কেমন আছেন সবাই? আপনারা ঠিক মত টিউন পড়তে পারছেন তো? কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না তো? আর টিউন থেকে কিছু শিখতে বা জানতে পারছেন তো? কিন্তু আমি একটা জিনিস জানতে পারছি না :(টিউন আপনাদের ভালো লাগছে কিনা. তাই দেরি না করে ঝটফট আপনার মন্তব্য লিখে দিন 🙂
গত পর্বে হতাশা এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ নিয়ে এসেছি বেশ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর। প্রশ্ন গুলো আপনার মতই কিছু নতুনদের থেকে নেয়া হয়েছে। এর জন্য আমি বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই আর.আর ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ডপ্রেস গ্রুপ এবং গ্রুপের সকল সদস্য কে। তারাই আমাকে এই প্রশ্ন গুলো করেছে যেন এগুলোর উত্তর দিয়ে আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে পারি। অনেকে একদম কিছুই জানেন না, অনেকে মোটামোটি জানেন, অনেকে আবার মোটামোটি ভাল জানেন। এমন সবার থেকেই প্রশ্ন নিয়ে বাছাই করে প্রায় ৩০ টির মত প্রশ্ন নিয়ে এসেছি এখানে।
এর মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর আগের টিউন গুলোতে বেশ বিস্তারিত ভাবে লিখেছি। তারপর ও এখানে ছোট করে উত্তর দিয়ে দিয়েছি। যদি বিস্তারিত উত্তর চান তবে পূর্বের টিউন গুলো পড়ুন, আর পূর্বের টিউন এ না পেলে টিউমেন্ট করুন। উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।
উত্তরে কিছু ভুল থাকতে পারে। কারণ আমি কোন বড় ওয়েব ডিজাইনার বা বেশ অভিজ্ঞ নই। গুগল এর সহায়তায় এবং নিজের স্বল্প জ্ঞান এ সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি। অভিজ্ঞ রা ভুল গুলো দেখিয়ে দিবেন আশা করছি।
আপনার ব্যাংক এ বেতন কত ঠিক আমার জানা নাই। তবে আন্দাজ এ বলতে পারি ২০- ৫০ হাজার টাকা। আপনি যদি ভালো মত কাজ শিখে ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সিং করেন এবং যথেষ্ট পরিশ্রম করেন তবে অবশ্যই আপনি এর থেকে বেশি আয় করতে পারবেন। এ নিয়ে ছোট্ট একটি ঘটনা মনে পড়লো। আমার এক পরিচিত ভাই, তার কথা বলিঃ
তিনি ফ্রিল্যান্সিং করতেন। প্রতি মাসে তার আয় করা টাকার চেক তার বাসায় পৌঁছে যেত, এবং সে একটি ব্যাংক থেকে সেই চেক ভাঙ্গাতেন। প্রতি মাসেই সে এভাবে চেন ভাঙ্গাতেন একটি ব্যাংক থেকেই। ব্যাংক ম্যানেজার তাকে লক্ষ করতে থাকে। একদিন প্রশ্ন করে বসে, "বাবা! তুমি কি কাজ কর? যে প্রতি মাসেই তুমি এত বড় বড় চেক ভাঙ্গাউ?" উত্তরে ভাইয়া তাকে ফ্রিল্যান্সিং সম্বন্ধে ধারণা দিলেন। সব বোঝার পর ওই প্রাইভেট ব্যাংক ম্যানেজার যার মাসিক বেতন প্রায় ১ লক্ষ টাকা, তিনি বললেন "বাবা, আমি যদি এই চাকরী ছেরে দেই, তাহলে তুমি আমায় কাজ শিখাবে?"।
এরপর নিশ্চয়ই আর কিছু বলা লাগবে না!
এইচটিএমএল একটি মারকাপ ল্যাঙ্গুয়েজ। এটি দিয়ে ওয়েবপেজ এর গঠন তৈরি করা হয়।
মারকাপ ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে সু সজ্জিত ভাষা। কিছু পরিচিত শব্দ ব্যবহার করে এই ভাষা তৈরি করা হয়েছে। এটি দিয়ে মুলত ওয়েব ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এইচটিএমএল একটি মারকাপ লেঙ্গুয়েজ।
এইচটিএমএল করতে হলে আপনাকে প্রথমে কম্পিউটার অন করতে জানতে হবে। এরপর স্টার্ট মেনু থেকে নোটপ্যাড ওপেন করতে জানতে হবে। এরপর নোটপ্যাড এ টাইপিং করা জানতে হবে। এবং সবশেষে সেই টাইপ করা ফাইল টা সেভ করতে জানতে হবে। অবশ্য এইচটিএমএল ফাইল টি দেখার জন্য আপনাকে একটি ওয়েব ব্রাউজার (যেমনঃ ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ফায়ারফক্স, গুগল ক্রোম, অপেরা বা সাফারি) ওপেন করতেও জানতে হবে। আর কাজ শেষ করে কম্পিউটার টা অফ করা টাও শিখে নিতে পারেন। আর নাহলে ডাইরেক্ট তার টান দিয়ে খুলে ফেলবেন। 😛
সিএসএস হচ্ছে স্টাইলশিট। এটি দিয়ে একটি এইচটিএমএল পেজ কে ডিজাইন করা হয়। আসলে সিএসএস একটি ওয়েবপেজ এ প্রাণ দেয়। সিএসএস ছাড়া একটি ওয়েবসাইট দেখতে মাত্র কিছু লেখা আর ছবির স্তম্ভ।
একটা হচ্ছে ঢাকা শহরের বিল্ডিং আর একটা গ্রাম বাংলার কুরে ঘর। দুটোতেই মানুষ থাকে, কিন্তু একটাতে আয়েশ বেশি সহজে বানানো যায় (কোন কষ্ট করা লাগে না, রাজমিস্ত্রি ভারা করলেই বানিয়ে দেয়) আর একটাতে একটু আয়েশ কম আর নিজে কষ্ট করে বানাতে হয়। ফটোশপ হচ্ছে শহরের বিল্ডিং আর সিএসএস হচ্ছে গ্রমা বাংলার কুড়ে ঘর (কুড়ে ঘর বলে অবহেলা করবেন না, এর দাপট বেশ শক্তিশালী)। . ফটোশপ দিয়েও ডিজাইন করা হয়, তবে সেটি গ্রাফিক্স ডিজাইন। অর্থাৎ ফটোশপ দিয়ে বিভিন্ন ছবি ডিজাইন করা হয়। আর সিএসএস দিয়ে ওয়েব ডিজাইন করা হয়। ফটোশপ এ মাউস দিয়ে টানাহেঁচড়া করে ডিজাইন করা হয়, আর সিএসএস দিয়ে কোড লিখে ডিজাইন করতে হয়। ফটোশপ এ আপনার ছবিতে আপনার মাথা কেটে মার্ক জুকারবারগ এর মাথা লাগাতে পারবেন। কিন্তু সিএসএস দিয়ে এটি করতে পারবেন না। অবশ্য সিএসএস দিয়ে আপনার ওয়েবসাইট এর মাথে কেটে ফেসবুক এর মাথে লাগাতে পারবেন 😛
দুটো আলাদা শিখতে হবে, কিন্তু লেয়ার, কালার, শেডো এবং আরো কিছু বিষয়ে দুটোর মধ্যে বেশ মিল পাবেন। আসলে সিএসএস এবং ফটোশপ এর মধ্যে কোন গভীর সম্পর্ক নেই, তারা শুধু দূর সম্পর্কের বন্ধু মাত্র। আপনি যদি PSD (ফটোশপের ছবি) থেকে ওয়েবসাইট বানাতে যান তবেই আপনাকে ফটোশপ এর কিছু কাজ জানতে এবং করতে হবে। ওয়েব ডিজাইন এর জন্য মোটামোটি ফটোশপ শিখে রাখা ভালো।
আসলে ওয়েবসাইট বানাতে কোন সফটওয়্যার এর দরকার নেই। আপনি সাধারণ নোটপেড দিয়েই ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। তবে সময় বাচানোর জন্য এডোবি ড্রিমওয়েভার বা সাবলাইম টেক্সট ২ বা সমমানের কোন কোড এডিটর ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু শেখার ক্ষেত্রে ভুলেও এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করতে না, সেক্ষেত্রে সময় এর বদলে আপনার শিক্ষা বেচে যাবে (ভালো শিখতে পারবেন না)। . শেখার ক্ষেত্রে notepad+ ব্যবহার করুন।
আপনি নিজে যদি ওয়েবসাইট বানান তবে কোন খরচ ই লাগবে না। যদি অন্য কাওকে দিয়ে বানান তবে ২০০০৳ থেকে ১০০০০৳ পর্যন্ত লাগতে পারে (ওয়েবসাইট এর মান হিসেবে)। . অবশ্য আপনি যদি ওয়েবসাইট টি অনলাইন এ নিতে চান, অর্থাৎ সবাই আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পারবে, এমন করতে চান তবে আপনাকে কিছু টাকা খরচ করে হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনতে হবে।
এটি ওয়েবসাইট টি কেমন হবে, কি কি থাকবে ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। তবে একটি সাধারণ ওয়েবসাইট বানাতে ১ সপ্তাহ সময় লাগতে পারেন। এর চেয়ে কম সময় এ ও ওয়েবসাইট বানানো যায় আবার কিছু ক্ষেত্রে ১/২ মাস ও লাগতে পারে।
হ্যা। আপনি আপনার বানানো ওয়েবসাইট বিক্রি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় আছে। ধরুন আপনি অনলাইন এ খেলা দেখা বিষয়ক একটি ওয়েবসাইট বানালেন, এটি আপনি বিক্রি করতে পারবেন। এতে ওয়েবসাইট এর ভিসিটর, ডিজাইন, ইত্যাদি অনেক কিছু প্রভাব ফেলে। এছাড়া আপনি ওয়েবসাইট এর টেমপ্লেট তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।
আপনাকে একজন ৫০০০৳ দিবে তার জন্য একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে দিতে। ৫-৬ ঘন্টা কাজ করে আপনি ৫০০০৳ পেয়ে যাবেন। এতে আপনার লাভ আছে কি? 😛 আসলে আপনি ওয়েবসাইট বানাবেন আপনার ক্লায়েন্ট এর জন্য। আপনাকে বিভিন্ন পারিশ্রমিক এর মুল্যে ওয়েব ডিজাইন করতে হবে। এতে আপনার আয় হচ্ছে। আর এখানে লাভ বলতে কিছু নেই। আপনি ভালো আয় করতে পারবেন, স্বাবলম্বী হতে পারবেন। কারো উপর নির্ভর করা লাগবে না। এটাই আপনার লাভ।
এটি নিয়ে আগের টিউন এ যদিও লিখেছি, তারপরও আবার ছোট করে লিখছি। আপনি ওয়েব ডিজাইনার হতে পারবেন কিনা, সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার উপর। ছোট বেলায় আপনি কি কখনো ভেবেছিলেন আপনি হাঁটতে পারবেন কিনা? আপনার অদম্য চেষ্টায়, বহু মানুষের নিঃস্বার্থ সহযোগিতায়, কঠোর পরিশ্রম এর পর আজ আপনি চোখ বন্ধ করেও হাঁটতে পারেন। আপনি চেষ্টা করলে আর কঠোর পরিশ্রম করলে অবশ্যই ওয়েব ডিজাইনার হতে পারবেন। মানুষ পারে না এমন কিছু নেই।
সময় নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। ব্যক্তি বিশেষে আলাদা সময় লাগবে। অনেকের ৪ মাস যথেষ্ট আবার অনেকের ১ বছর ও লেগে যায়। আপনি কতটুকু সময় আর পরিশ্রম দিবেন তার উপর নির্ভর কুরে আপনার ওয়েব ডিজাইনার হতে কেমন সময় লাগবে। সাধারণত ৬ মাস এ মোটামোটি ভাল ওয়েব ডিজাইনার হওয়া সম্ভব (আমার ব্যক্তিগত মতামত)।
সব কাজের মধ্যে থেকে খাবার, ঘুমাবার, বা গোসল করার সময় বের করতে পারেন? তবে ওয়েব ডিজাইন এর জন্য ও পারবেন। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন কে অই রকম মন থেকে চান আর ভালবাসেন তাহলে সময় বের করা আপনার জন্য ব্যাপার না। বেশি না, প্রতিদিন ২ ঘন্টা সময় বের করুন ওয়েব ডিজাইন প্র্যাকটিস করার জন্য। অবশ্য যখন ওয়েব ডিজাইন এর কাজ শুরু করবেন তখন আপনাকে অনেক সময় দিতে হবে। দিনে ৭ ঘন্টার জায়গায় ৬ ঘন্টা ঘুমান। ২০ মিনিট এর জায়গায় ১০ মিনিট এ খাবার খান। ঘুমাতে যাবার সময় ওয়েব ডিজাইন নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমান। এভাবে একটু একটু করে দেখবেন প্রতিদিন ২-৩ ঘন্টা সময় বের করা আপনার জন্য ব্যাপার না। তবে পর্যাপ্ত সময় না নিয়ে ওয়েব ডিজাইন শেখা শুরু না করাটাই ভাল। কারণ দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে।
টিউন টি পড়ার পর আর এই প্রশ্ন থাকার কথা না। তাও যদি থাকে, তাহলে বলবো টিউন টি আবার পড়ুন। প্রথমে এইচটিএমএল শিখুন, তারপর সিএসএস এবং ধীরে ধীরে সিএসএস ৩, এইচটিএমএল ৫, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়েরি শিখতে থাকুন।
আমার মতে দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কিছুই আছে যেগুলো লেখা না পরলে বুঝতে পারবেন না, আবার অনেক কিছুই আছে যেগুলো ভিডিও দেখলে বুঝতে সহজ হয়ে যায়। আমি আপনাকে দুটোই ফলো করতে বলবো।
ওয়েব ডিজাইন শিখতে হলে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়েরি এবং উচ্চতর পর্যায়ে সিএসএস ফ্রেমওয়ার্ক, রেস্পন্সিভ ডিজাইন ইত্যাদি শিখতে হবে।
শেখার জন্য উত্তম সাইট বললে আমি কিছু ইংরেজি সাইট এর কথা বলবো। যাদের কোন তুলনা হয় না। লেখা পড়ে শিখতে অবশ্যই আপনাকে w3schools.com এ যেতে হবে। (প্রত্যেক ওয়েব ডিজাইনার এর জীবনে অন্তত একবার w3schools.com এ যাওয়া ফরজ, একাধিক বার যাওয়া সুন্নত)। . ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে চাইলে lynda.com আর tutsplus.com এর ভিডিও না দেখলে আপনি অন্ধ হয়ে রইবেন। আর আমাদের বাংলাদেশি অনেক সাইট ই ভাল মানের টিউটোরিয়াল তৈরি করে থাকে, তবে সেগুলোকে এসব ইংরেজি ওয়েবসাইট গুলোর সাথে তুলনা করা সম্ভব নয়। তবে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের বানানো টিউটোরিয়াল দেখে ইংরেজরা ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপ শিখবে। আমাদের দেশের মেধা গুলো এই দিন আমাদের দেখিয়েই ছারবে ইনশা আল্লাহ্!
প্রিমিয়াম টিউটোরিয়াল গুলো আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। যার দাম প্রায় ৫০০০-১০০০০ পর্যন্ত বা তার চেয়েও বেশি। এছাড়া যদি কিনিও আমাদের দেশের নেট স্পীড এর গুনে সেগুলো ডাউনলোড দিতে দিতে ইনশাল্লাহ আমাদের নাতি পুতি রা সেগুলো দেখে ওয়েব ডিজাইন শিখতে পারবে। এই সমস্যার সমাধানে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের বাংলাদেশি টিউটশেয়ার বিডি গ্রুপ (TutShare BD) প্রায় ৩০০ জিবির উপরে ভিডিও টিউটোরিয়াল ও প্রিমিয়াম ইবুক নিয়ে হাজির হয়েছে আপনাদের কাছে, নিঃস্বার্থে সাহায্য করার জন্য। আপনি ফ্রী তেই তাদের কাছ থেকে আপনার প্রয়োজনীয় টিউটোরিয়াল নিতে পারবেন। তাদের কাছে ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও, ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রামিং সহ আরো অনেক ধরনের প্রায় ৩০০ জিবি টিউটোরিয়াল আছে। যেগুলো বিভিন্ন মানুষ কষ্ট করে, সময় ব্যয় করে ডাউনলোড করে আপানাদের সাথে বিনামুল্যে শেয়ার করছে। আপনার কাছেও যদি এমন ভালো কোন টিউটোরিয়াল থাকে তাহলে তাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। তাই এখনি যোগ দিন তাদের ফেসবুক গ্রুপ এঃ https://www.facebook.com/groups/tutsharebd/
কোন ব্যক্তি যখন তার নিজের বা কোম্পানির কোন কাজ নিজে বা কোম্পানির কাওকে দিয়ে না করিয়ে অনলাইন এর মাধ্যমে অন্য কোন তৃতীয় ব্যক্তি দ্বারা কাজ টি করায় তখন সেটিকে আউটসোরসিং বলে। ধরুন অ্যামেরিকার এক ব্যক্তির একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। এখন এটি যদি সে অ্যামেরিকার কোন কোম্পানি দিয়ে করায় তাহলে তার অনেক খরচ পড়বে। উল্লেখ্য অ্যামেরিকার একজন ওয়েব ডিজাইন এর মাসিক বেতন নিম্নে ৪০, ০০০$। . অথচ এই কাজটি সে যদি আউটসোরসিং এর মাধ্যমে কোন ফ্রিল্যান্সার কে দিয়ে করায় তাহলে তার খরচ পড়বে ২০০-৫০০$। . অপর দিকে আমাদের মত গরিব দেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই ২০০-৫০০$ ই অনেক কিছু। এ কারনেই আউটসোরসিং এ মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মার্কেটপ্লেস একটি বাজার। যে বাজারে আউটসোরসিং এর কাজ কেনা বেচা হয়। বাস্তব জগতে এই বাজারের কোন অস্তিত্ত নেই। এই বাজার সম্পূর্ণ অনলাইন নির্ভর। অনলাইন এ একটি ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে এই বাজার পরিচালনা করা হয়। এই বাজার এ ক্লায়েন্ট তার প্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে নেয়, এবং কন্ট্রাক্টর সেই কাজ করে দেয়। কিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হচ্ছে oDesk.com, freelancer.com, elance.com, 99designs.com ইত্যাদি।
oDesk একটি জনপ্রিয় মারকেটপ্লেস। এখানে ক্লায়েন্ট রা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পর্কে টিউন করে এবং সেই কাজে দক্ষ এবং করতে ইচ্ছুক ফ্রিল্যান্সার বা কন্ট্রাক্টর রা কাজ টি করার জন্য দরখাস্ত করে। ক্লায়েন্ট বা বায়ার এদের মধ্য থেকে পছন্দ মত একজন কে বেছে তাকে কাজ টি করতে দেয়। কাজের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দেয়। কন্ট্রাক্টর নির্ধারিত সময় এর মধ্যে কাজটি করে ক্লায়েন্ট কে দিয়ে দেয় এবং কাজটি ক্লায়েন্ট এর প্রয়োজন সম্মত এবং পছন্দ হলে ক্লায়েন্ট কন্ট্রাক্টর কে তার পারিশ্রমিক দিয়ে দেয়। এখানে দুই ভাবে কাজ করা যায়।
১. ফিক্সড রেটঃ এখানে ক্লায়েন্ট তার কাজের জন্য একটি পারিশ্রমিক নির্ধারিত করে দেয়। কন্ট্রাক্টর সেই পারিশ্রমিক এ বা তার চেয়ে কিছু কম এ কাজ টি করে দেয়।
২. আউয়ারলি রেটঃ ক্লায়েন্ট ঘন্টা প্রতি পারিশ্রমিক দেয়। তার কাজটি করতে কন্ট্রাক্টর এর যে সময় লাগবে সে সময়ের পারিশ্রমিক তাকে দেয়া হবে। অনেক সময় প্রতি সপ্তাহে সর্বচ্চো কত ঘন্টা কাজ করা যাবে সেটি উল্লেখ থাকে। এবং সর্বচ্চো কতদিন বা ঘন্টায় কাজ টি সম্পন্ন করতে হবে তা উল্লেখ থাকে।
আউটসোরসিং এর কাজ করাই ফ্রিল্যান্সিং। আর যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে একটি মুক্ত পেশা। এই পেশায় আপনার ধরা বাধা কোন নিয়ম বা সময় নেই। আপনি যখন ইচ্ছা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে পারবেন। নির্দিষ্ট কোন অফিস এ গিয়ে কাজ করতে হবে না। আপনি আপনার বাসায়, পার্কে, গাড়িতে বা যেখানে ইচ্ছা বসে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এক কথায় যারা আমার মত চাকরী করতে সম্পূর্ণ নারাজ, তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং ই হতে পারে অত্যন্ত সঠিক পেশা।
জুমলা এবং ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে সিএমএস (CMS) বা Content Management System. এগুলো দিয়ে কোন কোডিং জ্ঞান ছাড়াই আপনি ওয়েবসাইট তৈরি এবং ব্যবহার করতে পারবেন। আর পিএইচপি হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপিং এর ভাষা। ওয়ার্ডপ্রেস পিএইচপি ভাষা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে।
একদিক দিয়ে একটা সফটওয়্যার, আবার না। এটি মুলত একটি এপ্লিকেশন বলতে পারেন। আসলে ওয়ার্ডপ্রেস একটি সিএসএম (কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম)। . এটি দিয়ে কোন কোডিং ছাড়াই আপনি একটি ওয়েবসাইট করতে পারবেন। এটি একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান বলে ওয়েব সার্ভার এ এটি ইন্সটল করা লাগে।
মোটেও না। ওয়ার্ডপ্রেস টাই আসলে ওয়েব ডেভেলপিং এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। আপনি ওয়েব ডেভেলপিং ভালো না জানলে ওয়ার্ডপ্রেস এ গুরু হতে পারবেন না। ওয়েব ডেভেলপিং শিখতে আপনাকে প্রথমে মোটামোটি ওয়েব ডিজাইন শিখতে হবে। এরপর পিএইচপি, মাই এসকিউএল, ডাটাবেজ ইত্যাদি শিখতে হবে।
না, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থীম ডিজাইন করতে পারবেন না। তবে শিখতে পারবেন। এবং শেখার পর অবশ্যই ওয়ার্ডপ্রেস থীম বানাতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ভাল করে ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়ার্ডপ্রেস থীম ডেভেলপমেন্ট শিখতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কেও ভাল ধারণা থাকতে হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস থীম ডেভেলপের জন্য আপনাকে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং বেসিক পিএইচপি জানতে হবে। এগুলো জানলে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থীম ডেভেলপ শিখে থীম বানাতে পারবেন।
প্রায় এক বলতে পারেন। থীম ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন একটু থীম তৈরি করা। আর থীম কাস্টমাইজেশন হচ্ছে একটা থীম কে নিজের মত করে এডিট করা। অবশ্য ধীম কাস্টমাইজেশন ও থীম ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যেই পড়ে।
Themeforest একটি ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর থীম বিক্রি করা হয়। আপনি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট বা ওয়েব সাইট এর জন্য দারুণ সব থীম কনে নিতে পারেন থীমফরেস্ট থেকে। এবং চাইলে সেখানে আপনার বানানো থীম বিক্রি ও করতে পারেন।
আশা করি প্রশ্নের উত্তর গুলো আপনাদের ভাল লেগেছে। কোন কিছু না বুঝে থাকলে অথবা আরো প্রশ্ন থাকলে বিনা দ্বিধায় মন্তব্বের মাধ্যমে জানান।
আমি আছি ফেসবুক এঃ Rakibul Hasan
আমি কম্পিউটার লাভার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 101 টি টিউন ও 1258 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Also known as "Raiku Saiko". React.js & Javascript Developer. Former Wordpress Developer, Front-end Designer. Technology Addicted.
হুম…শেষ করলাম ৫ টি পর্ব । অনেক ভাল লিখেছ । আহা…এই ভাবে যদি কেও আমাকে ৩ বছর আগে বুজিয়ে দিত তাহলে কতই না ভাল হতো । আজকের ছেলেদের ভাগ্য সত্যি অনেক ভাল যে তারা শিখতে যাওয়ার আগেই অনেক কিছু জেনে যাচ্ছে, অ্যান্ড তাদের সেখাটা অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে । ধন্নবাদ তোমাকে