ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কাস্টমার সার্ভিসের উপরে অনেক অংশেই নির্ভর করে। আর কিছু কিছু ব্যবসাতে কাস্টমার সার্ভিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষতঃ অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসাগুলোতে লোকজনের বিশ্বস্থতা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই অনলাইন ব্যবসাতে কাস্টমার কেয়ারের পদ্ধতিতে আরও গতিশীলতা আনার বেপারে কিছু বিষয় তুলে ধরলাম
আপনি হয়তো জানেন যে কাস্টমার কি বলবে... কিন্তু কাস্টমার মনে করে যে এটা আপনি জানেন না। আর তাই সে আপনাকে সাজেশন দিতে চায়। আর সে সাজেশন দিয়ে তৃপ্তি পায়। তাই তাকে কথা বলার সুযোগ দিন। অনেক সময় বেপারটা এমনও হতে পারে যে একই কথা বিভিন্ন কাস্টমার বলবে এবং তাদের জন্য একই সামাধান উত্তর আপনাকে দিতে হবে-তবে এটা অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
কাস্টমার সার্ভিস তথ্য বা সাপোর্ট এর জন্য খুব সহজে আপনাকে যাতে খুজে পায় তার ব্যবস্থা করুন। বিশ্বে এখন অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানও তাদের কাস্টমার কেয়ারকে সামাজিক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করে নিয়েছে। এখানে একই সাথে লাভ ও ক্ষতি দুটি সম্ভাবনাই রয়েছে।
ক. আপনার ব্র্যান্ডের ফেসবুক পাতায় যদি কোন কাস্টমার আপনার পণ্যের সমস্যা নিয়ে কোন একটি পোষ্ট করে এবং একই সমস্যা যদি অন্যান্যদেরও হয় তাহলে আপনার পণ্য সম্পর্কে বাজে ধারণা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে। আর এটি আপনার পন্যকে খারাপ পণ্য হিসেবে খুব দ্রুত সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দেবে।
খ. আবার এমনও হতে পারে যে, সেই সমস্যার একটি সুবিধাজনক সমাধান আছে এবং সেই সমাধানটি করে দেওয়ার পরে কাস্টমার জনাবে যে, তার সমস্যাটি সমাধান হয়েছে। আর এটি সবাই জানবে। এবং পণ্যটি সম্পর্কে অনেকের ভুল ধারণাও ঠিক হবে। আবার ভাল পণ্য সম্পর্কে ভাল মতামতও একই রকমের ভাল কাজ করবে।
তবে আপনি ভাল সার্ভিস প্রদান করলে এবং কাস্টমার সার্ভিসের দিকে দ্রুত মনোযোগ দিতেছেন কিনা সেটা একেবারে পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
খুবই দ্রুত যোগাযোগের সহজ পদ্ধতি হলো ফোন যোগাযোগ ও চ্যাটিং। এই দুটি অপশন রাখা জরুরী। তাছাড়া টিকেট সাবমিট ও দ্রুত তার উত্তর দেওয়ার পদ্ধতি আরেক দিক থেকে প্রয়োজনীয়। ফোন ও চ্যাটিং এ মূল সমস্যা হলো নিরাপত্তা। যদি কোন একটি ক্লাইন্ট একটি সমস্যার কথা ফোনে জানায় তখন সে সেই পণ্যটি নিয়েছে কিনা সেটি বুঝতে গেলে অনেক ঝামেলা । কিন্তু প্রতিটি কাস্টমারের একটি ইউজার আইডি থাকলে (সাধারনতঃ অনলাইনে বেচা-কেনা সব পণ্যের ক্ষেত্রেই কাস্টামর আইডি থাকে) সেখানে সাপোর্ট সিস্টেমে তারা সমস্যা সাবমিট করলে তার সমাধান দেওয়া যেতে পারে।
হার্ডওয়্যার ব্যবসার ক্ষেত্রে পণ্যটি উপযুক্ত সার্ভিস সেন্টারে আনার দরকার পরে এবং সেখানে কত দ্রুত সার্ভিস দেওয়া যায় সেটি দেখতে হবে।
দ্রুত যোগাযোগের আরেকটি বড় সুবিধা হলো আপনার পন্য বিক্রিতে এটি মার্কেটিং এর মতো কাজ করবে। অনেক সময় কাস্টমার একটি পণ্য কেনার পরে আরেকটি পণ্য সম্পর্কে জানতে চাইবে। আর তখন আপনাকে ফোন করবে এবং অন্য পন্যটির বৈশিষ্ট্য সম্পকে জানতে চাইবে। আর সেই সুবাদে হয়তো আপনি আরও কিছু পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
নিউজ লেটারের মাধ্যমে নিয়মিত ভাবে কাস্টামারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন - তবে এটা যেন বিরক্তের কারন না হয়। কাস্টমারকে অবশ্যই নিউজলেটার বন্ধ রাখার পদ্ধতি জানিয়ে দেবেন। নতুন কোন প্রোমোশন বা অফারের জন্য সবাইকে ই-মেইল পাঠাতে পারেন। নতুন কোন সার্ভিস বা পণ্য চালু হলে সেটাও জানিয়ে দিতে পারেন।
এতে করে আপনার কথা কাস্টমারের মনে থাকবে এবং সে সহজে আপনার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে।
এটা ঠিক যে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই নির্দিষ্ট কোন পণ্য বা সার্ভিস রয়েছে। তবে আমি নিজে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দেখেছি যারা একটু বেশি দামে ভাল মানের ও উন্নত সেবা প্রদান করে- এবং তাদের কাছ থেকেই বেশি পরিমানে পণ্য বিক্রি হয়। মানুষ আসলে কোন একটি পণ্য বা সেবা নিয়ে নিশ্চিত থাকতে চায় এবং নিরাপত্তাবোধ করতে চায়। আর সেটি প্রদান করতে পারলে বেশি দাম নেওয়া কোন বেপার হয় না। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের প্রতিষ্ঠান অন্য একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত কম্পিউটার সামগ্রী কিনে থাকে। যে প্রতিষ্ঠান থেকে কিনে থাকে তারা এসে পণ্যটি দিয়ে যায়, সমস্যা হলে তারা নিজেরা এসে সেই পন্য নিয়ে ঠিক করে দেয় অথবা ওয়ারেন্টি থাকলে সেটা বদলে দিয়ে যায়।
তাদের এই ধরনের সার্ভিস কাছাকাছি অন্য কেউই দেয় না। আর তাই তারা নিয়মিতভাবে আমাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারছে।
উন্নত বিশ্বে যারা বসবাস করেন তারা বিষয়টি হয়তো সহজেই বুঝতে পারেন, তাদের দেশের ২৪ ঘন্টা কাস্টমার সার্ভিস আর আমাদের দেশের সরকারী সার্ভিসগুলোর মধ্যকার আকাশ-পাতাল পার্থক্য। আমি আমেরিকার একটি লকস্মিথের ওয়েবসাইটের কাজ করতে গিয়ে জানলাম তারা ২৪ ঘন্টা তালা বিক্রি, তালার চাবি তৈরী, তালা মেরামতের সার্ভিস প্রদান করেন। একটি বিদেশি হোস্টিং কোম্পনীতে সাপোর্ট টিকেট সাবমিট করলাম এবং কিছুক্ষন পরেই তারা আমাকে ফোন করলো এবং মূল সমস্যাটি জানতে চাইলো এবং পাঁচ মিনিটের মধ্যে তারা সমাধান করেও দিলো। আমি তাদের কাস্টমার কেয়ার দেখে অবাক। আমাদের দেশের বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানী লিমিটেড) সহ অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো সরাসরি গিয়ে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন ও ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস নিতে হয়। এমন কি ডোমেইন নেম সারভার পরিবর্তনের জন্যও তাদের কাছে সরাসরি যেতে হয়।
অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাস্টামার সার্ভিসের বিষয়টা বাংরাদেশে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন এখনো এ দেশে আনলাইন ব্যবসা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে নাই।
ছোট ও মাঝারি অনলাইন ব্যবসার জন্য লেখাটি টিউটোরিয়ালবিডিতে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃত অর্থে কাস্টমার কেয়ার অনেক বিশাল বিষয়। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে সামান্য আলোচনা করা হরো। কম খরচে এবং ভাল কাস্টমার সার্ভিসসহ দ্রুতগতির ওয়েব হোস্টিং এর জন্য টিউটোহোস্টে যোগাযোগ করুন।
আমি টিউটো। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 66 টি টিউন ও 476 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সাফল্যের সাথে টিটোরিয়াল বিডি ব্লগটি পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে ব্লগিং এর পাশাপাশি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। http://www.facebook.com/#!/mahbubpalash http://twitter.com/tuto_mahbub
বাঃ খুব সুন্দর লাগলো, ভাই 😀