বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। বন্ধুরা আজ আমরা জানবো ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে। কি কি জানতে হবে ভিডিও এডিটিং শিখতে হলে, ভিডিও এডিটিং কেন শিখবেন এবং ভিডিও এডিটিং করে মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন? ভিডিও এডিটিং এর এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের এই টিউনে।
বন্ধুরা আপনাদের মনে এ প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, আপনি কিভাবে একজন ভিডিও এডিটর হবেন? এর আয় কেমন এবং ভিডিও এডিটিং শিখে আপনি কি করবেন? তবে চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই। এজন্য সম্পূর্ণ টিউনটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
ভিডিও এডিটিং বর্তমানের একটি চাহিদা সম্পন্ন পেশা। ভিডিও এডিটিং এমন একটি পেশা যার মাধ্যমে আপনি আপনার একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। ভিডিও এডিটিং পেশায় যেমন রয়েছে খ্যাতি, সুনাম ও পরিচিতি তার পাশাপাশি রয়েছে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি। বিশ্বব্যাপী তো বটেই, বাংলাদেশেও রয়েছে ভিডিও এডিটিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার বিশাল কর্মক্ষেত্র। যার ফলে ভিডিও এডিটিং জানা থাকলে আপনার সামনে রয়েছে বিশাল কর্মক্ষেত্র।
একজন ভিডিও এডিটরের কাজ হলো, ভিডিওগ্রাফার দের ধারণ করা ভিডিওকে এডিট করে, দৃশ্যের পর দৃশ্য সাজিয়ে দর্শকদের দেখার উপযোগী করে তোলা। সিনেমা বা টিভিতে আশ্চর্য সব কাজ দেখে যদি আপনার জানতে ইচ্ছা হয় এটি কিভাবে করেছে, অথবা সেসব সিনেমা দেখে যদি আপনার সিনেমা বানাতে ইচ্ছা করে তাহলে এই কাজটি আপনার জন্যই। আপনি যদি ভিডিও এডিটিং শিখতে পারেন তবে আপনিও পারবেন এরকম অসাধারণ ভিডিও এডিট করতে।
প্রথমেই বলেছি ভিডিও এডিটিং একটি সৃজনশীল কাজ। যে যত বেশি প্রাকটিস করবে, সে তত দ্রুত এবং অনেক সুন্দর এডিট করতে পারবে। একজন ভিডিও এডিটর যত বেশি ভিডিও এডিট নিয়ে কাজ করবে এবং অন্যের ভিডিও এডিটিং গুলো দেখবে সে তত ভালো এবং নিখুঁত কাজ দেখাতে পারবে। এই পেশায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি। এ পেশায় আপনি আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নিখুঁত এবং সর্বোচ্চ মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারেন। ভিডিও এডিটিং ক্যারিয়ারে প্রতিনিয়ত নিজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়তেই থাকে।
আপনি এইচএসসি পাস করার পর প্রশিক্ষণ নিয়ে ভিডিও এডিটিং শিখতে পারেন। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা কোন ব্যাপারই নয় আপনি যদি ক্রিয়েটিভ হয়ে থাকেন। আপনি আপনার নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। ন্যূনতম এইচএসসি পাশের পর প্রশিক্ষণ নিয়ে ভিডিও এডিটর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়। একজন প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটর হতে গেলে আপনাকে টেলিভিশনের সব অনুষ্ঠান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। জানতে হবে অনুষ্ঠানে কি কি ধরনের বৈচিত্র্য আনা সম্ভব হবে। একজন ভিডিও এডিটর কে চোখ রাখতে হবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায়। সেইসঙ্গে আপনাকে জানতে হবে কোন অনুষ্ঠানে কি বৈচিত্র এলো।
ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ হওয়ার জন্য আপনাকেই চেষ্টা করতে হবে। আপনি যত বেশি এডিটিং নিয়ে কাজ করবেন ততো আপনার দক্ষতা এবং ভিডিও এডিটিং এ সৃজনশীলতা বাড়তে থাকবে। ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য আপনি অনলাইনে এবং কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করতে পারেন। বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা খুব অল্প টাকায় ভিডিও এডিটিং শিখিয়ে থাকে।
দেশের সব টিভি চ্যানেলই দক্ষ এডিটরদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন এডিটিং ফার্ম, যেখানে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি পেতে পারেন। তবে আপনি যদি চাকরি করতেন না চান তবে আপনি বেছে নিতে পারেন আউটসোর্সিং কে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ভিডিও এডিটিং এর অনেক কাজ পাওয়া যায়। এসব মার্কেটপ্লেসে এই পেশায় ফুলটাইম অথবা পার্টটাইম দুই ভাবেই কাজ করতে পারবেন। আপনি দেশে থেকেও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এসব কাজ করতে পারবেন।
ভিডিও এডিটিং চাহিদার সবচাইতে বড় ক্ষেত্র হলো টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। বর্তমানে দেশে অনেক সরকারি এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেল রয়েছে। প্রতিদিন টিভি চ্যানেলগুলোতে সংবাদের পাশাপাশি অসংখ্য অনুষ্ঠান, নাটক ও ম্যাগাজিন প্রচারিত হয়। এসব অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেল ছাড়াও অসংখ্য প্রযোজনা সংস্থা সব তৈরি করে থাকে। এছাড়াও টেলিভিশনে প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলো তৈরি করে থাকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপণ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। উপরের এসব সবগুলো কাজই করে থাকে এর জন্য ভিডিও এডিটর। একজন ভিডিও এডিটর এসব কনটেন্টকে দর্শকদের গ্রহণ উপযোগী করে তৈরি করে থাকে।
দক্ষ ভিডিও এডিটরেরা উচ্চ বেতনে চাকরি করে টিভি চ্যানেলগুলোতে। ফলে ভিডিও এডিটিং জানা লোকের কাছে খুব সহজেই এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ রয়েছে। ভিজুয়াল মিডিয়া সম্প্রসারণ এর সঙ্গে বাড়ছে ভিডিও এডিটর চাহিদাও। এছাড়াও এখন ইউটিউব বা অন্যান্য মিডিয়াতে তৈরি হচ্ছে কাজের সুযোগ।
একজন ভিডিও এডিটর চাইলেই তার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউব বা অন্য কোন প্ল্যাটফর্ম এর জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারে। সেটি হতে পারে তার নিজের কোনো অভিজ্ঞতা অথবা ভিডিও এডিটিং এর কোন টিউটোরিয়াল। যার ফলে একজনের ভিডিও এডিটর চাকরি বা কোন কাজ না পেলেও এসব মাধ্যম থেকে আয় করতে পারে।
ভিডিও এডিটর হিসেবে আপনারা প্রথমে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হতে পারে। এবং সেটি কয়েক বছর পর হয়ে দাঁড়াতে পারে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে আপনার আয় নির্ভর করবে সেই প্রতিষ্ঠান অথবা আপনার কর্মক্ষেত্রের ওপর। আর আপনি যদি আউটসোসিং করতে পারেন, তাহলে আপনি মাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রেও আপনার আয় নির্ভর করবে আপনার কাজের উপর।
তবে নিঃসন্দেহে বলা যায়, আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ভালো একটি অ্যামাউন্ট প্রতি মাসে আয় করতে পারেন। আপনি বাড়তি আয়ের জন্য ফ্রিল্যান্সিং ও করতে পারেন। কারণ এ পেশায় দেশের বাইরে অনেক কাজের চাহিদা রয়েছে।
তো বন্ধুরা এই ছিল ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে আজকের টিউন। আশা করছি এই টিউনটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। দেখা হবে পরবর্তী টিউনে আরো নতুন কিছু নিয়ে ইনশাআল্লাহ। ততক্ষণ পর্যন্ত টেকটিউনস এর সঙ্গেই থাকুন।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)