ডিসেম্বর মাস শুরু হল। আর ১ টা মাস পর আসছে নতুন বছর। মানুষের চাহিদা নিয়ত পরিবর্তনশীল। আর ঠিক একই ভাবে প্রজুক্তির বিশ্বেও পরিবর্তিত হচ্ছে মানুষের চাহিদার। যত বেশি নতুন পরিবর্তন আসছে ততই বেড়ে ছলেছে ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা। আর সেই চাহিদার প্রেক্ষিতে নিজেকে কাংখিত একজন সফল ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে দেখতে চাইলে বা নিজের অবস্থান অটুট রাখতে চাইলে চলতে হবে পরিবর্তনের সাথে।
ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন কয়েকবছর থেকে বেশ দ্রুতই হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে HTML5, CSS3, flat design, minimal design ইত্যাদি নানা নতুন নতুন শব্ধের ব্যাবহার মোটামোটি বেড়েই চলেছে অনলাইন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে। পূর্ববর্তী পরিবর্তন গুলোকে কেন্দ্র করেই আগামি পরিবর্তন অনুমান করা যায়। আর এটাই আমার আজকের পোস্টের উদ্দেশ্য।
তো দেখে নেই কি কি পরিবর্তন হতে পারে ২০১৫ সালে ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রেঃ
এটাই সবথেকে আলোচিত বিষয়। গত কয়েক বছরে রেসপন্সিভ ডিজাইন ট্রেন্ড দখল করে নিয়েছে পুরো ওয়েব ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রি। ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইসে সেই ডিভাইসের উপযোগী হয়েই প্রদর্শিত হবে একই ওয়েবপেজ, এটাই রেস্পন্সিভ ডিজাইনের মুল উদ্দেশ্য। ২০১৪ তেই মোটামুটি রেস্পন্সিভনেস বিহীন ওয়েব সাইট খুজে পাওয়া যায় না। আর প্রফেশনাল ডিজাইনার হতে গেলে তো রেস্পন্সিভনেস অত্যাবশ্যক।
ঘোস্ট বাটন হচ্ছে প্রায় খালি এবং সচ্ছ বা অর্ধসচ্ছ বাটন যা মিনিমাল এবং ফ্লাট ডিজাইনের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়। আইওএস এবং এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশান এর ইউআই তেও এটি বহুল ব্যবহৃত। ফ্লাট ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা যতই বেড়ে চলেছে ততই এই বাটনের ব্যাবহারও বাড়ছে। এই বাটন ব্যাবহারের শুরু কোত্থেকে তা বলা মুশকিল তবে যাই হোক না কেন এটা সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে ওয়েব টেম্পলেট এর সুন্দর্য বহুগুন বৃদ্ধি পায়। এবং ২০১৫ তেও এর ব্যাবহার বর্তমান থাকবে।
গুগল ফ্রন্ট এবং অন্যান্য টাইপকিটের সহজলভ্যতা এবং ব্যাবহার সহজতর হওয়ার কারনে টাইপোগ্রাফির প্রতি ওয়েব কোম্পানিগুলোর আগ্রহও বেড়েছে। সেই সাথে বেড়ে গেছে ওয়েব ডিজাইনারদের দায়িত্ব। আগে টাইপোগ্রাফির প্রতি বেশি নজর না দিলেও চলত, কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে বা পরবর্তী বছর আপনি যদি টাইপোগ্রাফির প্রতি নজর না দেন তবে ওয়েব ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে পারবেন না।
বিশেষ করে কল-টু-একশন বা এই জাতীয় কন্টেন্ট এর ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে বর্তমানে সুন্দর সুন্দর ইমেজ বা লাইভ ভিডিও এর জুড়ি নেই। এমনকি এখন সাইটের হোমে উপরের দিকের যে স্লাইডার সেটাও ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাইলে দেওয়া হয় এবং এর উপরে বিশেষ মেনু, কল-টু-একশন, ঘোস্ট বাটন বা এইজাতীয় কন্টেন্ট রাখা হয়। এইধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডটি আগের স্ট্যাটিক এক রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডের পরিবর্তে ব্যবহৃত হওয়ার অন্যতম কারন সাইটের ভিসিটরদের উজ্জীবিত করা এবং একঘেয়ে ভাব দূর করা। কন্টেন্ট বা পেজের টপিকের সাথে মিল রেখে ইমেজ বা ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যাবহার করলে এটি অর্থবহও হয়ে উঠে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ২০১৫ তে এর চাহিদা বাড়বে না কমবে।
এটি একটি অন-পেজ ক্লিক-টু-একশন ইভেন্ট। সাধারনত উপরের কন্টেন্ট সেকশনের নিছের দিকে একটা বিশেষ বাটন থাকে যেখানে ক্লিক করলে ইউজার অটো-স্ক্রল হয়ে পরবর্তী সেকশনে চলে যাবে। এর জন্য অবশ্য সাধারনত উপরের সেকশনের হাইট ব্রাউজার উইন্ডোর হাইটের থেকে কম হতে হয় অথবা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমান হয়। এই ট্রেন্ড আসার অন্যতম কারন হচ্ছে ওয়েব সাইটটি মোবাইল ডিভাইসে আরও বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি করা। অর্থাৎ মুল উদ্দেশ্য এখানে মোবাইল ডিভাইস। এই ধরনের কাজের চাহিদাও ২০১৫ তে বাড়বে।
স্বল্প পরিসরে এবং সাজানো ভাবে অনেক বেশি একই ধরনের সেকশন (সাধারনত পোস্ট) পদর্শনের উদ্দেশ্যেই কার্ড স্টাইল ডিজাইন জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তবে ২০১৫ তে এটার জনপ্রিয়তার কেমন পরিবর্তন হবে তা বলা মুশকিল। তবে এটুকু বলা যায় বর্তমানে এটি ভালোই জনপ্রিয়। এই ডিজাইনের ক্ষেত্রে সাধারনত আইসোটোপ নামের জেকুয়েরি প্লাগিন ব্যবহৃত হয়। আবার মেসনরি নামের একটি প্লাগিন ইদানিং বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তবে, আমার অভিজ্ঞতা বলে এই ডিজাইন ট্রেন্ড ব্যাবহারে মানুষ আরও ক্রিয়েটিভ হওয়া উচিত। এখন পর্যন্ত আমি এর অসাধারন কোন ব্যাবহার দেখিনি। মানে, এই ট্রেন্ডে ক্রিয়েটিভ ডিজাইনারদের একটা ভালো সম্ভাবনা আছে।
ফ্লাট ডিজাইন মানে হচ্ছে এমন ধরনের ডিজাইন যেখানে কোন প্রকার ত্রিমাত্রিক ইফেক্ট থাকে না । যেমন ধরেন সেখানে কোন ধরনের গ্লোসি বাটন, অপ্রয়োজনীয় কোন শেডো ইত্যাদি থাকবে না। এটাই বর্তমান ওয়েব ডিজাইনের অন্যতম হট টপিক। বর্তমানে ফ্লাটটাইপ ছাড়া তেমন একটা ডিজাইন পাওয়া যায় না। বা পাওয়া গেলেও তা তেমন একটা বিক্রির সম্ভাবনা নেই। ২০১৫ তে এর চাহিদা ব্যাপক বাড়বে।
এটা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত একটা বিষয়। তবে এই ব্যাপারটা এতোটা ওয়েব ডিজাইনের অন্তর্ভুক্ত নয়। এটি মুলত ওয়েব প্রোগ্রামারদের কাজ। কারন এর প্রধান কাজ হচ্ছে ইউজারের লোকেশন, বিহেবিওর, ব্রাউজার অথবা এক্টিভিটির ভিত্তিতে ডাটা প্রদর্শন করে। এধরনের সাইটের সবথেকে বড় উদাহরন হচ্ছে ইউটিউব। এই ধরনের ওয়েব ফাংশনালিটি দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
এই ছিল ২০১৫ সালের সম্ভাব্য ওয়েব ডিজাইন ট্রেন্ড সম্পর্কে আমার আজকের পোস্ট। মনে রাখবেন কেন ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দেবে বা কেন আপনার ডিজাইন বেশি বিক্রি হবে? একটাই কারন আপনি সবার ছেয়ে আলাদা এবং আপনার ক্যারিয়ারের সকল বিষয় সম্পর্কে আপ-টু-ডেট।
এই পোস্টটি পূর্বে এখানে প্রকাশিতঃ http://softnetbd.com/web-design-trends-next-year/
আমি ফয়সাল রিমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 83 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আপনার প্রতিটা বিষয়ের সাথে একমত এখন কার সাইট গুলা এই সব বৈশিষ্ট্যর উপর ভিত্তি করেই বানাও তাই তিকে থাকতে হইলে মাস্ট ফলো করতে হবে ধন্নবাদ আপনাকে