গত পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম ছাত্র জীবনকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর সেরা কয়েকটি টিপস নিয়ে। আজকের আমাদের এই টিউনে থাকবে এর বাকি অংশ।
আপনি যদি পূর্বের টিউনটি না পড়ে থাকেন। তাহলে সেটি আগে পড়ে নিন। পূর্বের টিউনটি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন- https://www.techtunes.io/tips-and-tricks/tune-id/968744
অনেকে শিক্ষার্থীর মধ্যই একটি স্বভাব দেখা যায় যে, তারা যখন পড়ে তখন একনাগাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়তেই থাকে। তা নিতান্তই অমূলক। কেননা এর ফলে পড়াতও মাথায় ঢুকেই না আবার শরীরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কেননা মানুষের মস্তিষ্ক কোনও কাজে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা একনাগাড়ে মনোযোগ দিতে পারে। আর কাজটা যদি হয় পড়ালেখার মতো তাহলে তা নেমে আসে ৪৫-৬০ মিনিটে। তাই পড়ার ক্ষত্রে ৪৫-৬০ মিনিট পরপর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। মনকে সতেজ করতে শুনতে পারেন ইসলামিক সংগীত। তবে অনলাইনে একদমই ঢুকা যাবে না।
কোনও পাঠ না বুঝে পড়া আর চোখে কাপড় বেঁধে কোনও গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করা দুটোই ক্ষতিকর ও অকার্যকর। অনেক শিক্ষার্থীই পাঠ না বুঝেই তোতাপাখির মতো মুখস্থ করে। এতে করে পরীক্ষায় সে ভাল নম্বর পায় ঠিকই কিন্তু বাস্তবে সে কিছুই শিখতে পারেনা। তাই পড়ার সময় আপনার সকল পাঠ ভালোমতো বুঝে পড়ুন। কোনও অধ্যায় নতুন করে পড়তে যাওয়ার আগে পুরো অধ্যায়ের সকল টপিকগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে যান। এতে বুঝতে আপনার সহজ হবে। এভাবে পড়লে মুখস্থ না করে বুঝে কয়েকবার পড়লেই অনেক জটিল বিষয়কেও আপনি সহজেই আত্মস্থ করতে পারবেন।
কোনও পাঠকে মুখস্থ না করে বুঝে আয়ত্ত করা রীতিমত একটা চ্যালেঞ্জ। তারপর আরেকটা চ্যালেঞ্জ হলও সেই পাঠকে পরীক্ষা পর্যন্ত বা তারপরেও মাথায় ধরে রাখা। এর জন্য আপনাকে আপনার শেখা পাঠকে নিয়মিত লিখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কেননা কোনও পড়ার চেয়ে লিখা মস্তিষ্ককে তা মনে রাখতে বেশি সাহায্য করে। তাছাড়া নিয়মিত লিখার অভ্যাস করলে আপনার লিখাও ধীরে ধীরে পরিপক্ক হয়ে উঠবে। যা পরিক্ষার খতায় নম্বর তোলার আরেকটি প্রয়োজনীয় গুণ। এছাড়া পড়া মনে রাখতে ও ধরে রাখতে জানা বিষয়গুলো নিয়মিত রি-ভাইস (পুনরালোচনা) করুন।
শিক্ষার মূল উৎস কখনোই কেবল পাঠ্যবই নয়। তা হতেও পারেনা। কেননা এটি একটি স্বল্প পরিসরের কিঞ্চিত প্রাতিষ্ঠানিক শিখা মাত্র। মূল শিক্ষা আমাদের অর্জন করতে আমাদের নিজেরদেরকেই। তা করার প্রথম ধাপই হচ্ছে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। বই পড়লে আপনার জ্ঞান যেমন বৃদ্ধি পাবে সমান-তালে বৃদ্ধি পাবে বাস্তবজ্ঞান। বই পড়ার অভ্যাস আপনাকে মানুষ থেকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করবে। নিজের জীবনের মূল্যবান সময়গুলোকে অযথা আড্ডাবাজিতে বা হেনোতেনো ভাবে নষ্ট না করে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেন।
মানুষ তথা আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। কেননা আমাদের আছে বিবেক, জ্ঞান, সৃজনী শক্তি ইত্যাদি আরও মৌলিক বৈশিষ্ট্য। যা অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়না। আমরাই কেবল একটি সুসংবদ্ধ জীবন পরিচালনা করতে পারি যা আর কোনও প্রাণী করে না বা করতে পারেনা। ভেবে দেখুন আপনি রাতে শুয়ে পড়েন আর সকালে ঘুম থেকে উঠে যান। অর্থাৎ ঘুমানোর একটি নির্দিষ্ট টাইম টেবিল অনুসরণ করেন। কিন্তু একটি বিড়ালের কথাই চিন্তা করুন , বিড়ালের যখন যেখানে ঘুম পায় সে তখন সেখানেই শুয়ে পড়ে। বাকি প্রাণীদের জীবনটা হয় এলোমেলো-অগোছালো। কিন্তু একমাত্র মানুষ নামক প্রাণীদের জীবনই সাজানো গোছানো। যার জীবন যত সুন্দর করে গোছানো আছে সে তত বেশি সফল। তাই জীবনের স্বর্ণ-শিখরে উঠতে আপনি আপনার প্রতিটি কাজে ডিসিপ্লিন (নিয়মানুবর্তিতা) বজায় রেখে নিজ নীতিতে অটল থাকুন। আপনি সফল হবে ইংশাআল্লাহ…
আজকে আর না। আশাকরি টিউডার গণ কিছু হলেও জানতে পেরেছেন আজকের টিউন থেকে। ভালো লাগলে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। দেখা হচ্ছে পরের টিউনে, ইংশাআল্লাহ.
আমি আহসান হাবীব তুর্য। শিক্ষার্থী, সরকারি আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 12 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোঃ আহসান হাবীব, ছেলেবেলা থেকেই জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি নিয়ে বেশ উৎসুক ছিলাম। এখনোও তাই আছি। তবে এখন শুধু নিজে জ্ঞানার্জনই করি না সেই অর্জিত জ্ঞানকে বিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি সবার কাছে।তাই করে যেতে চাই আজীবন।আমি- "জানতে ভালোবাসি, জানাতে ভালোবাসি"