সবাইকে আবারো নব বর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউন। যাই হউক, দিন দিন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট পেশা টার উপর অসম্ভবভাবে নির্ভরশীল হয়ে পরছি। মনে প্রাণে একটা দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি যে, হা এর মাধ্যমে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব। অথচ গত বছরের এই দিনটাতেও একরাশ হতাশা কাজ করতো মনে। সন্দেহের মধ্যে দিন কাটাতাম, ভাবতাম এইযে আমি এখানে এতো এতো সময়, শ্রম, মেধা খাটাচ্ছি সব কি বিফলে যাবে! নাকি আমিও পারবো! আজ মনে হচ্ছে এই কয়েকদিনে অনেক বড় কিছু করতে না পারলেও অন্তত হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। কারণ আজ আমি আমার পেশাটাকে কাজে লাগিয়ে টুকটাক আয় করতে শুরু করেছি। তবে জানি আরো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। আর সেই প্রত্যাশায় এগিয়ে যাচ্ছি।।
আজ আমি বেশ কিছু বিষয় শেয়ার করবো আপনাদের মাঝে। আশা করি আপনি এতে উৎসাহ পাবেন আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে। প্রস্নত্তর পর্ব টুকু পড়ুন আশা করি আপনার প্রশ্নের সমাধানটা এখানেই আছে।।
উত্তরঃ আমাদের দেশে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে আপনি কোর্স করতে পারেন তবে সেই অভিজ্ঞতা আমার নাই। আমার অভিজ্ঞতা বলছি। পড়ুন, সমাধান নিশ্চয় পাবেন। হাঁ ভাই, কোন প্রতিষ্ঠানে নয়। আপনি নিজেই ঘরে বসে কাজ শিখতে পারবেন। আপনি নিশ্চয় আর আর ফাউন্ডেশনের নাম শুনেছেন। এদের টিউটোরিয়াল গুলো ওপেন সোর্স মানে আপনি সহজেই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। আর যদি সেটা না পারেন তাহলে একটু কষ্ট করে খোঁজ নিলেই দেখেবেন আপনার জেলার কারো না কারো কাছে টিউটোরিয়াল আছে। সেখানে যোগাযোগ করে সেগুলো সংগ্রহ করুন। আমাদের রাসেল ভাইয়ের টিউটোরিয়াল গুলো দেখলে আপনি খুব সহজে কাজ শিখতে পারবেন। এবং আর আর ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ তো আছেই। যেকোনো সমস্যার সমাধান এখানে আপনি পাবেন।।
উত্তরঃ এই প্রশ্নটা আমিও করতাম আগে। তবে অন্য কোন ব্যক্তিকে নয়, নিজেই নিজেকে করতাম। একটা বিষয় বোঝার চেষ্টা করুন তো! আমরা ১ টি বছর পড়াশুনা করে শেষে পরিক্ষা দিই। এরপর দেখা যায় যে যেমন স্টাডি করেছে, সে তেমন ফল পেয়েছে। আর সিলেবাস তো একদিনেই শেষ হয়ে যায় নি। বছরের প্রতিটা দিন পড়াশুনা করেই শেষ হয়েছে। ঠিক তেমনি এখানেও আপনি নিজেকে কাজ করার মত কর্মক্ষম করে তুলবেন প্রথমে। আর প্রথম কাজ করার মত দক্ষ হতে আপনাকে প্রথমেই বড় ডেভেলপের হতে হবে না। যেমন আপনি এইচটিএমএল, সিএসএস, পিএসডি টু এইচটিএমএল টু ওয়ার্ডপ্রেস শিখলেন ব্যাসিক অথবা আরেকটু এডভান্স লেভেলের কাজ শিখে নিলেন। আর এক্ষেত্রে আপনি যদি প্রতিদিন ৫/৬ ঘণ্টা প্রাকটিস করেন তাহলে ৬ মাসের মাথায় কাজ করার মত দক্ষ হয়ে উঠবেন। এরপর বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিড করবেন। প্রথমে দিকে কাজ পেতে একটু সময় নিবে এটা স্বাভাবিক। তবে কাজ পেতে কিছু কৌশল কাজে লাগাতে পারলে নিশ্চয় কাজ পেতে খুব বেশি অপেক্ষা আপনাকে করতে হবে না। এবার প্রথম ১টা/২টা কাজ পেলেই দেখেবেন আপনার আত্মবিশ্বাস ১০০ গুন বেড়ে গেছে। এবার ক্লাইন্টের কাজ করলেন পাশাপাশি অন্যান্য কাজ প্রাকটিস করবেন। দেখবেন দিন দিন আপনি নতুন নতুন কিছু শিখতে পারছেন আর আয় তো করছেনই।।
উত্তরঃ নিশ্চয় জানেন যে, ওয়েব ডিজাইনার/ ডেভেলপার হতে কি কি বিষয়ে আগে দক্ষ হতে হয়। আগে সেগুলো সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা নিন। এরপর বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করুন। নিজের প্রোফাইল কিভাবে প্রফেশনালদের মত করবেন সেগুলো নিয়ে পড়াশুনা করুন। এবার দেখুন আপনি যেই কাজ গুলো পারেন সেই ধরণের কাজ কেমন পোস্ট হয়। পোস্ট গুলো পড়ুন দেখুন যে, সচারাচার ক্লাইন্টদের রিকোয়ারমেন্ট কেমন, কোন কোন কাজ বেশি বেশি পোস্ট হয় এগুলো যাচাই করুন। আর সেইভাবে প্রাকটিস বা কাজ শিখুন। এবার আপনি যদি দেখেন যে, বেশির পোস্ট হওয়া কাজ গুলো সম্পর্কে আপনার দক্ষতা আছে তখন এপ্লাই করুন কাজে। আর এই বিষয়ে বিভিন্ন বাংলা, ইংরেজির ব্লগ পড়ুন।
উত্তরঃ এটা খুবই স্বাভাবিক যে, আপনি কাজ শিখতে গেলে বা ক্লাইন্ট এর কাজ করতে গেলে সমস্যায় পড়বেন। তাই বলে হতাশ হলে তো চলবে না। কিভাবে সমাধান বের করতে হবে সেটা জানতে হবে। যে বিষয়ে সমস্যা সেটা লিখে গুগুল করুন। শত শত টেক্সট টিউটোরিয়াল পাবেন বিভিন্ন ব্লগে অথবা কোন না কোন ইউটিউব ভিডিও পাবেন। যা আপনাকে সমাধান দিতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ আছে আমাদের দেশে যেখানে প্রশ্ন করে অনেক সমাধান পেতে পারেন। অথবা আরেকটা দারুণ ওয়ে আছে। অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের ফোরাম সাইট আছে যেখানে প্রশ্ন টা পোস্ট করলে সাথে সাথেই অনেক সমাধান দিবে। সেখানে বড় বড় প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার আছেন যারা কাজের পাশাপাশি মুখিয়ে থাকে একটি নতুন প্রশ্নের আশায়। এরা আপনাকে অনায়াসে হেল্প করবে। এরকম একটা ওয়েব সাইট এর লিঙ্কঃ http://www.stackoverflow.com আস্তে আস্তে আরো সন্ধান পাবেন এরকম রিসোর্সের।
উত্তরঃ আপনি হয়তো ভাবছেন এখানে তো প্রতিদিন ক্লাইন্টের কাছ থেকে কাজ নিয়ে কাজ করতে হয়। এবং প্রতিটা কাজ ডেলিভারি দিয়ে টাকা নিতে হবে। মার্কেটপ্লেস, ক্লাইন্ট দের মন জয় করে চলতে হবে সর্বদা। হাঁ তাই তো। এটাই তো স্বাভাবিক। সবাইতো তাই করে। তবে আউটসোরসিং লেভেল এ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এমন একটা মাধ্যম যেখানে আপনি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আয় করতে পারবেন। আজ আপনি এই লাইনে নতুন, তাই টুকটাক ছোটখাটো কাজ করছেন। কিন্তু কিভাবে কি করবেন? অন্যান্য ওইসব ক্যাটাগরিতে কিভাবে আয় করবেন? আজ থেকে ২/৩ বছর পর আপনি নিশ্চয় এই অবস্থায় থাকবেন না। আর আপনার জ্ঞান, দক্ষতাও বাড়বে অনেকগুন। তখন আপনি ক্লাইন্টদের কাজের পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্রেস থিম, প্লাগিন বানাবেন, এইচটিএমএল টেম্পলেট বানাবেন, বুটস্ট্রাপ এইচটিএমএল টেমপ্লেট বানাবেন। সেগুলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে সেল দিবেন। আর এই আয় হবে আপনার সারাজিবনের জন্য। এমনকি মৃত্যুর পরও টাকা পাবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে এই বিষয়ে আরো স্টাডি করতে হবে। কি ধরণের প্রোডাক্ট এখানে সেল করা যায়, প্রডাক্ট এর ধরন কেমন হওয়া উচিত। ভাল বিক্রি হবে এরকম প্রোডাক্ট বানাতে কি করতে হবে ইত্তাদি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে আপনাকে।।
আমার আগের টিউন পড়ে অনেকেই ভেবেছে যে, আমি অনেক বড় ওয়েব ডিজাইনার। আসলে ঠিক সেটা না। আমি যতদূর জানি বা বুঝি সময় পেলে সে টুকুই শেয়ার করি। আশা করি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় কেউ না কেউ উপকৃত হবে। আর আমার সার্থকতা সেখানেই।। চলছে নতুন বছর, ১৪২১ বঙ্গাব্দ। আজ থেকেই শুরু হউক আপনার ফ্রিলান্স জগতের পথচলা। কোন প্রকার সন্দেহ বা সংশয় নয়। কাজ শিখুন, কাজ করুন। আউটসোরসিং এ প্রতিদিন হাজার হাজার ডলার দেশে আনছে বাংলাদেশের দক্ষ, দামাল সন্তানেরা। আপনিও হউন এর সহযোগী।
ফেসবুকে আমিঃ https://www.facebook.com/bappy.cd
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমি বাপ্পি চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 20 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।