কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা কয়েকটি টিপস!
বর্তমান যুগে আমরা অনেকেই নানা কাজে কম্পিউটার নামক যন্ত্রটিকে ব্যবহার করে থাকি। সত্যি বলতে কি কম্পিউটার বা ডিজিটাল কোন ডিভাইস ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করা সম্ভব নয় বর্তমান যুগে। বর্তমান যুগের কম্পিউটারের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের যত্ন না নিলে আপনি অনেক ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। যেমন- কম্পিউটার হ্যাক হয়ে যাওয়া, কম্পিউটার হ্যাং করা ইত্যাদি। এই সব ঝামেলা এড়িয়ে চলতে প্রয়োজন সঠিক যত্নের। হতে পারে হার্ডওয়্যারের যত্ন, হতে পারে সফটওয়্যারের যত্ন। নিচে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়া হলঃ
১। ডেস্ক পরিষ্কার রাখুনঃ- কম্পিউটার যেখানে রাখবেন সে ডেস্ক অথবা টেবিলটিকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। এতে করে আপনি সহজে কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন।
২। কাজের সময় খাওয়া নয়ঃ- আমরা অনেকেই আছি যারা ল্যাপটপ ল্যাপটপ এ কাজ করার সময় টুকটাক খাবার খেয়ে থাকি। খবরদার এটি একদমই করা যাবে না। কারণ আপনি জানেন না এর ফলে আপনি কম্পিউটারের কত বড় ক্ষতি করছেন। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় খাবার খেলে খাদ্যের অণুগুলো (মানে যেগুলো বাইরে থেকে যায়, যেমন মূড়ির গূড়া) কম্পিউটারের সিপিইউকে বা কী-বোর্ড কে নষ্ট করে ফেলতে পারে আর ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর আশেপাশে পানি রাখা সম্পর্কে আশাকরি আর কিছু বলতে হবেনা…
৩। ব্যবহারের সময় ল্যাপটপ স্থানান্তর করবেন নাঃ- আমাদের অনেক সময়ই চলন্ত অবস্থায় ল্যাপটপ স্থানান্তর করার প্রয়োজন পড়ে, তবে এটি একটি বিপদজনক ভুল কেননা ল্যাপটপ যখন চালু থাকে তখন এর ভিতরে অনেক যন্ত্রাংশ চলমান থাকে (যেমন হার্ডডিস্ক এর ঘূর্ণন)। এক্ষেত্রে চলন্ত ল্যাপটপকে সড়াতে হলে খুবই সাবধানে তা করতে হবে। তা না হলে ল্যাপটপের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
৪। অতিরিক্ত তাপমাত্রা এড়িয়ে চলুনঃ- আমরা এই বিষয়টিকে বলতে গেলে কোন গুরুত্বই দেই না। ভাই, ইলেকট্রনিক ডিভাইসেরও একটি ক্যাপাসিটি আছে আমরা যদি তার ক্যাপাসিটির বেশি লোড দেওয়ার চেষ্টা করি তাহলে ক্ষতিতো হবেই। তাপমাত্রা বাড়ার বিষয়টি ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। কেননা ডেস্কটপে বায়ুপ্রবাহের যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকে, ল্যাপটপের তা থাকে না (থাকা সম্ভবও নয়)। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য প্রসেসর পুড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতাও হতে পারে অনেকের। এমতাবস্থায়, আমি বলব আপনি পারলে এয়ারকন্ডিশন সিস্টেম আছে এমন কক্ষে কম্পিউটার ব্যবহার করুন, তা সম্ভব না হলে ল্যাপটপ কুলার ব্যবহার করুন তাও না পারলে অন্তত এমন একটি কক্ষে ল্যাপটপ ব্যবহার করুন যেখানে বায়ুপ্রবাহের কোন বাধা থাকবে না।
৫। ল্যাপটপের জন্য বিছানা নয়ঃ- আমরা অনেকে বিছানায় শুয়ে বা বিছানায় বসে ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকি। যা নিঃসন্দেহে ল্যাপটপের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কারণ ল্যাপটপের নিচে ও পেছনের অংশে সাধারণত কতগুলো খাঁজকাটা ছিদ্র থাকে যার মূল উদ্দেশ্যই হলো ল্যাপটপের ভিতরের গরম বায়ু নির্গত করতে সাহায্য করা। এখন আপনি যদি নরম বিছানায় রেখে ল্যাপটপের গরম বায়ু বের হওয়ার রাস্তাটাই বন্ধ করে দেন, তাহলে আপনি তাপমাত্রা বৃদ্ধি জনিত সমস্যায় পড়তে পারেন।
৬। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ল্যাপটপের নিয়মিত পরিচর্যা করুনঃ- কম্পিউটারকে সুস্থ-সবল রাখতে নিয়মিত পরিচর্যার কোনো বিকল্প নেই। মাসে অন্তত একবার পারলে সপ্তাহে অন্তত একবার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর প্রয়োজনীয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা রাখুন।
৭। ডেক্সটপে অতিরিক্ত আইকন রাখবেন নাঃ- আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোকই আছে যারা যতসব প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় নির্বিশেষে সকল কিছুর শর্টকাট আইকন রাখেন ডেস্কটপে। এমনটি করা একদমই উচিত নয়। কারণ এর ফলে কম্পিউটারের গ্রাফিকআল ইউনিটের উপর যথেষ্ট চাপ পড়ে। তা ছাড়াও এর ফলে কম্পিউটারের “স্টার্ট আপ টাইম” অনেক সময় বেড়ে যেতে পারে।
৮। অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার রাখবেন নাঃ- আমরা অনেকেই আছি যারা তাদের কাজে লাগে না এমন সফটওয়্যার কম্পিউটারে জমা করে কম্পিউটারের উপর চাপ বাড়িয়ে ফেলি। এটি একদমই অনুচিত একটি কাজ। এর ফলে হার্ডডিস্কের অপচয় হয় যা কম্পিউটারকে ধীরগতির করার জন্য যথেষ্ট।
৯। ল্যাপটপের কী-বোর্ড ব্যবহার এড়িয়ে চলুনঃ- যারা প্রফেশনাল কাজ করেন না তারা সাধারণত ল্যাপটপের (built-in) যেকী-বোর্ডটি থাকে সেটি ব্যবহার করে থাকেন। এই ব্যাপারে আমি বলব তা না করাই ভালো। কারণ ল্যাপটপে (built-in) যেকী-বোর্ডটি থাকে সেটি ততটাও টেকসই হয় না। সেটি সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই আপনার ল্যাপটপকে একদম অক্ষুন্ন রাখতে এক্সটার্নাল কী-বোর্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। বাজারে ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার ভিতরে ভালো মানের কী-বোর্ড সহজেই পেয়ে যাবেন।
১০। এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুনঃ- বর্তমান ইন্টারনেটের এই যুগে আমরা প্রতিদিন অনেক নতুন-পুরাতন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকি। সকল ওয়েবসাইটই যে গুগলের মত বিশ্বস্ত হবে তার নিশ্চয়তা কে দেবে? তাই আমাদের উচিত নিরাপত্তা আরো জোরদার রাখতে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা। বাজারে এমন অনেক এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার আছে যেগুলো ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও অনেক ভালো সেবা দিয়ে থাকে। যেমন avast free antivirus তেমনি ফ্রি কিন্তু অনেক কাজের একটি সফটওয়্যার।
আশাকরি আজকের পোস্টটি কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে ইংশাআল্লাহ। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে পরের টিউনে ইংশাআল্লাহ।
আমি মোঃ আহসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।