আপনার পুরনো রাউটার কি আপনার ড্রয়ারের উপর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে? যদি, আপনার সেই পুরনো রাউটারটি কিভাবে আবার পুনরায় ব্যবহার করা যায় এবং এটি ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে এটি দিয়ে কিছুটা অর্থ সঞ্চয় করা যায়!
মনে করুন, আপনার একটি নতুন রাউটার এর প্রয়োজন। অথবা হতে পারে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আপনাকে নতুন একটি রাউটার দিয়েছে এবং যেটি দিয়ে আপনি বর্তমানে তাদের ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করছেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি আগের ব্যবহৃত রাউটার টির কথা চিন্তা করছেন। এমনও হতে পারে যে, আপনি সেই পুরাতন রাউটারটির চাইতে আরও আপগ্রেড রাউটার ব্যবহার করতে চাইছেন। যেভাবেই হোক না কেন, মোটকথা আপনি কোন একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এজন্যই সেই রাউটারটির বিকল্প কিছু খুঁজছেন বা বর্তমান রাউটারটি আপনি পাল্টাতে চাইছেন।
তবে এবার নতুন রাউটার আপগ্রেড করার ক্ষেত্রে আপনার মনে হতে পারে যে, আপনার ব্যবহৃত সেই পুরাতন রাউটার দিয়ে আপনি কি করবেন? আপনার আগের ব্যবহৃত রাউটারটি কি ফেলে দিবেন? এরকম অনেক প্রশ্ন আপনার মাথায় তখন আসতে পারে। তবে আপনি চাইলে আপনার সেই রাউটার টি প্রয়োজনীয় কোন কাজে লাগাতে পারেন।
পুরানো রাউটার দিয়ে আপনার আসলে কি করা উচিত?
আপনি যদি একটি আইএসপি পাল্টিয়ে অন্য একটি আইএসপি তে সুইচ করেন, তবে এক্ষেত্রে আপনাকে প্রায়শই সেই পুরনো রাউটারটিকে পরিবর্তন করতে বলা হতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনি যদি সে রাউটারটি কে পরিবর্তন করে নতুন একটি রাউটার সেই আইএসপির কথামতো লাগান, তবে এক্ষেত্রে সেই পুরনো রাউটারটি কিন্তু আপনার বাড়িতে এমনিতেই পড়ে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনার সেই রাউটারটির যদি সামান্য কিছু সমস্যা থাকে অথবা সেটি অতটা আপগ্রেড না হয়, তবে এক্ষেত্রে আপনি সেটিকে পাল্টালেও এটির পূনব্যবহার ব্যবহার করতে পারেন। আপনি সেই রাউটারটি পাল্টিয়ে নতুন একটি রাউটার লাগিয়ে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও সেই রাউটারটি কে আপনি যথাযথ কাজে লাগিয়ে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন। আজকের এই টিউনে এমনই কিছু উপায় দেওয়া হল।
আমাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আমরা পুরনো রাউটার কোনো কাজেই লাগায় না। সেই পুরনো রাউটার থেকে নতুন রাউটার এ সুইচ করার পর, আমরা এক্ষেত্রে সেই পুরনো রাউটারটি বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রাখি। এক্ষেত্রে এটি আমাদের জন্য অনেক ঝামেলার কারণ ও হতে পারে। এক্ষেত্রে এটি পড়ে থাকতে পারে আপনার বাড়ির বাক্সে, আপনার বাড়ির ড্রয়ারে বিশৃঙ্খলা করতে পারে, অথবা আপনার বাড়ির অন্যান্য জিনিসের আড়ালে হারিয়ে যেতে পারে। তবে যাই হোক না কেন, আপনার সেই পুরনো রাউটার টিকে কিন্তু আপনি আবার পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন।
আজকের এই টিউনে আমরা পুরনো রাউটার কে আবার পুনরায় ব্যবহার করার এরকম ১২ টি উপায় বের করেছি:
তবে চলুন আজকের এই টিউন টিতে পুরাতন রাউটার এর ব্যবহার নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
অনেক সময় আপনার বাড়িতে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক পুরো বাড়ির সীমানা জুড়ে নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ, পুরো বাড়ির সীমানা জুড়ে আপনার ওয়াইফাই সিগন্যাল নাও পেতে পারে। আপনার বাড়ির ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সিগন্যাল ও কি এরকম হচ্ছে? এক্ষেত্রে আপনার বাড়িতে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সিগন্যাল পাবার জন্য বিকল্প হতে পারে দ্বিতীয় রাউটার। আর এক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারেন আপনার বাড়িতে পড়ে থাকা সেই পুরনো রাউটার টিকে।
এক্ষেত্রে আপনি সেই পুরনো রাউটার টিকে ব্যবহার করে নতুন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযুক্ত করতে পারেন। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাউটারটি আপনার ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এর অ্যাক্সেস ভাগ করবে এবং এক্ষেত্রে আপনাকে বৃহত্তর কভারেজ প্রদান করবে। যদিও এভাবে আপনি দ্বিতীয় রাউটার ব্যবহার করার ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় Latency জনিত কিছু সমস্যায় পড়তে পারেন। তবে এটি হতে পারে খুবই সহজ পদ্ধতিতে দ্রুত নেটওয়ার্ক কভারেজ বৃদ্ধি করার উপায়।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি অনেক সুবিধা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি বাড়ির সমস্ত জায়গায় ফুল নেটওয়ার্ক সিগন্যাল পাওয়া থেকে শুরু করে বাড়ির আশেপাশে থেকেও স্বাভাবিকভাবেই ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারেন।
যদি আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক থেকে কিছু লোক প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করে অথবা অন্য কোন কারণে কাউকে প্রতিদিন আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের অ্যাক্সেস দিতে হয়, তবে এক্ষেত্রে আপনার কিন্তু একটি সমস্যা থেকেই যায়। আর এক্ষেত্রে সমস্যাটি হচ্ছে, তাদের প্রতিদিন আপনাকে আপনার নিজের নেটওয়ার্ক শেয়ার করতে হয়। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিদিন তাদের সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করতে হয় অথবা অন্য কোন কারণে আপনার বিরক্তিকর ভাব চলে আসতে পারে।
Guest বা অতিথি ওয়াইফাই সংযোগ হিসেবে ব্যবহার যদিও একটি ওয়্যারলেস রিপিটার এর মত, তবে এটির কাজ একটু ভিন্নভাবে হয়। আমরা আমাদের রাউটারে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি এজন্যই যে, যাতে করে আমাদের নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু আপনি যখন কাউকে পাসওয়ার্ড দিবেন, তখন নতুন ডিভাইসে এটি মুক্ত অ্যাক্সেস প্রদান করে। তবে আপনি যদি চান যে, আপনার একটি প্রধান রাউটার থাকবে এবং যেটির পাসওয়ার্ড আপনি কাউকে দিবেন না, এক্ষেত্রে Guest ওয়াইফাই রাউটার সংযুক্ত করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার সেই পুরনো রাউটারটি Guest Router হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে এই রাউটারটি আপনার অতিথিদের কে আপনার নেটওয়ার্কের অন্যান্য ডিভাইসে অ্যাক্সেস প্রদান করতে বাধা দিবে। কেননা এক্ষেত্রে তারা সব সময় আপনার নেটওয়ার্ক বাদ দিয়ে Guest ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট থাকবে।
যদি এই স্তরের সুরক্ষা পর্যাপ্ত পরিমাণে না হয়, তবে তা সামঞ্জস্য করতে আপনি রাউটার সেটিং পরীক্ষা করে দেখুন। আপনি Guest ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের পুরো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আপনার ওয়াইফাই রাউটার এর সেটিং এ গিয়ে। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লগইন করে Guest ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সকল কার্যক্রম আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
আপনার প্রিয় রেডিও স্টেশনগুলোকে আপনি কি সরাসরি ইন্টারনেট থেকে উপভোগ করতে চাচ্ছেন? কিছু রাউটারকে ইন্টারনেট থেকে রেডিও চালানোর জন্য কনফিগার করা যেতে পারে, এক্ষেত্রে যদি আপনি OpenWrt অথবা DD-WRT Custom router firmware ইন্সটল করতে প্রস্তুত থাকেন।
এছাড়া অডিও আউটপুট করার জন্য এক্ষেত্রে আপনার কিছু সফটওয়্যারের প্রয়োজন হবে এবং সেই সঙ্গে একটি ইউএসবি সাউন্ড কার্ডের ও প্রয়োজন হবে।
যদিও এটি তৈরি করা কোনো সহজ পদ্ধতি না, এবং এরকম অনেক ইন্টারনেট রেডিও অপশন পাওয়া যায়, তবুও এটি একটি ভালো ব্যবস্থা। এটি আপনাকে সূক্ষ্মভাবে কাস্টম ফার্মওয়্যার ইন্সটল করতে দেয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সব রাউটারে ছয়টির বেশি ইথারনেট পোর্ট থাকেনা বা নেই। এক্ষেত্রে আপনার বাড়িতে ওয়্যারলেস ডিভাইস এর পরিমাণ বেড়ে বেড়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে পোর্ট এর স্বল্পতা দেখা দিবে। এক্ষেত্রে ইথারনেট এর মাধ্যমে আপনার বাড়িতে থাকা ওয়্যারলেস ডিভাইস গুলো সংযুক্ত করার মাধ্যমে অল্পতেই পোর্ট গুলো শেষ হয়ে যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, অনলাইনে পিসিতে গেম খেলার ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস এর মাধ্যমে ইন্টারনেট না নিয়ে ইথারনেট ব্যবহার করে গেমিং করা বেশি সুবিধা-যোগ্য। এছাড়া আপনার বাড়িতে থাকার টিভির ডিকোডার ওয়্যারলেস এর চেয়ে ইথারনেট পোর্ট এর মাধ্যমে ভালো স্ট্রিমিং করা সম্ভব।
আর যদি আপনার বাড়িতে থাকা ওয়াইফাই রাউটারের ইথারনেট পোর্ট শেষ হয়ে যায়, এক্ষেত্রে আপনি নেটওয়ার্ক সুইচ ব্যবহার করে এটিকে বাড়াতে পারেন। এটি দ্বারা মূলত আপনি রাউটারের প্লাগ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন।
আপনার পুরনো রাউটার টিতে সাধারণত চারটি অথবা তার চাইতে বেশি পোর্ট থাকতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনি যদি এটি প্রধান রাউটারের সঙ্গে যুক্ত করেন, তবে তাৎক্ষণিক-ভাবে আপনি ইথারনেট পোর্ট এর সংখ্যা বৃদ্ধি করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে ঝামেলা এড়াতে আপনার পুরনো রাউটারের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং অক্ষম করে দেওয়া উচিত। যেখানে এটি দিয়ে আপনি ইথারনেট পোর্ট এর সংখ্যা বৃদ্ধি করে আপনার বাড়িতে থাকা ওয়্যারলেস ডিভাইসগুলোকে ইথারনেট পোর্ট এর মাধ্যমে একসঙ্গে সংযুক্ত করতে পারেন।
কেমন হবে, যদি আপনার নতুন রাউটারটি শুধুমাত্র ওয়্যারলেস সুবিধা যুক্ত হয়? অর্থাৎ, শুধুমাত্র এটিকে যদি তার বিহীন অবস্থায় কোন ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত করা যায় এবং ইথারনেট পোর্ট এর মাধ্যমে যদি সংযোগ করা না যায়? এটি হতে পারে যে, আপনার আইএসপি (ISP) ইথারনেট পোর্ট সহ রাউটারকে অফার করেনি। যাই হোক না কেন, আপনার যদি ওয়্যারলেস ডিভাইস গুলোকে আপনার হোম নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়োজন পড়ে, এক্ষেত্রে এটির সমাধান হতে পারে ওয়্যারলেস ব্রিজ।
জিনিস অনুপাতে দাম কম হলেও, পুরনো রাউটারটি ওয়্যারলেস ব্রিজ হিসেবে পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
যদিও এটি কিছুটা ওয়্যারলেস রিপিটার এর মত কাজ করে, কিন্তু এটি ওয়াইফাই সংযোগ শেয়ার করার পরিবর্তে ওয়্যারলেস ব্রিজটি ইথারনেট সরবরাহ করে। এক্ষেত্রে আপনার পুরনো রাউটারটি আপনার বর্তমান ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয়ে, আপনাকে ইথারনেট এর মাধ্যমে ইথারনেট সরবরাহ করবে। সেই সঙ্গে আপনার কাছে থাকা একাধিক ওয়্যারলেস ডিভাইসগুলোকে ইথারনেট পোর্ট এর সাথে সংযুক্ত করবে।
আপনি কি আপনার ডাটা গুলোকে আপনার বাড়ির কোন এক জায়গায় সঞ্চয় করে রেখে সেগুলোকে আপনার বাড়ির যেকোন জায়গা থেকে অ্যাক্সেস করতে চাচ্ছেন? এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন নেটওয়ার্ক সংযুক্ত Network Attached Storage বা NAS, যা মূলত আপনার নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত একটি হার্ডডিস্ক ড্রাইভ।
যদিও এই ধরনের NAS ডিভাইসগুলো যথেষ্ট সাশ্রয়ী মূল্যের হয়, কিন্তু যদি আপনার একটি পুরনো রাউটার থেকে থাকে, তবে এটি আপনার অর্থকে আরো কিছুটা সাশ্রয় করতে পারে এবং আপনি এটির দ্বারা অর্থ সাশ্রয় করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন যে, এই সুবিধাটি এমন রাউটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যেগুলো কাস্টম ফার্মওয়্যার (যেমন DD-WRT) চালাতে পারে এবং একটি ইউএসবি পোর্ট থাকে। এক্ষেত্রে আপনার রাউটারের সঙ্গে সংযুক্ত যেকোনো ইউএসবি ডিভাইসের সামগ্রী আপনি ব্রাউজ করতে পারবেন।
এই পদ্ধতিতে, ইউএসবি ছাড়া, হার্ডডিস্ক ড্রাইভ বা ইউএসবি ফ্ল্যাশ স্টোরেজ সংযুক্ত করার কোন উপায় নেই।
এক্ষেত্রে একবার সেটাও হয়ে গেলে, আপনার তৈরি করা Network Attached Storage আপনাকে বাড়ির যেকোনো জায়গা থেকে আপনার ফাইলগুলোকে তাৎক্ষণিক অ্যাক্সেস করার সুবিধা দিবে।
এটি সম্পর্কে ভাবুন যে: আপনার পুরনো রাউটারটি OpenWRT বা DD-WRT চালাবে। আপনার পুরনো রাউটারটি আপনার বাড়ির একটি Network Attached Storage হোস্ট করতে পারে, যেটি সম্পর্কে আপনি উপরে আলোচনা দেখে আসলেন। তাহলে এটিও যুক্তিযুক্ত যে, এটি একটি বেসিক ওয়েব পৃষ্ঠা ও হোস্ট করতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনার পরিবারকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য এটি শুধুমাত্র একটি হোম-ওয়েবসাইট হতে পারে। এছাড়াও বিকল্পভাবে, এটি এমনকি একটি ব্লগ ও হতে পারে। কেননা কাস্টম ফার্মওয়্যার LAMP বা Linux, Apache, MySQL, PHP সমর্থন করবে। এর অর্থ হচ্ছে যে, আপনি সম্ভাব্য-ভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে পারেন।
কাস্টম ফার্ম ওয়্যার দ্বারা সমর্থিত পুরনো রাউটার গুলোকে ভিপিএন সফটওয়্যার দিয়ে সেটআপ করা যেতে পারে। এর অর্থ হচ্ছে যে, যদি আপনার একটি ভিপিএন অ্যাকাউন্ট থাকে, যেমন ধরুন ExpressVPN, এটি তাহলে আপনার সেই রাউটারে সেটাপ করা যেতে পারে।
ফলস্বরূপ, আপনার নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কযুক্ত সকল ডিভাইসগুলোকে ভিপিএন সুরক্ষিত রাখবে। এক্ষেত্রে আলাদাভাবে কোন পৃথক ক্লায়েন্ট অ্যাপ আপনার পিসি অথবা মোবাইল ডিভাইসে ইন্সটল করার প্রয়োজন নেই।
মনে রাখবেন যে, কিছু কিছু পুরনো রাউটার গুলোর ভিপিএন ব্যবস্থা রয়েছে, তবে এটি কেবল তখনই কাজ করে থাকে, যখন এটি মডেম মোডে সেট করা থাকে।
যদি আপনি আপনার সেই পুরনো রাউটারটি কে আধুনিক হার্ডওয়্যার দিয়ে নতুনভাবে সেটাপ করার চেষ্টা না করতে চান অথবা সেটাপ করার মত সময় নষ্ট করতে না চান, তবে কেন আপনি এটি বিক্রি করবেন না?
বর্তমানের অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম আপনাকে পুরনো পণ্য বিক্রি করে দিতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশেষ ভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারে বিক্রয় ডটকম। এক্ষেত্রে আপনার সেই রাউটার টি বিক্রি করার জন্য ফ্রিতে বিক্রয় ডটকম ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞাপণ দিন। অনেক সময় দেখা যায় যে, সাধারন গ্রাহকগণ সাশ্রয়ী মূল্যে রাউটার কেনার জন্য খুঁজছেন। এক্ষেত্রে দেখা যাবে অনেক ব্যবহারকারী আপনার পণ্যের প্রতি আগ্রহী হতে পারে এবং সেটি ক্রয় করতে পারে।
এছাড়া আপনার পুরনো পণ্যটি বিক্রি করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কেও ব্যবহার করতে পারেন। ফেসবুকের এমন এরকম অনেক গ্রুপ রয়েছে, যেখানে অনেক পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। এছাড়া ফেইসবুক মার্কেটপ্লেসে ও আপনি ফ্রিতে আপনার পণ্যটি বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে ফেসবুকে Marketplace নামের একটি আলাদা ফিচার রয়েছে, যে ফিচারটির মাধ্যমে আপনি ফ্রিতে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপণ দিতে পারেন।
নতুন গ্যাজেট কেনার ক্ষেত্রে অর্থ সংগ্রহের জন্য পুরাতন গেজেট কে বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করা একটি দুর্দান্ত উপায়। এক্ষেত্রে আপনার সেই পুরনো পণ্যটি বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে আপনি নতুন পণ্য কেনা থেকে শুরু করে সেই অর্থ যেকোন কাজে লাগাতে পারেন।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, বর্তমানে বেশিরভাগ রাউটারগুলো আপনাকে একটি সেকেন্ডারি নেটওয়ার্ক সেট করতে দেয়। তবে এটি শুধুমাত্র আপনার বাড়িতে অতিথিদের জন্য নয়। আপনি শুধুমাত্র মূল রাউটারের সঙ্গে সেকেন্ডারি রাউটার কে অতিথিদের জন্যই ব্যবহার করার জন্য লাগাতে পারেন না। ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) এবং স্মার্ট ডিভাইসের জন্যে একটি সেকেন্ডারি নেটওয়ার্ক স্থাপন না করে, এর বেশ কয়েকটি ব্যবহার রয়েছে।
তবে যদি আপনার রাউটারটি এটিকে সমর্থন না করে? তবে এক্ষেত্রে আপনার সেই পুরনো রাউটারটি সম্পর্কে আপনার বিবেচনা দরকার আছে। আপনার পুরনো রাউটারটি দিয়ে ওয়ারলেস ব্রিজ তৈরি করার সাথে সাথে রাউটারটি আপনার মূল রাউটার বা নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করা যেতে পারে। আর তারপর আপনি আপনার IoT ডিভাইসগুলোকে এর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যায়, সহজেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারেন, রাউটার এর ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা যেতে পারে সংযোগ সজ্জিত করতে।
রাউটারগুলো বেশ অনেকটা স্বয়ংক্রিয়। কোন রাউটার নতুন সংযোগ গুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগার করে এবং খুব সহজেই এবং অনেক দ্রুত আপনাকে অনলাইনে আসার সুযোগ করে দেয়।
যদি আপনি আপনার হোম নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ভাবে জানতে চান, তবে আপনাকে Admin screen এ যেতে হবে। কিন্তু আপনি যদি ভুল অপশনে ক্লিক করেন, তবে এক্ষেত্রে আপনার সবকিছু ভুল হতে পারে। কেননা আপনি যদি কম জেনে থাকেন, তবে কোন কিছু নতুনভাবে শিখতে গিয়ে ভুল জায়গাতে ক্লিক করতে পারেন। এক্ষেত্রে সমাধান কি?
এক্ষেত্রে হোম নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে জানতে আপনি আপনার একটি পুরনো রাউটার কে ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে পুরনো রাউটার দিয়ে Firewalls, DMZs, MAC filter এবং আরো অনেক কিছু হাতে কলমে শিখতে বা অভিজ্ঞতা নিতে গিয়ে আপনাকে পুরো নেটওয়ার্ক টিকে অকার্যকর বা অফলাইনে ঠেলে দেওয়া থেকে বাঁচাবে।
একটি পুরনো রাউটারে হোস্ট করা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যদি কিছু ভুল হয়ে যায়, তবে আপনাকে এক্ষেত্রে আর ফ্যাক্টরি রিসেটের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
অবশেষে বলা যায় যে, কেন আপনি আপনার পুরনো রাউটারটি কোন একটি ভালো কাজে দান করবেন না? এক্ষেত্রে আপনি আপনার সেই পুরনো রাউটার টি স্কুল-কলেজ, দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং আরো এমন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করার জন্য এটিকে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে তারা তাদের প্রয়োজনে আপনার সেই পুরনো রাউটারটি ব্যবহার করতে পারে।
যে কোন সংস্থায় আপনি আপনার পুরনো রাউটারটির দিয়ে দিলে তারা তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার কাজে সেই পুরনো রাউটার টিকে ব্যবহার করতে পারে, তারা ইন্টারনেট রেডিও স্ট্রিমিং করতে পারে, তারা আপনার পুরনো রাউটারটি নিয়ে তাদের মূল রাউটারের সঙ্গে লাগিয়ে এটিকে Guest Wi-Fi Network হিসেবে সেট করতে পারে, অথবা উপরের আলোচনা করা বিষয়গুলোর মধ্যে যেকোনো একটি কাজে তারা লাগাতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন যে, আপনার সেই রাউটারটি দিয়ে কোন অর্থ উপার্জন করতে পারছেন না। কিন্তু আপনি এটি জানতে পারছেন যে, এটি যেকোন একটি ভালো কারণেই ব্যবহার হচ্ছে।
উপরে আলোচনা করা এসব বিষয়গুলো হচ্ছে আপনার পড়ে থাকা পুরনো রাউটার পুনঃনির্মাণের দুর্দান্ত সব উপায়, এ ক্ষেত্রে এটি যতই পুরনো হোক না কেন। এমনকি এটি যদি এমন কিছু ওয়্যারলেস বৈশিষ্ট্য হারিয়েও ফেলে, তবুও আপনি এটিকে নেটওয়ার্ক সুইচ হিসেবে ব্যবহার অথবা অতিথি Guest Wi-Fi নেটওয়ার্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
তবে উপরের আলোচনা করা এসব বিষয়গুলোর কোনটিও যদি কাজ না করে, তবে আপনি এক্ষেত্রে ডিভাইস টি কোন জায়গায় বিক্রি করে দিতে পারেন অথবা আপনি অন্য কিছু করার জন্য এটি নিয়ে ভাবতে পারেন। শেষ পর্যায়ে বলা যায় যে, আপনি আপনার ওয়াইফাই রাউটারটি কি করবেন, সেটা আপনার ইচ্ছা।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)