বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশেই ফেসবুক সবথেকে জনপ্রিয় একটি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তবে বর্তমানে ফেসবুক যে শুধু বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে তা কিন্তু নয়। ফেসবুক ব্যবহার করে অনেক নারী ও পুরুষ নিজের ক্যারিয়ার দাড় করিয়ে নিচ্ছে। শুরু করছে নিজের ব্যবসা এবং এতে ভালো সাড়া মিলছে। চাইলে আপনিও খুব সহজেই শুরু করতে পারেন নিজের ফেসবুক বিজনেস।
ফেসবুক বিজনেস মূলত অনলাইন বিজনেস এর একটি শাখা। একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকলে আপনি খুব সহযেই একটি পেইজ খুলে নিতে পারবেন। আর এই ফেসবুক পেইজ টিই হবে আপনার দোকান। এই পেইজের মাধ্যমে নিজের পন্যকে বা নিজের প্রতিভাকে তুলে ধরতে পারবেন। জেনে নিন কিভাবে একটি ফেসবুক বিজনেস শুরু করবেন এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন টিপস ও আইডিয়া।
ফেসবুক বিজনেস শুরু করার জন্য আগে ভাবতে হবে আপনি কোন বিষয়ে পারদর্শী। যদি নিজের কোনো বিশেষ গুন থাকে তাহলে সেই বিষয় নিয়ে আগাতে পারেন। আর যদি মনে হয় লোকাল কোনো পণ্য নিয়ে কাজ করবেন তাহলে পণ্য সংগ্রহ করার বিষয়ে যথাযথ ধারনা রাখতে হবে। সেই সাথে মাথায় রাখতে হবে ডেলিভারির বিষয়টিও। ভালো কোনো ডেলিভারি এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। যাতে সঠিক সময়ে পণ্য ডেলিভারি করতে পারেন।
আপনি যদি রান্না ভালো পারেন তবে হোম মেড ফুড নিয়ে বিজনেস করতে পারেন। যদি টেইলারিং ভালো পারেন তাহলে ফ্যাশন ও পোশাক নিয়ে কাজ করতে পারেন। যদি ড্রয়িং ভালো পারেন তাহলে হ্যান্ড পেইন্টিং নিয়ে কাজ করতে পারেন। বেকিং আইটেম নিয়ে ফেসবুক বিজনেস করেও উদ্যোক্তারা বর্তমানে ভালো সাড়া পাচ্ছে। আর যদি মনে করেন পণ্য পাইকারি কিনে বিজনেস করবেন তাহলে অবশ্যই পুঁজি থাকতে হবে। আপনার কোন দিকটি ভালো সেটা নিশ্চই আপনি জানেন। নিজের সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করে একটি বিজনেস শুরু করুন।
যেহেতু আপনি ফেসবুক বিজনেস করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার প্রচারের একমাত্র মাধ্যম হবে ফেসবুক। জেনে নিন ফেসবুক এর কোন কোন সুবিধা গুলোর মাধ্যমে বিজনেস এর প্রচার করতে পারবেন।
ফেসবুক পেজ চালু করে সেখানে নিজের পণ্যের ছবি ও মানাসই কনটেন্ট পাবলিশ করে প্রচার করতে পারেন। পেইজের পোস্টটি বুস্ট করার মাধ্যমে টার্গেট ক্রেতার কাছে নিজের টিউন পৌঁছে দিতে পারেন। আপনার প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি ভালো হলে এবং প্রোডাক্ট ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অবশ্যই পেইজে ক্রেতা সমাগম ঘটবে।
ফেসবুকে বিভিন্ন ক্রয় বিক্রয় গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে একটিভ থাকার মাধ্যমে নিজের পরিচিতি তুলে ধরতে পারেন। ক্রেতা যখন দীর্ঘদিন ধরে জানবে আপনি কোন ধরনের পন্য নিয়ে বিজনেস করছেন তাহলে অবশ্যই আপনার প্রতি তার বিশ্বাস জন্মাবে। ফলশ্রুতিতে অনেকেই আপনার ক্রেতা হতে চাইবে। এক্ষেত্রে নিজেকে একটি কমিউনিটিতে পরিচিত করে তোলাটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর জন্য আপনার ফেসবুক প্রোফাইলও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুক প্রোফাইলে নিয়মিত আপনার বিজনেস সম্পর্কে লেখালেখি করে নিজের পরিচিতি তুলে ধরতে পারেন। স্টোরিতে নিজের পণ্যের ছবি আপলোড করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। এতে করে পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে পাকাপোক্ত ভাবে নিজের পণ্যের পরিচিতি ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
ফেসবুক বিজনেসকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে ফেসবুক নিজেই তৈরি করেছে এক সুবর্ণ সুযোগ। ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে নিজের পণ্যের বিজ্ঞাপণ দিয়ে পণ্যটি সম্পর্কে সকল তথ্য পৌঁছে দিতে পারেন সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে। ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত অনেক অর্ডার আসে উদ্যোক্তাদের।
ফেসবুক বিজনেসের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় ডেলিভারি নিয়ে। দেখা গেল খুব ভালোই অর্ডার পাচ্ছেন কিন্তু পণ্যটি যথাসময়ে ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে পারেননি বলে বিক্রি হলো না। এতে লাভের বদলে ডেলিভারি চার্জ বাবদ উল্টো লসের বোঝা বইতে হবে।
তাই বিশ্বস্ত ডেলিভারি এজেন্সির সাথে সম্পর্ক রাখুন। যাদের টাইম ম্যানেজমেন্ট ভালো এবং পণ্যের কোনো ধরনের ড্যামেজ না ঘটিয়ে দায়িত্ব সহকারে পণ্য ডেলিভারি করতে পারবে। খেয়াল রাখবেন লেনদেন এর দিক থেকেও যাতে এজেন্সির শতভাগ স্বচ্ছতা থাকে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ক্যাশ অন ডেলিভারিতে প্রোডাক্ট পাঠানোর পরে সেই টাকা ডেলিভারি এজেন্সির কাছ থেকে তুলতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়।
এই ছিল ফেসবুক বিজনেস এর প্রাথমিক ধারণা। আশাকরি আপনার অনলাইন ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়তে লেখাটি কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। যদি ফেসবুক বিজনেস করার মতো সব ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ ও সঠিক মনোবল থাকে তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিন আপনার অনলাইন বিজনেস। ক্যারিয়ার গড়ুন প্রযুক্তির মাধ্যমে।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।