আশাকরি আন্দাজে টিউমেন্ট করবেন না। আগে পড়বেন, বুঝবেন এর পরে টিউমেন্ট করবেন। তাহলে শুরু করি।
ওয়েব ডেভেলপার বর্তমানে অত্যন্ত চাহিদা সম্পন্ন পেশা। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। দিন দিন বাড়ছে ওয়েবসাইটের সংখ্যা। এ পৃথিবীতে এক বিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। আর এর জন্য প্রয়োজন হচ্ছে দক্ষ ওয়েব ডেভেলপারের। তথ্য প্রযুক্তির যুগে, ক্যারিয়ারের জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অনেক এগিয়ে রয়েছে। ঘরে বসেই টাকা উপার্জন করা যায়। ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে খুব সহজে চাকরি পাওয়া যায়। এখন আশাকরি কাজে লাগবে।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরির দুটো ধাপ। ডিজাইন হচ্ছে প্রথম ধাপ এবং ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে শেষ ধাপ।
ওয়েব ডিজাইন অংশে একটি ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট-এন্ড অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যে অংশ দেখতে পায় সেটা করা হয়ে থাকে আর ডেভেলপমেন্ট অংশে ব্যাক-এন্ড অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটের ভেতরের ফাংশনাল পার্টগুলো ডেভেলপ করা হয়ে থাকে।
বিষয়টি পরিষ্কার হবে যদি আমরা ফেসবুকের কথাই চিন্তা করি। ফেসবুকে আমরা যে কালার, লেখা, ছবি ইত্যাদি দেখি, এই প্রদর্শনের কাজগুলো হয় ডিজাইন পার্টের মাধ্যমে, আর এই যে আমরা সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে পারি, টিউন করতে পারি, টিউমেন্ট করতে পারি এ জাতীয় ফাংশনাল কাজগুলো আটোমেটিক করা হয় ডেভেলপমেন্ট পার্ট থেকে।
যেভাবে ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে : চাইলে ও যে কেউ বিশ্বসেরা ওয়েব ডেভেলপার হতে পারে। কিন্তু এর জন্য সবার প্রথম প্রয়োজন একাগ্রতা। আর প্রয়োজন প্রচুর পরিশ্রম ও সাধনা। পরিশ্রম ও সাধনা ছাড়া কেউ কোনো কাজে কখনো সফল হতে পারেনি। আপনি সফল হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। আপনি যদি একাগ্রচিত্তে পরিশ্রম করতে রাজি থাকেন এবং ধৈর্যসহকারে আপনার সাধনা চালিয়ে যান, তা হলে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
এক জরিপ থেকে দেখা যায়, শুধু আমেরিকাতেই প্রতি মাসে প্রায় ১৬ মিলিয়নের বেশি অর্থাৎ ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে থাকে! যার প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি করা হয় প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার হায়ার করে এবং যার মার্কেট ভেল্যু ২০ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা! একটা সময় ছিল যখন ওয়েবসাইট ছিল শখের একটা বিষয়। কিন্তু এখন তা আর কোনো শখ বা বিলাসিতা নয়, বরং অবশ্য প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন প্রতিদিনই ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় দক্ষ ওয়েব ডেভেলপারের সংখ্যা নগণ্য। ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন। এখানেই হতে পারে আপনার উপার্জনের সবচাইতে বড় সুযোগ। মার্কেট প্লেসগুলোয় সবচেয়ে বেশি চাহিদা ওয়েব ডেভেলপারের। পারিশ্রমিকও অন্য সব কাজের তুলনায় বেশি। যেখানে তুমুল হারে প্রতিদিন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার তুলনায় নতুন ওয়েব ডিজাইনারের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। প্রতিদিন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের মার্কেট সাইজ বিদ্যুৎ গতিতে বেড়ে চললেও সেই হারে বাড়ছে না ওয়েব ডেভেলপারের সংখ্যা। এর ফলে বিশাল চাহিদা তৈরি হয়েছে এই সেক্টরে!
ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো মাপকাঠি নয়। তবে ইংরেজিতে দক্ষ হলে মার্কেট প্লেসে খুব ভালো করা যাবে। এ ছাড়া আরেকটি কারণ হলো – ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ভালো টিউটোরিয়াল বা বই ইংরেজিতে সহজলভ্য। তবে এখন বাংলাতেও অনেক ভালো টিউটোরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে।
আপনার মেধা ও পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করছে আপনার তৈরি হতে কত সময় লাগবে। আপনি কত দ্রুত গোটা ব্যাপারটা গ্রহণ করতে পারছেন। এ ছাড়া আপনি কতটা সময় ব্যয় করবেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য তার ওপরও। তবে সাধারণত ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে যে কেউ মোটামুটি ভালো ওয়েব ডেভেলপার হতে পারে। আসল কথা হলো, আপনি কখনো এটা শিখে শেষ করতে পারবেন না। ছয় মাস ধারণা নেওয়ার পর আপনিই বুঝতে পারবেন আপনি আসলে কাজ নেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে কতটা যোগ্য। আপনাকে অবশ্যই নতুন নতুন আপডেট সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে আপডেট করে নিতে হবে। তা না হলে আপনি কখনই সফল হতে পারবেন না। সাময়িক সফল হলেও অচিরেই আপনি আপনার প্লেস হারাবেন। মনে রাখবেন শেখার কোনো শেষ নেই।
এখন অনলাইনে এত রিসোর্স যে খুব সহজেই আপনি শিখতে পারবেন। এখানে আপনি সব টিউটোরিয়াল রিসোর্স পাবেন। অথবা বিভিন্ন প্রকার ট্রেনিং সেন্টার থেকেও শিখতে পারেন। একটা ব্যাপারে লক্ষ রাখবেন আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। ইউটিউবেও বিভিন্ন বাংলা এবং ইংরেজি টিউটোরিয়াল রয়েছে। এই সাইট থেকেও আপনি অনেকে শিখতে পারবেন।
কোথায় থেকে শিখব এটা তো পেলাম, কিন্তু কীভাবে শুরু করবো, কীভাবে একটা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করবো, সে সম্পর্কে নানান প্রশ্ন মাথায় আসছে, তাই তো? প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, প্রত্যেক টিঊটোরিয়াল দেখার সাথে সাথে ওই কাজ নিজে একবার করে দেখবেন। মনে রাখবেন দেখতে যতটুকু সহজ মনে হয়, নিজে নিজে করতে গেলে অনেক কঠিন মনে হয়। নিজের হাতে লিখলে খুব তাড়াতাড়ি মনে থাকে।
ওয়েব ডেভেলপার হলে আপনার কাজের ক্ষেত্র শুধুমাত্র ওয়েবসাইটের কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে সবধরনের প্রতিষ্ঠানেরই ওয়েবসাইট প্রয়োজন হয়। তাই ওয়েব ডেভেলপারের কাজের ক্ষেত্র একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ হলেও কাজের ধরনে বেশ বৈচিত্র্য থাকে এবং এক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা দেখানোর বেশ সুযোগ থাকে। বৈচিত্র্যের সাথে কাজ করতে চান এবং সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি আগ্রহী হলে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে আপনি কাজ করতে পারেন।
প্রথমেই বলে নেওয়া হয়েছে একজন ওয়েব ডেভেলপারের কাজ ওয়েব ডিজাইনারের থেকে আলাদা। ওয়েব ডিজাইনার সাধারণত ওয়েবসাইটের কারুশৈলী, ওয়েবসাইটের রংবিন্যাস এবং প্রতিটি পেজের ইন্টারফেস কেমন হবে সেই ধরনের কাজগুলো সম্পাদন করেন। মোদ্দাকথা, ওয়েবসাইটের বাহ্যিক অবয়ব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন ওয়েব ডিজাইনারকে। ওয়েব ডিজাইনার ও ওয়েব ডেভেলপার – উভয় ক্ষেত্রেই কোডিং ও প্রোগ্রামিং –এর বেশ ভালো জ্ঞান থাকতে হয়। ওয়েব ডেভেলপারের কাজ হয় ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ কাজ সম্পাদন করা। একটি ওয়েবসাইটের কাঠামো কেমন হবে, সার্ভারের কাজ সম্পাদন করা থেকে শুরু করে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য সার্ভারের সমস্যা সমাধান করা এবং বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের কাজ সহজ করা ও কাঠামো দাঁড় করানো একজন ওয়েব ডেভেলপারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ওয়েব ডেভেলপার হলে আপনার কাজের ধরন হবে নিম্নরূপ –
দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার অল্প সময়ের মধ্যে মাসে কয়েক লাখ টাকা সহজেই উপার্জন কার সম্ভব। Indeed.com-এর দেওয়া এক তথ্য অনুযায়ী, একজন ওয়েব ডিজাইনারের গড় বার্ষিক বেতন ৬০ হাজার ১৮২ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪ কোটি ৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৬০ টাকা, প্রতি মাসে হিসাব করলে দাঁড়ায় ৪ লাখ টাকা।
লেখা এবং রিসার্চঃ শিশির চৌধুরী
প্রথম প্রকাশিতঃ সি টেক ব্লগ
আমি মামুন। COO, Injaazh Private Limited, Pabna। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 122 টি টিউন ও 134 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 50 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
{জানিয়ে দাও} (,) {না হয় জেনে নাও}