ভিডিও এডিটিং কথাটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। আপনি কী জানেন বর্তমানে ভিডিও এডিটিং একটি জনপ্রিয় পেশা? অনেকেই ভিডিও এডিটিং স্কিল ডেভলপ করে নিজের ক্যারিয়ারের একটি শক্ত ভীত তৈরি করে ফেলছে। আবার অনেকে হয়তো জানেনই না ভিডিও এডিটিং পেশার এর একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। আপনি চাইলে খুব সহজেই ফ্রি তে কাজ শিখে ভিডিও এডিটিং এর ওপরে দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন এবং বেশ ভালো একটা এমাউন্ট আয় করতে পারেন।
তবে একদম বিগিনারদের ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে হাজারটা প্রশ্ন রয়েছে। কীভাবে ভিডিও এডিটিং শিখব? কোথায় কাজ পাবো? ভিডিও এডিটিং করে কত টাকা আয় করা যাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন শুধুমাত্র এই একটি টিউন পড়ার মাধ্যমে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ভিডিও এডিটিং পেশার সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত।
হ্যাঁ, ভিডিও এডিটিং বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি পেশা। আপনি ভিডিও এডিটিং এর ওপরে দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি নিতে পারবেন এবং খুব ভালো একটা সম্মানি এখান থেকে আশা করতে পারেন। তাছাড়া এই সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন এমনকি নিজের ব্যবসা দাড় করিয়ে ফেলতে পারবেন। এই সেক্টরে কাজ করে আপনি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকার ওপরে আয় করতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে ভিডিও এডিটিং এর ওপরে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। প্রফেশনাল ভাবে কাজ শিখতে হবে এবং এই সেক্টরে সময় দিতে হবে। আর এই কাজ শেখার জন্য আপনার পকেট থেকে এক টাকাও খরচ করতে হবে না। শুধু চাই ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য। খুব বেশি না, একটানা ৩ মাস ভালোভাবে সময় দিলে আপনি একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হয়ে উঠতে পারবেন।
আর এক্ষেত্রে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই সেক্টর কাজের চাহিদাও যেমন প্রচুর আবার আয়-ও তুলনামূলক ভালো। তাহলে ভিডিও এডিটিং-কে একটি পেশা না বলে উপায় কী?
ভিডিও এডিটিং করে আয়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে তো জানলেন। কিন্তু আপনি তো ভিডিও এডিটিং করতেই জানেন না! তাহলে উপায়?
ভয়ের কোনো কারণ নেই। ভিডিও এডিটিং আসলে আহামরি কিছু না। আর এখন তো একদম ফ্রি তেই হাজার হাজার ভিডিও এডিটিং টিউটোরিয়াল ও টিপস পেয়ে যাবেন ইউটিউবে। একদম বিগিনার হয়েও কীভাবে আপনি ভিডিও এডিটিং শিখবেন বা কাজ শুরু করবেন তার উপায় নিয়ে অনেক ভিডিও পাবেন ইউটিউবে। তাছাড়া ভিডিও এডিটিং টিউটোরিয়াল তো আছেই।
আপনার কাজ হবে প্রাথমিক ভাবে একদম সহজ এডিটিং গুলো শেখা। হ্যাঁ, ডালভাত মানের এডিটিং দিয়ে হয়তো আপনি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে কাজ পাবেন না কিংবা কোনো কোম্পানির চাকরি পাবেন না। কিন্তু নিজের সোস্যাল মিডিয়া সাইটে ভিডিও আপলোড করতে তো পারবেন। এভাবে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজগুলে ভালোভাবে শিখে পরবর্তী ধাপে যাবেন।
এই পর্যায়ে আপনি প্রফেশনাল ভাবে কীভাবে ভিডিও এডিটিং করতে হয় তা শেখার জন্য বিভিন্ন টিউটোরিয়াল খুঁজবেন। যেহেতু আপনি বেসিক লেভেল পাড় করে এসেছেন তাই এ পর্যায়ে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।
তবে একদম এক্সপার্ট বা সেরা হতে চাইলে আপনি বিভিন্ন পেইড কোর্স করতে পারেন। ভিডিও এডিটিং এর ওপরে অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট ফি দিয়ে এই কোর্সগুলো করলে আপনি একদম টপ লেভেলের এডিটর হয়ে উঠতে পারবেন। তাছাড়া যাদের সাথে কোর্স করবেন তারাই আপনাকে বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে কীভাবে কাজ করবেন তার উপায় দেখিয়ে দেবে। অনেক সময় চাকরির ব্যবস্থাও করে দেবে।
ঘরে বসে আয় করার জন্য ভিডিও এডিটিং হতে পারে একটি আদর্শ পেশা। আমি পারি না, আমি বুঝি এই সব বলে দিন পাড় করার যুগ শেষ। এখন খুব সহজেই আপনি এই স্কিল টি শিখে আয় করা শুরু করতে পারেন। কাজ শেখা থেকে শুরু করে কাজ খুঁজে পাওয়া এই সব কিছুই করতে পারবেন চার দেয়ালের ভেতরে থেকেই।
কাজ তো শিখলেন। বেশ ভালোই এক্সপার্ট এখন আপনি ভিডিও এডিটিং এর ওপরে। এখন প্রশ্ন হলো এই সেক্টরে কাজ পাবেন কীভাবে? কে আপনাকে কাজ দেবে? তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কীভাবে কাজ খুঁজে পাবেন বা কাজ শুরু করবেন তার সম্ভাব্য কয়েকটি উপায় তুলে ধরা হলো।
দেশি বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের অনলাইন সেক্টরকে শক্তিশালী করার জন্য প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর সহ বিভিন্ন সেক্টরে এক্সপার্ট লোকদের হায়ার করে থাকে। এসকল কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে আপনি ভলো পরিমাণের টাকা আয় করতে পারবেন। তাই কাজ শিখেই ভিডিও এডিটিং টিউনের জন্য চাকরি খুঁজে আবেদন করা শুরু করতে পারেন। এক্সপার্ট হলে খুব সহজেই চাকরির ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
চাইলে আপনি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসের দিকেও যেতে পারেন। ফ্রিলান্সার, আপ ওয়ার্ক সহ বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে ভিডিও এডিটর দের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। এখান থেকে ক্লায়েন্ট ধরতে পারলে আয় নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।
চাইলে প্রফেশনাল ভাবে সোস্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড করেও আয় করতে পারবেন। যেহেতু আপনি ভিডিও এডিটিং এর সকল কাজ শিখেই এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করবেন, তাই সোস্যাল মিডিয়ায় আপনার ভিডিও অনেক বেশি গ্রহনযোগ্যতা পাবে।
আপনার সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে যখন একটি জনপ্রিয়তা অর্জন করবেন তখন চাইলে এখান থেকে আপনি আরও একটি বিজনেস প্লান করতে পারেন। সেটা হলো ভিডিও এডিটিং এজেন্সি। যেহেতু আপনি একজন ভিডিও এডিটর হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তাই আপনার এজেন্সিতে অনেকেই তাদের এডিটিং এর কাজ করাতে আসবে। নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে আপনি তাদের ভিডিও এডিট করতে পারবেন।
আর একবার মার্কেট পেয়ে গেলে আপনি এডিটিং এর কাজ না করে অন্যদের দিয়েও কাজ করাতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি শুধু অর্ডার সংগ্রহ করবেন ও বসে বসে আয় করতে পারবেন। আপনি নিজেকে একটি ব্রাড হিসেবে ব্যবহার করবেন মাত্র।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে আয়ের সম্ভাবনা কতোটা বেশি।
ভিডিও এডিটিং কে এক ধরনের মুক্ত পেশা বলা যায়। এখানে আপনার আয় কেমন হবে তা পুরোটাই আপনার দক্ষতা, কাজ করার সময় ও কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে। আপনি যদি নিজে এজেন্সি খুলে নেন তাহলে যেমন আয় হবে তার সাথে আপনার চাকরির বেতন অবশ্যই মিলবে না। তেমনই ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট থেকে যা আয় হবে তার সাথে সোস্যাল মিডিয়ার আয় মিলবে না। অর্থাৎ একেক সেক্টরের আয় একেক রকম হবে।
তবে কোনো কোম্পানিতে একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরের মাসিক বেতন মোটামুটি ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮০ হাযারা টাকা বা তার বেশিও হতে পারে। বেতন কেমন হবে তা নির্ভর করবে আপনার দক্ষতা কেমন, কোন কোম্পানিতে চাকরি করছেন, কতোটা সময় দিচ্ছেন তার ওপরে৷
ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটের আয় তো আরও বেশি হতে পারে৷ তবে এটা নির্ভর করবে ক্লায়েন্ট পাওয়ার ওপরে৷ আপনি যদি ভালো ক্লায়েন্ট ধরতে পারেন তাহলে মাসে লাখ টাকার ওপরে আয় করতে পারবেন। আবার ভাগ্য খারাপ হলে আয় ১০ হাজারের নিচেও নেমে যেতে পারে।
সোস্যাল মিডিয়া থেকে কিংবা নিজের ব্যবসা থেকে কেমন আয় হবে তা আপনার টেকনিক্যাল দক্ষতা ও জ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল।
তবে এটা গ্যারান্টি সহকারে বলা যায় যে ভিডিও এডিটিং যদি আপনি ভালোভাবে শিখতে পারেন এখান থেকে আপনি একটা পজিটিভ এমাউন্টের টাকা আয় করতে পারবেন। তাই বেকারত্বের হতাশা থেকে বেড়িয়ে এসে এই স্কিল টা ডেভলপ করতে শুরু করুন।
আশাকরি আজকের টিউনের মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার অবসান ঘটলো। বসে না থেকে এখন থেকেই ভিডিও এডিটিং শেখা শুরু করুন। আগামী তিন মাস এই সেক্টরে লেগে থাকলে জীবনের মোড় ঘুরে যাবে আপনার। গ্যারান্টি দিয়ে বলছি।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।