বর্তমানে ফ্রীলান্সিং একটি একটি জনপ্রিয় পেশা। আর এই পেশায় রয়েছে হাজারো রকম কাজের ক্ষেত্র। এই সকল কাজের ক্ষেত্র গুলুর একটি হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন পেশা। বর্তমান সময়ে ওয়েব ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা রয়েছে আর যা পরবর্তী সময় গুলুতেও বজায় থাকবে। চাইলে আপনিও একজন ওয়েব ডিজাইনার হতে পারেন আর গড়তে পারেন সফল ক্যারিয়ার। একজন ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হওয়ার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমান শিখতে হবে আর ধৈর্য ধারন করতে হবে। আপনার শিখার আগ্রহকে কখনোই নষ্ট করা যাবে না। সর্বদাই শিখার মধ্যে আপনাকে থাকতে হবে। আমরা জানি যে ওয়েব ডিজাইনার হওয়ার জন্য আমাদেরকে কিছু ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হয় আর সেই ল্যাঙ্গুয়েজ গুলু হলঃ এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভা ক্রিপ্ট, জেকুয়েরি ইত্যাদি। আর এই ল্যাঙ্গুয়েজ গুলু ভাল ভাবে শিখার পর আপনি একজন ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হতে পারবেন। আমাকে একটা প্রশ্নের সম্মুখীন প্রতিনিয়তই হতে হয় আর সেই প্রশ্নটি হচ্ছে যে আমি কিভাবে ওয়েব ডিজাইন শিখা শুরু করব এবং কোথা থেকে শুরু করব ? উত্তরঃ ওয়েব ডিজাইন আপনি কয়েক ভাবে শিখতে পারেন।
১। ট্রেনিং সেন্টার
২। অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগ পরে বা গুগুলের সাহায্য নিয়ে
৩। ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে।
এই উপায় গুলু ফলো করে আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখতে পারেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই ৩ উপায় এর মধ্যে কোনটা আমার জন্য ভাল হবে ? প্রথম দুইটা উপায় আপনার জন্য সব থেকে বেশি ভাল হবে। এখন আবার প্রশ্ন যে, তিন নাম্বারটা কেন বেশি ভাল হবে না ? উত্তরঃ আপনি যদি ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে কাজ শিখেন তাহলে আপনার শিখার আগ্রহ ওই ভিডিও টিউটোরিয়াল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। কোন কিছু জানার জন্য আপনি ভিডিও টিউটোরিয়াল খুঁজবেন, ভিডিও টিউটোরিয়াল এর উপর নির্ভর থাকবেন। কোন কিছু জানার জন্য তখন আপনি গুগল ব্যবহার করবেন না ইউটিউব ব্যবহার করে ভিডিও খুঁজবেন। যার কারনে আপনার জ্ঞান ভিডিও পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। যার কারনে ভিডিওটাকে আমি ওই ভাবে সাপোর্ট করি না। বাকি রইল ২ টা ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড অনলাইনে ব্লগ পরে। আপনি যদি ট্রেনিং সেন্টার থেকে ট্রেনিং নিয়ে ওয়েব ডিজাইনার হতে চান তাহলেও পারবেন তবে আপনাকে ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হওয়ার জন্য এক্সপার্টদের কাছ থেকে ট্রেনিং নিতে হবে। যদি সেই রকম কোন ট্রেনিং সেন্টার না পান তাহলে অনলাইনকে বেছে নিন। এখন ধরুন আপনি একটা ট্রেনিং সেন্টার থেকে ওয়েব ডিজাইন ট্রেনিং শেষ করলেন। আর ট্রেনিং শেষ করার পর যদি আপনি মনে করেন যে আপনি ওয়েব ডিজাইনার হয়ে গেছেন তাহলে মস্ত বড় ভুল করলেন। এখন বর্তমানে ট্রেনিং সেন্টার গুলুতে মোটামুটি বেসিক শিখানো হয় আর দুই একটা প্রোজেক্ট করে দেখানো হয়। আপনি সেই প্রোজেক্ট গুলু করেই একজন ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হতে পারবেন না। একজন ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হতে হলে কমপক্ষে ১ বৎসর সময় লাগে আর সেখানে আপনি মাত্র ৩-৪ মাসের একটি ট্রেনিং শেষ করে ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হয়ে যেতে পারবেন না। এটা শুধু মাত্র স্বপ্নে সম্ভব। এখন আপনি হয়ত ভাবছেন যে ভাইত শুধু অকাজের প্যাঁচাল পারতেছে আর সেই টুকুতো আমরা জানিই সেরা হওয়ার জন্য জন্য আমাদের কি করতে হবে সেটাতো বলতেছে না ! অস্থির হবেন না বলছি, আপনি ট্রেনিং শেষ করেছেন এবং মোটামুটি কাজ পারেন কিন্তু এক্সপার্টরা যেমন পারেন আপনি তেমন পারেন না এখন আপনার প্রশ্ন হচ্ছে আমি কিভাবে এক্সপার্ট হব ? আপনার প্রশ্ন আর আমার আলোচনার মুল বিষয় এক। একজন এক্সপার্ট ওয়েব ডিজাইনার হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনি যা শিখেছেন সেই টুকু দিয়ে একটা প্রোজেক্ট দাঁড় করান (ট্রেনিং সেন্টারে আপনাকে যে প্রোজেক্টটা করে দেখানো হয়েছিল সেটা নয়। নতুন কোন প্রোজেক্ট করেন। ট্রেনিং সেন্টারে আপনাকে যেটা করে দেখানো হয়েছিল সেটা যদি ভাল করে না পারেন তাহলে সেটাও করতে পারেন যদি পারেন তাহলে আপনার আইডিয়া দিয়ে একটি প্রোজেক্ট করেন)।
২য় নাম্বার ধাপঃ মনে করুন আপনি একটি প্রোজেক্ট বা টেম্পলেট করেছেন এখন এই টেম্পলেট এক্সপার্ট কাউকে দেখান আর এক্সপার্ট কোন ওয়েব ডিজাইনার আপনার টেম্পলেটটি দেখার পর সেখানে যদি আপনি কোন ভুল ভ্রান্তি করে থাকেন তাহলে সেটা সে আপনাকে দেখিয়ে দিবে আর আপনি সেটা ঠিক করে নিতে পারবেন আর আপনার কি ভুল হয়েছিল এবং কোথায় হয়েছিল সেটাও জেনে নিতে পারবেন আর সেই ভুল গুলু দেখা যাবে যে পরবর্তীতে আপনার হবে না। যা কিনা আপনার কাজের ক্ষেত্রে অনেকটাই অগ্রগতি এনে দিবে।
৩য় নাম্বার ধাপঃ ধরুন আপনি আপনার সকল ভুল শুদ্রে নিয়েছেন এবং মোটামুটি টেম্পলেট বানাতে পারেন। এই মোটামুটিতে কিছু হবে না আপনাকে এক্সপার্ট হতে হবে না হলে আপনার কোন দাম নেই তাই এক্সপার্ট হওয়ার জন্য আরও আডভান্স কাজ শিখতে হবে এখন এই অ্যাডভান্স কাজ শিখার জন্য আপনি হয়ত কোন এক্সপার্ট লোকের কাছে যাবেন আর সেখানে হয়ত দেখা যাবে আপনার সময় চলে জাচ্ছে কিন্তু আপনি কিছু শিখতে পারছেন না। এখন আমার কথা হচ্ছে যেখানে গুগল আছে সেখানে আপনি আরেক জনের আশা কেন করবেন।
আপনি যেটা পারবেন না সেটা গুগলকে জিজ্ঞাস করুন আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন। আর যদি কথার কথা আপনি আপনার সমস্যা গুগলকে দ্বারা সমাধান করতে না পারেন তখন একজন এক্সপার্টের কাছে শরণাপন্ন হন। আমরা গুগল কে জিজ্ঞাস না করেই কোন সমস্যায় পরলে এক্সপার্টদের কাছে শরণাপন্ন হই। যার কারনে আমাদের মেধার বিকাশ ঘটে না আর আমরা এক্সপার্টও হতে পারি না। গুগল যদি আপনি ভাল করে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে আপনার এক্সপার্ট হওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে না। এমন অনেকেই আছে যে অনেক অ্যাডভান্স জিনিস পারে কিন্তু ছোট কাজ সেটা পারে না কিন্তু সে সেই কাজটা শিখেছিল এখন মনে নেই। আর তার না পারার কারন হচ্ছে অ্যাডভান্স জিনিস শিখতে গিয়ে সে বেসিক অনেক কিছুই ভুলে গেছে এই রকম যেন আপনার ক্ষেত্রে না হয় সে জন্য আপনি যে টুকু শিখেছেন সেই টুকু নিয়ে প্রতিদিন অনুশীলন করতে হবে আর অ্যাডভান্স কাজ গুলু শিখতে হবে।
৪র্থ নং ধাপঃ এখন আপনাকে যা করতে করতে হবে তাহল এক্সপার্ট বা প্রোফেসনাল ওয়েব ডিজাইনারা যে কাজ গুলু করেছেন টা ফলো করতে হবে। ধরুন একজন এক্সপার্ট ডিজাইনার একটা কাজ করেছে আর সেই কাজটি আপনি দেখে দেখে করার চেষ্টা করুন। এটা আপনার মেধার সর্বোত্তম বিকাশ ঘটাবে। এক্সপার্টদের করা ডিজাইন গুলু আপনি করার সময় বিভিন্ন সমস্যায় পরবেন আর সেই সমস্যা গুলু সমধানের জন্য গুগল কে কাজে লাগান আর যদি তাও না পারেন তাহলে এক্সপার্টদের শরণাপন্ন হন। একজনের ডিজাইন কপি করা যদিও দণ্ডনীয় অপরাধ তবুও আপনি শিখার জন্য ডিজাইনটি তৈরি করতে পারেন। কখনোই সেই ডিজাইন টি কাজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না যদি করেন তাহলে সেই ডিজাইনার আপনাকে কপিরাইট আইনে শাস্তি পাওয়াতে পারে। শুধু শিখার জন্য অন্নের ডিজাইন ফলো করে শিখতে পারেন কোন সমস্যা নেই। আমি আরেকটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম আর সেটা হল রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন। আপনি যদি একজন ভাল মানের ওয়েব ডিজাইনার হতে চান তাহলে রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইনটাও আপনাকে খুব ভাল ভাবে শিখতে হবে। রেস্পন্সিভ ডিজাইনের জন্য আমি টুইটার বুটস্ট্রাপ ব্যবহার করি। আপনি টুইটার বুটস্ট্রাপ সম্পর্কিত অনেক কিছু গুগলের মাদ্ধমে জানতে পারবেন। আর কিছু ব্লগ আছে যেখান থেকে আপনি টুইটার বুটস্ট্রাপ পুরোপুরি ভাবে শিখতে পারবেন। আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন। লিখার মাঝে কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন। যে কোন প্রবলেমে পরলে আমাকে ফেসবুকে নক করতে পারেন। নিজের সাধ্য মত আপনাকে হেল্প করার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ
আমি মাহমুদুল হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 44 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ