হেলো টেকটিউনস বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশাকরি ভাল আছেন। এইচটিএমএল নিয়ে আমি ধারাবাহিক সিরিজ টিউটোরিয়াল তৈরি করতে যাচ্ছি। আজকে তার প্রথম পর্ব প্রকাশ করলাম। ধীরে ধীরে বাকি পর্ব গুলো প্রকাশ করব। আজকের প্রথম পর্বে থাকছে HTML এবং ওয়েব সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা। পরের পর্ব খুব দ্রুতই প্রকাশ করব ইনশাআল্লাহ। সবাই টিউটোরিয়াল পর্ব গুলো ভালভাবে প্রাকটিস করলে এইচটিএমএল এবং ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে ভাল দক্ষতা তৈরি করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
HTML এর পূর্ণরূপ হল Hyper Text Markup Language। মানে এইচটিএমএল হল একপ্রকার মার্ক-আপ ল্যাংগুয়েজ। আমরা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, নোটপ্যাড বা যে কোন প্রকার টেক্সট ইডিটর দিয়ে যে ডকুমেন্টগুলো তৈরি করি তা কিন্তু আমরা ব্রাউজারে রান করাতে পারি না বা ওয়েবে দেখানো সম্ভব না। আমরা এইসব ডকুমেন্ট কে যদি ব্রাউজারে বা অনলাইনে পাবলিশ করতে চাই তাহলে আমাদের দরকার হবে এইচটিএমএল নামক এই মার্ক-আপ ল্যাংগুয়েজের।
এইচটিএমল কিন্তু কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয় এটা মার্ক-আপ বা একপ্রকার স্ক্রিপ্টিং ল্যাংগুয়েজ। এটা শিখা অনেক সহজ এবং প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের মতো জটিল না। আর এইচটিএমল দিয়ে কোন গাণিতিক হিসাব নিকাষের কাজ করা যায় না। গাণিতিক এবং যুক্তিমূলক কাজ করার জন্য প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের দরকার হয়। যেমন: পিএইচপি, পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি হল প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ।
টেক্সট ফাইলের তুলনায় এইচটিএমল ফাইল অনেক পাতলা এবং সাইজে ছোট হয় যাতে ওয়েবের ভিতর দিয়ে এইসব ফাইল দ্রুত গতিতে ট্রান্সফার করা যায়। এইচটিএমল ফাইলের ভিতরে যে কোন ইমেজ, ভিডিও, অডিও, এনিমেশন ফাইল সরাসরি বসানো হয় না তার বদলে এই সব ফাইলের লোকেশনকে লিংক এর মাধ্যমে লিংক করিয়ে দেওয়া হয়।
এইচটিএমএল শেখা অনেক সহজ কারণ এখানে কোন যুক্তিমূলক এবং গাণিতিক কাজ করার দরকার হয় না। এতে শুধুমাত্র কিছু ট্যাগ, এট্রিবিউট ব্যবহার করা হয় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তাই যে কেউ এটা দ্রুততার সাথে শিখে নিতে পারে।
আমরা যেহেতু ওয়েব ডিজাইন শিখব তাই প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের বেশ কিছু ওয়েব বা ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার সমন্ধনিয় বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা তৈরি করে নিতে হবে। নিচে আমি সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করব আশাকরি খুব সহজেই আপনারা বিষয়গুলো বুঝে নিতে পারবেন।
ইন্টারনেট হল এমন একটি সিস্টেম যা সারা বিশ্বের সকল কম্পিউটার, ফোন, ট্যাব অথবা যে কোন ডিজিটাল ডিভাইস যার একটি ইউনিক ডিজিটাল এড্রেস বা ঠিকানা আছে সবাইকে একসাথে যুক্ত করে রাখতে পারে এবং তাদের প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, ডাটা শেয়ারিং করতে পারে এবং অনেক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকাণ্ড মূহুর্তেই করে ফেলতে পারে যা সাধারণ মানুষের না জানলেও কিছু যায় আসে না। যদি চান কাগজ-বিহীন একটি বিশ্ব গড়া সম্ভব কিনা তাহলে আপনার একবারেই মনে আসবে ইন্টারনেটের কথা। আমাদের বাস্তব জীবনের সবকিছুই ডিজিটালই কনভার্ট করে অনলাইনে রেখে দিচ্ছি। আর এই সবই সম্ভব হচ্ছে ইন্টারনেটের কারণে যা একটি ভার্চুয়াল বিশ্ব গড়তে ভূমিকা পালন করছে।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর (DOD) অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি নেটওয়ার্ক (ARPAnet) ১৯৬৯ সালে সর্ব প্রথম ইন্টারনেট সিস্টেম চালু করেন। এটিই কম্পিউটার জগতের প্রথম নেটওয়ার্ক সিস্টেম। এই নেটওয়ার্কে শুধুমাত্র দুইটা কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমেরিকার মিলিটারি বিভাগ এই নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে বিভিন্ন গবেষণাগার এবং বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। কালক্রমে এটাই হয়ে উঠে আজকের ইন্টারনেট।
ই-মেইল হল ইলেকট্রনিক্স মেইল। প্রথম দিকে ইন্টারনেট বলতে ই-মেইল সার্ভার কে বোঝানো হতো। তখনও ওয়েব সাইট তৈরি করা শুরু হয় নি। এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে ডাটা পাঠানোর সিস্টেমই হল ইমেইল। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মেইল সার্ভিস দিয়ে থাকে। এই যুগে জিমেইল এর সাথে প্রায় সবাই জড়িত। গুগল ফ্রিতে জিমেইল ব্যবহার করতে দেয় তাদের ইউজারদের। তাছাড়া ইয়াহু মেইল, রকেট-মেইল সহ অনেক রকমের টেম্পোরারি ইমেইল সার্ভিস চালু আছে অনলাইনে। এখন প্রায় সকল হোস্টিং প্যাকেজের সাথে ইমেইল সার্ভার ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে হোস্টিং কোম্পানি গুলো।
একটি ওয়েব পেজ থেকে অন্য ওয়েব পেজ এবং এক ওয়েব সাইট থেকে অন্য সাইট বা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করাই হল ওয়েব ব্রাউজিং। আর এই ব্রাউজিং করার জন্য দরকার হয় ওয়েব ব্রাউজার নামক বিভিন্ন সফটওয়্যারের। যেমন: গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স, ওপেরামিনি, ইউসি ইত্যাদি হল এক একটা ওয়েব ব্রাউজার। এইচটিএমএল কোড গুলো এই ওয়েব ব্রাউজারেই রান হয়।
ওয়েব ডিজাইন শিখার আগে কারো যদি ইন্টারনেট, ওয়েব এবং এই সমন্ধনীয় প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারনা না থাকে তবে সে ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কেও ভাল ধারনা অর্জন করতে পারবে না। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ইমেইল, ওয়েব ব্রাউজার ইত্যাদি সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকলে কম্পিউটার রিলেটেড যে কোন কাজ দ্রুত আয়ত্ত করা যায়। উপরে আমি এ সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। এইচটিএমএল নিয়ে ২য় পর্ব প্রকাশ করব খুব দ্রুত ইনশাআল্লাহ। সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি মো সাদ্দাম হোসাইন। Student, ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।