-------------------------- بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ --------------------------
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউন।
বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নিজেদের ফ্রিল্যান্স পেশা হিসাবে ওয়েব ডেভেলমেন্টকে যতোটা গুরুত্বের সাথে দেখছে ততোটা অন্য কোন পেশাকে দেখছে বলে মনে হয় না। আর এর সুবাদে কিছু অসাধু ভণ্ড মানুষ বাংলাদেশের এই সব তরুণদের বিভিন্ন চটকদার কথা শুনিয়ে তাদেরকে দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নিচ্ছে। ফল স্বরূপ অনেক তরুণ নিজেদেরকে নিয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। টেকটিউনসে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে দু’একটা টিউন করার সুবাদে ফেসবুকে এরকম অনেকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে যারা ব্যাক্তিগত ভাবে প্রতারনার শিকার হয়েছে এবং এর জন্য হতাশায় ভুগছে। সঠিক দিক নির্দেশনা না পাওয়ার অভাবে তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে সঙ্কায় পড়ে গেছে। এই টিউনে আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের আলোকে আপনাদের অন্ধকার পথে একটু আলোর দিশা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি আপনারা টিউনের শেষ পর্ব পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে আমার সাথে থাকবেন এবং আপনাদের সমস্যা এবং পরামর্শগুলো টিউমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে পরবর্তিতে ভালো টিউন করতে উৎসাহিত করবেন।
আমরা জানি সাফল্যের কোন শর্টকাট পথ নেই। নিজেকে সফল হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আপনাকে হতে হবে কঠোর পরিশ্রমী এবং তার চেয়ে বেশি অধ্যবসায়ী। কিন্তু এমন অনেকেই আছে যারা অনেক পরিশ্রম করেও নিজেকে সফল ভাবে উপস্থাপন করতে পারছে না। আমি আমার টিউনগুলোতে তাদের জন্য কিছু কৌশল শিখিয়ে দিবো আর কি! আমরা জানি একজন ওয়েব ডেভেলপার হতে গেলে যে সমস্ত প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজগুলো জানতে হয় সেগুলো হলো, HTML, CSS, Javascript এবং PHP। আর কাজের জন্য জানতে হয় বর্তমান সময়ের সব চেয়ে জনপ্রিয় PHP বেইজড কন্টেন্ট মেনেজমেন্ট সিস্টেম WordPress। আমি সবগুলো বিষয়ে এক্সপার্ট হওয়ার উপায়গুলো বলবো।
আজ থেকে ৫০ বছর আগের কথা যদি ভাবেন, তখন মানুষের দুরবর্তি চলাচলের মাধ্যম ছিলো জাহাজ। মানুষ জাহাজে করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করতো। যাতে সময় এবং দুর্ভোগ দুটোই হতো। কিন্ত বর্তমানে বিমান যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি কয়েক ঘন্টায় এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারবেন। তাহলে বুঝা গেলো কম সময়ে সফলতার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হলো আপনি যা দিয়ে কাজ করবেন সেটা দ্রুততর এবং কার্যকর হওয়া। তারমানে ডেভেলপারদের উন্নতির জন্য প্রথম এবং অত্যাবশ্যকীয় কাজ হলো নোটপ্যাডের উপর পুরোপুরি দখল নিয়ে আসে। আমার প্রথম দিকের টিউনগুলোতে আমি নোটপ্যাড ব্যবহারে আপনাদের দক্ষতা বাড়িয়ে দিবো এবং তার পর ধাপে ধাপে অগ্রসর হবো।
আমরা যারা ওয়েব ডেভেলপার তারা Notepad++, Sublime Text এবং Dreamweaver সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি। এর মধ্যে Notepad++ ব্যবহার কারীর সংখ্যা সব চেয়ে বেশি হওয়াতে আমি Notepad++ বিষয়েই বেশি প্রায়োরিটি দিবো। যদিও আমি নিজে Sublime Text ব্যবহার করি। এখন তাহলে টিউনের মুল বিষয়ে চলে যাচ্ছি। অল্প পরিশ্রমে হয়ে যান প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার বলতে আমি বুঝাতে চাইছি কিছু এডিটর টিপস এন্ড ট্রিকস যা আপনাকে কম পরিশ্রমে ভালো মানের কাজ করতে সহযোগিতা করবে। সেই সাথে আরো অনেক কিছুতো থাকছেই……
যাদের জন্য এই টিউনটি লেখা তাদের কাছে Notepad++ নেই এটা বিশ্বাস করা যায় না। তারপরেও যদি কারো কাছে না থাকে তারা নিচের ডাউনলোড লিংক থেকে সর্বশেষ আপডেটকৃত ভার্সনটি ডাউনলোড করে নিন।
বাংলাতে একট প্রবাদ আছে প্রথমে দর্শনধারী তারপরে গুন বিচারী। এর মানে আগে দেখতে সুন্দর হতে হবে তার পরে তার গুনাগুন বিচার করতে হবে। Notepad++ এর গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেইস, ফন্ট স্টাইল, থিম সহ আরো অনেক কিছু আপনার কাছে সাধারন লাগতে পারে। মনকে চনমনে রাখতে আপনার প্রয়োজন সুন্দর এবং আকর্ষনীয় একটা কাজের ক্ষেত্র তৈরী করা। তাহলে চলুন প্রথমে আমরা এডিটরটিকে মনের মতো করে একটু সাজিয়ে নেই।
আপনার নোটপ্যাডটিকে সুন্দর এবং আকর্ষনীয় দেখাতে হলে আপনাকে এডিটরের থিম এবং ফন্টগুলোকে সুন্দর করতে হবে। চলুন তাহলে থিম, ফন্ট সহ আরো যা কিছু লাগে সেগুলো পরিবর্তন করে ফেলি।
থিম পরিবর্তনঃ Notepad++ এ প্রায় ২১টার মতো সুন্দর এবং আকর্ষনীয় থিম আছে। থিম পরিবর্তন করতে হলে আপনি মেনুবার হতে Settings সিলেক্ট করে Style Configurator সিলেক্ট করুন।
এখন নিচের মতো করে করো উইন্ডো প্রদর্শিত হবে। আপনি চিহিৃত জায়গা হতে আপনার পছন্দমতো থিমটি সিলেক্ট করুন তারপর সেভ এন্ড ক্লোজ করে বেরিয়ে আসুন।
ফন্ট পরিবর্তনঃ Notepad++ এ ফন্ট পরিবর্তন করতে চাইলে Settings > Style Configurator সিলেক্ট করুন। তারপর যে উইন্ডো দেখতে পাবেন তাতে নিচের মতো করে সেটিং করুন। টেক্সট এডিটরে সাধারনত Consolas ফন্টটি সব চেয়ে বেশি সুন্দর লাগে।
আপনি এখান থেকে আরো অতিরিক্ত হিসাবে ব্যাকগ্রাউন্ড কিংবা ফরগ্রাউন্ড কালার পরিবর্তন করতে পারবেন। টেক্সট এর জন্য বিভিন্ন প্রকার স্টাইলও নির্বাচন করতে পারবেন।
আমরা এই টিউনের পরবর্তি পর্যায়গুলোতে প্লাগিন ব্যবহার করে অধিক দ্রুততার সাথে কাজ করা শিখবো। কিন্তু আজ আমি আপনাদের দেখাবো কিছু সাধারন সেটিংস পরিবর্তন করে কীভাবে কাজের গতি বাড়াবেন। প্রথমে মেনুবার থেকে Settings > Preference এ ক্লিক করুন। তারপর নির্দেশনা মতো কাজ করুন।
এক সাথে অনেকগুলো ইলিমেন্ট সিলেক্ট করতে চাইলেঃ আপনি যদি চান যে কম্পিউটারে সাধারন সিলেকশনের মতো করে Ctrl চেপে একাধিক ইলিমেন্ট সিলেক্ট করবেন তাহলে নিচের চিত্রে চিহিৃত জায়গাতে টিক মার্ক দিয়ে দিন।
অটো কমপ্লিট এবং সাজেশন পেতে চাইলেঃ আপনি যদি ড্রিমওয়েভারে কাজ করে থাকেন তাহলে দেখেছেন যে প্রত্যেকটা অপেনিং ট্যাগ লেখার পর অটোমেটিক ক্লোজিং ট্যাগ লেখা হয়ে যায়। তাছাড়া কিছু লিখলেই সেগুলোর অনুরূপ সাজেশন পাওয়া যায়। আপনি চাইলে এই এডিটরেও এই সুযোগগুলো পেতে পারেন। এ জন্য নিচের ছবিতে দেখানো জায়গাগুলোতে চেকবক্সগুলোতে টিক মার্ক দিয়ে বেরিয়ে আসুন। কাজ হয়ে যাবে।
আপনি যদি চান যে ডিফল্টভাবে আপনার এডিটরে যে সমস্ত শর্টকাট আছে সেগুলো আপনি পরিবর্তন করবেন তাহলে এটা আপনি খুব সহজেই করতে পারবেন। এর জন্য Settings > Shortcut Mapper এ ক্লিক করুন তাহলে নিচের মতো চিত্র দেখতে পাবেন। এখন ইচ্ছে মতো আপনার শর্টকাটগুলো পরিবর্তন করে ফেলুন।
নোটপ্যাড++ এ ডিফল্ট ভাবে কী কী শর্টকাট দেওয়া আছে জানতে এখান থেকে নোটপ্যাড++ শর্টকাট লিস্টটি ডাউনলোড করুন।
আজ ২৬ ডিসেম্বর, আমার জীবনের একটি স্বরনীয় দিন। কারন আজ থেকে ২৩ বছর আগে এই দিনেই আমি অনেক বাঁচা মরার সংগ্রাম করে পৃথিবীতে এসেছি। তাই সব সময় চেষ্টা করি এই দিনটি আসলে ভালো কিছু কাজ করার। অনেক ভেবে আজকেই টিউনটির পরিকল্পনা হাতে নিলাম। ইনশাল্লাহ আপনারা সাথে থাকলে এটার শেষ পর্ব পর্যন্ত করবো। আজ খুব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, যার অধিকাংশই আপনারা জানেন। কিন্তু পরবর্তি টিউনগুলোতে এডভান্স কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তবে মজার ব্যাপার হলো গত বছর ঠিক এই দিনে টেকটিউনসে সর্বপ্রথম নোটপ্যাডে দ্রুত কোডিং করার উপায় হিসাবে জেন কোডিং নিয়ে আমি একটি টিউন করেছিলাম। আপনারা চাইলে আমার সেই টিউনটি এর সাথে পড়ে নিতে পারেন। তাহলে হয়তো আপনার আরো একটু বেশি উপকৃত হবেন। টিউনটি পড়তে চাইলে এখানে (আপনি কি একজন ওয়েব ডিজাইনার ??? আজ থেকে হয়ে যান ম্যাজিশিয়ান, ৫ মিনিটের কোড লিখুন ৫ সেকেন্ডে!!! আপনার জন্যই আজকের সবকিছু ! হ্যাপি কোডিং …..) ক্লিক করুন। এই টিউনে আমার অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে। আপনারা এটাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের যেকোন সমস্যা কিংবা পরামর্শ টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আর আপনাদের যাদের টেকটিউনসে একাউন্ট নেই তারা আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ লিংক থেকে আমার টিউনে কমেন্ট করতে পারবেন। পেজে লাইক দিয়ে আমার সকল টিউন বিষয়ে আপডেট থাকুন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো সেটা হলো, আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।
আপনাদের সাহায্যার্থে আমি আছি........
ফেসবুক | টুইটার | গুগল-প্লাস
আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।
দারুন টপিক এবং দারুন লেখা, আচ্ছা ভাইয়া এত পরিমানে যে ওয়েব ডিজাইনার বেড়ে যাচ্ছে তত পরিমানে বারতেছে কি? ফলে এক্তা সময় কি এমন হবে যে কাজ পাওয়া সোনার হরিন হয়ে যাবে?