কথায় আছে, কেশ নারীর অর্ধেক বেশ। সত্যিই তো তাই! মেয়েদের রূপের তেজ কয়েকশো গুন বাড়িয়ে দেয় ঝলমলে, মসৃণ, ঘন চুল। অথচ এই চুলের যত্নে কত না বাহানা। বাঙালি নারীরা এলো খোঁপা করে কোমরে আঁচল গুঁজে লেগে পরে জগৎ সংসারের সমস্ত কাজে। এরপর দিনশেষে নিজেই নিজের প্রতিবিম্বের সামনে অভিযোগ টানে, ইসস্! সব ঝরে গেলো। হ্যাঁ, ঠিক আপনার কথাই বলছি। অভিযোগে কি আর ফেরত পাবেন চুলের গোছা? যত্নে নাকি রত্ন মেলে। রত্ন না মিললেও সামান্য নিত্যদিনের অভ্যেস বদলের মাধ্যমে পেতে পারেন অতিরিক্ত চুল পড়া থেকে মুক্তি।
প্রতিদিন চুল পড়া কি স্বাভাবিক?
একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির ক্ষেত্রে দিনে ৫০- ১০০ টি চুল পড়ে থাকে। আমাদের মাথার ত্বকে ফলিকল নামক ছিদ্র বা খাঁজ থেকে চুলের বহিঃবৃদ্ধি ঘটে। ফলিকল বা কেশথলির প্যাপিলা এর সাথে রক্তনালী সংযুক্ত থাকে। এই রক্তনালী চুলের কোষ উৎপন্ন করতে সহায়তা করে। আমাদের মাথায় প্রতিদিন ফলিকল থেকে অসংখ্য নতুন চুল গজায়। তাই পুরনো চুল পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত চুল পড়া বা চুলের গোড়ায় দুর্বলতা চুলের পুষ্টিহীনতার লক্ষণ।
চুল পড়া প্রতিরোধে উপায়:
চুল নিয়ে দুশ্চিন্তা করে টেকো না হয়ে সহজলভ্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিতে পারেন অনায়াসেই।
• মা ঠাকুমাদের মুখে প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়, গাছের গোড়ায় জল আর চুলের গোড়ায় তেল না দিলে অকালে ঝরে দুটোই। আমাদের চুল মূলত একটি তন্তুময় প্রোটিন ফাইবার। প্রোটিনের অভাব দেখা দিলে চুলের পুষ্টিগুণ কমতে থাকে, চিকন আর ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। নারকেলে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন যা চুলের জন্য অত্যাবশ্যক। নিয়মিত বা সপ্তাহে ৩-৪ দিন নারকেল তেল ব্যবহারের অভ্যাস করুন। এতে নতুন চুল গজাবে দ্রুত, এবং পুরনো চুলে পুষ্টি পাবে। তাই চুলের যত্নে নারকেল তেলের বিকল্প নেই। আমরা অনেকেই শুধু চুলের গোড়ায় তেল ব্যবহার করি। ফলে আমাদের আগা রুক্ষ ও শুষ্ক রয়ে যায়। চুলের আগায়ও সম পরিমাণে তেল ব্যবহার করা আবশ্যক।
• শীতের মৌসুমে চুলের সবচেয়ে বেশি যেই সমস্যা দেখা দেয় তা হলো খুশকিজনিত সমস্যা। মাথার ত্বক শুষ্ক থাকে শীতকালীন সময়ে। ফলে ত্বকে খুশকির আবির্ভাব ঘটে। পেঁয়াজে সালফেনিক এসিড থাকে। যা খুশকির জন্য অসহিষ্ণু অবস্থার সৃষ্টি করে। পেঁয়াজের খোসা ৭-১০ মিনিট জ্বাল দিয়ে ছেকে পানি আলাদা করবেন। এরপর চুলের গোড়ায় বা স্কল্পে স্প্রে করবেন গোসলের ১ ঘণ্টা আগে। বোতলে রেখে এটি রেফ্রিজারটরে ১মাস পর্যন্ত সংরক্ষন করতে পারবেন।
• মসৃণ চুল কে না চায়? কিন্তু চুল কি শোনে মনের কথা? যেদিকে হাওয়া মিলায় সেদিকে উড়ে যায় উস্কোখুস্কো বাঁধনছাড়া ভাবে। প্রকৃতি যেমন এলোকেশী বাতাস দিয়েছে তেমনি সৃষ্টি করেছে এর সমাধান। চুলের যত্নের কথা উঠলেই যে শস্যের গুণাগুণ মনে পড়ে সবার আগে, তা হচ্ছে তিসিদানা। তিসি দানা একধরনের পিচ্ছিল রস নিঃসৃত করে। প্রতি ১০০ গ্রাম তিসি দানায় ১৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়াও ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, প্যানটোথেনিক এসিড, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস সহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। অল্প পানিতে সামান্য কিছু তিসি দানা জ্বাল দিয়ে ছাকনি দিয়ে ছেকে বীজ আলাদা করতে হবে। এরপর রস মাথায় দিয়ে দুই এক ঘন্টা রেখে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুল মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।
এছাড়াও পেপটাইড সিরাম ব্যবহারে চুল দ্রুত গজায়। নিয়মিত শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার আপনার চুলকে ভেঙে পড়া থেকে রোধ করে।
আমি DOLPHIN। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।