একদিন এক ফ্রেন্ডের হাই প্রোফাইল মোবাইল সেট ঘাটতে ঘাটতে চোখে পরল তার নিজের তৈরি করা একটি মিউজিক ভিডিও। না, আসলে ব্যাপারটা কোন ভিডিও থেকে মিউজিক ভিডিও বানানো নয়, সেটি ছিল তার শখের বশে তোলা ছবিগুলোকে সিকোয়েন্সিয়ালি একটি মিউজিক ট্র্যাকে ফেলে একটি ট্রেইলারের মত তৈরি করা। তার কাজটা আমার ভালো লাগলেও পিসিতে নিয়ে দেখার পরে আমার মনে হতাশার জন্ম নেয়। পিসিতে পুরো ব্যপারটাতে কেমন যেন খাপছাড়া লাগছিল। বোঝাই যাচ্ছিল যে ব্যাপারটা নন প্রফেশনালি ঘটেছে।এ পরেও অনেক ধরনের টুল ব্যবহার করে পিসিতে এই জিনিস করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মনের মত আউটপুট পাই নাই। তবে এতদিনে মনে হয় আমার সেই সন্ধান শেষ হয়েছে। কারণ এতদিনে এই ট্রেইলার রেডি করার এমন একটি ওয়েব প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি তাতে আমি আনন্দে আত্বহারা। হ্যাঁ, এইখানেও ওয়েব বেজড্ প্ল্যাটফর্ম। এ্যানিমেটো ধন্য ধন্য বলার মত একটি প্র্যাটফর্ম!!!!
আপনাকে শুধু আপনার ব্যবহারের ছবিগুলোকে আপলোড করতে হবে এবং একটি মিউজিক বেছে নিতে হবে। ব্যাস .... আর বাকী কাজটুকু এর এ্যাডভান্স সিনেমাটিক আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স টেকনোলজির উপর ছেড়ে দিন।
এই টেকনোলজি আপনার ছবি এবং মিউজিককে সেই সমস্ত টেকনোলজি এবং স্কিলের সাহাজ্যে এ্যানালাইজ করে কম্বাইন্ড করে থাকে, ঠিক যে সমস্ত টেকনোলজি ফিল্ম এবং টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন - ওয়াইড স্ক্রীণ টেকনোলজি।
আর এর কুল ফিচারগুলো আপনাকে আরো কুল করে দিবে। মিউজিক সিলেকশান প্যানেলের বিভিন্ন ধরনের মিউজিক থেকে আপনার টেষ্টের মিউজিকটি বেছে নিতে পারবেন। আরো আইডেন্টিফাই করে নিতে পারবেন জেনার, সং স্ট্রাকচার, রিদম, ভোকাল, ইনস্ট্রমেন্ট এবং এই সবই আপনার দখলে রেখে কাজ করাতে পারবেন এই প্ল্যাটফর্মে।
আরো একটি জোসস্ ফিচার হল আপনি এই মিউজিক ভিডিও/ ট্রেইলার চাইলে ইমেইলের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারবেন, আপনার ব্লগেও চাইলে এম্বেডিং করে দিতে পারবেন অথবা সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন ফেসবুকের বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করতে পারবেন। আর ভিডিও তৈরি করার ব্যাপারটা আহামরি কোন কঠিন কাজ না এবং বানাতেও বেশ কম সময় লাগে। মূলত এখানে আসল কাজ হচ্ছে আপনার ছবি আপলোডিং, সিকোয়েন্সিং এবং মিউজিক সিলেকশান। আর বাকী কাজটুকু তো এ্যানিমেটোই করবে।
প্রত্যেকটি ভিডিওতে প্রতি সেকেন্ডে ২৪টি ফ্রেম থাকবে, তাই আপনি একদম নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে আপনি এই ভিডিও পিসি অথবা টিভি যেখানেই প্লে করুন না কেন, এর কোয়ালিটি অটুট থাকবে।
আরেকটি জোসস্ ব্যাপার হল আপনার ছবি যদি কোন অনলাইন ফটো ম্যানেজমেন্ট সাইটে আপলোডেড থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকেও এই এ্যানিমেটোর সাহায্যে ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। কারন এ্যানিমেটো Picasa, Flickr, FaceBook, Smugmug এবং ফটোবাকেট এর সাথে ইন্টিগ্রেটেড আছে। আর একটি কথা এইখানে ব্যবহার করা প্রত্যেকটি ফটোর ম্যাক্সিমাম সাইজ এক মেগা। তাই আপনি হাই রেজ্যুলিউশন ফটো ব্যবহার করার আগে তার রেজ্যুলিউশান কমিয়ে নিন।
আরেকটি অতি জরুরি অথবা দুঃখের বিষয় বলতে ভূলে গিয়েছিলাম। আপনি চাইলে ফ্রি এ্যাকাউন্ট অথবা পারচেজড্ এ্যাকাউন্টে এই ভিডিও তৈরি করতে পারেন। তবে ফ্রি এ্যাকাউন্টের মাক্সিমাম ভিডিও লেংথ হল ৩০ সেকেন্ড। এর বেশি ফুল লেংথ ভিডিও ক্রিয়েট করতে হলে আপনাকে ক্রডিট ক্রয় করতে হবে। কবি এইখানে নীরব হয়ে রইল ।
রেজিষ্টার করার পর উপরের বাম কোনা থেকে ক্রিয়েট ভিডিওতে ক্লিক করতে হবে এরপর আপনার মুভির লেংথ অর্থাৎ শর্ট অথবা ফুল লেংথ বেছে নিতে হবে।
এরপর আপনাকে একটি প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে হবে যেখানে আপনার ছবি আপলোড করা আছে। যাতে এ্যানিমেটো এই সমস্ত ফটোগুলোতে এ্যাক্সেস করতে পারে এবং সেখান থেক ছবি এবং তথ্য গ্র্যাব করতে পারে।
এরপর সবচেয়ে ইম্পরটেন্ট পার্ট। সেই সমস্ত ফটো থেকে ইমেজ সিলেকশান, ডিলিটিং, প্রাইওরিটি দেয়া, সিকোয়েন্সিং করা। মোট কথা আপনার ভিডিওর এডিং পার্ট হচ্ছে এটি। আবার কোন ফটো টি কে স্পটরাইটে আনকে চাচ্ছেন তা ও ডিফাইন করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে একটি শর্ট ভিডিওর জন্যে ১৫-২০ টি ছবি সিলেক্ট করতে হবে। তা না হলে আপনার ভিডিও ফুল লেংথ এর ক্যাটেগরি তে পরে যাবে।
এইবার আসা যাক মিউজিক সিরেকশানে। আপনি চাইলে আপনার পিসি থেকে আপলোড করে দিতে পারেন অথবা তাদের অনলাইন মিউজিক স্টোর থেকেও বেছে নিতে পারেন।এবং সব শেষে আপনার ভিডির টাইটেল, ক্যাপশান, ডেসক্রিপশান এবং প্রডিউসার এবং ডিরেক্টেরের নাম এ্যাড করার পর সমগ্র প্রক্রিয়টির সমাপ্তি টানতে পারেন।
সব কমান্ড দিয়ে আপনাকে ক্রিয়েট ভিডিওতে ক্লিক করতে হবে। এবং এরপর আপনাকে ধৈর্যশীলভাবে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পাদিত করতে। এবং এ প্রগ্রেস বার থেকে চাইলে আপনি আপনার কাজের অগ্রগতি দেখে নিতে পারবেন।
এখনই এন্টার করুন এ্যানিমটোর জগতে .....
আমি দুঃসাহসী টিনটিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 200 টি টিউন ও 1531 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 34 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানুষ হিসেবে তেমন আহামরি কেউ নই আমি। সাটামাটা জীবনটাই বেশী ভালো লাগে। আবার মাঝে মাঝে একটু আউলা হতে মন চায়। ভালো লাগে নিজেকে টিনটিন ভাবতে .... তার মত দুঃসাহসী হতে মন চায় ..... কিন্তু ব্যক্তি জীবনে অনেকটা ভীতুই বটে ..... অনেক কিছুই হাতছাড়া হয়ে গেছে জীবনে এই কারনে ..... আবার...
হুমম.. সাউন্ডস গুড.. একটা ট্রাই করে দেখি.. ‘লিটেল শান্তিনগর’ নামে একটা মিউজিক ভিডিও বানানো যায় নাকি..
টিনটিন ভাই আপনি অন্তত ৩০ সেকেন্ড এর একটি ভিডিও করে লিংক দিন আমরা এই অসাধারণ জগতের কারিশমা দেখি ।