আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। বন্ধুরা আমরা তো প্রতিদিনই স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকি। যেটি আমাদের নিত্যদিনকার জীবন সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যতীত ফোনটি হয়ে যায় মূল্যহীন। আমরা এমনও আছি যে, দিনের সারাক্ষণ শুধুমাত্র ইন্টারনেটেই পড়ে থাকি।
আমরা প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেক কিছুই অনুসন্ধান করে থাকি। এটি হতে পারে ইউটিউব, ফেসবুক, গুগল কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে। যেগুলোর প্রত্যেকটি থাকে আমাদের প্রয়োজনীয় কোন বিষয় নিয়ে। আর এসবের তাৎক্ষণিক ফলাফল ও পেয়ে যাই এসব মাধ্যম থেকে। ইন্টারনেটে বেশিরভাগ সময়ই কোন কিছু অনুসন্ধানের জন্য গুগল ব্যবহার করি।
আমাদের প্রয়োজনীয় কোন তথ্য খোঁজার জন্য ব্যবহার করি গুগল সার্চ ইঞ্জিন। আমরা যেকোন কিছু অনুসন্ধান করার জন্য গুগলকে ব্যবহার করি, সেখানে সবসময় আমাদের সঠিক উত্তর পেয়ে যাই। কিন্তু অনেক সময় গুগলের সার্চ রেজাল্ট থেকে আপনি অনেক বিপদেও পড়তে পারেন। গুগল আপনাকে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করে দিলেও অনেক সময় অনেক তথ্যই আপনার বিপদের কারণ হতে পারে। তো চলুন বন্ধুরা এবার তবে দেখে নেওয়া যাক যে, গুগলে কোন কোন বিষয়গুলো আমাদের সার্চ করা উচিত নয় এবং কোন কোন বিষয়গুলো সার্চ করলে আমরা ভবিষ্যতে কোনো বিপদে কিংবা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারি।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অনেক সমস্যার সমাধান খুঁজে দিলেও কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো এর সঠিক সমাধান দিতে পারেনা। যদিও গুগল সঠিক সমস্যা দিতে পারে কিন্তু সেই ফলাফল গুলো নিলে আমাদের অনেক বিপদের কারণ হতে পারে। তবে চলুন বন্ধুরা এবার একে একে দেখে নেওয়া যাক যে, গুগলে আমাদের কোন কোন বিষয়গুলো সার্চ করা উচিত নয় এবং সেসব সার্চ করা বিষয় থেকে ফলাফল গুলো আমাদের ব্যবহার করা উচিত নয়।
আমাদের প্রয়োজনে প্রতিদিন অনেক অ্যাপ এর দরকার হতে পারে। যেগুলো আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে ডাউনলোড করে নেই এবং সেগুলো মোবাইলে ইন্সটল করি। মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে আমরা সবার আগে প্রাধান্য দিয়ে থাকি গুগল প্লে স্টোর কে। কিন্তু অনেক সময় আমাদের প্রয়োজনীয় অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরে থাকেনা। কেননা সেই অ্যাপ গুলোতে হয়তোবা এমন কোন কোডিং করা রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনার প্রাইভেসির ক্ষতি হতে পারে অথবা অন্য কোনো কারণ।
গুগল এর নিয়ম অনুসারে অ্যাপ তৈরি করলেই কেবল সেটি গুগল প্লে স্টোর এর জন্য গ্রহণ করা হয়। যদি কেউ এর বাইরে কোন কোডিং করে তবে গুগল সেটি প্লে স্টোরে রাখবে না। তখন এসব অ্যাপগুলোর ডেভলপার এরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেগুলো ডাউনলোড করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করে। গুগল প্লে স্টোর এর বাইরের সব অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীর জন্য অনেক ভালো হলেও সেগুলোতে থাকতে পারে অনেক বড় ফাঁদ। ঘটে যেতে পারে আপনার তথ্যের বেহাত এবং অনেক ক্ষেত্রে আপনি হয়ে যেতে পারেন সর্বস্বান্ত।
গুগল প্লে স্টোরে এবং আপ্যল স্টোরে যে সব অ্যাপস গুলো রয়েছে সেগুলো আপনার প্রাইভেসি এর ওপর গুরুত্ব দিয়েই করা হয়েছে। কিন্তু আপনি যখন কোন প্রয়োজনীয় অ্যাপের জন্য গুগলে সার্চ করবেন তখন গুগল আপনাকে প্লে স্টোরে অ্যাপ এর পাশাপাশি অন্য ওয়েবসাইট থেকে সেই অ্যাপগুলো সাজেস্ট করবে। গুগলে অ্যাপ অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে আপনি এভাবেই বিভিন্ন ফাঁদে পড়তে পারেন।
এভাবে করে ধরুন, আপনি কোন অ্যাপের জন্য গুগলে গিয়ে সার্চ করলেন এবং গুগল আপনাকে সেই কিওয়ার্ডের সঙ্গে মিল রেখে কিছু ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ সাজেস্ট করলো। আপনিও সেসব ওয়েবসাইট থেকে কোন একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে আপনার মোবাইলে ইন্সটল করলেন। কিন্তু এভাবে করে আপনি অনেক হ্যাকার এর ফাঁদে পা দিতে পারেন। যারা সেসব অ্যাপের মধ্যে অনেকে ম্যালওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার রেখেছে। আপনি যদি সেই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করেন তবে আপনি তাদের ফাঁদে পা দিলেন।
মনে রাখবেন, যদি কোন একটি অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে কিংবা অ্যাপ স্টোরের না থাকে তবে সেই অ্যাপটি গুগলে সার্চ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড না করার। কেননা সেই আপনি যদি ভালোই হতো তবে সেটি গুগলের প্লে স্টোরে কিংবা অ্যাপল স্টোর থেকে যেত। সেই অ্যাপটি কোন ব্যবহারকারীর জন্য ঝুঁকিমুক্ত নয় বলেই সেটিকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদেরকে প্রমোট করতে হচ্ছে। যদি সেই অ্যাপটি ব্যবহারকারীর জন্য ঝুঁকিমুক্ত হত তবে সেটি বর্তমানে প্লে স্টোর কিংবা অ্যাপেল স্টোর এ থেকে যেত এবং সেখান থেকে আপনি ডাউনলোড করতে পারতেন।
যাই হোক, আপনি যদি গুগলে কোন অ্যাপ অনুসন্ধান করার মাধ্যমে সেখান থেকে সেটি ডাউনলোড করে মোবাইলে ইন্সটল করেন তবে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। এখানে বিপদ বলতে আপনি তাদের ট্রাকিং এর শিকার হতে পারেন। সেই অ্যাপ এর মধ্যে যদি কোন ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার থাকে তবে আপনার ব্যক্তিগত অনেক ডেটাই চলে যেতে পারে তাদের হাতে এবং সেসব তথ্য তারা বিক্রি করে দিতে পারে থার্ড পার্টি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে। যে তথ্যগুলো তারা ব্যবহার করবে আপনাকে অনলাইন প্লাটফর্ম এ বিজ্ঞাপণ দেখানোর কাজে। যদিও সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য এসব তথ্য কোনো গুরুত্বই মনে হয় না, কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত তথ্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা যারা বোঝে, তারাই অনেক ভালোভাবে বুঝতে পারে।
গুগল প্লে স্টোর কিংবা অ্যাপল স্টোর বাদ দিয়ে আপনি যদি থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে কোন অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করেন তবে আপনার মোবাইলের ও অনেক ক্ষতি হতে পারে। এতে করে আপনার স্মার্টফোনটি ধীরগতির হয়ে যেতে পারে এবং মাঝে মাঝে হ্যাং করতে পারে। তাই আপনার যদি কোন অ্যাপ এর দরকার পড়েই, তবে আপনি প্লে স্টোর কিংবা অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিবেন। তবে সবক্ষেত্রেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটের অ্যাপ্লিকেশনগুলো আপনাকে ট্রাকিং কিংবা হ্যাক করে না। এক্ষেত্রে যদি আপনাকে প্লে স্টোর এর বাইরে থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করতেই হয় তবে দেখে নিবেন সেটি কোন জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন কিনা।
এখানে আপনাকে আরও একটি কথা বলে রাখি তাহল, আপনি যখন থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে কোনো অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করবেন তখন সেই অ্যাপটির আদলেই ভিন্ন অ্যাপ ও আপনার সামনে আসতে পারে। আপনি যদি সেই অফিশিয়াল অ্যাপটি মনে করে সেই ডুবলিকেট অ্যাপটি ইনস্টল করেন তবে এতে করেও আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এতে আপনি হ্যাকিং এর ও শিকার হতে পারেন। তাই কোন ওয়েবসাইট থেকে কোনো অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করার আগে আপনি আরো একবার ভেবে তারপর ডাউনলোড করবেন। যদি আপনার স্মার্টফোন এবং আপনার প্রাইভেসির বারোটা না বাজে।
আমরা দৈনন্দিন লেনদেন করার জন্য ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করি। ব্যাংকের মাধ্যমে আমাদের লেনদেন করার পাশাপাশি আমরা অনলাইনে ও অনেক লেনদেন করে থাকি। যেসব লেনদেন করার জন্য আমাদেরকে সে সব ব্যাংকের ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হয়। আর এসব ওয়েবসাইটকে আমাদের ইন্টারনেট থেকে খুঁজে নিতে হয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্যাংকিং ওয়েবসাইটের লিঙ্ক খুঁজতে গিয়ে আপনি সর্বস্বান্ত হতে পারেন।
ইন্টারনেটে সেসব ব্যাংকের ওয়েবসাইট এর আদলেই অনেক ওয়েবসাইট তৈরি করা রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কোনো লেনদেন করার জন্য ইন্টারনেটে কোনো ব্যাংকের সাইট এর লিঙ্ক খুঁজে থাকেন তবে সেই লিঙ্ক এবং ওয়েবসাইটকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিবেন। কেননা আপনি যদি ভুল কোন ওয়েবসাইটে আপনার অ্যাকাউন্ট এর সকল তথ্য গুলো দিয়ে দেন তবে আপনি সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে সেই ব্যাংকের আসল ওয়েব অ্যাড্রেস খুঁজে নেওয়া।
আপনার যদি সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইট এর ডোমেইন নেম টি জানা থাকে তবে সরাসরি অ্যাড্রেস বার এ গিয়ে সেই ওয়েবসাইটটির অ্যাড্রেস টাইপ করে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করবেন। আপনি কোনোভাবেই ব্যাংকটির নাম লিখে কোন ওয়েবসাইট থেকে এসেই ব্যাঙ্কের লিংক টি খুঁজতে যাবেন না। এতে করে আপনি অন্য কোন ওয়েবসাইটে এ প্রবেশ করে সেখানে আপনার তথ্যগুলো দিতে পারেন এবং আপনি প্রতারণার শিকার হতে পারেন।
তাই বন্ধুরা, কোন ব্যাংকিং সেবা অনলাইনে ব্যবহার করতে চাইলে সরাসরি ওয়েব অ্যাড্রেস এ গিয়ে সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইটের এড্রেস লিখে সে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন কিংবা সে ব্যাংকের অফিসিয়াল অ্যাপটি ব্যবহার করে লেনদেন করবেন। এক্ষেত্রে আপনার সেই ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহার করাই অনেক ভালো। তাই অনলাইনে লেনদেন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকুন।
ইন্টারনেটে বা গুগলে সার্চ করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ তা হল ঔষধ কিংবা চিকিৎসা সামগ্রী খোঁজা। বর্তমানে ইন্টারনেটের প্রায় সকল তথ্য রয়েছে। যেসব তথ্য গুলোর মধ্যে চিকিৎসা সেবা ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে আপনার কোনো সমস্যার কথা লিখে সার্চ করলে অনেক ওয়েবসাইট চলে আসে আপনাকে সমাধান দেবার জন্য। কিন্তু এতে করেও যে আপনি অনেক বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারেন সেটি হয়তোবা আপনার অজানা।
গুগলে সাধারণ সমস্যা নিয়ে সার্চ করা অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কিন্তু আপনি যদি আপনার শারীরিক সমস্যা এর বিবরণ অনুযায়ী গুগলের সার্চ করে সেই সমাধানটি নিয়ে নিজের চিকিৎসা করতে শুরু করে দেন তবে এতে করে অনেক ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এমনকি এতে করে আপনার মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকতে পারে। যেমনটি একটি প্রবাদ রয়েছে, 'অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী'। ইন্টারনেট থেকে সামান্য বিদ্যা শিখে আপনার জীবনের সর্বনাশ ডেকে আনা উচিত হবে না।
ধরুন, আপনার কয়েক দিন ধরে জ্বর হয়েছে। এবার আপনি যদি গুগলে গিয়ে আপনার সমস্যার কথা লিখে সার্চ করেন তবে অসংখ্য ওয়েবসাইট আসবে যেখানে আপনার সমস্যা অনুযায়ী কিছু ঔষধের নাম সাজেস্ট করা হবে। এবার আপনি যদি কোনো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই সেই ঔষধটি ফার্মেসীতে গিয়ে কিনে খান তবে ব্যাপারটি কেমন হয়? এখানে আপনি কিন্তু আপনার রোগের কারণ বিস্তারিত জানেন না। কোন কারনে আপনার জ্বর হয়েছে সেটি আপনি না জেনে শুধুমাত্র আপনার জ্বরের জন্য যদি ওষুধ কিনে নেন তবে তা দিয়ে কিন্তু আপনার জ্বর সারবে না।
এখন হবে আপনি যদি অন্যান্য শারীরিক সমস্যার জন্য গুগল এ গিয়ে সেটি লিখে সার্চ করেন এবং সেখান থেকে যদি কোন একটি ঔষধের নাম পান তবে সেটি কিনে খাওয়াও আপনার জন্য উচিত হবে না। আপনারা লক্ষ্য করলে দেখে থাকবেন যে প্রত্যেকটি ঔষধের কভারে সেই ওষুধের কাজ এবং ব্যবহারবিধি লেখা থাকলেও শেষে লেখা থাকে যে, 'শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার্য'। অর্থাৎ, সেই ঔষধের গায়ে ব্যবহারবিধি লেখা থাকলেও একজন চিকিৎসক নির্ধারণ করে দিতে পারে যে সেই ঔষধটি আপনার জন্য প্রযোজ্য কিনা এবং সেটি কি পরিমানে আপনাকে সেবন করতে হবে। কোন একজন চিকিৎসক আপনার শরীরের অবস্থা এবং আপনার রোগের লক্ষণ বিবেচনা করে ঔষধ দিয়ে থাকবে। যেটি কিন্তু আপনি গুগলে সার্চ করার মাধ্যমে পাবেন না।
আপনি যদি গুগলে এমন কিছু লিখে সার্চ করেন আপনি আরও একবার ভেবে দেখুন। আপনি যে ওয়েবসাইট থেকে কোন একটি ঔষধের নাম খুঁজে বের করবেন সেটি হয়তোবা কোন ডাক্তার দেয়নি। সেই ওয়েবসাইট টিতে হয়তোবা আপনার মতই কোন একজন কোন একটি জায়গা থেকে দেখে কিংবা শুনে সেটি লিখে দিয়েছে। যেখানে সেও আসল ডাক্তার নয়। গুগলে সার্চ করে কোন ওয়েবসাইট থেকে কোন রোগের চিকিৎসার নেবার পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে তা আপনি হয়তো বা এখন উপলব্ধি করতে পারছেন।
গুগলে সার্চ করে কোন ওয়েবসাইট থেকে যেখানে আপনি সঠিক চিকিৎসা তো পাবেনই না, বরং এখানে আপনি ভুল চিকিৎসা পেয়ে আপনার জীবনের অনেক বড় দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারেন। তাই শরীর খারাপের ক্ষেত্রে গুগলে সার্চ করে কোন ওয়েবসাইট দেখে নিজেই নিজের চিকিৎসা করা একেবারেই উচিত নয়। এছাড়া গুগলে সার্চ করে হঠাৎ কোন ঔষধ কিংবা সাপ্লিমেন্টও কেনা অনুচিত। কথাইতো আছে, 'একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না'। তাই আপনার জীবনে কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই সাবধান হোন।
এখানে আপনাকে আরও একটি বিষয় পরিষ্কার ধারণা দেওয়া যাক যে, গুগলে যদি আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ে কোন কিছু সার্চ করেন তবে কিরকম বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন আপনাকে হতে হয়। আমাদের অনেক সময় শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং শরীরের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় আপনি যদি সেই সমস্যার কথা গুগলে সার্চ করেন তবে সেখানে আপনি বহু ওয়েবসাইট থেকে বহু পরামর্শ পাবেন। যেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ পরামর্শই থাকবে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা নয়।
এসব ওয়েবসাইটের যেসব বিষয় গুলো থাকবে তার বেশিরভাগই আমাদের কোন কাজে আসবে না। উপরন্তু, এসব ওয়েবসাইট থেকে ভুল রকমের তথ্য নিয়ে আমাদের মনে ভীতির সঞ্চার হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য ঘঠিত যেকোনো সমস্যায় গুগলে সার্চ না করে আমাদের ভালো কোন ডাক্তার দেখানো উচিত। আপনার লক্ষণ এর সঙ্গে যদি সেই ওয়েবসাইটে বলা তথ্যের সঙ্গে মিলে যায় তবে আপনি এখান থেকে একটি ভুল ধারণা ও পেতে। চলুন তবে এরকম একটি ভুলের উদাহরণ দেওয়া যাক।
আমাদের অনেক সময় মাথা ঘোরা, দুর্বলতা ভাব এবং বমি বমিভাব হতে পারে। ধরুন, আপনার ও এরকম সমস্যা দেখা দিল। এবার আপনি এসব এর লক্ষণ অনুযায়ী যদি গুগলের কিছু খুঁজতে থাকেন এবং এসবের এক পর্যায়ে আপনি যদি দেখতে পান যে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ তবে আপনি কিন্তু একেবারেই ভেঙ্গে পড়বেন। এতে করে আপনার দুশ্চিন্তা বাড়বে এবং আপনি একটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাবেন। এতে করে আপনার অসুস্থতা ভালো হওয়ার চাইতে দুশ্চিন্তার ফলে আরো অসুস্থ হয়ে যাবেন।
ধরুন, আপনার মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব হচ্ছে। এবার আপনি গুগলে গিয়ে সেই লক্ষণটি লিখে সার্চ করলেন। গুগল আপনার কিওয়ার্ড অনুযায়ী কিছু ওয়েব পেজ আপনাকে সাজেস্ট করল যেগুলোতে আপনার সমস্যার সমাধান দেওয়া রয়েছে। এবার সেখানে গিয়ে আপনি দেখতে পেলেন যে এসব লক্ষণ গুলো হচ্ছে পেটে গ্যাস্ট্রিক এর প্রভাবে। তো, এবার আপনি সেই অনুযায়ী ডাক্তারের কাছ থেকে ঔষধ নিয়ে আসলেন এবং আপনি ডাক্তারকে কোন কিছু জানালেন না।
কিন্তু আপনার মাথা ঘোরা এবং বমি বমিভাব অন্য একটি কারণেও হতে পারে। যেটি হল আপনার যদি হাই প্রেসার হয়ে যায়। এবার আপনি যদি গুগলে গিয়ে কোন ওয়েবসাইট থেকে আপনার লক্ষণ এর কারণ হিসেবে পেটের এসিড কে দায়ী করে ঔষধ কিনে আনেন তবে কিছু করার নেই। এক্ষেত্রে আপনার অজানাই থেকে গেল যে, আপনার এসব সমস্যাগুলো হচ্ছে হাই প্রেসারের কারণে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কোন একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে আপনার সমস্যার কথা খুলে বলতেন তবে সেই চিকিৎসক আপনার বর্ণনা অনুযায়ী আপনার রোগটি নির্ণয় করতো।
যদি আপনার শরীরের সমস্যার লক্ষণ অনুযায়ী গুগলে সার্চ করে কোন ঔষধ খুঁজে নিয়ে আপনি হাতুড়ে ডাক্তার হতে চান তবে এটি হতে পারে আপনার জীবনের জন্য অনেক বড় কাল। হয়তোবা এখান থেকে আপনি ভুল চিকিৎসা দিয়ে কিংবা ভুল ধারণা পেয়ে আপনার রোগটি আরো বেড়ে যেতে পারে কিংবা অযাথা আপনার দুশ্চিন্তা বেড়ে যেতে পারে। আপনার রোগের লক্ষণ অনুযায়ী গুগলের সার্চ করে আপনি যদি ভিন্ন কোন অসুখের সঙ্গে আপনার লক্ষণগুলো মেলান তবে এতে করে আপনি ভুল ধারণা পেতে পারেন এবং আপনার দুশ্চিন্তা অনেকগুণ বেড়ে যাবে। তাই অযাথা আপনার রোগের লক্ষণগুলো গুগলে সার্চ করে আপনার দুশ্চিন্তা বাড়ানোর দরকার নেই। সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের সামান্য দুর্বলতার কারণ জানতে গিয়ে বিশাল বড় দুচিন্তা আপনার বহন করা একেবারেই কাম্য নয়।
তাই স্বাভাবিক জীবনে যদি কোন সময় শরীরের কোনো অসুস্থতা দেখা দেয় তবে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। অযথা আপনার সামান্য অসুখের লক্ষণ কে গুগলে সার্চ করে অনেক বড় রোগের সাথে তুলনা করে দুশ্চিন্তা বাড়ানোর দরকার নেই। তাই আপনাকে আবারো বলে দিচ্ছি যে, কোন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করবেন। গুগলে সার্চ করে আপনি কোন হাতুড়ে ডাক্তার হতে যাবেন না।
অনেক সময় মানুষের শরীরের নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা যায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো থাকে মারাত্মক ক্ষতিকর। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব চর্মরোগ আবার শরীরে ভয়াবহ ভাবে দেখা যায়। আপনি যদি গুগলে কোন চর্মরোগ লিখে সার্চ করেন তবে সব রকমের চর্মরোগ এর ছবি পেয়ে যাবেন। যেখানে সেই চর্মরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ছবি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আপনার যদি কোন চর্মরোগ হয়ে থাকে তবে সেটি লিখে গুগলে সার্চ না করাই ভালো। কেননা সেসব ছবিগুলো এতই গোলমেলে যে, সেগুলো সার্চ দিয়ে দেখলে আপনার মাথা ঘুরে যাবে।
কোন রোগের লক্ষণ গুলো লিখে গুগলে সার্চ করে যেমন আপনি ভুল ধারণা পেতে পারেন, ঠিক তেমনি ভাবে আপনার সেই চর্ম রোগের নামটি লিখে গুগলে সার্চ করলেও আপনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। কেননা আপনি google-এ গিয়ে চর্মরোগটি লিখে সার্চ করবেন সেখানে সেই রোগের সর্বশেষ অবস্থার চিত্র গুলো দেওয়া থাকবে। যেখানে আপনার শরীরের সামান্য মাত্র রোগ হয়েছে সেখানে আপনি তার ভবিষ্যৎ দেখে একেবারেই ভেঙ্গে পড়তে পারেন। আর আপনি যদি সেই রোগটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে যান তবে এমনিতেই আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। তাই আপনার সামান্য কোন চর্মরোগ হলে গুগলে সেই রোগের চিত্র না খুঁজে ডাক্তারের পরামর্শমতো চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
মানুষের শরীরে অনেক ধরনের চর্মরোগ দেখা যায়, যেগুলো দেখতে বেশিরভাগই ক্ষেত্রেও অনেক মারাত্মক দেখা যায়। কিছু কিছু আক্রান্ত মানুষের শরীরে এই চর্ম রোগের অবস্থা অনেক ভয়াবহভাবে দেখা যায়। প্রায় সবরকমের চর্মরোগ এর ছবি এবং সেসব রোগে আক্রান্ত মানুষের ছবি গুগলে সার্চ দিলে পাওয়া যায়। সেসব ছবি এত গোলমেলে যে সেগুলো সার্চ দিয়ে না দেখাই ভালো।
ধরুন আপনি অনলাইন থেকে কোন একটি পণ্য কিনছেন, যে পন্যটি কোন কারনে আপনি রিফান্ড করবেন। এছাড়া ধরুন আপনি কোন একটি পণ্য কিনবেন কোন একটি সাইট থেকে। এবার এবার আপনি সেই সেবা কেন্দ্র গ্রাহক সেবার ফোন নাম্বার খুঁজতে চাচ্ছেন এবং এজন্য আপনি গুগলে গিয়ে সার্চ করলেন। এতে করে আপনার অনেক ওয়েবসাইট চলে আসবে যেটিতে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের নাম্বার দেওয়া থাকতে পারে। কিন্তু এতে করেও আপনি প্রতারিত হতে পারেন।
অনেক দুর্বৃত্তরা অনলাইনে বিভিন্ন সেবার ভুয়া নাম্বার এবং ওয়েবসাইট দিয়ে রাখে। আপনি যদি সেই ওয়েবসাইট থেকে সেই নাম্বারটি নিয়ে তাদের কে কল করেন তবে এতে করে আপনি প্রতারিত হতে পারেন। অনেকেই সবচাইতে বেশি স্ক্যামের শিকার হয়ে থাকে অনলাইনে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের নাম্বার খোঁজ করতে গিয়ে। অনলাইনে যেসব গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে ভুয়া নাম্বার দিয়ে আপনি তাদের আসল সেবা কেন্দ্র মনে করে প্রতারিত হতে পারেন। তাই কোন ধরনের প্রতারণা এড়াতে গুগল থেকে কোন গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের ফোন নাম্বার সংগ্রহের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
গুগল শেয়ারবাজার কিংবা ট্রেডিং বিষয়ে সার্চ করলে হাজার হাজার ওয়েবসাইট চলে আসে যেখানে বিভিন্ন বিদ্যা-বুদ্ধিতে ভরা তথ্য থাকে। কিন্তু এতে করেও যে আপনি প্রতারণা কিংবা ভুল তথ্য পেতে পারেন সেটি হয়তোবা আপনার অজানা। ইন্টারনেটে আপনি যেরকম অনেক ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন, যেখানে শেয়ারবাজার সম্পর্কিত অনেক পরামর্শ দেওয়া থাকে। কিন্তু এসব পরামর্শ তো ভুলও হতে পারে। উপরের পয়েন্টে আলোচনা করা স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের মতই আর্থিক বিষয়গুলোতেও গুগলের ওপর একেবারে নির্ভর করা উচিত নয়।
আর্থিক সফলতার বিষয়গুলো প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আলাদা আলাদা হতে পারে। সফলতার বিষয়টি একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। শেয়ার বাজার বা ট্রেডিং করার ক্ষেত্রে কারো কাছে একটি পয়েন্ট অনেক সফলতা এনে দিতে পারে আবার কারো কাছে সেটি লোকসানের কারণ হতে পারে। তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুগলে সার্চ করা তথ্যের উপর আপনার নির্ভর না করাই হবে সবচাইতে ভালো উপায়। আপনাদেরকে এটা সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যে, যেই ওয়েবসাইট আপনাকে ট্রেডিং বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে তারা সেই বিষয়ে দক্ষ কিনা।
যে ওয়েবসাইট আপনাকে ট্রেডিং বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে হতে পারে সেই বেশি কিছু জানেনা। তবে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে শেয়ার বাজার সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু নির্দিষ্ট ও নামী কিছু ওয়েবসাইট ছাড়া শেয়ার বাজার সংক্রান্ত বুদ্ধি না নেওয়াই ভালো। এছাড়া অনেক ভুয়া সংস্থা ট্রেডিংয়ের নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে থাকে। যেখানে ট্রেডিং করলে আপনি প্রতারিত হতে পারেন।
তাই শেয়ার বাজার বা ট্রেডিং-এর বুদ্ধি নিবার জন্য গুগল সার্চের ওপর বেশি নির্ভর না করাই ভালো।
ব্যাংক কিংবা বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট এর মতই দুর্বৃত্তরা সেসবের আদলেই ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। যেখানে সেই ওয়েবসাইটটির ডোমেইন এর মতই কাছাকাছি একটি নাম দিয়ে সেই ওয়েবসাইটের আদলে ওয়েবসাইট তৈরি করে। এখানে সেসব স্ক্যামারদের লক্ষ্য থাকে বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট কিংবা গুরত্বপূর্ন ওয়েবসাইট এর আদলে ওয়েবসাইট তৈরী করে ব্যবহারকারীকে বোকা বানানো। গুগলের সার্চ করে এরকম অনেক ওয়েবসাইট প্রকৃত মনে হলেও সেগুলো পরবর্তীতে অনেক সময় প্রতারিত মূলক ওয়েবসাইট বলে প্রমাণিত হয়। স্ক্যামারেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে এই কাজটি করে থাকে।
এতে করে কোনো দুর্বৃত্ত যদি কোন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর আদলে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং সেখানে সেই ওয়েবসাইটটি এর অ্যাড্রেস এর কাছাকাছি নাম ব্যবহার করে তবুও আপনি সেখান থেকে বাঁচতে পারবেন। এরকম যদি আপনাকে একটি উদাহরণ দেওয়া যায় তাহলো, বাজারে অনেক জনপ্রিয় ব্যান্ড এর পণ্যগুলোর কাছাকাছি নাম দিয়ে অনেক পণ্য দেখতে পাবেন। যেমন Apex ব্র্যান্ডের জুতা পরিবর্তে কাছাকাছি নাম দিয়ে Apoex, Apox, Apeox ইত্যাদি। যেখানে আসল ব্র্যাড টি হল 'Apex'। এবার কেউ যদি কোন জুতা কিনতে যায় তবে তাকে যদি 'Apex' পরিবর্তে Apoex কিংবা Apox এর জুতা দেওয়া হয় তবে সে কিন্তু অত কিছু না দেখেই নির্দ্বিধায় বাড়িতে নিয়ে আসবে। পরবর্তীতে সে যদি ভালোভাবে লক্ষ্য করে তবে সে 'Apex' এবং 'Apox' এর পার্থক্য দেখতে পাবে।
কোন ব্যক্তি সেই জুতাকে Apex মনে করে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার আর কিছুই করার থাকবেনা। বাড়িতে এসে সে মনে করবে যে আমি প্রতারিত হয়েছি। একইভাবে ইন্টারনেটে অনেক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর আদলে ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে সেসব ওয়েবসাইট এর ডোমেইন নেম এর কাছাকাছি নাম দিয়ে সেগুলো পরিচালিত হয়। আপনি যদি ওপরে উদাহরণ দেওয়া জুতার মতই সেসব ওয়েবসাইটে আপনার তথ্যগুলো দিয়ে দেন কিংবা সেখানে কিছু ক্রয় করেন তবে আপনারও কিছু করার থাকবে না।
তাই জুতা কিনে বাড়িতে নিয়ে এসে ভাবার আগেই যেমন সেখান থেকে বানানটি ভালোভাবে দেখে নিতে হতো, ঠিক তেমনি ভাবে কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারিত হবার আগেই সেই ওয়েবসাইটের এড্রেসটিও ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত। যাতে করে পরবর্তীতে আপনাকে আর ভাবতে না হয়, যেখানে সেই পণ্যটির একটি কাছাকাছি নাম দেওয়া হয়েছে।
তাই আপনি যখন কোনো একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন তখন অবশ্যই সেই ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেখে নিবেন। বিশেষ করে আপনি যখন কোন সরকারি ওয়েবসাইট কিংবা ব্যাংকিং কার্যক্রম এর সাথে সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন তখন সেটির ইউআরএল দেখে নিবেন। আপনি যদি এসব ক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটটির ইউআরএল না দেখে ভুল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন তবে আপনার তথ্যের বেহাত কিংবা অন্য কোনো সমস্যায় পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে যে, সেই ওয়েবসাইট এর আসল ইউআরএল জেনে তারপর ওয়েবসাইটে ভিজিট করা। এতে করে আপনি অনেক সময় অনেক প্রতারণার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লগইন পেজ কিংবা অন্য কোন ওয়েবসাইট এর লগ ইন পেজ কখনোই গুগলে গিয়ে সার্চ করা উচিত নয়। কেননা এতে করে আপনি অনেক সময় ফিশিং শিকার হতে পারেন। এমনও হতে পারে যে সেই ওয়েবসাইটের মতই অন্য একটি স্ক্যাম ওয়েবসাইট চলে আসতে পারে যেখানে আপনি ক্লিক করে আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলে সেই তথ্য চলে যাবে তাদের হাতে। এতে করে গুগল সার্চের মাধ্যমে আপনি ফিশিং আক্রমণের মুখে পড়তে পারেন অথবা আপনি ভুয়া কোন ওয়েবসাইটে চলে যেতে পারেন।
তাই আপনার যদি কোন ওয়েবসাইটে লগইন করতে হয়, তবে সেই ওয়েবসাইটের এড্রেস লিখে সার্চ করবেন এবং সার্চ রেজাল্ট থেকে সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেখানে লগইন করবেন। এক্ষেত্রে যদি আপনি সেই ওয়েবসাইটের লগইন পেজ খুঁজেন তবে অবশ্যই সেই ওয়েবসাইট এর ডোমেইন নেমটি ভালোভাবে দেখে নিবেন। যাতে করে আপনি সেই ওয়েবসাইট এর মতই কাছাকাছি নামে অন্য কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ না করেন।
অনেকই গুগলে বিভিন্ন অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর অফার খুঁজে থাকে। অনলাইনে এরকম হাজারো ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে অফার পাবেন। তবে এসব অফারের ফাঁদে ফেলে আপনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে সেসব দুর্বৃত্তরা। তাই কোনো একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর অফার খোঁজার জন্য গুগলের সরাসরি সার্চ করাই ভালো। এক্ষেত্রে আপনি যে ওয়েবসাইট থেকে পণ্যটি নিবেন এই ওয়েবসাইটে গিয়ে অফার দেখুন এবং সেখান থেকে ক্রয় করুন।
আমাদের স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারকে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষার জন্য দরকার 'এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার'। এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো কিনতে অনেক টাকা লেগে থাকে। প্রত্যেকটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর ক্ষেত্রে মাসিক কিংবা বাৎসরিক একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা গুগলে গিয়ে 'ফ্রি এন্টিভাইরাস' খোঁজ করে থাকেন।
গুগলে গিয়ে 'ফ্রি এন্টিভাইরাস' সফটওয়ারের খোঁজ করলে অনেক সফটওয়্যার চলে আসবে যেগুলোর মধ্যে অধিকাংশই থাকে ভুয়া। গুগলের 'ফ্রি এন্টিভাইরাস' খোঁজ করলে অসংখ্য ভুয়া সফটওয়্যার পাবেন যেগুলো আপনার ডিভাইসের জন্য উপকার করার পরিবর্তে ক্ষতি ডেকে আনবে। গুগল এ সার্চ করে 'ফ্রি এন্টিভাইরাস' এর আসল-নকল খুঁজে বের করা অনেকের জন্য কঠিন। অনেক সময় এমন হতে পারে যে, সেই ফ্রি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার টি আপনার ডিভাইসকে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষার দেওয়ার পরিবর্তে আপনার ডিভাইসে আরো ম্যালওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার প্রবেশ করাচ্ছে।
কোন একটি ডিভাইস কে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার মুক্ত রাখতে যেসব এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় সেগুলোর সমস্তই থাকে পেইড সফটওয়্যার। এবার আপনি যদি গুগলে গিয়ে সেই সফটওয়ারটির ফ্রি ভার্সন খুঁজে বের করতে চান তবে সেটি হবে একটি হ্যাক ভার্সন। আর কোন একটি সফটওয়্যার এর হ্যাক ভার্সন বলতেই সেখানে কিছু না কিছু মডিফাই করা হয়েছে। যেখানে সেই সাবস্ক্রিপশন ফি এর অপশন বাদ দেওয়া দিলেও সেখানে যে অন্য কোন অপশন যুক্ত করা হবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এমনকি হতে পারে যে, সেই সফটওয়্যারটি আপনার ডাটাগুলোকে নিচ্ছে এবং সেগুলো অন্য কোন থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।
তাই কোন সময় ইন্টারনেটে কোনো 'ফ্রি এন্টিভাইরাস' খোঁজা উচিত নয়। এতে করে আপনার প্রাইভেসি এবং আপনার ডিভাইসের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে।
আমরা কমবেশি সকলেই অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করে থাকি। এসব ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোতে অনেক সময় ছাড় দিয়ে থাকে। অনেক সময় এসব ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলোতে বিভিন্ন কুপন কোড এপ্লাই করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু টাকা ছাড় পাওয়া যায়। অনেকেই কেনাকাটায় ছাড় পাবার জন্য গুগলে কুপন খোঁজ করে থাকে। এ ধরনের কোন খোঁজ করতে গিয়ে আপনি অন্য কোন ভুল ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের চক্করে পরতে পারেন। যেখানে আপনার কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।
কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর পণ্য কেনার জন্য কুপন কোড খুঁজতে গিয়ে কোন ওয়েবসাইটে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার ও দিয়ে দিতে পারেন। যার মাধ্যমে এসব ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে আপনার ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই গুগলে অবশ্যই এসব ছাড় বিষয়ক কোনো অনুসন্ধান না করাই ভালো।
বন্ধুরা আজকের আলোচনার সবচাইতে শেষ টপিকটি আপনাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক সময় কৌতূহলবশত বিভিন্ন অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ হতে পারে। কিন্তু সেই আগ্রহের বসে যদি আপনি গুগলে সেটি লিখে সার্চ করেন তবে এটি করেও আপনি অনেক বিপদে পড়তে পারেন। যেটি আপনার জীবনকে একটি অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
অনেকেরই কৌতূহল হতে পারে যে, 'বোমা কিভাবে তৈরি হয়' এ বিষয়টি আমি ইন্টারনেটে দেখব। ইন্টারনেটে যেহেতু সমস্ত বিষয় গুলো রয়েছে সেহেতু বোমা কিভাবে তৈরি করতে হয় এই বিষয়টিও নিশ্চয়ই থাকবে। যদি ইন্টারনেটে বোমা কিভাবে তৈরি করতে হয় এই বিষয়টির থেকেই থাকে এবং আপনি যদি বোমা কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটা লিখে সার্চ করেন তবে আপনি কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে পড়ে যাবেন। দেশের নিরাপত্তা এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সবসময়ই এ ধরনের কিওয়ার্ডগুলো কে মনিটর করে থাকে। আপনি যদি 'বোমা কিভাবে তৈরি করতে হয়' এ বিষয়টি লিখে গুগলে সার্চ করেন তবে আপনি সেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টার্গেট হয়ে যাবেন এতে করে কোনো সন্দেহ নেই।
শুধু তাই নয়, আপনি যখন সেই কিওয়ার্ড টি লিখে সার্চ করবেন, তখন আপনার আইপি অ্যাড্রেস সহ আপনাকে ট্রাকিং করা হবে। পরবর্তীতে যদি আপনার এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম হয় তবে এক্ষেত্রে আপনাকেও ধরতে পারে। এতে তারা বুঝবে না যে, আপনি সন্ত্রাসী কার্যক্রম এর সাথে জড়িত কি না। শুধুমাত্র আপনি এই বিষয়টি লিখে সার্চ করার কারণেই আপনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টার্গেট হয়ে যাবেন। তাই এ ধরনের উটকো ঝামেলা এড়াতে গুগল এসব বিষয় নিয়ে সার্চ করা একেবারেই উচিত নয়।
শুধু গুগলে বোমা সংক্রান্ত কোন বিষয় নয়, বরং এখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত সকল কিওয়ার্ড গুলোকে মনিটরিং করা হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা। এক্ষেত্রে আপনি যতই শক্তিশালী ব্রাউজার এবং ভিপিএন ব্যবহার করুন না কেন আপনাকে অবশ্যই এই কী-ওয়ার্ড গুলোতে ট্রাকিং করা হবে। আপনি অনলাইন দুনিয়ায় যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেন তার চাইতেও শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা অপরাধী কে ধরার জন্য। তাই এক্ষেত্রে আপনার কোনো শক্তিশালী ব্রাউজার ব্যবহার করেও নিরাপদ থাকার কোন উপায় নেই। তাই আপনি দেখে থাকবেন যে, একজন হ্যাকারের যতই বড় শক্তিশালী হোক তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবশ্যই ধরতে পারে।
তাই আপনি যদি মনে করেন যে আপনাদের দেশের আইপি অ্যাড্রেস পাল্টিয়ে ভিপিএন ব্যবহার করে এসব সার্চ করবেন যাতে করে এ দেশ থেকে আপনাকে ট্রাকিং করা না হয়, তবে সেটিও ভুল। আপনি যদি সন্ত্রাসী কার্যক্রম এর সঙ্গে জড়িত কোন কিওয়ার্ডগুলো লিখে সার্চ করেন তবে সেটি শুধুমাত্র কোনো দেশেই নয় বরং আন্তর্জাতিকভাবে সেদিকে দেখা হয়। বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে যারা এসব দেখে থাকে। ইন্টারনেট আপনার আমার জানার বাইরে অনেক বেশি বিস্তৃত। যেখানে আমাদেরকে শুধুমাত্র এটি ব্যবহার করার জন্য দেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের কোনো ঝামেলা এড়াতে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কোন বিষয়গুলো সার্চ করা উচিত নয়।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন আমাদের নিত্যদিনকার কাজগুলোকে অনেক সহজ এবং সময় সাশ্রয় করে দিলেও অনেক ক্ষেত্রে এটি আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতি এবং বিপদের সম্মুখীন করতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের সেই সব বিষয়গুলো মাথায় রেখে সার্চ করতে হবে, যাতে করে আমরা ভবিষ্যতে কোনো ঝামেলায় না পড়ি। আজ তবে এখানেই শেষ করছি। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)