই পরে তারা। অথচ স্কুল লাইফ থেকে ছোটখাট প্রোগ্রামিং এর সাথে পরিচিত থাকলে হয়ত এই সমস্যাটা হওয়ার চান্স কম থাকত। কারণ তখন কোমল হৃদয়ে দুনিয়াদারির চিন্তা তেমন একটা থাকেনা। তাই যে কোন রকমের খুটিনাটি প্রোগ্রামিং এর সাথে পরিচয় থাকলে ভবিষ্যতের প্রজন্ম থেকেই আমরা নিশ্চিতভাবে টপ ক্লাস কোডার পেতে পারি।
আমার স্ট্যান্ডার্ড ফাইভের স্টুডেন্ট যখন আমাকে তার ফেসবুকের এ্যাকাউন্টের কথা বলে তখন আমার চোখ আপনা আপনি কপালে উঠে যায়! ফেসবুকের জ্বর তাকেও ধরে বসেছে। অবসর সময়ে সৃজনশীল কিছু না শিখে, খেলাধূলা না করে এখন সে ফেসবুকে মাতে। গত ছয় মাসে আমি তাকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। খুবই শার্প ব্রেইন তার এবং গণিতে অসম্ভব রকম ভালো। সেই মাথা সবটাই এখন সবটাই খেয়ে ফেলছে আজাইরা সব জিনিস পত্র।
তবে আমি কিন্তু মেহেরাব কে ( আমার স্টুডেন্ট ) কয়েকদিন যাবত এই খুটিনাটি প্রোগ্রামিং এর হাতখড়ি করানোর চেষ্টা করছি। আপনারা হয়ত ভাবছেন এত ছোট মানুষকে C বোঝানোটা হয়ত উলুবণে মুক্তা ছড়ানোর মতই। তবে আশার কথা হল মেহেরাবকে C শিখতে হচ্ছেনা। সে এখন শিখছে "স্ক্র্যাচ"
তারই বয়সের লেভেলের জন্যে এমআইটি র ডেভেলপাররা "স্ক্র্যচ" নামক একটি ভিজ্যুয়্যাল প্রকৃতির নতুন প্রোগ্রমিং ল্যাঙ্গুয়েজ ডেভলপ করেছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই ল্যাঙ্গুয়েজ ৮বছর বা তদোর্ধ শিশুদের জন্যে।
এখানে ব্যাসিক লজিক স্টেটমেন্টগুলো ক্ষুদে কোডারদের জন্যে ভিজ্যুয়ালি দেখানো হয়েছে। প্রোগ্রামারা শুধু কারেক্ট স্টেটমেন্ট গুলো জায়গামত ড্র্যাগ করে ড্রপ করে দেবে এবং ব্ল্যাঙ্ক স্পেসে পছন্দমত ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করতে পারবে।
নিচের ছবিটি মূলত একজন ক্ষুদে প্রোগ্রামারের কোডিং করা। এখানে একটি ডায়নোসর কয়েক স্টেপ এগিয়ে "hello" বলে এবং একটি সাউন্ড ফাইল প্লে করে থাকে।
এখানে আপনি পাবেন অসংখ্য কোডিং স্টেটমেন্ট যা আপনার সোনামিনকে সহজেই বুঝিয়ে এই রকম ছোটখাট মজার মজার প্রোগ্রামিং করতে পারবে। এখানে ক্যাটেগরি অনুযায়ী কম্পোনেন্টগুলো স্তরবিন্যস্ত করা আছে।
স্ক্র্যাচে ইনক্লুড করা সাউন্ড ফাইল, ইমেজ ব্যবহার করার পাশাপাশি আপনি চাইলে আপনার পছন্দেরটিও ইম্পোর্ট করতে পারবেন।
এছাড়াও স্ক্র্যাচে থাকছে প্রিলোডেড অনেকগুলো কমপ্লিট প্রোগ্রাম, যা দেখে আপনি একটি আউডিয়া নিতে পারবেন, আসলে কোন উপায় আপনার বাচ্চা সহজেই এর সাথে ধাতস্থ হতে পারবে। আরো বড় ব্যাপার হচ্ছে এর আছে একটি স্ট্রং অনলাইন কম্যিউনিটি। যার সাহায্যে আপনি আপনার বাচ্চার কোডিং শেয়ার এবং আইডিয়া ডেভেলাপ করতে পারবেন।
তাই দেরী না করে বাড়ির ছোট পুলাপানদের প্রোগ্রামিং শেখান। হয়ত সেই হতে পারে ভবিষ্যতের টপ কোডার।
আমি দুঃসাহসী টিনটিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 200 টি টিউন ও 1531 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 34 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানুষ হিসেবে তেমন আহামরি কেউ নই আমি। সাটামাটা জীবনটাই বেশী ভালো লাগে। আবার মাঝে মাঝে একটু আউলা হতে মন চায়। ভালো লাগে নিজেকে টিনটিন ভাবতে .... তার মত দুঃসাহসী হতে মন চায় ..... কিন্তু ব্যক্তি জীবনে অনেকটা ভীতুই বটে ..... অনেক কিছুই হাতছাড়া হয়ে গেছে জীবনে এই কারনে ..... আবার...
স্ক্র্যাচ এর ব্যাপারে জানি না তবে “এলিয়াস” ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চমৎকার একটি প্রোগাম। আশা করি সামনে এলিয়াসকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এর উপরে একটা রিভিউ দিবেন। এছাড়া আরো অনেকগুলো রয়েছে। এখন ঠিক মনে নেই অনেকদিন আগে ঘাটাঘাটি করেছিলাম।
LinK: http://www.alice.org/
!টিনটিন ভাই আপনি চমতকার একটা টিউন করেছেন।! তবে আমার মনে হয় অনেক ছোট ক্লাস থেকেই স্কুলের পাঠ্যবই এর পাশাপাশি প্রোগ্রামিং এর জন্য একটা আলাদা সাবজেক্ট রাখলে ভালো হয়।!যেহেতু সবাই ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছে।তাই প্রোগ্রামিং এর এই বিষয় টাও বিবেচনা করতে হবে।