এখানে এই টিউনে আমি বর্ণনা করেছি ব্লগারদের খুবই সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভুল নিয়ে। একজন সফল ব্লগার হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই এই ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে হবে। অন্যথায়, আপনার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।
আপনি হয়তো অনেক পরিশ্রম করেছেন আপনার ব্লগ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের জন্য। কিন্তু আপনি মনের মতো ফলাফল পাচ্ছেন না। সম্ভবত আপনি আপনার ব্লগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিস্কার না, এবং হয়তো আপনি একই ভুল বারবার করে যাচ্ছেন। এতে করে হয়তো আপনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। আপনাকে মনে করিয়ে দিবো যে, ভুল মানুষের একটি সহজাত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু তার মানে এই না আপনি আপনার জীবনটা ভুলের উপর দিয়ে পার করে দিবেন। একজন সফল ব্লগার হতে গেলে ভুলকে জয় করা খুবই প্রয়োজনীয়। সেইজন্য, মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখুন আপনিও কি একই রকম ভুল করতেছেন যা আমি নিচে বর্ণনা করেছিঃ
এটা একটা মারাত্মক ভুল। অনেক ব্লগার আছে যাদের কোন ফোকাস নাই, ফোকাস যেটা প্রতিফলন করে সে কি জানে, কি বিষয়ে সে আলোচনা করতে পছন্দ করে, এবং তার আগ্রহ কিসের উপর। এমনকি অনেকে এটাও জানেনা, কিভাবে একটি ব্লগ তার এবং তার পাঠকদের উপকার করতে পারে। যার ফলে, অনেকগুলো ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর, তারা এটাকে পরিত্যাগ করে এই চিন্তা করে যে এটা তাদের উপযুক্ত জায়গা না। কিন্তু যদি তাদের একটু ধৈর্য হত অন্যান্য সফল ব্লগের উপর পড়াশুনা করার, এবং ঐ সমস্ত ব্লগের গঠনপ্রণালী, কৌশল এবং গ্রাফিক্স নিয়ে অধ্যয়ন করার, তাহলে তারা বুঝতে পারতো তাদের উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিত। এমন অনেক বিষয় আছে যার উপর মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে। এটা হতে পারে বিজ্ঞান, ধর্ম, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন, পণ্য কেনাবেচা, ইত্যাদি। এইগুলোর কোন বিষয়ই আয়ত্তের বাইরে না, কিন্তু এটা জানা খুবই জরুরি যে কোন বিষয়ের উপর ফোকাস করতে হবে।
বেশির ভাগ ব্লগার ব্লগিং করতে আসে বিপুল সংখ্যক পাঠক এবং প্রচুর প্রশংসামূলক মন্তব্যের প্রত্যাশা নিয়ে। কিন্তু তাদের ধৈর্যের অনেক অভাব, তারা তাৎক্ষণিক ফলাফল চায়। যার ফলে, খুব দ্রুত তারা হতাশ হয়ে পরে। লক্ষ লক্ষ ব্লগ আছে যেগুলো এই একই পাঠকের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেছে। আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং এর উপর আস্থা রাখতে হবে। আপনাকে ভাল লিখতে হবে, লেখা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য নির্ভর হতে হবে এবং নকল করা যাবে না, শিরনাম আকর্ষণীয় হতে হবে, এবং অবিরত চেষ্টা করতে হবে ব্লগকে উন্নীত করার জন্য। তাহলে আপনি প্রত্যাশিত পাঠক আশা করতে পারেন।
সাধারণত, পাঠকেরা কোন একটি ব্লগ পরিদর্শন করে তাদের নিজেদের প্রয়োজনে। তারা কোন একটি বিষয়ে জানতে চায় এবং সেই বিষয়ে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে। কোন ব্লগের লেখা পছন্দ হলে তারা সেটা পড়তে শুরু করে। লেখাটি পড়ার পরে তারা কি করে? কেউ হয়তো মন্তব্য করে; কেউ লেখাটির সাথে একমত হয়, কেউ তার নিজস্ব ধারনা উপস্থাপন করে, এবং কেউ খুশি হয়ে ধন্যবাদ দিয়ে থাকে। এখন এটা আপনার সৌজন্যতা তাদেরকে উত্তর দেওয়া। তাদেরকে ধন্যবাদ দিন লেখাটি পড়ার জন্য এবং সময় নিয়ে মন্তব্য করার জন্য। যদি তারা সমালোচনা করে (যদি তীব্র সমালোচনাও হয়), বিনীতভাবে উত্তর দিন, যেটা ঐ মন্তব্যের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু, যদি আপনি তাদের মূল্যায়ন না দেন, তাহলে সম্ভবত তারও আপনার ব্লগকে অবমূল্যায়ন করবে।
এমন কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নাই যে আপনি কত ঘন ঘন লেখা প্রকাশ করবেন। আপনি একদিনে অনেকগুলো লেখা প্রকাশ করতে পারেন, কিন্তু এভাবে হয়তো আপনার লেখার মান কমে যেতে পারে। এটা ভাল হবে যদি আপনি দিনে অনেকগুলো সাধারণ মানের লেখার পরিবর্তে একটি মানসম্পন্ন লেখা প্রকাশ করেন। আমার পরামর্শ হচ্ছে, সপ্তাহে চার থেকে পাঁচটি মানসম্পন্ন লেখা প্রকাশ করুন। এক কথায়, লেখার গুণগত মান বজায় রাখুন, অন্যথায় আপনি পাঠক হারাতে পারেন। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিনা কারনে লেখাটি বড় করবেন না। চেষ্টা করুন ৫০০ থেকে ৭৫০ শব্দের মধ্যে লেখাটি রাখতে, নতুবা পাঠকেরা বিরক্ত হয়ে যেতে পারে।
শিরনাম হচ্ছে যেকোনো লেখার সংক্ষিপ্তসার। এর দ্বারা পাঠকেরা খুব সহজেই লেখার সারকথা বুঝতে পারে। যার ফলে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণীয় শিরনাম দেওয়া, অন্যথায় পাঠকেরা বিস্তারিত পড়ার ব্যাপারে আগ্রহী নাও হতে পারে। যখন তারা একটি আকর্ষণীয় শিরনাম দেখে পড়তে আরম্ভ করবে, প্রথম কয়েক লাইন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে তাদেরকে বাদবাকি লেখা পড়ার ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে। এইজন্য উদ্বোধন সুন্দর হওয়া আবশ্যক। যদি আকর্ষণীয় শিরনাম এবং উদ্বোধন একসাথে কাজ করে, তাহলে আপনি পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন এবং তাদেরকে লেখাটির প্রতি উৎসাহিত করতে পারবেন।
এমন অনেক ব্লগ পোস্ট আছে যেগুলো ব্যাখ্যা করা কঠিন। এর একটা কারন হতে পারে, লেখকদের বিষয়বস্তুর বোধগম্যতার প্রতি উদাসীনতা, এবং আমরা সবাই জানি যে, পত্রিকাতে পড়ার থেকে কম্পিউটার স্ক্রিনে পড়া অনেক কঠিন। আপনারা হয়তো ভাবতে পারেন যে পাঠকেরা পড়ার বিষয়ে অমনোযোগী, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তারা অনেক বেশি সচেতন এই বিষয়ে। তারা শুধু সেটাই খোঁজে যেটাতে তাদের আগ্রহ। অনেক ধরনের পদ্ধতি আছে বিষয়বস্তুকে বোধগম্য করারঃ
লেখাটি পড়ার পর পাঠকরা কি করবে, যদি এই বিষয়ে কোন দিক উল্লেখ না থাকে, তাহলে খুব সম্ভবত আপনি আপনার লেখার কোন রিটার্ন পাবেন না। যার ফলে, প্রত্যেকটি লেখাতে পাঠকদের পরবর্তী করনীয় উল্লেখ থাকা খুব জরুরী, যেটা আপনি পাঠকদের দ্বারা সম্পন্ন করতে চান। মার্কেটিং এর ভাষায় এটাকে কল টু অ্যাকশন বলে। লেখার উপসংহারে পাঠকদের উৎসাহিত করুনঃ
এছাড়াও আপনি তাদেরকে যেকোনো কিছু বলতে পারেন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী। যদি এটা আপনি সঠিকভাবে করতে পারেন, তাহলে হয়তো আপনি আপনার পরিশ্রমের মূল্যায়ন পাবেন পাঠকদের কাছ থেকে।
আরও অনেক ধরনের ভুল থাকতে পারে। আমি চেষ্টা করেছি গুরুত্বপূর্ণ ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করার। মোটকথা, আপনাকে অনেক যত্নবান হতে হবে আপনার ব্লগ নিয়ে। যদি আপনি ভুলগুলো সংশোধন করতে পারেন, তাহলে প্রত্যাশিত ফলাফল পেতে পারেন এবং আপনার ব্লগের ট্রাফিক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
যদি টিউনটি পড়ে আপনার ভাল লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদের অবগত করবেন। এছাড়াও যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা আমাকে উৎসাহিত করবে আরও ভাল কিছু লেখার ব্যাপারে। ধন্যবাদ সময় করে লেখাটি পড়ার জন্য।
আমি মোঃ আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 27 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মোঃ আলম TiPS4BLOG এর প্রতিষ্ঠাতা লেখক এবং Realwebcare এর ম্যানেজিং পার্টনার। রিয়েলওয়েবকেয়ারে ওয়েব হোস্টিং, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশান, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন সার্ভিসের পাশাপাশি সে ব্লগিং এর বিভিন্ন টিপস এবং ট্রিকস নিয়ে তার নিজস্ব ব্লগ TiPS4BLOG এ লেখালেখি করে।
অসংখ্য ধন্যবাদ অসাধারণ ভালো একটি টিউন করার জন্য!
আরো ভালো মানের টিউন করার জন্য টেকটিউনস রিসোর্স ফলো করুনঃ
https://www.techtunes.io/category/techtunes-resource